All Stories
Showing posts with label ইসলামে বর্বরতা. Show all posts
Showing posts with label ইসলামে বর্বরতা. Show all posts

“গজনীর বর্বর মাহমুদ” 
পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউএটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী' এটা করেছে। সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের  সুপুত্র'মাহমুদ', যে ভারতের ইতিহাসে 'গজনীর মাহমুদ' বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাসকরা দুরুহ মনে হয়।
অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখা আছে। সেইলুটের ধরন বর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তু যুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্যএকই আছে। কোনো রাজনৈতিক মতের কথা বলুন বা ধর্মীয় মতের কথা বলুন,আসল উদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরে অত্যাচার করে নিজে ভালো থাকবো।মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবং তার ধারক ও বাহকদের বাদদিয়ে এই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয়করে যুগে যুগে যা হয়েছে সেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপর অত্যাচার।আজ এই গন্তান্ত্রিক যুগেও সেই কাজ চলছে, সারা পৃথিবীতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠারনামে
অর্থনৈতিক শোষনের পরিকল্পনা।
বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন, রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরাবিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কেরাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে। আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুটকরতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিইছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীহাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমারক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।
যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয়মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটিবিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার সেই দেশ আক্রমনকরেছে। পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে।সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনেহয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতিদিয়েছিলেন। (এই বিষয়ে আর বিস্তারিত প্রশ্ন করবেন না কারন আমি আমার টাইমলাইনে আগেই বেশ কয়েকবার পোষ্টকরেছি।)
আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমনকরেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের শুরু।
এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছুআলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।



অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখা আছে। সেই লুটের ধরন বর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তুযুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্য একই আছে। কোনো রাজনৈতিক মতের কথা বলুন বা ধর্মীয় মতের কথা বলুন, আসলউদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরে অত্যাচার করে নিজে ভালো থাকবো। মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবং তারধারক ও বাহকদের বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয় করে যুগে যুগে যাহয়েছে সেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপর অত্যাচার। আজ এই গন্তান্ত্রিক যুগেও সেই কাজ চলছে, সারা পৃথিবীতেগনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে
অর্থনৈতিক শোষনের পরিকল্পনা।
বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন, রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরাবিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কেরাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে। আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুটকরতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিইছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীহাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমারক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।
যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয়মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটিবিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার সেই দেশ আক্রমনকরেছে। পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে।সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনেহয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতিদিয়েছিলেন।
আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমনকরেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের শুরু।
এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছুআলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।
********
তুর্কী দাস সুবিক্তিগীনের সুপুত্র মাহমুদ। তার ঠাকুরদা, আলাপ্তিগীন ছিলো ‘তুর্কী দাস’, যাদের মুল কাজ ছিলো, খলিফারদেহ রক্ষী হিসাবে। সিন্ধু বিজয়ের পর প্রায় ৩০০ বছর খলিফারা ব্যাস্ত থাকে ইউরোপ, আফ্রিকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করানিয়ে। সিন্ধু বিজয় করতে যে খেসারত দিতে হয়েছিলো, সেই ঘা শুকাতে অনেক সময় লাগে। তাই আরবীরা অন্য দিকে দৃষ্টিদিয়েছিলো। ভারতের হিন্দু রাজাদের শক্তির কিছু পরিচয় ওরা নিজেরাই পেয়েছিলো। আর আলেকজান্ডারের কি পরিনতিহয়েছিলো সেটাও জানতে ওদের বাকী ছিলো না। তাই ওদের দৃষ্টি গেলো অন্য দিকে।
সেই সুযোগে, খলিফার ই বিজিত দেশ উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানের ক্রীত দাসদের একজন আলপ্তীগীন খলিফাররাজত্বের থেকে আফগানিস্তানের একটি অংশ দখল করে নেয়। খলিফাকে সন্তুষ্ট রাখতে তার অধীনে সামন্ত শাসকহিসাবে,কর দিয়ে খলিফার আশীর্বাদ নিয়ে গজনী কেন্দ্রিক সেই রাজত্ব স্তাপন করে। আলপ্তীগীনের ছেলে সুবুক্তিগীন সিন্ধুরউত্তর থেকে শুরু করে ,পাঞ্জাব,প্রাচীন গান্ধার রাজ্য এবং কাশ্মীরের অধীশ্বর ‘শাহী রাজ জয়াপালা’র সংগে সংগ্রামে লিপ্তহয়। সেই প্রচেষ্টা সফল হয় নি (বিস্তারিত পড়ুন আমার আগের লেখা তে)।।
সুবুক্তিগীনের মৃত্যুর পর তার সুপুত্র মাহমুদ গজনীর সুলতান হয় ৯৯৮ সালে। তার ঠিক দু বছর পর মাহমুদ তার শ্যেন দৃষ্টিনিয়ে তাকায় ভারতের দিকে। তার কারন মুলত দুটি---- এক, জয়াপালার হাতে তার বাবার হেনস্তা এবং খলিফাকে খুশীকরতে ভারতে ‘জিহাদী তান্ডব চালিয়ে’ ৩০০ বছর আগে সিন্ধু বিজয়ী মোহাম্মদ বিন কাসিমের অপঘাতে মৃত্যুর (সিন্ধুরাজদাহিরের দুই কন্যার অকুতোভয় কুট বুদ্ধির ফলে) বদলা নিতে।
৩০০ বছরে ইসলামের শিকড় সিন্ধুতে খুব শক্ত ভাবেই গ্রোথিত হয়ে গিয়েছিলো। কোরান,হাদিস এবং শরিয়ত সিন্ধুর জনজীবন নিয়ন্ত্রিত করছে তখন। মুহাম্মদ (গজনী) সেই ‘জিহাদী মন্ত্রে’ সুশিক্ষিত। সে খলিফাকে প্রতিজ্ঞা করলো ‘আমিযতোদিন বাঁচবো, প্রতি বছর হিন্দুস্তানের পুতুল পুজোকারীদের জীবন অতিষ্ট করে দেবো, তাদের সর্বস্ব লুট তরাজ করেকেড়ে নেবো, তাদের মন্দিরের সব মুর্তি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেবো,তাদের জমি জায়গার দখল নেবো, ইসলামী শাসন কায়েমকরবো”। খলিফা জানতো লুটের মালের (গনিমতের মাল) অর্থ , দাস দাসীর (যৌন দাসী) আর অভাব হবে না।
মাহমুদ তার কথা রেখেছিলো। ১০০০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী ৩০ বছরে সে ১৭ বার ভারতে আসে লুট তরাজ করতেআর মন্দির ধ্বংস করতে। তার এই মহান ‘জিহাদী’ কৃত কর্মের জন্য ইসলামিক ঐতিহাসিকরা তাকে অকুন্ঠ প্রশংষাকরেছে। ‘ফতে-নামা’ তে মাহমুদ নিজের সম্বন্ধে লিখেছে “ ধর্ম যুদ্ধ’ র নায়ক হিসাবে। খলিফা ‘আল কাদির বিল্লা’ তারপাঠানো উপঢৌকনের বন্যায় ভেসে তাকে ‘আমিন –উল- মিল্লা’ এবং ‘ইয়ামিন-উদ-দৌলা’ (দক্ষিন হস্ত) বলে উপাধী দিলো।সেই থেকে মাহমুদের বংশ “ইয়ামিনি বংশ’ বলে খ্যাত হলো।
খলিফার আশীর্বাদ ধন্য এবং তারদক্ষিন হস্ত ( ইয়ামিন-উদ দৌলা)খেতাব প্রাপ্ত মাহমুদের ‘জিহাদী’মানসিকতা’ দশ গুন বেড়েগেলো খলিফার কাছের মানুষহবার পর। একের পর একচললো তার ‘ধ্বংসের রথ’-----
১০০০ সালে মাহমুদ কিছু সীমান্তঅঞ্চল দখল করে সেখানেনিজের প্রশাসক নিযুক্ত করে।ওই অঞ্চলে বসবাসকারিহিন্দুদের ধর্ম পরিবর্তনে বাধ্যকরা হোলো, যারা করলো না, তারা মরলো। তাদের উপাসনালয় মাটিতে গুড়িয়ে দেওয়া হলো।
১০০১ থেকে ১০০৩ সাল অবধি তার কেটে গেলো, ওয়াইহিন্দ (প্রাচীন পুরুষপুর =পেশোয়ার) দখলকরতে। রাজা
জয়াপালা বন্ধী হন। তার ১৫ জন সেনাপতি এবং আত্মীয় বন্ধী হলেন। এদের একজন ‘সুখপাল’মুসলমান হয়ে, নওয়াশা শাহ নাম নিয়ে, মাহমুদের অধীনে প্রসাশনের দ্বায়িত্ব পান। এটা ছিলো তারএকটি চাল, রাজা জয়াপালের জীবন বাচানোর জন্য। কিছু দিন পর যখন রাজা জয়াপাল নিজেরপ্রজা এবং রাজ্য রক্ষা না করতে পারার জন্য এবং চারিদিকে ‘জিহাদী তান্ডব’ দেখে আর সহ্য নাকরতে পেরে রাগে, দুঃখে, হতাশায় আগুনে আত্মাহুতি দেন। ঠিক তার পরেই সুখপাল বিদ্রোহ করেএবং হিন্দু হন। মাহমুদ তাকে পরাজিত করে, হত্যা করে। রাজা জায়াপাল ২৫০০০০ (আড়াই লক্ষ---একট স্বর্ন মুদ্রা ,যার নাম দিনার= ১২০ গ্রাম সোনা) স্বর্ন মুদ্রা মুক্তিপন দিয়ে তার এবং সুখপাল বাদেবাকী ১৪ জনের মুক্তি আদায় করেন। জয়াপালের পুত্র আনন্দপাল কাশ্মীরে চলে যান এবং তারস্বাধীনতা সংগ্রাম চালু রাখেন। তিনি, তার ছেলে ত্রিলোচন পাল এবং নাতি ভীম পাল, মাহমুদের সংগেযুদ্ধ করে শহীদ হন। বাকি বংশধরেরা, আত্মীয় স্বজন রা ধর্ম পরিবর্তন করে বেচে যায়। অনেকেইমাহমুদের অধীনে বেতনভুক ছোট বড়ো সৈনাপত্য নিয়ে বেচে থাকে। এই ভাবে একটি শক্তিশালীএবং ঐশ্বর্য্যশালী হিন্দু রাজ্য চিরতরে মুসলমানী শাসনে চলে গেলো। আজ সেই রাজ্যে চলছে ভারতভুমি থেকে বিচ্ছিন্নতার আন্দোলন (কাশ্মীর), সেই শাহী সাম্রাজ্যের বর্তমান বাসিন্দা, যারা এক সময়সনাতনি ছিলো, (পাকিস্তান, আফগানিস্তান) তাদের বংশধরেরাই তাদের পুর্ব পুরুষদের সংষ্কৃতিরধারক বাহকদের সর্বনাশ করতে ঊঠে পড়ে লেগেছে।
