All Stories

৩ পর্ব
সৌদি বাহিনীর সমস্যা এবং লড়াইয়ের অন্তিম অবস্থা:
একই সাথে জুহাইমানের সঙ্গে থাকা অনেকেই এই মক্কার মসজিদ আল হারাম এ পড়াশোনার এবং জীবনের একটা বড় অংশ কাটানোর কারণে এই ভূগর্ভের বা পুরো জায়গাটি অত্যন্ত ভালো ভাবে জানতো।এই কারণে ২০ তারিখ থেকে পরের দিন গুলো এই জায়গায় আক্রমন করতে গিয়ে একের পর এক সৌদি সেনা বা বাহিনীর লোক মারা পড়েছিল।সৌদি রাজশক্তি বুঝতে পারলো,এইভাবে হবে না,অন্য কোন উপায় নিতে হবে।
ফরাসী সহায়তা :
সমাধান পেতে সৌদি কর্তৃপক্ষ সাহায্যের জন্য ফরাসি সরকারের সাহায্য চায় তাদের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভ্যালেরি (Valéry Giscard d'Estaing) র কাছে।ফরাসি রাষ্ট্রপতি গোপনে তাদের ওই সময়ে সদ্য তৈরী সন্ত্রাসবাদ দমনের বিভাগ GIGN এর তিনজন বিশেষজ্ঞকে সৌদি আরবে পাঠান।গোপনে পাঠানো হয় যাতে এই অমুসলিম কোনো রাষ্ট্রের এই স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনো খবর বাইরে বেরিয়ে অন্য প্রতিক্রিয়া না হয় ওই জন্য।
ফরাসি এই দল কাছের একটি হোটেল তাইফ এ অবস্থান নিয়ে একটি পরিকল্পনা করে।এরা এই লোকগুলোকে উপরে নিয়ে আসার জন্য ওই ভূগর্ভস্থ কক্ষগুলোতে বিশেষ গ্যাস পাঠানোর ব্যবস্থা করে যাতে শ্বাস নিতে না পেরে এই লোকগুলো বাইরে বেরিয়ে আসে।পরিকল্পনা অনুযায়ী এই কক্ষগুলোতে মাটির তলা দিয়ে গর্ত করে বিশেষ গ্রেনেড এর মাধ্যমে এই গুলো ভিতরে ফাটানো হয় যাতে কোনো মৃত্যুর বদলে স্রেফ গ্রেনেড দিয়ে ওই গ্যাস কক্ষে ভরে যায়।এই গ্যাস ব্যবহার বা প্রাসঙ্গিক রসায়নিক ব্যবহারের একটা প্রশিক্ষণ তারা দিয়েছিল সৌদি সেনাদের কারণ অমুসলিম কারোর কাবা বা ওই মসজিদ আল হারাম এ প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।এই বিশেষ গ্যাসের নাম রসায়নিক হিসেবে বিশাল তবে সংক্ষেপে বলা হয় CB,যা দীর্ঘক্ষণ ফুসফুসে ঢুকলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তবে প্রাথমিক পর্বে এতে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা হয় আর খোলা জায়গায় যেতেই হয়।
সাফল্যের মুখ দর্শন:
অবশেষে ডিসেম্বরের তিন তারিখ সকালে মাটির নিচের ওই কক্ষগুলোর ভিতরে এই গ্যাসের নিক্ষেপ করার জন্য জমির উপরে গর্ত করে এই গ্যাসের ক্যানিস্টার ফেলা হয় যা ভিতরে গিয়ে ফেটে গিয়ে শ্বাস নেওয়ার অবকাশ রাখছিল না।এতে আংশিক সাফল্য এসেছিল,লড়াই চলে আরো ১৮ ঘন্টা।অবশেষে ডিসেম্বরের চার তারিখ প্রতিপক্ষের গুলির বা বোমার আওয়াজে বিরতি আসে।
একটি ছোট অপরিসর ভূগর্ভস্থ ঘরে জনা কুড়ি বিদ্ধস্ত,ক্লান্ত,যুদ্ধের পরবর্তী ফলাফলে আতঙ্কিত এই জঙ্গিদের একসাথে দেখা গেলো।এই প্রসঙ্গে সেই সময়ের এই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেওয়া ব্রিগেডিয়ার আল দাহারি অনুমান করেন এই সংঘর্ষের তৃতীয় বা চতুর্থ দিনেই তথাকথিত সেই ঈমাম মেহেদির রূপে থাকা আল কাহতানি মারা পড়েছিল।এই খবর জুহাইমান গোপন রেখেছিল বা নিজেই এক পর্যায়ে একে মেরে বিষয়টি গোপন রেখেছিল।যাই হোক,ঈমাম মেহেদী গুলি বা অন্য কোনো কারণে মারা যেতে পারে না এই লোকগুলোর অটল বিশ্বাসে চিড় ধরেছিল যা সামগ্রিক মনোবলে আঘাত এসেছিল বলে ধরা হয়।এই পরিপূর্ণ দখলের আগে অবশ্য সৌদি বাহিনী জানতেও পারে নি যে তথাকথিত ইমাম মাহদী বা মেহেদী আগেই মারা গিয়েছে।