মাহমুদের সেক্রেটারী ছিলো আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী। সেই ‘ঊথবী’ বলছেন, ভেরা, মুলতান,যেখানে একটিও মুসলমান ছিলো না, সে গুলো সব সম্পুর্ন ভাবে মুসলিম হয়ে গেলো, কোনো পুতুলপুজা কারী আর রইলো না। তাদের মন্দির ধুলায় মিশে গেলো অনেক মসজিদ তৈরী হলো”।
এই উথবী একজন নামী লোক। এর লেখা দিয়েই শেষ করবো ৩০ বছরের ধ্বংসের বিবরন। পুরোবিবরন লিখতে গেলে প্রায় একটি বই হয়ে যাবে। একের পর এক শহরের পর শহর, গঞ্জের পর গঞ্জমাহমুদের লুটের আর ধ্বংসের সামিল হলো। জন জীবনে সৃষ্টি হলো এক নিদারুন ত্রাসের।মহিলাদের মান সম্মান ধুলায় লুটিয়ে গেলো, মন্দিরের পর মন্দির ধুলায় মিশে গেলো। এটাই হচ্ছে মুলকথা। ১০১৫ সালে কাশ্মীর, এবং এর আগে পরে ১৯৩০ সালের মধ্যে ভেরা, মুলতানের দখল শক্তপোক্ত করে, মথুরা,বারান (বুলন্দসর), কনৌজ (কানপুর) সব জায়গার একই দশা হলো। সারা উত্তরপশ্চিম ভারত তখন এই মাহমুদের ‘জিহাদী তান্ডব’ থেকে থর থর করে কাঁপতে থাকে, কখন মাহমুদআসবে ( কব গব্বর আ জাঁয়েগা) । ১০২৩ সালের চৌদ্দতম তান্ডবে কিরাত,নুর,লোকাট আর লাহোরধ্বংস এবং পরিবর্তিত হয়ে গেলো ্সব প্রাচীন ঐতিহ্য।
মন্দির লুট করা এবং সেটাকে অপবিত্র করা মাহমুদের একটি খেলা ছিলো। কতো মন্দির তার তান্ডবেশেষ হয়ে গেছে সেই তালিকা আজ আর দিয়ে লাভ নেই। কেউ বিশ্বাস করবে না, বলবে প্রমান কি?যে মন্দির আর দাঁড়িয়ে নেই, বেশীর ভাগ স্থানে অন্য প্রার্থনা স্থল তৈরি হয়েছে, তা বলতে গেলেবিরোধীরা চীৎকার শুরু করবে। ছোট গুলো বাদ দিয়ে শুধু মাত্র বড়ো দুটির কথা এখানে লিখবো। ---
থানেশ্বরের ‘চক্রস্বামীর’ মন্দির লুট এবং ধ্বংস করে মন্দিরের ‘বিষ্ণু মুর্তি’ নিয়ে গিয়ে গজনী শহরেতৈরী ‘হিপোড্রোমে’ ফেলে দেওয়া হয়েছিলো। মাহমুদ নিজে মথুরা নগরী এবং সেখানকার মন্দিরেরসৌন্দর্য্যের প্রশংষা করেছে। সেই মথুরা নগরীর সবচেয়ে প্রাচীন এবং বিখ্যাত ‘কৃষ্ণ মন্দির’ লুট করেসে অগাধ ঐশ্বর্য্য হাসিল করে, আর মন্দিরের সব মুর্তি গুড়িয়ে দেয়। উথবীর কথায় (মাহমুদেরসেক্রেটারী আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী) একমাত্র কনৌজে প্রায় ১০০০০ হাজার মন্দির ধ্বংস হয় (আমি বাড়া বাড়ি বলে মনে করছি—কারন এতো মন্দির থাকা এবং তা ধ্বংস করা কি সহজ ব্যাপার? )যারা এই সব অঞ্চলে বাস করতো, তাদের মধ্যে যারা ধর্ম পরিবর্তনে রাজী ছিলো না তারা হয় পালিয়েঅন্যত্র্ গেলো (আমার বাবা এবং আমার মতো উদবাস্তু হলো), নইলে মরলো (ল্যাটা চুকে গেলো)।
চক্রস্বামী মন্দিরের মতো দশ হলো গুজরাটের ‘সোমনাথ’ মন্দিরের। সেখানকার শিব মুর্তি নিয়েগেলো গজনীতে। তার ভাংগা টুকরো দিয়ে তৈরী হলো গজনীর জামা মসজিদের সিড়ি। সেই গজনী ওনেই ,মসজিদ আর নেই। সব পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে মাহমুদেরই এক শত্রু যাদের ওপরেমাহমুদ অত্যাচার করেছিলো। তারাও ছিলো আফগানিস্তানের এক উপজাতি। সোমনাথের শিবমন্দিরের কিছু ভগ্ন অংশ পাঠানো হয়েছিলো খলিফার কাছে। সেই টুকরো শেষ মেশ পৌছায় তুরষ্কে।তাই দিয়ে তৈরী হয় ইস্তানবুলের বিখ্যাত “তোপকাপি” মসজিদের সিড়ি। (আমার কোনোদিন বিশ্বাসহয়নি, যতোদিন না আমি নিজের চোখে দেখে এসেছি ২০১২ সালে সেই সিড়ি, যেখানে পরম গর্বেরসংগে এই ইতিহাস লেখা আছে। ছবি তোলা নিষেধ না হলে দেখাতাম সেই স্ক্রিপ্ট পাথরে খোদাইকরা।)
সোমনাথ মন্দির ধ্বংস এবং লুট মাহমুদের কাছে এক পবিত্র কাজ ছিলো সেটা সে নিজেও লিখেরেখে গেছে ‘ফতে নামা’ তে। এই পবিত্রতা এই জন্য যে, ঠিক একই ভাবে মক্কার কাবা শরীফে , যারনাম ছিলো ‘আল-মান্নাত’ সেখানকার মুর্তি ভেঙ্গেছিলেন নবী নিজে। সোমনাথ লুট এবং ধ্বংসের সালটা ছিলো ১০২৬। তার এই কাজের জন্য পরবর্তি সময়ে সুফী, দরবেশ রা মাহমুদের অতি উচ্চ প্রশংষাকরে গেছে। সমসাময়িক ঐতিহাসিক, কুয়াজ্জিনি, ফার-হিস্তা এবং মাহমুদের সেক্রেটারী আবুনাসের মুহাম্মদ উথবী, সবাই মাহমুদের ৩০ বছর ব্যাপি বর্বরতার বিবরন লিখে গেছেন নিখুত ভাবে।সেই লিপিতে তার অতি উচ্চ প্রশংষা করতে গিয়ে আসল সত্য চেপে রাখতে পারেন নি। আসল সত্যচেপে রাখলে মহিমা কম হয়ে যায়। এই মুসলিম ঐতিহাসিকরা সেই সময় মাহমুদের বর্বরতাকেবর্বরতা না বলে ধর্মীয় কাজ বলেছেন। তাই আসল সত্য বেরিয়ে এসেছে।
সোমনাথ লুটের খবর খলিফার কাছে পৌছালে, খলিফা আল কাদির বিল্লা খুশীতে বিশাল জাক জমককরে উৎসব পালন করে। মাহমুদকে তিনি এবারে দেন নতুন এক উপাধী—‘খাপ-উদ-দৌলা ওয়াআল ইসলাম”। সেই সংগে তাকে হিন্দুস্তানের সম্রাট বলে ঘোষনা করে দিলো। সম্রাট মাহমুদ এইপ্রথম লাহোর থেকে নিজ নামে মুদ্রা প্রচলন করলো।
মাহমুদ যে বিপুল ধন দৌলত ভারত থেকে লুট করে নিয়ে যায় ৩০ বছর ধরে তার হিসাব কষতেচার্টার্ড একাউন্টেন্ট হিম সিম খেয়ে যাবে। আমাদের ঐতিহাসিকেরা বেমালুম চেপে গেলেও,মাহমুদের সেক্রেটারী সেই আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী সেই লুটের বহর স্পষ্ট করে লিখে রেখে গেছে,কারন সেক্রেটারী হিসাবে সেই কাজ তাকে করতে হতো। আমাদের ইরফান হাবিব, রোমিলা থাপারএবং অন্যান্য ভারতীয় ঐতিহাসিকেরা এই সত্য ভারতবাসীর থেকে চেপে গেলেও ঐতিহাসিক ‘কেএস লাল’ এর মতো কিছু ঐতিহাসিক আজো তাদের বিবেক বিদেশীদের (আরবী /তুর্কি) কাছে বেচেদেন নাই। সেই কে এস লালের লেখা প্রবন্ধ প্রকাশিত করে ঐতিহাসিক Andrew G Bostom তৈরীকরেছেন এক প্রামান্য দলিল, যার নাম “The legacy Of Jihad—Islamic Holy war and the fate of the Non-Muslims”, Published by ‘ Prometheus Books’, 59 John Glenn Drive, Amherst,New York- 14228 -2119. ( এই লেখা সেই কে এস লাল এবং Andrew G Bostom এর লেখাকে ভিত্তি করে। প্রমানযারা চাইবেন তারা ঐ ঠিকানায় যোগা যোগ করবেন)
(১)ভারতে বিদেশী শাসন শুরু হয়েছে ৭১২ সাল থেকে শে্যহয়েছ ১৯৪৭ সালে। প্রায় ১২০০ বছর। আরব এবং তুর্কি শাসনচলেছে ১৭৫৭ সাল অবধি প্রায় ১০০০ বছর। ইংরেজ শাসনকরেছে ১৯০ বছর।৭১২ সালে, ইরাকের শাসন কর্তা ‘হেজাজ’ এরভাইপো ‘মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয় থেকে শুরু করেআফগানিস্তানের ‘ঘুর’ রাজ্যে থেকে আসা ‘মোহাম্মদ ঘোরী’ কেউভারতে বসবাস করেনি। এরা সবাই ভারতীয় হিন্দুদের ধনসম্মপত্তি লুট করে নিয়ে নিজের দেশে গিয়ে তাদের আরামদায়কপ্রাসাদ বিলাস বৈভবের মধ্যে বাস করেছ। নিজেদের দেশে চলে

যাবার সময়, নিজের বশংবদ কাউকে শাসন কর্তা হিসাবে রেখে গেছে যারা নিয়মিত ভাবে সেই লুটেরা বিদেশীর বিলাসিতারযোগান দিয়ে গেছে। মুহাম্মদ বিন কাসিম থেকে শুরু করে সুলতানী আমাল এমনকি মোঘল আমলেও তুরষ্কের বিলাসবহুলপ্রাসাদে বাস করা খলিফার খেদমতগারী করা এই আরবী এবং তুর্কি দের একমাত্র কাজ ছিলো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরইংরাজরা এই পরজীবী খলিফা প্রথা বন্ধ করে দেয়। সেই দুঃখে আমাদের গান্ধী মুহাম্মদ আলী নামে দুই ভাইকে নিয়ে ব্রিটিশবিরোধী “খিলাফত আন্দোলন” শুরু করে। আমরা ইতিহাসে গান্ধীর সেই “মড়াকান্না” পড়ে তাকে জাতির জনক এবং‘মহাত্মা’ বলে পুজো করে চলেছি।




‘মাহমুদের লুট করা হিন্দু সম্পত্তির খতিয়ান’
আমাদের কাছে ব্রিটিশ শাসনে ই ভারতীয় হিন্দু দের সর্বনাশ হয়েছে , ১৯০ বছরে লন্ডন সমৃদ্ধিশালী হয়েছে ভারতীয় অর্থে,আর আমরা দরিদ্র হয়ে গেছি। আমরা তাই নিয়ে আজো বিশদ ভাবে তর্ক বিতর্ক ইতিহাস ঘাটা ঘাটি করে চলেছি। কিন্তু, ১০০০ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যে বিপুল ধন সম্পদ আরব, ইরাক,ইরান, বাগদাদ, ব্যাবিলন, সিরিয়া,দামাস্কাস, তুরষ্ক,ইস্তানবুল, কাবুল, গজনী (যদিও সেটা আজ আর নেই, আছে শুধু একটি গ্রাম) শহর গুলোকে এবং আমাদের ঘরের কাছে, বুখারা (বুখারীরা ওখান থেকে এসেই কলকাতায় আমাদের ঘাড়ের ওপরে জাকিয়ে বসে আমাদের ওপর ফতোয়া দিয়েযাচ্ছে), সমরখন্দ, তাসখন্দ ইত্যাদি শহর গড়ে ঊঠেছে তা নিয়ে মোটাই চিন্তা ভাবনা করি না। আমাদের স্বাধীনতারসংগ্রামের ইতিহাস শুরু হয় গান্ধীকে নিয়ে। কিন্তু আমাদের পরাধীনতার ইতিহাস, যা আমরা প্রকারান্তরে আজো আছি এবংভবিষ্যতে হতে চলেছি (যদি না হিন্দুরা তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে নিজ ভুমি এবং সংষ্কৃতি পুনরায় ফিরে পাবার চেষ্টাকরে, যার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন) । যে মোঘলদের নিয়ে আমরা আজ গর্ব করি, সেই মোঘল শাসনের সুত্রপাত যাকে দিয়ে, সেই বাবুর তার লেখা ‘বাবুর নামা’য় সারা জীবন তার সাধের ‘কাবুল’ এ বাস না করতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে গেছে।এই সব বিদেশীদের বংশ ধর আজো তাকিয়ে থাকে পশ্চিমের দিকে,পুবের দিক তাদের না পছন্দ। অথচ তারাই আমদেরকাছে মহান এবং তাদের আজো আমরা আমাদের পোষ্য পুত্র করে রেখে দিয়েছি।, একের পর এক নিজ ভুমি তাদের হাতেতুলে দেবার সব ব্যাবস্থা, আন্দোলন করে চলেছি।

 
অতীতে হিন্দুরাই তাদের নিজেদের দেশটা বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়েছে, সেই সিন্ধু বিজয় থেকে শুরু করে মোঘলদেরশাসন অবধি। আজ সেই খলিফাতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে উগ্র পন্থীরা সিরিয়া ইরাক থেকে এসে কাশ্মীর ,পাকিস্তান, বাংলাদেশ, পশ্চিমবংগে এসে ঘাটি গাড়ছে আমরাই তাদের এখানে পুষে রাখতে সাহায্য করছি। সত্যিই, কি বিচিত্র এইদেশ!!!!!!
১০০০ বছর ধরে কতো হিন্দু সম্পত্তি লুন্ঠিত হয়ে বিদেশে গেছে??? তার পরিমান কতো????
এখানে শধু গজনীর মাহমুদ ৩০ বছরে ১৭ বার ভারত আক্রমন করে যে ধন সম্পত্তি তার দেশে নিয়ে গেছে সেই খতিয়ানদেওয়া হচ্ছে। হিন্দুর অর্থে গজনীর শহর তৈরী হয়েছিলো। শুধূমাত্র মাহমুদের প্রাসাদ (যা তার আততায়ীরা পুড়িয়েদিয়েছিলো) তৈরীতে খরচ হয়েছিলো ৭০ লক্ষ স্বর্ন মুদ্রা, যার একটির ওজন ছিলো ১২০ গ্রাম। কতো সেই অংক টা????? হিসাব করুন। ১৯০ বছরে ব্রিটিশ তার ১০০ ভাগের এক ভাগ ও নিতে পারেনি, কারন নিয়ে যাবার মতো বিশেষ কিছু আরবাকি ছিলো না। ঝড়তি পড়তি যা স্থানীয় মুসলিম শাসক দের কাছে পড়েছিলো বা জিহাদীদের নজরে পড়েনি, তাই নিয়েগেছে ,যেমন “কোহিনুর”, আর বেশী কি???? নীলের (ইন্ডিগো) কথা বলছেন??? তার থেকেও অনেক বেশী ‘নীল” এইদেশে চাষ হতো এবং তা গেছে ঐ সব আরবী, তুর্কি দুনিয়ায়। ভারতের সব মসলিন দিয়েই তৈরী হতো খালিফা,সুলতান,আমীর উমরাহ দের পোষাক আসাক, দরজা জানালার পর্দা। (নীলের সেই হিসাব ও পাবেন আমার কাছে।)
এই হিসাব, কারো কষ্ট কল্পিত কাহিনী নয়। মাহমুদের সচিব ‘আবু নাসের মোহাম্মদ উথবী’, যে সেই হিসাব স্বযত্নে লিখেরেখেছিলো তার মনিবের জন্য এবং তার কাছে হিসাব দেবার জন্য, সেই হিসাব আজ আমাদের সামনে এসেছে। তারভিত্তিতে লেখা ঐতিহাসিক কে এস লাল’এর লেখা ভারতে ইসলামিক আগ্রাসনের তিন অধ্যায় ( সিন্ধু বিজয়, গজনীরমাহমুদ এবং ঘোরী –পৃথ্বীরাজ)। সেই থেকে সংকলিত হয়েছে, “THe legacy Of Jihad Edited by Andrew G Bostom”.Published by Prometheus Books, New York.Page-440-446. আমি শধু বাংলা ভাষায় তার সার সংক্ষেপকরেছি আপনাদের জন্য (বিশেষ করে আমার এক ফেসবুক ভাই এর অনুরোধে। ) দেখুন সেই হিসাব, যে হিসাব আমাদেরকাছ থেকে আজ অবধি লুকিয়ে রাখা হয়েছে আমাদের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেবার জন্য।।
(২)
লেখাটা আমার স্বাভাবিক লেখার মতো বেশ বড়ো, কারন ৩০ বছরের লুট অল্পেতে লেখা যায় না।
*** হিসাব কষার আগে এটা জানতে হবে ‘দিনার’ এবং ‘দিরহাম’কাকে বলে। দিনার হচ্ছে এক একটি স্বর্ন মুদ্রা যা সেই সময়প্রচলিত ছিলো আরবে। ভারতে সেটা স্বর্ন মুদ্রা নামেই প্রচলিত ছিলো। একটি স্বর্ন মুদ্রায় থাকতো ১২০ গ্রাম খাটি সোনা।বর্তমান বাজার মুল্যে সেটা দাঁড়ায় ৩০০০০ টাকা করে এক গ্রামের দাম ধরলে প্রায় ৩৬০০০০ (তিন লক্ষ ষাট হাজার)একটি স্বর্ন মুদ্রার দাম। সেই সময় ১ টাকায় ৪০ মন চাল বাজারে পাওয়া যেতো। (অনেক বার হিসাব করার চেষ্টা করেপারিনি, যদিও স্কুল ফাইনালে অংকের দুটি বিষয়ে একশোর মধ্যে একশো ই পেয়েছিলাম। মাইরি বলছি একদম টোকাটুকিকরিনি। তোমাদের মধ্যে যে বা যারা হিসাব পারদর্শী আমাকে একটূ বলো Inflation ইত্যাদি ধরে একটি স্বর্ন মুদ্রার দাম কতোহয়???)*******
১) মাহমুদ ‘হিন্দু শাহী রাজ’ রাজা জয়াপাল এবং তার ১৫ জন আত্মীয়, সৈন্যাধক্ষ্য কে আটক রেখে ২৫০,০০০ (আড়াইলক্ষ দিনার ) এর মুক্তিপন আদায় করে।
২) রাজা জয়াপালার গলার নেকলেস টির সেই সময়কার দাম ছিলো ২০০,০০০ (দুই লক্ষ দিনার)। সেটি মাহমুদ নিয়ে যায়।
৩) রাজা জয়াপালার আত্মীয় স্বজন দের গায়ের গহনা ইত্যাদির মোট মুল্য ৪০০, ০০০ (চার লক্ষ ) দিনার
৪) ‘ভেরা’ শহর, যাকে মাহমুদের সেক্রেটারী ‘উথবী’ উল্লেখ করেছে, ‘ মানুষ যতোটা কল্পনা করতে পারে তেমনিসম্পদশালী’ ছিলো। সেই ভেরা লুট করতে প্রায় ২ বছরে ২ বার মাহমুদকে আসতে হয়। (১০০৪ সালের প্রথম থেকে ১০০৫সালএর শেষ) সমস্ত ধন দৌলত নিয়ে যেতে কয়েক হাজার ঊঠ নিয়ে আসতে হয় ।
৫) ১০০৫ থেকে ১০০৬ সাল লেগে যায় ‘মুলতান’ লুট করতে । সেখান থেকে যে সম্পত্তি নিয়ে যায় তার মোট মুল্য২০,০০০,০০০ (কুড়ি লক্ষ) ‘দিরহাম’ (রৌপ্য মুদ্রা)
৬) রাজা জয়াপালের এক সেনাপতি যাকে মাহমুদ মুসলমান বানিয়ে নাম দিয়েছিলো ‘নওয়াশা শাহ’, সে রাজা জয়াপালেরআগুনে আত্মাহুতি দেবার পর পুনরায় হিন্দু হয়। মাহমুদ তাকে পরাজিত এবং আটক করে তাকে শুধু হত্যা করে তাই নয়তার সব সম্পত্তি যার মোট মুল্য ৪,০০,০০০ (চার লক্ষ) দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা)
৭) মাহমুদ “ভীম নগর” দুর্গ দখল করে সেখানকার ‘হিন্দু শাহী মুদ্রা’ র ৭০,০০,০০০ (সত্তর লক্ষ) লুট করে নিয়ে যায়।
8) ‘ভীম নগর’ দুর্গে ছিলো একটি পুজা মন্ডপ। সেটি ছিলো ১৫ গজ (৪৫ ফুট) চওড়া, ৩০ গজ (৯০ ফুট) লম্বা। তার দুটি খুটিছিলো সোনার,দূটি রুপোর, ওপরের ছাঊনি (গম্বুজ) রুপোর । মন্ডপটি খুলে রাখা যেতো। সেটির নিয়ে যায়। তার মুল্য‘উথবী’ উল্লেখ করে নি।
৯) ‘বারান’ (বুলন্দসর) থেকে মাহমুদ লুট করে ১০,০০০,০০০ (দশ লক্ষ) রৌপ্য মুদ্রা।
১০) ‘মথুরা’ মন্দির লুট করে ৫ টি সোনার ‘রাধা –কৃষ্ণ’ মুর্তি নিয়ে যায়, যার মোট ওজন ৯৮৩০০ মিসকাল (দশ মন) ।(আমি ব্যাংককে ৫ টনের বুদ্ধ মুর্তি দেখে এসেছি,সুতরাং ২ মনের রাধা-কৃষ্ণ মুর্তি অসম্ভব নয়)। তাছাড়া মোট ২০০ টিরৌপ্য নির্মিত নানা দেব দেবীর মুর্তি নিয়ে যায়।
১১) কনৌজ, মুঞ্জ,আশনি, সার্বা ইত্যাদি লুট করে অপরিমিত ঐশ্বর্য্য নিয়ে যায়।
১২) ‘সোমনাথ’ মন্দির থেকে মাহমুদ নিয়ে যায় এক বিপুল ঐশ্বর্য্য। তার পরিমান শুনলে পরম বিশ্বাসীর ও অবিশ্বাস হবে।কিন্তু ‘উথবী’ র লেখা বিশ্বাস না করে কার কথা বিশ্বাস করবো? সেই লুটের মোট অংক উথবী করেছে ২০,০০০, ০০০ স্বর্নমুদ্রা বা ‘দিনার’।
১৩) লুটের বহর ৩০ বছরে এতো বিশাল ছিলো যে মাহমুদ, সেই অপর্য্যাপ্ত সম্পদ দেখভাল করা এবং সুষ্ঠ ভাবে গজনীতেনিয়ে যাবার জন্য দু জন হিসাব রক্ষক এবং ব্যাবস্থাপক নিযুক্ত করে। সেই দুজনের নাম ও উথবী বার বার উল্লেখ করেছে।সেই দুই মহাপুরুষ হচ্ছেন ‘আলতুন্টাস’ এবং ‘আশীক্তিন’।