এই ঘরগুলোর ভিতরে ওই গাদাগাদি করে থাকা লোকেদের ভিতরে সেনাদল পায় সেই জুহাইমানকে।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আল দাহরি নিজেই সনাক্ত করে এই লোকটিকে।পূর্ব নির্দেশের কারণে এবং পুরো বিষয়ের বাকি খবর বের করার জন্য একে আলাদা করে নিয়ে যায়।পুরো একটি সেনা স্কোয়াড এই যুহাইমান কে অক্ষত রাখার জন্য প্রহরাতে নিয়োজিত হয়।
কাবা এবং মসজিদ আল হারাম মুক্ত হওয়ার রাষ্ট্রীয় ঘোষণা এবং পরবর্তী কার্যক্রম:
অবশেষে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের প্রধান প্রিন্স নাইফ আল হারাম মসজিদ এবং কাবা স্থাপনার পুরো জায়গা মুক্ত হয়েছে ঘোষণা করে।গোটা দেশ এবং বিশ্বের কাছে এই জুহাইমান আর তার বাকি জীবিত সঙ্গীদের স্থির এবং ভিডিও ছবি দেখায়।
সব মিলিয়ে এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি হয় ঠিক পনেরো দিন পরে ডিসেম্বর ৫ তারিখের ভোর দেড়টার স্থানীয় সময়ে।একই সঙ্গে প্রিন্স নাইফ সরকারী ভাবে জানায় এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে সেনাদল সেই মহম্মদ আল কাহতানির মৃত দেহ খুঁজে পেয়েছে।গুলি এবং অন্য ভাবে ক্ষতবিক্ষত এই মৃতদেহ দেখানো হয় টিভিতে।সৌদি ইন্টালিজেন্স এর প্রধান প্রিন্স তুর্কির মতে এই লোকটিকে জুহাইমান নিজেই খুন করেছিল যাতে জীবিত ধরা পড়ে পুরো মিথ্যের বিষয়টি আরো প্রকট না করতে পারে।
দেশের সাংবাদিকদের বা অন্য মানুষদের এই জায়গাটি দেখানো হলে তারা দেখতে পায় এই লোকগুলো আগুন জ্বালানোর জন্য পবিত্র কোরান ছিড়ে তার পাতা ও ব্যবহার করেছে।অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের সঙ্গীদের মৃতদেহের মুখ যাতে না চিনতে পারে তার জন্য মুখের উপরে এই কাগজ জ্বালিয়ে মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিল।আশা করি পুরো বিষয়টি কত বিভৎস্য আর এই লোকগুলো প্রয়োজনে সবই করতে পারে তার একটা ধারণা পেয়েছেন।
এরপরে সেই ডিসেম্বরের পাঁচ তারিখ সন্ধ্যায় রাজা খালিদ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে পুরো বিষয়টি শেষ হওয়া আর এই দখল মুক্ত হওয়ার বিষয়ে বলেন।এরপরে বুলেটের ক্ষত বাদে বাকি পুরো স্থাপনা কে এক অতি দ্রুততার সাথে আবার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় পরের দুই দিনের মধ্যে।
ডিসেম্বরের ছয় তারিখে বাদশা খালেদ একদল উচ্ছসিত নামাজির সাথে এই চত্তরে আনুষ্ঠানিক ভাবে আসেন।পুরো ধর্মীয় রীতি মেনে হজর আল আসওয়াদ চুম্বন,কাবা গৃহকে সাতবার রীতি মেনে প্রদক্ষিন এবং জমজম এর জল পান করে আবার পুরনো রীতির সূচনা করেন।এরপরের দিন জুম্মার নমাজ হয় এক অন্য পরিবেশে।এতে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ আগেই এসে জড়ো হয়েছিল আগের রাত থেকেই।পুরো ইসলামী বিশ্বের দেশগুলোতে এই ঘটনা উপগ্রহর মাধ্যমে সমপ্রসার করা হয়।
হতাহতর বিবরণ এবং জুহাইমানের চরিত্রের এক ঝলক :