১৪) শুধু মাত্র সুলতান নয়। তার সৈণ্য সামন্ত হিন্দু রাজাদের মৃত হিন্দু সৈন্যদের দেহ তল্লাশী করে তাদের গয়না পত্র, সাধারন হিন্দুদের ঘর বাড়ি লুট করে তাদের সম্পত্তি নিয়ে যায়। লুটের এই ‘মহা সুযোগ’ নিতে স্থানীয় হিন্দু লোকের মধ্যেওমাহমুদের সৈন্য বাহিনীতে যোগ দেবার জন্য কাড়া কাড়ি পড়ে যায়। (অবিশ্বাস্য হলেও একেবারে খাটি কথা ‘উথবী’লিখেছে।। দেশী গব্বরের অভাব কোনো কালেই ভারতে ছিলো না। মুসলমান ‘জিহাদী’দের আরবী /তুর্কি সৈন্যের সংখ্যাথেকেও দেশী হিন্দু লুটেরার সংখ্যা খুব কম ছিলো বলে আমার মনে হয় না। ইতিহাসে সে কথা, ফা-রিস্তা, আলবেরুনী লিখেরেখে গেছেন। ভুলে যাবেন না, আকবরের হয়ে রানা মানসিং ৭৭ টি যুদ্ধ করে যার মধ্যে ৫৭ টি যুদ্ধ সে জেতে এবং বিজিতরাজ্য আকবর কে দেয়,নিজে রাখে লুটের মাল। রানা প্রতাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আর কেউ করেনি ওই মানসিং। আমাদেরবাংলাদেশ দখল আর কেউ করেনি,করেছিলো ওই শয়তান মানসিং এবং সে তিন তিন বার বাংলা,বিহার ,উড়িষ্যার প্রসাশকহয় আকবরের অধীনে। যশোরের বিখ্যাত ‘মা কালী’ র মুর্তি এখন শোভা পাচ্ছে মানসিং এর “অম্বর” দুর্গে। পা চাটা কুকুরেরকোনো অভাব সেই রামায়নের যুগ থেকে আজ অবধি ভারতে কম পড়ে যায় নি।)
১৫) শাহী সাম্রাজ্য থেকে লুটের বহ্র এমনই ছিলো যে, রাজা জয়াপাল, আনন্দপাল, ত্রিলোচন পাল, কারো মুদ্রা আজো খুজেপাওয়া যায়নি। (তাই আমাদের ঐতিহাসিকেরা ধরেই নিয়েছেন ওই বংশ ছিলোই না। তাহলে সুবিক্তিগীন এবং মাহমুদ ভুতেরসংগে যুদ্ধ করেছিলো)।
১৬) অর্থনিতী বিদেরা বলেন “ মাহমুদের লুটের পর অর্থের বন্যা ভারত থেকে চলে গেলো সিন্ধুর পশ্চিম পারে। গজনীরএবং আরবী দুনিয়ার মুদ্রা (দিনার এবং দিরহাম) শক্ত পোক্ত হয়ে শুধু স্থীরতা পেলো তাই নয়,হয়ে গেলো বিশেষ দামী।ভারতীয় স্বর্ন মুদ্রার সোনার পরিমান ১২০ গ্রামের জায়গায় নেমে এলো ৬০ গ্রামে আর রৌপ্য মুদ্রার দাম আর প্রায় রইলোনা ব্যাবাসার জন্য। সারা দুনিয়ার কাছে ভারতীয় মুদ্রা আর খুব বেশী আকর্ষনীয় রইলো না”।
“মাহমুদের বর্বরতার সুদুর প্রসারী ফল”
পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার, কুষান, আরবী এবং পরবর্তীতে তুর্কি দাসদের দ্বারা একের পর এক আগ্রাসী আক্রমনের যে সমুহ ফল বৈদিক সনাতনিভারতবর্ষের জন জীবনে পড়লো তার ফলে যে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবংসাংষ্কৃতিক পরিবর্তন হলো তার সঠিক মুল্যায়ন আজ অবধি হয়নি।
কি করে বৈদিক আফগানিস্তান (কেকয়, কম্বোজ এবং গান্ধার) আজ এক সম্পুর্নভিন্ন নিম্ন মানের সংষ্কৃতির এবং ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদীদের বিচরনস্থল হয়েছে তারইতিহাস আমরা জেনেছি। আজ যে পাকিস্তান ঝড়তি পড়তি ভারতকে শেষ
করার খেলায় মেতেছে, নিউক্লিয়ার বোম দিয়ে উড়িয়ে দেবার কথা বলছে (আজইআমেরিকান সামরিক প্রধানের বক্তব্য পড়ুন) ওই অঞ্চল তো সিন্ধু এবং হিন্দু শাহীসাম্রাজ্যের অংশ ছিলো। যে বাংলাদেশে আজ উগ্রপন্থীরা সমবেত হচ্ছে সেটাইতো বৈদিক সনাতনী ছিলো। সে সব কোথায় হারিয়ে গেলো??? যেসামাজিক,অর্থনৈতিক এবং সাংষ্কৃতিক পরিবর্তন এই বৈদিক সনাতনী সভ্যতার জন্ম ভুমিতে হয়েছে সেই সার্বিক পরিবর্তনচীরস্থায়ী এবং মানব সভ্যতার ইতিহাসে অশ্রুতপুর্ব এবং অন্য কোনো উদাহরন নেই।
উত্তর পশ্চিম ভারতবর্ষ তো অনেক আগেই চলে গেছে। পশ্চিম ভারত পাকিস্তান হয়ে গেছে। কাশ্মীর নিয়ে তো সমস্যারশেষ নেই। পুর্ব ভারতের এক বিশাল ভুমি বাংলাদেশ। পশ্চিমবাংলা ধুকছে।
সনাতনি দর্শন হিংসায় বিশ্বাসী নয়। সনাতনি সভ্যতা শান্তি সম্প্রতির কথা বলে। মানবিকতা সেখানেই, সমৃদ্ধি শান্তিতেধ্বংসে নয়। এই চরম ঐশ্বরিক কথা ওই অঞ্চলে আজ আর কেউ শুনতে পাবেন না কোনো দিন। নীল চাষীদের অপরেব্রিটিশের অত্যচারের কথা আমরা “নীল দর্পন” জেনেছি। তার লেখক উত্তর ২৪ পরগনার নিমতলাতে (বনগাঁর কাছে ) জন্মেছিলেন। তিনি যদি জানতেন, নীল চাষ আগেও হতো, তাহলে হয়তো আর একটি নাটক লিখতেন। মাহমুদ প্রতি বছর যেপরিমানে নীল নিজের জন্য নিয়ে যেতো এবং তার প্রভু খলিফার কাছে পাঠাতো তার হিসাব আছে “উথবী” র লেখাতে। সেইকথা লিখে এই ইতিহাস আর দীর্ঘায়িত করবো না। বেশী লিখলে কল্প কষ্টিত এবং অসত্য বলে অনেকে সমালোচনার ঝড়বইয়ে দেবেন জানি।
আসুন আমরা দেখি, মাহমুদের উত্তর পশ্চিম ভারতকে শ্মশান ভুমি করে দেবার পর, কি করে ‘জিহাদী তান্ডব’এসেপৌছালো খোদ দিল্লীতে। একেবারে সনাতনি ভারতের হৃদস্থলে। সেই কাহিনীও অতি করুন।। বুকে পাথর দিয়ে সেই কথাশুনুন। সেই ইতিহাসকেও আমাদের থেকে গোপন করে রাখা হয়েছে।ইতিহাস যুগে যুগে শাসকদের কথা মতোই লেখাহয়েছে বেশীর ভাগ সময়। খুব কম ঐতিহাসিক আছেন যারা সত্যবাদী। আমাদের দেশে রমেশ চন্দ্র মজুমদার, যদুনাথসরকার, কে এস লাল ,শ্রী বাস্তবের লেখা কে পড়ে???
এখন তো রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিবের দিন, এই দুজনেই বামপন্থী মতের প্রতিষ্ঠা করতে হিন্দু সভ্যতার ইতিহাসএকেবারে চেপে গেছে ।শুধু তাই নয় বিকৃত করেছে। কারন আর কিছু নয়। চানক্য ই বলেছেন আর ইংরেজ ম্যাকুলেবলেছে, কোনো জাতিকে শেষ করতে হলে, পদানত রাখতে হলে বা নিজের মত চাপিয়ে দিতে চাইলে, প্রথম এবং অকৃত্রিমকাজ সেই জাতির ইতিহাস , সংষ্কৃতি, ধর্ম বিকৃত করা, গালাগালি দেওয়া, তাদের উপাসনা স্থল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া। যুগেযুগে অনেক মহামানব এই কাজ করেছেন। ভারতের হিন্দুদের ওপরে এই অভব্য কাজ করা হয়েছে সব থেকে বেশী।।
ইরফান হাবিব ই বলেছে "হিন্দুরা জামা কাপড় পরতে শিখেছে বিদেশীদের থেকে যারা ভারত শাসন করেছে"। আমাদের পুর্বপুরুষরা সব তাহলে ল্যাংটো থাকতো, তাই না???


লেখক-
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
কোলকাতা- ভারত।

গজনীর মাহমুদ


“গজনীর বর্বর মাহমুদ” 
পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউএটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী' এটা করেছে। সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের  সুপুত্র'মাহমুদ', যে ভারতের ইতিহাসে 'গজনীর মাহমুদ' বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাসকরা দুরুহ মনে হয়।
অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখা আছে। সেইলুটের ধরন বর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তু যুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্যএকই আছে। কোনো রাজনৈতিক মতের কথা বলুন বা ধর্মীয় মতের কথা বলুন,আসল উদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরে অত্যাচার করে নিজে ভালো থাকবো।মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবং তার ধারক ও বাহকদের বাদদিয়ে এই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয়করে যুগে যুগে যা হয়েছে সেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপর অত্যাচার।আজ এই গন্তান্ত্রিক যুগেও সেই কাজ চলছে, সারা পৃথিবীতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠারনামে
অর্থনৈতিক শোষনের পরিকল্পনা।
বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন, রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরাবিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কেরাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে। আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুটকরতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিইছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীহাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমারক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।
যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয়মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটিবিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার সেই দেশ আক্রমনকরেছে। পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে।সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনেহয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতিদিয়েছিলেন। (এই বিষয়ে আর বিস্তারিত প্রশ্ন করবেন না কারন আমি আমার টাইমলাইনে আগেই বেশ কয়েকবার পোষ্টকরেছি।)
আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমনকরেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের শুরু।
এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছুআলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।



অনেক বর্বর সাম্রাজ্যবাদী এবং লুটেরাদের কাহিনী ইতিহাসে লেখা আছে। সেই লুটের ধরন বর্তমানে একটু পালটেছে, কিন্তুযুদ্ধবাজদের মনের আসল উদ্দেশ্য একই আছে। কোনো রাজনৈতিক মতের কথা বলুন বা ধর্মীয় মতের কথা বলুন, আসলউদ্দেশ্য নিরীহ মানুষের ওপরে অত্যাচার করে নিজে ভালো থাকবো। মোদ্দা কথা এটাই। একমাত্র সনাতনি দর্শন এবং তারধারক ও বাহকদের বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক, সামাজিক মতকে আশ্রয় করে যুগে যুগে যাহয়েছে সেটা বিরুদ্ধবাদী নিরীহ মানুষের অপর অত্যাচার। আজ এই গন্তান্ত্রিক যুগেও সেই কাজ চলছে, সারা পৃথিবীতেগনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে
অর্থনৈতিক শোষনের পরিকল্পনা।
বর্তমান বাদ দেই। ঐতিহাসিক আমলে, পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার (মহান???), এটিলা দি হুন, রোম সম্রাটেরা, আরবী তুর্কি জিহাদীরা, চেংগিজ খান, হুন রাজ মিহিরকুল, রক্ত পিপাসু তৈমুর লং, কুষান সম্রাটেরা , মোঘল সম্রাটেরাবিশেষ করে আকবর আর ঔরংজেব, ক্যমুনিষ্ট রা, নাৎসী বাহিনী, এরা সবাই এই কাজ করেছে। অন্যের দেশ দখল করে,তাদের সর্বাস্ব লুট করে নিজে আরাম আয়েষ করেছে। এরা এই সব করেছে, কোনো বিশেষ একটি ধর্মীয় মোড়কেরাজনৈতিক মতবাদকে আশ্রয় করে। আক্রমন করো, ধ্বংস করো ,লুট করো, লুটের মাল নিজে রাখো আর উচ্ছিষ্ট যারা লুটকরতে সাহায্য করলো তাদের মধ্যে বিলি করে তাদের খুশী রাখো ( রানা মানসিংহের সংগে আকবরের অলিখিত চুক্তিইছিলো, তুমি জায়গা দখল করো- জায়গা আমার,লুটের মাল তোমার। বর্তমান অনেক রাজনৈতিক নেতারাও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীহাবার জন্য ওই একই কাজ করেন—“ সাধারন মানুষকে লুট করো, নিজে রাখো কিন্তু আমাকে ক্ষমতাশালী করো। আমারক্ষমতা থাকলে তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না”। এই তো চলছে মানুষের ইতিহাস।
যে জন্য এতো কথা বলার, সেটা হলো, ইতিহাস ঘাটলে এমন নজির পাওয়া যাবে না যে মাত্র একটি প্রাচীন দেশের শান্তিপ্রিয়মানুষকে লুট তরাজ করে, তাদের ধর্মীয় স্থান কলুষিত করে, অসংখ্য সাধারন মানুষের রক্তের বিনিময়ে , কোনো একটিবিশেষ ধর্মীয় মতকে আশ্রয় করে এবং সেই মতের প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ব্যাক্তি ৩০ বছর ধরে ১৭ বার সেই দেশ আক্রমনকরেছে। পারস্য সম্রাট সাইরাস থেকে শুরু করে তৈমুর , কেউ এটা করেনি। কিন্তু, একজন “মহান জিহাদী’ এটা করেছে।সেই বর্বর টা হচ্ছে তুর্কী দাস সুবুক্তিগীনের (যার কথা আমরা আগেই জেনেছি) সুপুত্র ‘মাহমুদ’, যে ভারতের ইতিহাসে‘গজনীর মাহমুদ’ বলে বিখ্যাত। তার কীর্তি কলাপ, ধংস লীলা, লুটের বহর জানলে বিস্মিত হতে হয়, বিশ্বাস করা দুরুহ মনেহয়। সেই বর্বরের হাত থেকে নিজ রাজ্য এবং প্রজা কুলকে রক্ষা না করতে পেরে শাহী রাজ জয়াপাল আগুনে আত্মাহুতিদিয়েছিলেন।
আমাদের শেখা ইতিহাসে এই “মহান জিহাদী” র কথা কি আছে?? শুধু এই লেখা আছে ‘মাহমুদ’ ১৭ বার ভারত আক্রমনকরেছিলো। কিন্তু কোথাও পাবেন না, ওই ১৭ বারে সে কি করেছিলো? শান্তির বানী প্রচার করেছিলো না ‘অশান্তির দাবানল’ জালিয়েছিলো, সারা উওর-পশ্চিম ভারতে। সেই থেকে ভারত বাসীর সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্দশা , রাজনৈতিক, সামাজিক,ধর্মীয় এবং সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের শুরু।
এই ইতিহাস অতি করুন এবং কঠিন বাস্তব, যা আমরা জানি না, আমাদের আজো জানানো হয়নি। পরবর্তি কিছুআলোচনায় আমরা দেখবো সেই ‘ আশান্তির দাবানল’ এর বিধ্বংসী তান্ডবতা, লুটের বহর এবং তার ফলশ্রুতি।
********
তুর্কী দাস সুবিক্তিগীনের সুপুত্র মাহমুদ। তার ঠাকুরদা, আলাপ্তিগীন ছিলো ‘তুর্কী দাস’, যাদের মুল কাজ ছিলো, খলিফারদেহ রক্ষী হিসাবে। সিন্ধু বিজয়ের পর প্রায় ৩০০ বছর খলিফারা ব্যাস্ত থাকে ইউরোপ, আফ্রিকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করানিয়ে। সিন্ধু বিজয় করতে যে খেসারত দিতে হয়েছিলো, সেই ঘা শুকাতে অনেক সময় লাগে। তাই আরবীরা অন্য দিকে দৃষ্টিদিয়েছিলো। ভারতের হিন্দু রাজাদের শক্তির কিছু পরিচয় ওরা নিজেরাই পেয়েছিলো। আর আলেকজান্ডারের কি পরিনতিহয়েছিলো সেটাও জানতে ওদের বাকী ছিলো না। তাই ওদের দৃষ্টি গেলো অন্য দিকে।
সেই সুযোগে, খলিফার ই বিজিত দেশ উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানের ক্রীত দাসদের একজন আলপ্তীগীন খলিফাররাজত্বের থেকে আফগানিস্তানের একটি অংশ দখল করে নেয়। খলিফাকে সন্তুষ্ট রাখতে তার অধীনে সামন্ত শাসকহিসাবে,কর দিয়ে খলিফার আশীর্বাদ নিয়ে গজনী কেন্দ্রিক সেই রাজত্ব স্তাপন করে। আলপ্তীগীনের ছেলে সুবুক্তিগীন সিন্ধুরউত্তর থেকে শুরু করে ,পাঞ্জাব,প্রাচীন গান্ধার রাজ্য এবং কাশ্মীরের অধীশ্বর ‘শাহী রাজ জয়াপালা’র সংগে সংগ্রামে লিপ্তহয়। সেই প্রচেষ্টা সফল হয় নি (বিস্তারিত পড়ুন আমার আগের লেখা তে)।।
সুবুক্তিগীনের মৃত্যুর পর তার সুপুত্র মাহমুদ গজনীর সুলতান হয় ৯৯৮ সালে। তার ঠিক দু বছর পর মাহমুদ তার শ্যেন দৃষ্টিনিয়ে তাকায় ভারতের দিকে। তার কারন মুলত দুটি---- এক, জয়াপালার হাতে তার বাবার হেনস্তা এবং খলিফাকে খুশীকরতে ভারতে ‘জিহাদী তান্ডব চালিয়ে’ ৩০০ বছর আগে সিন্ধু বিজয়ী মোহাম্মদ বিন কাসিমের অপঘাতে মৃত্যুর (সিন্ধুরাজদাহিরের দুই কন্যার অকুতোভয় কুট বুদ্ধির ফলে) বদলা নিতে।