যে উদার পথের সমাজ রেখে চলার কাজ শুরু করেছিল এই সৌদি রাজবংশ তার মূল্য দিতে হয়েছিল অতীব কঠিন ভাবে আর তা দিয়েছিল মূলত সৌদি নাগরিকরা।এই ঘটনায় হতাহত মানুষের মধ্যে ১২৭জন বিভিন্ন বাহিনীর মানুষ।এছাড়া তাদের ৪৫১ জন আহত হয়েছিল এই সময়ে।অন্যদিকে সরকারী ভাষ্যে জানা যায় সাধারণ পুন্যার্থীর মধ্যে ২৬জন ওই জায়গায় থাকা মানুষ মারা যায় যার মধ্যে সৌদি ছাড়াও ভারত,পাকিস্থান,ইন্দোনেশিয়া,মিশর এবং বার্মার নাগরিক ছিল।এ ছড়া আহত হয়েছিল একশো জন।
অন্যদিকে এই দখলদারি করা জুহাইমানের দলের ২৬০জনের মধ্যে ১১৭ জন নিহত হয়েছিল,সরাসরি লড়াইয়ে ৯০জন আর পরে হাসপাতালে আরো ২৭জন। গ্রেফতার করা জুহাইমান তার কাজের বিষয়ে কোনো অনুতাপ দেখায় নি বলে জানা যায়।সেই সময়ের সৌদি প্রিন্স সাউদ আল ফয়সাল তাকে এই কাজ কেন করেছে জিজ্ঞাসা করলে তার উত্তর ছিল "সবই ভাগ্য " ,তার কিছু চাই কি না জিজ্ঞাসা করলে সে জল খেতে চায়।এই ঘটনার পরে জুহাইমান আর জীবিত সঙ্গীদের ক্যামেরার সামনে আনা হয়।আরো কিছু পরে হাসপাতালে তার সাথে দেখা হয় প্রিন্স তুর্কির,সেই সময়ে জুহাইমান নির্লজ্জের মতো বাদশা খালেদের কাছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে,এই কাজ করে সে অনুতপ্ত এই বলে।উত্তরে তুর্কি তাকে বলে এই কাজের জন্য সে ক্ষমার যোগ্য না।এই ছিল সৌদি রাজশক্তির সাথে তাঁর শেষ বার্তালাপ।
সৌদি বিচার যেখানে রাজাই শেষ কথা :
জুহাইমানের দলের বাকি ১৪৩ জনের মধ্যে ৬৩জন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয় সৌদি আদালতে।১৯৮০ সালের ৯ তারিখে সৌদি অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী এই মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার জন্য আটটি জায়গায় এদের শিরোচ্ছেদে মৃত্যুর ফরমান জারি করে।কেন আটটি জায়গায়?এই বিষয়ে বাখ্যা দিতে আরো এক শীর্ষব্যক্তি প্রিন্স তুর্কি বলে যে এটি ছিল গোটা সৌদি আরবের বিষয় তাই মুখ্য জায়গাগুলোতে এই কাজগুলো করা হয় যাতে সার্বিক ভাবে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।এই ৬৩ জনের মধ্যে ৪১জন সৌদি নাগরিক,১০জন মিশরের,সাতজন ইয়েমেনের,তিনজন কুয়েতের,একজন সুদানের আর একজন ইরাকের ছিল।যেমন বলেছি,আলাদা করে এদের ১৫জন কে মক্কাতে,১০ জন কে রিয়াদে,মদিনা,দাম্মাম,বুরাইদাহ এবং আবহাতে সাত জন করে,হাইল এবং তাবুক এ পাঁচজন করে এই মৃত্যুদন্ড পাওয়া লোকেদের শিরচ্ছেদ করা হয়।প্রথমে মৃত্যুদন্ড পেলেও পরবর্তিতে কারাদন্ড দেওয়া হয় ১৯ জনকে।এ ছাড়া এই দলে থাকা ২৩ জন মহিলা এবং শিশুদের মধ্যে মহিলাদের ২ বছর করে কারাদন্ড আর শিশুদের নির্দিস্ট আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়।জুহাইমানকে ওই ১৫ জনের সাথে মক্কাতে শিরচ্ছেদ করা হয় জানুয়ারির নয় তারিখ,১৯৮০তে ।
সরকারী ভাবে সৌদি প্রশাসন ঘোষণা করে যে এই নানান দেশের লোক যুক্ত হলেও কোনো দেশ এই কাজে উস্কানি দেয় নি বা সাহায্য করে নি।পুরো বিষয়টি একটি ধর্মীয় কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে হওয়া কাজ।জনমানসে এই বিষয়ে কোনো ছাপ পড়েনি,অন্তত কোনো জায়গায় এই নিয়ে কোনো আলোড়ন বা বিক্ষোভ দেখা যায় নি।সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টা একটা বিশাল মানসিক ধাক্কা ছিল প্রশাসক বা সাধারণ মানুষের কাছে।