৩০০ বছরে ইসলামের শিকড় সিন্ধুতে খুব শক্ত ভাবেই গ্রোথিত হয়ে গিয়েছিলো। কোরান,হাদিস এবং শরিয়ত সিন্ধুর জনজীবন নিয়ন্ত্রিত করছে তখন। মুহাম্মদ (গজনী) সেই ‘জিহাদী মন্ত্রে’ সুশিক্ষিত। সে খলিফাকে প্রতিজ্ঞা করলো ‘আমিযতোদিন বাঁচবো, প্রতি বছর হিন্দুস্তানের পুতুল পুজোকারীদের জীবন অতিষ্ট করে দেবো, তাদের সর্বস্ব লুট তরাজ করেকেড়ে নেবো, তাদের মন্দিরের সব মুর্তি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেবো,তাদের জমি জায়গার দখল নেবো, ইসলামী শাসন কায়েমকরবো”। খলিফা জানতো লুটের মালের (গনিমতের মাল) অর্থ , দাস দাসীর (যৌন দাসী) আর অভাব হবে না।
মাহমুদ তার কথা রেখেছিলো। ১০০০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী ৩০ বছরে সে ১৭ বার ভারতে আসে লুট তরাজ করতেআর মন্দির ধ্বংস করতে। তার এই মহান ‘জিহাদী’ কৃত কর্মের জন্য ইসলামিক ঐতিহাসিকরা তাকে অকুন্ঠ প্রশংষাকরেছে। ‘ফতে-নামা’ তে মাহমুদ নিজের সম্বন্ধে লিখেছে “ ধর্ম যুদ্ধ’ র নায়ক হিসাবে। খলিফা ‘আল কাদির বিল্লা’ তারপাঠানো উপঢৌকনের বন্যায় ভেসে তাকে ‘আমিন –উল- মিল্লা’ এবং ‘ইয়ামিন-উদ-দৌলা’ (দক্ষিন হস্ত) বলে উপাধী দিলো।সেই থেকে মাহমুদের বংশ “ইয়ামিনি বংশ’ বলে খ্যাত হলো।
খলিফার আশীর্বাদ ধন্য এবং তারদক্ষিন হস্ত ( ইয়ামিন-উদ দৌলা)খেতাব প্রাপ্ত মাহমুদের ‘জিহাদী’মানসিকতা’ দশ গুন বেড়েগেলো খলিফার কাছের মানুষহবার পর। একের পর একচললো তার ‘ধ্বংসের রথ’-----
১০০০ সালে মাহমুদ কিছু সীমান্তঅঞ্চল দখল করে সেখানেনিজের প্রশাসক নিযুক্ত করে।ওই অঞ্চলে বসবাসকারিহিন্দুদের ধর্ম পরিবর্তনে বাধ্যকরা হোলো, যারা করলো না, তারা মরলো। তাদের উপাসনালয় মাটিতে গুড়িয়ে দেওয়া হলো।
১০০১ থেকে ১০০৩ সাল অবধি তার কেটে গেলো, ওয়াইহিন্দ (প্রাচীন পুরুষপুর =পেশোয়ার) দখলকরতে। রাজা
জয়াপালা বন্ধী হন। তার ১৫ জন সেনাপতি এবং আত্মীয় বন্ধী হলেন। এদের একজন ‘সুখপাল’মুসলমান হয়ে, নওয়াশা শাহ নাম নিয়ে, মাহমুদের অধীনে প্রসাশনের দ্বায়িত্ব পান। এটা ছিলো তারএকটি চাল, রাজা জয়াপালের জীবন বাচানোর জন্য। কিছু দিন পর যখন রাজা জয়াপাল নিজেরপ্রজা এবং রাজ্য রক্ষা না করতে পারার জন্য এবং চারিদিকে ‘জিহাদী তান্ডব’ দেখে আর সহ্য নাকরতে পেরে রাগে, দুঃখে, হতাশায় আগুনে আত্মাহুতি দেন। ঠিক তার পরেই সুখপাল বিদ্রোহ করেএবং হিন্দু হন। মাহমুদ তাকে পরাজিত করে, হত্যা করে। রাজা জায়াপাল ২৫০০০০ (আড়াই লক্ষ---একট স্বর্ন মুদ্রা ,যার নাম দিনার= ১২০ গ্রাম সোনা) স্বর্ন মুদ্রা মুক্তিপন দিয়ে তার এবং সুখপাল বাদেবাকী ১৪ জনের মুক্তি আদায় করেন। জয়াপালের পুত্র আনন্দপাল কাশ্মীরে চলে যান এবং তারস্বাধীনতা সংগ্রাম চালু রাখেন। তিনি, তার ছেলে ত্রিলোচন পাল এবং নাতি ভীম পাল, মাহমুদের সংগেযুদ্ধ করে শহীদ হন। বাকি বংশধরেরা, আত্মীয় স্বজন রা ধর্ম পরিবর্তন করে বেচে যায়। অনেকেইমাহমুদের অধীনে বেতনভুক ছোট বড়ো সৈনাপত্য নিয়ে বেচে থাকে। এই ভাবে একটি শক্তিশালীএবং ঐশ্বর্য্যশালী হিন্দু রাজ্য চিরতরে মুসলমানী শাসনে চলে গেলো। আজ সেই রাজ্যে চলছে ভারতভুমি থেকে বিচ্ছিন্নতার আন্দোলন (কাশ্মীর), সেই শাহী সাম্রাজ্যের বর্তমান বাসিন্দা, যারা এক সময়সনাতনি ছিলো, (পাকিস্তান, আফগানিস্তান) তাদের বংশধরেরাই তাদের পুর্ব পুরুষদের সংষ্কৃতিরধারক বাহকদের সর্বনাশ করতে ঊঠে পড়ে লেগেছে।
মাহমুদের সেক্রেটারী ছিলো আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী। সেই ‘ঊথবী’ বলছেন, ভেরা, মুলতান,যেখানে একটিও মুসলমান ছিলো না, সে গুলো সব সম্পুর্ন ভাবে মুসলিম হয়ে গেলো, কোনো পুতুলপুজা কারী আর রইলো না। তাদের মন্দির ধুলায় মিশে গেলো অনেক মসজিদ তৈরী হলো”।
এই উথবী একজন নামী লোক। এর লেখা দিয়েই শেষ করবো ৩০ বছরের ধ্বংসের বিবরন। পুরোবিবরন লিখতে গেলে প্রায় একটি বই হয়ে যাবে। একের পর এক শহরের পর শহর, গঞ্জের পর গঞ্জমাহমুদের লুটের আর ধ্বংসের সামিল হলো। জন জীবনে সৃষ্টি হলো এক নিদারুন ত্রাসের।মহিলাদের মান সম্মান ধুলায় লুটিয়ে গেলো, মন্দিরের পর মন্দির ধুলায় মিশে গেলো। এটাই হচ্ছে মুলকথা। ১০১৫ সালে কাশ্মীর, এবং এর আগে পরে ১৯৩০ সালের মধ্যে ভেরা, মুলতানের দখল শক্তপোক্ত করে, মথুরা,বারান (বুলন্দসর), কনৌজ (কানপুর) সব জায়গার একই দশা হলো। সারা উত্তরপশ্চিম ভারত তখন এই মাহমুদের ‘জিহাদী তান্ডব’ থেকে থর থর করে কাঁপতে থাকে, কখন মাহমুদআসবে ( কব গব্বর আ জাঁয়েগা) । ১০২৩ সালের চৌদ্দতম তান্ডবে কিরাত,নুর,লোকাট আর লাহোরধ্বংস এবং পরিবর্তিত হয়ে গেলো ্সব প্রাচীন ঐতিহ্য।
মন্দির লুট করা এবং সেটাকে অপবিত্র করা মাহমুদের একটি খেলা ছিলো। কতো মন্দির তার তান্ডবেশেষ হয়ে গেছে সেই তালিকা আজ আর দিয়ে লাভ নেই। কেউ বিশ্বাস করবে না, বলবে প্রমান কি?যে মন্দির আর দাঁড়িয়ে নেই, বেশীর ভাগ স্থানে অন্য প্রার্থনা স্থল তৈরি হয়েছে, তা বলতে গেলেবিরোধীরা চীৎকার শুরু করবে। ছোট গুলো বাদ দিয়ে শুধু মাত্র বড়ো দুটির কথা এখানে লিখবো। ---
থানেশ্বরের ‘চক্রস্বামীর’ মন্দির লুট এবং ধ্বংস করে মন্দিরের ‘বিষ্ণু মুর্তি’ নিয়ে গিয়ে গজনী শহরেতৈরী ‘হিপোড্রোমে’ ফেলে দেওয়া হয়েছিলো। মাহমুদ নিজে মথুরা নগরী এবং সেখানকার মন্দিরেরসৌন্দর্য্যের প্রশংষা করেছে। সেই মথুরা নগরীর সবচেয়ে প্রাচীন এবং বিখ্যাত ‘কৃষ্ণ মন্দির’ লুট করেসে অগাধ ঐশ্বর্য্য হাসিল করে, আর মন্দিরের সব মুর্তি গুড়িয়ে দেয়। উথবীর কথায় (মাহমুদেরসেক্রেটারী আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী) একমাত্র কনৌজে প্রায় ১০০০০ হাজার মন্দির ধ্বংস হয় (আমি বাড়া বাড়ি বলে মনে করছি—কারন এতো মন্দির থাকা এবং তা ধ্বংস করা কি সহজ ব্যাপার? )যারা এই সব অঞ্চলে বাস করতো, তাদের মধ্যে যারা ধর্ম পরিবর্তনে রাজী ছিলো না তারা হয় পালিয়েঅন্যত্র্ গেলো (আমার বাবা এবং আমার মতো উদবাস্তু হলো), নইলে মরলো (ল্যাটা চুকে গেলো)।
চক্রস্বামী মন্দিরের মতো দশ হলো গুজরাটের ‘সোমনাথ’ মন্দিরের। সেখানকার শিব মুর্তি নিয়েগেলো গজনীতে। তার ভাংগা টুকরো দিয়ে তৈরী হলো গজনীর জামা মসজিদের সিড়ি। সেই গজনী ওনেই ,মসজিদ আর নেই। সব পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে মাহমুদেরই এক শত্রু যাদের ওপরেমাহমুদ অত্যাচার করেছিলো। তারাও ছিলো আফগানিস্তানের এক উপজাতি। সোমনাথের শিবমন্দিরের কিছু ভগ্ন অংশ পাঠানো হয়েছিলো খলিফার কাছে। সেই টুকরো শেষ মেশ পৌছায় তুরষ্কে।তাই দিয়ে তৈরী হয় ইস্তানবুলের বিখ্যাত “তোপকাপি” মসজিদের সিড়ি। (আমার কোনোদিন বিশ্বাসহয়নি, যতোদিন না আমি নিজের চোখে দেখে এসেছি ২০১২ সালে সেই সিড়ি, যেখানে পরম গর্বেরসংগে এই ইতিহাস লেখা আছে। ছবি তোলা নিষেধ না হলে দেখাতাম সেই স্ক্রিপ্ট পাথরে খোদাইকরা।)
সোমনাথ মন্দির ধ্বংস এবং লুট মাহমুদের কাছে এক পবিত্র কাজ ছিলো সেটা সে নিজেও লিখেরেখে গেছে ‘ফতে নামা’ তে। এই পবিত্রতা এই জন্য যে, ঠিক একই ভাবে মক্কার কাবা শরীফে , যারনাম ছিলো ‘আল-মান্নাত’ সেখানকার মুর্তি ভেঙ্গেছিলেন নবী নিজে। সোমনাথ লুট এবং ধ্বংসের সালটা ছিলো ১০২৬। তার এই কাজের জন্য পরবর্তি সময়ে সুফী, দরবেশ রা মাহমুদের অতি উচ্চ প্রশংষাকরে গেছে। সমসাময়িক ঐতিহাসিক, কুয়াজ্জিনি, ফার-হিস্তা এবং মাহমুদের সেক্রেটারী আবুনাসের মুহাম্মদ উথবী, সবাই মাহমুদের ৩০ বছর ব্যাপি বর্বরতার বিবরন লিখে গেছেন নিখুত ভাবে।সেই লিপিতে তার অতি উচ্চ প্রশংষা করতে গিয়ে আসল সত্য চেপে রাখতে পারেন নি। আসল সত্যচেপে রাখলে মহিমা কম হয়ে যায়। এই মুসলিম ঐতিহাসিকরা সেই সময় মাহমুদের বর্বরতাকেবর্বরতা না বলে ধর্মীয় কাজ বলেছেন। তাই আসল সত্য বেরিয়ে এসেছে।
সোমনাথ লুটের খবর খলিফার কাছে পৌছালে, খলিফা আল কাদির বিল্লা খুশীতে বিশাল জাক জমককরে উৎসব পালন করে। মাহমুদকে তিনি এবারে দেন নতুন এক উপাধী—‘খাপ-উদ-দৌলা ওয়াআল ইসলাম”। সেই সংগে তাকে হিন্দুস্তানের সম্রাট বলে ঘোষনা করে দিলো। সম্রাট মাহমুদ এইপ্রথম লাহোর থেকে নিজ নামে মুদ্রা প্রচলন করলো।
মাহমুদ যে বিপুল ধন দৌলত ভারত থেকে লুট করে নিয়ে যায় ৩০ বছর ধরে তার হিসাব কষতেচার্টার্ড একাউন্টেন্ট হিম সিম খেয়ে যাবে। আমাদের ঐতিহাসিকেরা বেমালুম চেপে গেলেও,মাহমুদের সেক্রেটারী সেই আবু নাসের মুহাম্মদ উথবী সেই লুটের বহর স্পষ্ট করে লিখে রেখে গেছে,কারন সেক্রেটারী হিসাবে সেই কাজ তাকে করতে হতো। আমাদের ইরফান হাবিব, রোমিলা থাপারএবং অন্যান্য ভারতীয় ঐতিহাসিকেরা এই সত্য ভারতবাসীর থেকে চেপে গেলেও ঐতিহাসিক ‘কেএস লাল’ এর মতো কিছু ঐতিহাসিক আজো তাদের বিবেক বিদেশীদের (আরবী /তুর্কি) কাছে বেচেদেন নাই। সেই কে এস লালের লেখা প্রবন্ধ প্রকাশিত করে ঐতিহাসিক Andrew G Bostom তৈরীকরেছেন এক প্রামান্য দলিল, যার নাম “The legacy Of Jihad—Islamic Holy war and the fate of the Non-Muslims”, Published by ‘ Prometheus Books’, 59 John Glenn Drive, Amherst,New York- 14228 -2119. ( এই লেখা সেই কে এস লাল এবং Andrew G Bostom এর লেখাকে ভিত্তি করে। প্রমানযারা চাইবেন তারা ঐ ঠিকানায় যোগা যোগ করবেন)
(১)ভারতে বিদেশী শাসন শুরু হয়েছে ৭১২ সাল থেকে শে্যহয়েছ ১৯৪৭ সালে। প্রায় ১২০০ বছর। আরব এবং তুর্কি শাসনচলেছে ১৭৫৭ সাল অবধি প্রায় ১০০০ বছর। ইংরেজ শাসনকরেছে ১৯০ বছর।৭১২ সালে, ইরাকের শাসন কর্তা ‘হেজাজ’ এরভাইপো ‘মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয় থেকে শুরু করেআফগানিস্তানের ‘ঘুর’ রাজ্যে থেকে আসা ‘মোহাম্মদ ঘোরী’ কেউভারতে বসবাস করেনি। এরা সবাই ভারতীয় হিন্দুদের ধনসম্মপত্তি লুট করে নিয়ে নিজের দেশে গিয়ে তাদের আরামদায়কপ্রাসাদ বিলাস বৈভবের মধ্যে বাস করেছ। নিজেদের দেশে চলে

যাবার সময়, নিজের বশংবদ কাউকে শাসন কর্তা হিসাবে রেখে গেছে যারা নিয়মিত ভাবে সেই লুটেরা বিদেশীর বিলাসিতারযোগান দিয়ে গেছে। মুহাম্মদ বিন কাসিম থেকে শুরু করে সুলতানী আমাল এমনকি মোঘল আমলেও তুরষ্কের বিলাসবহুলপ্রাসাদে বাস করা খলিফার খেদমতগারী করা এই আরবী এবং তুর্কি দের একমাত্র কাজ ছিলো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরইংরাজরা এই পরজীবী খলিফা প্রথা বন্ধ করে দেয়। সেই দুঃখে আমাদের গান্ধী মুহাম্মদ আলী নামে দুই ভাইকে নিয়ে ব্রিটিশবিরোধী “খিলাফত আন্দোলন” শুরু করে। আমরা ইতিহাসে গান্ধীর সেই “মড়াকান্না” পড়ে তাকে জাতির জনক এবং‘মহাত্মা’ বলে পুজো করে চলেছি।




‘মাহমুদের লুট করা হিন্দু সম্পত্তির খতিয়ান’
আমাদের কাছে ব্রিটিশ শাসনে ই ভারতীয় হিন্দু দের সর্বনাশ হয়েছে , ১৯০ বছরে লন্ডন সমৃদ্ধিশালী হয়েছে ভারতীয় অর্থে,আর আমরা দরিদ্র হয়ে গেছি। আমরা তাই নিয়ে আজো বিশদ ভাবে তর্ক বিতর্ক ইতিহাস ঘাটা ঘাটি করে চলেছি। কিন্তু, ১০০০ বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যে বিপুল ধন সম্পদ আরব, ইরাক,ইরান, বাগদাদ, ব্যাবিলন, সিরিয়া,দামাস্কাস, তুরষ্ক,ইস্তানবুল, কাবুল, গজনী (যদিও সেটা আজ আর নেই, আছে শুধু একটি গ্রাম) শহর গুলোকে এবং আমাদের ঘরের কাছে, বুখারা (বুখারীরা ওখান থেকে এসেই কলকাতায় আমাদের ঘাড়ের ওপরে জাকিয়ে বসে আমাদের ওপর ফতোয়া দিয়েযাচ্ছে), সমরখন্দ, তাসখন্দ ইত্যাদি শহর গড়ে ঊঠেছে তা নিয়ে মোটাই চিন্তা ভাবনা করি না। আমাদের স্বাধীনতারসংগ্রামের ইতিহাস শুরু হয় গান্ধীকে নিয়ে। কিন্তু আমাদের পরাধীনতার ইতিহাস, যা আমরা প্রকারান্তরে আজো আছি এবংভবিষ্যতে হতে চলেছি (যদি না হিন্দুরা তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে নিজ ভুমি এবং সংষ্কৃতি পুনরায় ফিরে পাবার চেষ্টাকরে, যার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন) । যে মোঘলদের নিয়ে আমরা আজ গর্ব করি, সেই মোঘল শাসনের সুত্রপাত যাকে দিয়ে, সেই বাবুর তার লেখা ‘বাবুর নামা’য় সারা জীবন তার সাধের ‘কাবুল’ এ বাস না করতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে গেছে।এই সব বিদেশীদের বংশ ধর আজো তাকিয়ে থাকে পশ্চিমের দিকে,পুবের দিক তাদের না পছন্দ। অথচ তারাই আমদেরকাছে মহান এবং তাদের আজো আমরা আমাদের পোষ্য পুত্র করে রেখে দিয়েছি।, একের পর এক নিজ ভুমি তাদের হাতেতুলে দেবার সব ব্যাবস্থা, আন্দোলন করে চলেছি।

 
অতীতে হিন্দুরাই তাদের নিজেদের দেশটা বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়েছে, সেই সিন্ধু বিজয় থেকে শুরু করে মোঘলদেরশাসন অবধি। আজ সেই খলিফাতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে উগ্র পন্থীরা সিরিয়া ইরাক থেকে এসে কাশ্মীর ,পাকিস্তান, বাংলাদেশ, পশ্চিমবংগে এসে ঘাটি গাড়ছে আমরাই তাদের এখানে পুষে রাখতে সাহায্য করছি। সত্যিই, কি বিচিত্র এইদেশ!!!!!!
১০০০ বছর ধরে কতো হিন্দু সম্পত্তি লুন্ঠিত হয়ে বিদেশে গেছে??? তার পরিমান কতো????
এখানে শধু গজনীর মাহমুদ ৩০ বছরে ১৭ বার ভারত আক্রমন করে যে ধন সম্পত্তি তার দেশে নিয়ে গেছে সেই খতিয়ানদেওয়া হচ্ছে। হিন্দুর অর্থে গজনীর শহর তৈরী হয়েছিলো। শুধূমাত্র মাহমুদের প্রাসাদ (যা তার আততায়ীরা পুড়িয়েদিয়েছিলো) তৈরীতে খরচ হয়েছিলো ৭০ লক্ষ স্বর্ন মুদ্রা, যার একটির ওজন ছিলো ১২০ গ্রাম। কতো সেই অংক টা????? হিসাব করুন। ১৯০ বছরে ব্রিটিশ তার ১০০ ভাগের এক ভাগ ও নিতে পারেনি, কারন নিয়ে যাবার মতো বিশেষ কিছু আরবাকি ছিলো না। ঝড়তি পড়তি যা স্থানীয় মুসলিম শাসক দের কাছে পড়েছিলো বা জিহাদীদের নজরে পড়েনি, তাই নিয়েগেছে ,যেমন “কোহিনুর”, আর বেশী কি???? নীলের (ইন্ডিগো) কথা বলছেন??? তার থেকেও অনেক বেশী ‘নীল” এইদেশে চাষ হতো এবং তা গেছে ঐ সব আরবী, তুর্কি দুনিয়ায়। ভারতের সব মসলিন দিয়েই তৈরী হতো খালিফা,সুলতান,আমীর উমরাহ দের পোষাক আসাক, দরজা জানালার পর্দা। (নীলের সেই হিসাব ও পাবেন আমার কাছে।)
এই হিসাব, কারো কষ্ট কল্পিত কাহিনী নয়। মাহমুদের সচিব ‘আবু নাসের মোহাম্মদ উথবী’, যে সেই হিসাব স্বযত্নে লিখেরেখেছিলো তার মনিবের জন্য এবং তার কাছে হিসাব দেবার জন্য, সেই হিসাব আজ আমাদের সামনে এসেছে। তারভিত্তিতে লেখা ঐতিহাসিক কে এস লাল’এর লেখা ভারতে ইসলামিক আগ্রাসনের তিন অধ্যায় ( সিন্ধু বিজয়, গজনীরমাহমুদ এবং ঘোরী –পৃথ্বীরাজ)। সেই থেকে সংকলিত হয়েছে, “THe legacy Of Jihad Edited by Andrew G Bostom”.Published by Prometheus Books, New York.Page-440-446. আমি শধু বাংলা ভাষায় তার সার সংক্ষেপকরেছি আপনাদের জন্য (বিশেষ করে আমার এক ফেসবুক ভাই এর অনুরোধে। ) দেখুন সেই হিসাব, যে হিসাব আমাদেরকাছ থেকে আজ অবধি লুকিয়ে রাখা হয়েছে আমাদের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেবার জন্য।।
(২)
লেখাটা আমার স্বাভাবিক লেখার মতো বেশ বড়ো, কারন ৩০ বছরের লুট অল্পেতে লেখা যায় না।
*** হিসাব কষার আগে এটা জানতে হবে ‘দিনার’ এবং ‘দিরহাম’কাকে বলে। দিনার হচ্ছে এক একটি স্বর্ন মুদ্রা যা সেই সময়প্রচলিত ছিলো আরবে। ভারতে সেটা স্বর্ন মুদ্রা নামেই প্রচলিত ছিলো। একটি স্বর্ন মুদ্রায় থাকতো ১২০ গ্রাম খাটি সোনা।বর্তমান বাজার মুল্যে সেটা দাঁড়ায় ৩০০০০ টাকা করে এক গ্রামের দাম ধরলে প্রায় ৩৬০০০০ (তিন লক্ষ ষাট হাজার)একটি স্বর্ন মুদ্রার দাম। সেই সময় ১ টাকায় ৪০ মন চাল বাজারে পাওয়া যেতো। (অনেক বার হিসাব করার চেষ্টা করেপারিনি, যদিও স্কুল ফাইনালে অংকের দুটি বিষয়ে একশোর মধ্যে একশো ই পেয়েছিলাম। মাইরি বলছি একদম টোকাটুকিকরিনি। তোমাদের মধ্যে যে বা যারা হিসাব পারদর্শী আমাকে একটূ বলো Inflation ইত্যাদি ধরে একটি স্বর্ন মুদ্রার দাম কতোহয়???)*******
১) মাহমুদ ‘হিন্দু শাহী রাজ’ রাজা জয়াপাল এবং তার ১৫ জন আত্মীয়, সৈন্যাধক্ষ্য কে আটক রেখে ২৫০,০০০ (আড়াইলক্ষ দিনার ) এর মুক্তিপন আদায় করে।
২) রাজা জয়াপালার গলার নেকলেস টির সেই সময়কার দাম ছিলো ২০০,০০০ (দুই লক্ষ দিনার)। সেটি মাহমুদ নিয়ে যায়।
৩) রাজা জয়াপালার আত্মীয় স্বজন দের গায়ের গহনা ইত্যাদির মোট মুল্য ৪০০, ০০০ (চার লক্ষ ) দিনার
৪) ‘ভেরা’ শহর, যাকে মাহমুদের সেক্রেটারী ‘উথবী’ উল্লেখ করেছে, ‘ মানুষ যতোটা কল্পনা করতে পারে তেমনিসম্পদশালী’ ছিলো। সেই ভেরা লুট করতে প্রায় ২ বছরে ২ বার মাহমুদকে আসতে হয়। (১০০৪ সালের প্রথম থেকে ১০০৫সালএর শেষ) সমস্ত ধন দৌলত নিয়ে যেতে কয়েক হাজার ঊঠ নিয়ে আসতে হয় ।
৫) ১০০৫ থেকে ১০০৬ সাল লেগে যায় ‘মুলতান’ লুট করতে । সেখান থেকে যে সম্পত্তি নিয়ে যায় তার মোট মুল্য২০,০০০,০০০ (কুড়ি লক্ষ) ‘দিরহাম’ (রৌপ্য মুদ্রা)