বিষ বৃক্ষের সূচনা বা এক মধ্যযুগীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন:
এতে সব শেষ হয় না , সৌদি এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এই ঘটনা কট্টরপন্থীদের মতামত কে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে সৌদি ক্ষমতাশীল গোষ্ঠী।এই গোড়া মানসিকতার থেকে আর কোনো বিদ্রোহ যাতে তাদের গদিচ্যুত না করে তার জন্য কিছু দিনের মধ্যেই দেশটি মধ্যযুগীয় একটি ব্যবস্থায় চলে যায়।আজকের পরিচিত লাদেনের প্রচারেও পরবর্তীতে এই ঘটনা এবং এটি শান্তিপূর্ণ ভাবে না মিটিয়ে গোটা স্থাপনার অপমানকর অবস্থা করার জন্য সৌদি রাজ্ পরিবারের উপর অভিযোগ দেখা যায়।
জুহাইমান সৌদি দূরদর্শনে মহিলাদের দেখানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।এই ঘটনার পরে আর কেউ কোনো মহিলা উপস্থাপিকাকে সৌদি দূরদর্শনে দেখা যায় নি।সম্প্রতি সামাজিক সংস্কারের পরে কিছু হবে কি না জানা গেলেও সেই দিন গুলো এখনো অনুপস্থিত।
পরবর্তিতে বা অন্তিম পর্বে থাকবে বিষবৃক্ষের অবসানের বিষয়ে আশার আলোর বিবরণ।আমার একটি দুর্বলতা আছে আর তা হলো আমি নেতিবাচক বিষয়গুলো একটু এড়িয়ে যাই,হয়তো অনেকেই এটিকে পলায়নী মনোবৃত্তি ভাবতে পারেন তবে আজ পর্যন্ত অনেক এই ধরনের বিষয়ের গভীরে গিয়ে দেখেছি আবার স্ব্দর্থ্ক ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে তাই আলাদা করে ওই অন্ধকারের অবসানের বিষয়ে লেখার জন্য রাখলাম চতুর্থ পর্ব।
আমার খুব প্রিয় একটি উদ্ধৃতি আছে ওটা দিয়েই আবার এই পর্ব শেষ করছি, “মাভৈ! রাত যতো অন্ধকার,প্রত্যুষ ততোই নিকটে জানিবেন “ .....হ্যা নির্দিস্ট তথ্যসূত্র আর যুক্তির নিরিখেই এই দাবি আবার রাখলাম।




প্রাসঙ্গিক তথ্যসূত্র:
১. দখলমুক্ত করার পরে বাদশার কাবা এবং মসজিদ আল হারাম দর্শন https://www.youtube.com/watch?v=eCfv0_ee9pw
২. একটু পাকিস্থানের কাগজ থেকে ,আল কায়দার সূচনা হওয়ার বিষয়টি সঠিক ভাবেই তুলে ধরা হয়েছে এতে https://www.dawn.com/news/503835/thirty-years-on-mecca-mosque-siege-reverberates
৩. একই ভাবে পরবর্তী সন্ত্রাসবাদের যোগ সূত্র নিয়ে সুখপাঠ্য একটি লেখা https://www.thoughtco.com/indispensable-books-on-the-middle-east-2353389
৪. আলোচিত সেই জুহাইমানের সন্তান হয়েছে অন্য রকম একজন সুনাগরিক-প্রমাণিত হয় পরিবেশ একটি বড় ফারাক করে দেয় মানুষের গঠনের https://english.alarabiya.net/en/News/gulf/2018/09/03/Son-of-Juhayman-infamous-Mecca-attacker-promoted-to-be-a-Saudi-Guards-colonel.html
৫. একটু ফিরে দেখা এবং বর্তমান অবস্থার পর্যালোচনা https://www.brookings.edu/events/terrorism-in-saudi-arabia-past-and-present/

কাবা এবং মসজিদ আল হারাম দখলের কালান্তক ইতিহাসঃ-৩ পর্ব


৩ পর্ব
সৌদি বাহিনীর সমস্যা এবং লড়াইয়ের অন্তিম অবস্থা:
একই সাথে জুহাইমানের সঙ্গে থাকা অনেকেই এই মক্কার মসজিদ আল হারাম এ পড়াশোনার এবং জীবনের একটা বড় অংশ কাটানোর কারণে এই ভূগর্ভের বা পুরো জায়গাটি অত্যন্ত ভালো ভাবে জানতো।এই কারণে ২০ তারিখ থেকে পরের দিন গুলো এই জায়গায় আক্রমন করতে গিয়ে একের পর এক সৌদি সেনা বা বাহিনীর লোক মারা পড়েছিল।সৌদি রাজশক্তি বুঝতে পারলো,এইভাবে হবে না,অন্য কোন উপায় নিতে হবে।
ফরাসী সহায়তা :
সমাধান পেতে সৌদি কর্তৃপক্ষ সাহায্যের জন্য ফরাসি সরকারের সাহায্য চায় তাদের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভ্যালেরি (Valéry Giscard d'Estaing) র কাছে।ফরাসি রাষ্ট্রপতি গোপনে তাদের ওই সময়ে সদ্য তৈরী সন্ত্রাসবাদ দমনের বিভাগ GIGN এর তিনজন বিশেষজ্ঞকে সৌদি আরবে পাঠান।গোপনে পাঠানো হয় যাতে এই অমুসলিম কোনো রাষ্ট্রের এই স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনো খবর বাইরে বেরিয়ে অন্য প্রতিক্রিয়া না হয় ওই জন্য।
ফরাসি এই দল কাছের একটি হোটেল তাইফ এ অবস্থান নিয়ে একটি পরিকল্পনা করে।এরা এই লোকগুলোকে উপরে নিয়ে আসার জন্য ওই ভূগর্ভস্থ কক্ষগুলোতে বিশেষ গ্যাস পাঠানোর ব্যবস্থা করে যাতে শ্বাস নিতে না পেরে এই লোকগুলো বাইরে বেরিয়ে আসে।পরিকল্পনা অনুযায়ী এই কক্ষগুলোতে মাটির তলা দিয়ে গর্ত করে বিশেষ গ্রেনেড এর মাধ্যমে এই গুলো ভিতরে ফাটানো হয় যাতে কোনো মৃত্যুর বদলে স্রেফ গ্রেনেড দিয়ে ওই গ্যাস কক্ষে ভরে যায়।এই গ্যাস ব্যবহার বা প্রাসঙ্গিক রসায়নিক ব্যবহারের একটা প্রশিক্ষণ তারা দিয়েছিল সৌদি সেনাদের কারণ অমুসলিম কারোর কাবা বা ওই মসজিদ আল হারাম এ প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।এই বিশেষ গ্যাসের নাম রসায়নিক হিসেবে বিশাল তবে সংক্ষেপে বলা হয় CB,যা দীর্ঘক্ষণ ফুসফুসে ঢুকলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তবে প্রাথমিক পর্বে এতে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা হয় আর খোলা জায়গায় যেতেই হয়।
সাফল্যের মুখ দর্শন:
অবশেষে ডিসেম্বরের তিন তারিখ সকালে মাটির নিচের ওই কক্ষগুলোর ভিতরে এই গ্যাসের নিক্ষেপ করার জন্য জমির উপরে গর্ত করে এই গ্যাসের ক্যানিস্টার ফেলা হয় যা ভিতরে গিয়ে ফেটে গিয়ে শ্বাস নেওয়ার অবকাশ রাখছিল না।এতে আংশিক সাফল্য এসেছিল,লড়াই চলে আরো ১৮ ঘন্টা।অবশেষে ডিসেম্বরের চার তারিখ প্রতিপক্ষের গুলির বা বোমার আওয়াজে বিরতি আসে।
একটি ছোট অপরিসর ভূগর্ভস্থ ঘরে জনা কুড়ি বিদ্ধস্ত,ক্লান্ত,যুদ্ধের পরবর্তী ফলাফলে আতঙ্কিত এই জঙ্গিদের একসাথে দেখা গেলো।এই প্রসঙ্গে সেই সময়ের এই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেওয়া ব্রিগেডিয়ার আল দাহারি অনুমান করেন এই সংঘর্ষের তৃতীয় বা চতুর্থ দিনেই তথাকথিত সেই ঈমাম মেহেদির রূপে থাকা আল কাহতানি মারা পড়েছিল।এই খবর জুহাইমান গোপন রেখেছিল বা নিজেই এক পর্যায়ে একে মেরে বিষয়টি গোপন রেখেছিল।যাই হোক,ঈমাম মেহেদী গুলি বা অন্য কোনো কারণে মারা যেতে পারে না এই লোকগুলোর অটল বিশ্বাসে চিড় ধরেছিল যা সামগ্রিক মনোবলে আঘাত এসেছিল বলে ধরা হয়।এই পরিপূর্ণ দখলের আগে অবশ্য সৌদি বাহিনী জানতেও পারে নি যে তথাকথিত ইমাম মাহদী বা মেহেদী আগেই মারা গিয়েছে।
এই ঘরগুলোর ভিতরে ওই গাদাগাদি করে থাকা লোকেদের ভিতরে সেনাদল পায় সেই জুহাইমানকে।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আল দাহরি নিজেই সনাক্ত করে এই লোকটিকে।পূর্ব নির্দেশের কারণে এবং পুরো বিষয়ের বাকি খবর বের করার জন্য একে আলাদা করে নিয়ে যায়।পুরো একটি সেনা স্কোয়াড এই যুহাইমান কে অক্ষত রাখার জন্য প্রহরাতে নিয়োজিত হয়।
কাবা এবং মসজিদ আল হারাম মুক্ত হওয়ার রাষ্ট্রীয় ঘোষণা এবং পরবর্তী কার্যক্রম:
অবশেষে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের প্রধান প্রিন্স নাইফ আল হারাম মসজিদ এবং কাবা স্থাপনার পুরো জায়গা মুক্ত হয়েছে ঘোষণা করে।গোটা দেশ এবং বিশ্বের কাছে এই জুহাইমান আর তার বাকি জীবিত সঙ্গীদের স্থির এবং ভিডিও ছবি দেখায়।
সব মিলিয়ে এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি হয় ঠিক পনেরো দিন পরে ডিসেম্বর ৫ তারিখের ভোর দেড়টার স্থানীয় সময়ে।একই সঙ্গে প্রিন্স নাইফ সরকারী ভাবে জানায় এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে সেনাদল সেই মহম্মদ আল কাহতানির মৃত দেহ খুঁজে পেয়েছে।গুলি এবং অন্য ভাবে ক্ষতবিক্ষত এই মৃতদেহ দেখানো হয় টিভিতে।সৌদি ইন্টালিজেন্স এর প্রধান প্রিন্স তুর্কির মতে এই লোকটিকে জুহাইমান নিজেই খুন করেছিল যাতে জীবিত ধরা পড়ে পুরো মিথ্যের বিষয়টি আরো প্রকট না করতে পারে।
দেশের সাংবাদিকদের বা অন্য মানুষদের এই জায়গাটি দেখানো হলে তারা দেখতে পায় এই লোকগুলো আগুন জ্বালানোর জন্য পবিত্র কোরান ছিড়ে তার পাতা ও ব্যবহার করেছে।অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের সঙ্গীদের মৃতদেহের মুখ যাতে না চিনতে পারে তার জন্য মুখের উপরে এই কাগজ জ্বালিয়ে মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিল।আশা করি পুরো বিষয়টি কত বিভৎস্য আর এই লোকগুলো প্রয়োজনে সবই করতে পারে তার একটা ধারণা পেয়েছেন।
এরপরে সেই ডিসেম্বরের পাঁচ তারিখ সন্ধ্যায় রাজা খালিদ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে পুরো বিষয়টি শেষ হওয়া আর এই দখল মুক্ত হওয়ার বিষয়ে বলেন।এরপরে বুলেটের ক্ষত বাদে বাকি পুরো স্থাপনা কে এক অতি দ্রুততার সাথে আবার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় পরের দুই দিনের মধ্যে।
ডিসেম্বরের ছয় তারিখে বাদশা খালেদ একদল উচ্ছসিত নামাজির সাথে এই চত্তরে আনুষ্ঠানিক ভাবে আসেন।পুরো ধর্মীয় রীতি মেনে হজর আল আসওয়াদ চুম্বন,কাবা গৃহকে সাতবার রীতি মেনে প্রদক্ষিন এবং জমজম এর জল পান করে আবার পুরনো রীতির সূচনা করেন।এরপরের দিন জুম্মার নমাজ হয় এক অন্য পরিবেশে।এতে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ আগেই এসে জড়ো হয়েছিল আগের রাত থেকেই।পুরো ইসলামী বিশ্বের দেশগুলোতে এই ঘটনা উপগ্রহর মাধ্যমে সমপ্রসার করা হয়।
হতাহতর বিবরণ এবং জুহাইমানের চরিত্রের এক ঝলক :
যে উদার পথের সমাজ রেখে চলার কাজ শুরু করেছিল এই সৌদি রাজবংশ তার মূল্য দিতে হয়েছিল অতীব কঠিন ভাবে আর তা দিয়েছিল মূলত সৌদি নাগরিকরা।এই ঘটনায় হতাহত মানুষের মধ্যে ১২৭জন বিভিন্ন বাহিনীর মানুষ।এছাড়া তাদের ৪৫১ জন আহত হয়েছিল এই সময়ে।অন্যদিকে সরকারী ভাষ্যে জানা যায় সাধারণ পুন্যার্থীর মধ্যে ২৬জন ওই জায়গায় থাকা মানুষ মারা যায় যার মধ্যে সৌদি ছাড়াও ভারত,পাকিস্থান,ইন্দোনেশিয়া,মিশর এবং বার্মার নাগরিক ছিল।এ ছড়া আহত হয়েছিল একশো জন।
অন্যদিকে এই দখলদারি করা জুহাইমানের দলের ২৬০জনের মধ্যে ১১৭ জন নিহত হয়েছিল,সরাসরি লড়াইয়ে ৯০জন আর পরে হাসপাতালে আরো ২৭জন। গ্রেফতার করা জুহাইমান তার কাজের বিষয়ে কোনো অনুতাপ দেখায় নি বলে জানা যায়।সেই সময়ের সৌদি প্রিন্স সাউদ আল ফয়সাল তাকে এই কাজ কেন করেছে জিজ্ঞাসা করলে তার উত্তর ছিল "সবই ভাগ্য " ,তার কিছু চাই কি না জিজ্ঞাসা করলে সে জল খেতে চায়।এই ঘটনার পরে জুহাইমান আর জীবিত সঙ্গীদের ক্যামেরার সামনে আনা হয়।আরো কিছু পরে হাসপাতালে তার সাথে দেখা হয় প্রিন্স তুর্কির,সেই সময়ে জুহাইমান নির্লজ্জের মতো বাদশা খালেদের কাছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে,এই কাজ করে সে অনুতপ্ত এই বলে।উত্তরে তুর্কি তাকে বলে এই কাজের জন্য সে ক্ষমার যোগ্য না।এই ছিল সৌদি রাজশক্তির সাথে তাঁর শেষ বার্তালাপ।
সৌদি বিচার যেখানে রাজাই শেষ কথা :
জুহাইমানের দলের বাকি ১৪৩ জনের মধ্যে ৬৩জন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয় সৌদি আদালতে।১৯৮০ সালের ৯ তারিখে সৌদি অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী এই মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার জন্য আটটি জায়গায় এদের শিরোচ্ছেদে মৃত্যুর ফরমান জারি করে।কেন আটটি জায়গায়?এই বিষয়ে বাখ্যা দিতে আরো এক শীর্ষব্যক্তি প্রিন্স তুর্কি বলে যে এটি ছিল গোটা সৌদি আরবের বিষয় তাই মুখ্য জায়গাগুলোতে এই কাজগুলো করা হয় যাতে সার্বিক ভাবে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।এই ৬৩ জনের মধ্যে ৪১জন সৌদি নাগরিক,১০জন মিশরের,সাতজন ইয়েমেনের,তিনজন কুয়েতের,একজন সুদানের আর একজন ইরাকের ছিল।যেমন বলেছি,আলাদা করে এদের ১৫জন কে মক্কাতে,১০ জন কে রিয়াদে,মদিনা,দাম্মাম,বুরাইদাহ এবং আবহাতে সাত জন করে,হাইল এবং তাবুক এ পাঁচজন করে এই মৃত্যুদন্ড পাওয়া লোকেদের শিরচ্ছেদ করা হয়।প্রথমে মৃত্যুদন্ড পেলেও পরবর্তিতে কারাদন্ড দেওয়া হয় ১৯ জনকে।এ ছাড়া এই দলে থাকা ২৩ জন মহিলা এবং শিশুদের মধ্যে মহিলাদের ২ বছর করে কারাদন্ড আর শিশুদের নির্দিস্ট আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়।জুহাইমানকে ওই ১৫ জনের সাথে মক্কাতে শিরচ্ছেদ করা হয় জানুয়ারির নয় তারিখ,১৯৮০তে ।
সরকারী ভাবে সৌদি প্রশাসন ঘোষণা করে যে এই নানান দেশের লোক যুক্ত হলেও কোনো দেশ এই কাজে উস্কানি দেয় নি বা সাহায্য করে নি।পুরো বিষয়টি একটি ধর্মীয় কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে হওয়া কাজ।জনমানসে এই বিষয়ে কোনো ছাপ পড়েনি,অন্তত কোনো জায়গায় এই নিয়ে কোনো আলোড়ন বা বিক্ষোভ দেখা যায় নি।সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টা একটা বিশাল মানসিক ধাক্কা ছিল প্রশাসক বা সাধারণ মানুষের কাছে।
বিষ বৃক্ষের সূচনা বা এক মধ্যযুগীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন:
এতে সব শেষ হয় না , সৌদি এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এই ঘটনা কট্টরপন্থীদের মতামত কে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে সৌদি ক্ষমতাশীল গোষ্ঠী।এই গোড়া মানসিকতার থেকে আর কোনো বিদ্রোহ যাতে তাদের গদিচ্যুত না করে তার জন্য কিছু দিনের মধ্যেই দেশটি মধ্যযুগীয় একটি ব্যবস্থায় চলে যায়।আজকের পরিচিত লাদেনের প্রচারেও পরবর্তীতে এই ঘটনা এবং এটি শান্তিপূর্ণ ভাবে না মিটিয়ে গোটা স্থাপনার অপমানকর অবস্থা করার জন্য সৌদি রাজ্ পরিবারের উপর অভিযোগ দেখা যায়।
জুহাইমান সৌদি দূরদর্শনে মহিলাদের দেখানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।এই ঘটনার পরে আর কেউ কোনো মহিলা উপস্থাপিকাকে সৌদি দূরদর্শনে দেখা যায় নি।সম্প্রতি সামাজিক সংস্কারের পরে কিছু হবে কি না জানা গেলেও সেই দিন গুলো এখনো অনুপস্থিত।
পরবর্তিতে বা অন্তিম পর্বে থাকবে বিষবৃক্ষের অবসানের বিষয়ে আশার আলোর বিবরণ।আমার একটি দুর্বলতা আছে আর তা হলো আমি নেতিবাচক বিষয়গুলো একটু এড়িয়ে যাই,হয়তো অনেকেই এটিকে পলায়নী মনোবৃত্তি ভাবতে পারেন তবে আজ পর্যন্ত অনেক এই ধরনের বিষয়ের গভীরে গিয়ে দেখেছি আবার স্ব্দর্থ্ক ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে তাই আলাদা করে ওই অন্ধকারের অবসানের বিষয়ে লেখার জন্য রাখলাম চতুর্থ পর্ব।
আমার খুব প্রিয় একটি উদ্ধৃতি আছে ওটা দিয়েই আবার এই পর্ব শেষ করছি, “মাভৈ! রাত যতো অন্ধকার,প্রত্যুষ ততোই নিকটে জানিবেন “ .....হ্যা নির্দিস্ট তথ্যসূত্র আর যুক্তির নিরিখেই এই দাবি আবার রাখলাম।




প্রাসঙ্গিক তথ্যসূত্র:
১. দখলমুক্ত করার পরে বাদশার কাবা এবং মসজিদ আল হারাম দর্শন https://www.youtube.com/watch?v=eCfv0_ee9pw
২. একটু পাকিস্থানের কাগজ থেকে ,আল কায়দার সূচনা হওয়ার বিষয়টি সঠিক ভাবেই তুলে ধরা হয়েছে এতে https://www.dawn.com/news/503835/thirty-years-on-mecca-mosque-siege-reverberates
৩. একই ভাবে পরবর্তী সন্ত্রাসবাদের যোগ সূত্র নিয়ে সুখপাঠ্য একটি লেখা https://www.thoughtco.com/indispensable-books-on-the-middle-east-2353389
৪. আলোচিত সেই জুহাইমানের সন্তান হয়েছে অন্য রকম একজন সুনাগরিক-প্রমাণিত হয় পরিবেশ একটি বড় ফারাক করে দেয় মানুষের গঠনের https://english.alarabiya.net/en/News/gulf/2018/09/03/Son-of-Juhayman-infamous-Mecca-attacker-promoted-to-be-a-Saudi-Guards-colonel.html
৫. একটু ফিরে দেখা এবং বর্তমান অবস্থার পর্যালোচনা https://www.brookings.edu/events/terrorism-in-saudi-arabia-past-and-present/

Posted at November 18, 2018 |  by Arya ঋষি

0 Comments:

Tags

Text Widget

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.

Blog Archive

© 2013 Arya Rishi. WP Theme-junkie converted by Bloggertheme9Published..Blogger Templates
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.
back to top