৬) রাজা জয়াপালের এক সেনাপতি যাকে মাহমুদ মুসলমান বানিয়ে নাম দিয়েছিলো ‘নওয়াশা শাহ’, সে রাজা জয়াপালেরআগুনে আত্মাহুতি দেবার পর পুনরায় হিন্দু হয়। মাহমুদ তাকে পরাজিত এবং আটক করে তাকে শুধু হত্যা করে তাই নয়তার সব সম্পত্তি যার মোট মুল্য ৪,০০,০০০ (চার লক্ষ) দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা)
৭) মাহমুদ “ভীম নগর” দুর্গ দখল করে সেখানকার ‘হিন্দু শাহী মুদ্রা’ র ৭০,০০,০০০ (সত্তর লক্ষ) লুট করে নিয়ে যায়।
8) ‘ভীম নগর’ দুর্গে ছিলো একটি পুজা মন্ডপ। সেটি ছিলো ১৫ গজ (৪৫ ফুট) চওড়া, ৩০ গজ (৯০ ফুট) লম্বা। তার দুটি খুটিছিলো সোনার,দূটি রুপোর, ওপরের ছাঊনি (গম্বুজ) রুপোর । মন্ডপটি খুলে রাখা যেতো। সেটির নিয়ে যায়। তার মুল্য‘উথবী’ উল্লেখ করে নি।
৯) ‘বারান’ (বুলন্দসর) থেকে মাহমুদ লুট করে ১০,০০০,০০০ (দশ লক্ষ) রৌপ্য মুদ্রা।
১০) ‘মথুরা’ মন্দির লুট করে ৫ টি সোনার ‘রাধা –কৃষ্ণ’ মুর্তি নিয়ে যায়, যার মোট ওজন ৯৮৩০০ মিসকাল (দশ মন) ।(আমি ব্যাংককে ৫ টনের বুদ্ধ মুর্তি দেখে এসেছি,সুতরাং ২ মনের রাধা-কৃষ্ণ মুর্তি অসম্ভব নয়)। তাছাড়া মোট ২০০ টিরৌপ্য নির্মিত নানা দেব দেবীর মুর্তি নিয়ে যায়।
১১) কনৌজ, মুঞ্জ,আশনি, সার্বা ইত্যাদি লুট করে অপরিমিত ঐশ্বর্য্য নিয়ে যায়।
১২) ‘সোমনাথ’ মন্দির থেকে মাহমুদ নিয়ে যায় এক বিপুল ঐশ্বর্য্য। তার পরিমান শুনলে পরম বিশ্বাসীর ও অবিশ্বাস হবে।কিন্তু ‘উথবী’ র লেখা বিশ্বাস না করে কার কথা বিশ্বাস করবো? সেই লুটের মোট অংক উথবী করেছে ২০,০০০, ০০০ স্বর্নমুদ্রা বা ‘দিনার’।
১৩) লুটের বহর ৩০ বছরে এতো বিশাল ছিলো যে মাহমুদ, সেই অপর্য্যাপ্ত সম্পদ দেখভাল করা এবং সুষ্ঠ ভাবে গজনীতেনিয়ে যাবার জন্য দু জন হিসাব রক্ষক এবং ব্যাবস্থাপক নিযুক্ত করে। সেই দুজনের নাম ও উথবী বার বার উল্লেখ করেছে।সেই দুই মহাপুরুষ হচ্ছেন ‘আলতুন্টাস’ এবং ‘আশীক্তিন’।
১৪) শুধু মাত্র সুলতান নয়। তার সৈণ্য সামন্ত হিন্দু রাজাদের মৃত হিন্দু সৈন্যদের দেহ তল্লাশী করে তাদের গয়না পত্র, সাধারন হিন্দুদের ঘর বাড়ি লুট করে তাদের সম্পত্তি নিয়ে যায়। লুটের এই ‘মহা সুযোগ’ নিতে স্থানীয় হিন্দু লোকের মধ্যেওমাহমুদের সৈন্য বাহিনীতে যোগ দেবার জন্য কাড়া কাড়ি পড়ে যায়। (অবিশ্বাস্য হলেও একেবারে খাটি কথা ‘উথবী’লিখেছে।। দেশী গব্বরের অভাব কোনো কালেই ভারতে ছিলো না। মুসলমান ‘জিহাদী’দের আরবী /তুর্কি সৈন্যের সংখ্যাথেকেও দেশী হিন্দু লুটেরার সংখ্যা খুব কম ছিলো বলে আমার মনে হয় না। ইতিহাসে সে কথা, ফা-রিস্তা, আলবেরুনী লিখেরেখে গেছেন। ভুলে যাবেন না, আকবরের হয়ে রানা মানসিং ৭৭ টি যুদ্ধ করে যার মধ্যে ৫৭ টি যুদ্ধ সে জেতে এবং বিজিতরাজ্য আকবর কে দেয়,নিজে রাখে লুটের মাল। রানা প্রতাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আর কেউ করেনি ওই মানসিং। আমাদেরবাংলাদেশ দখল আর কেউ করেনি,করেছিলো ওই শয়তান মানসিং এবং সে তিন তিন বার বাংলা,বিহার ,উড়িষ্যার প্রসাশকহয় আকবরের অধীনে। যশোরের বিখ্যাত ‘মা কালী’ র মুর্তি এখন শোভা পাচ্ছে মানসিং এর “অম্বর” দুর্গে। পা চাটা কুকুরেরকোনো অভাব সেই রামায়নের যুগ থেকে আজ অবধি ভারতে কম পড়ে যায় নি।)
১৫) শাহী সাম্রাজ্য থেকে লুটের বহ্র এমনই ছিলো যে, রাজা জয়াপাল, আনন্দপাল, ত্রিলোচন পাল, কারো মুদ্রা আজো খুজেপাওয়া যায়নি। (তাই আমাদের ঐতিহাসিকেরা ধরেই নিয়েছেন ওই বংশ ছিলোই না। তাহলে সুবিক্তিগীন এবং মাহমুদ ভুতেরসংগে যুদ্ধ করেছিলো)।
১৬) অর্থনিতী বিদেরা বলেন “ মাহমুদের লুটের পর অর্থের বন্যা ভারত থেকে চলে গেলো সিন্ধুর পশ্চিম পারে। গজনীরএবং আরবী দুনিয়ার মুদ্রা (দিনার এবং দিরহাম) শক্ত পোক্ত হয়ে শুধু স্থীরতা পেলো তাই নয়,হয়ে গেলো বিশেষ দামী।ভারতীয় স্বর্ন মুদ্রার সোনার পরিমান ১২০ গ্রামের জায়গায় নেমে এলো ৬০ গ্রামে আর রৌপ্য মুদ্রার দাম আর প্রায় রইলোনা ব্যাবাসার জন্য। সারা দুনিয়ার কাছে ভারতীয় মুদ্রা আর খুব বেশী আকর্ষনীয় রইলো না”।
“মাহমুদের বর্বরতার সুদুর প্রসারী ফল”
পারস্য সম্রাট সাইরাস, আলেকজান্ডার, কুষান, আরবী এবং পরবর্তীতে তুর্কি দাসদের দ্বারা একের পর এক আগ্রাসী আক্রমনের যে সমুহ ফল বৈদিক সনাতনিভারতবর্ষের জন জীবনে পড়লো তার ফলে যে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবংসাংষ্কৃতিক পরিবর্তন হলো তার সঠিক মুল্যায়ন আজ অবধি হয়নি।
কি করে বৈদিক আফগানিস্তান (কেকয়, কম্বোজ এবং গান্ধার) আজ এক সম্পুর্নভিন্ন নিম্ন মানের সংষ্কৃতির এবং ধর্মান্ধ সন্ত্রাসবাদীদের বিচরনস্থল হয়েছে তারইতিহাস আমরা জেনেছি। আজ যে পাকিস্তান ঝড়তি পড়তি ভারতকে শেষ
করার খেলায় মেতেছে, নিউক্লিয়ার বোম দিয়ে উড়িয়ে দেবার কথা বলছে (আজইআমেরিকান সামরিক প্রধানের বক্তব্য পড়ুন) ওই অঞ্চল তো সিন্ধু এবং হিন্দু শাহীসাম্রাজ্যের অংশ ছিলো। যে বাংলাদেশে আজ উগ্রপন্থীরা সমবেত হচ্ছে সেটাইতো বৈদিক সনাতনী ছিলো। সে সব কোথায় হারিয়ে গেলো??? যেসামাজিক,অর্থনৈতিক এবং সাংষ্কৃতিক পরিবর্তন এই বৈদিক সনাতনী সভ্যতার জন্ম ভুমিতে হয়েছে সেই সার্বিক পরিবর্তনচীরস্থায়ী এবং মানব সভ্যতার ইতিহাসে অশ্রুতপুর্ব এবং অন্য কোনো উদাহরন নেই।
উত্তর পশ্চিম ভারতবর্ষ তো অনেক আগেই চলে গেছে। পশ্চিম ভারত পাকিস্তান হয়ে গেছে। কাশ্মীর নিয়ে তো সমস্যারশেষ নেই। পুর্ব ভারতের এক বিশাল ভুমি বাংলাদেশ। পশ্চিমবাংলা ধুকছে।
সনাতনি দর্শন হিংসায় বিশ্বাসী নয়। সনাতনি সভ্যতা শান্তি সম্প্রতির কথা বলে। মানবিকতা সেখানেই, সমৃদ্ধি শান্তিতেধ্বংসে নয়। এই চরম ঐশ্বরিক কথা ওই অঞ্চলে আজ আর কেউ শুনতে পাবেন না কোনো দিন। নীল চাষীদের অপরেব্রিটিশের অত্যচারের কথা আমরা “নীল দর্পন” জেনেছি। তার লেখক উত্তর ২৪ পরগনার নিমতলাতে (বনগাঁর কাছে ) জন্মেছিলেন। তিনি যদি জানতেন, নীল চাষ আগেও হতো, তাহলে হয়তো আর একটি নাটক লিখতেন। মাহমুদ প্রতি বছর যেপরিমানে নীল নিজের জন্য নিয়ে যেতো এবং তার প্রভু খলিফার কাছে পাঠাতো তার হিসাব আছে “উথবী” র লেখাতে। সেইকথা লিখে এই ইতিহাস আর দীর্ঘায়িত করবো না। বেশী লিখলে কল্প কষ্টিত এবং অসত্য বলে অনেকে সমালোচনার ঝড়বইয়ে দেবেন জানি।
আসুন আমরা দেখি, মাহমুদের উত্তর পশ্চিম ভারতকে শ্মশান ভুমি করে দেবার পর, কি করে ‘জিহাদী তান্ডব’এসেপৌছালো খোদ দিল্লীতে। একেবারে সনাতনি ভারতের হৃদস্থলে। সেই কাহিনীও অতি করুন।। বুকে পাথর দিয়ে সেই কথাশুনুন। সেই ইতিহাসকেও আমাদের থেকে গোপন করে রাখা হয়েছে।ইতিহাস যুগে যুগে শাসকদের কথা মতোই লেখাহয়েছে বেশীর ভাগ সময়। খুব কম ঐতিহাসিক আছেন যারা সত্যবাদী। আমাদের দেশে রমেশ চন্দ্র মজুমদার, যদুনাথসরকার, কে এস লাল ,শ্রী বাস্তবের লেখা কে পড়ে???
এখন তো রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিবের দিন, এই দুজনেই বামপন্থী মতের প্রতিষ্ঠা করতে হিন্দু সভ্যতার ইতিহাসএকেবারে চেপে গেছে ।শুধু তাই নয় বিকৃত করেছে। কারন আর কিছু নয়। চানক্য ই বলেছেন আর ইংরেজ ম্যাকুলেবলেছে, কোনো জাতিকে শেষ করতে হলে, পদানত রাখতে হলে বা নিজের মত চাপিয়ে দিতে চাইলে, প্রথম এবং অকৃত্রিমকাজ সেই জাতির ইতিহাস , সংষ্কৃতি, ধর্ম বিকৃত করা, গালাগালি দেওয়া, তাদের উপাসনা স্থল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া। যুগেযুগে অনেক মহামানব এই কাজ করেছেন। ভারতের হিন্দুদের ওপরে এই অভব্য কাজ করা হয়েছে সব থেকে বেশী।।
ইরফান হাবিব ই বলেছে "হিন্দুরা জামা কাপড় পরতে শিখেছে বিদেশীদের থেকে যারা ভারত শাসন করেছে"। আমাদের পুর্বপুরুষরা সব তাহলে ল্যাংটো থাকতো, তাই না???


লেখক-
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
কোলকাতা- ভারত।

Posted at June 28, 2020 |  by Arya ঋষি
শেষ পর্ব
                                                    মুসলমান পরাধীনতার যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস একটু মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করলে দেখা যাবে যেযখনই কোন নতুন ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসনে বসেছেন তখনেই তাকে রাজ্য বিস্তারের জন্য দৌয়াতে হচ্ছে। তাকে গুজরাটরাজস্থানমধ্যভারত ও দক্ষিণ ভারতে অভিযান করতে হচ্ছে। গোয়ালিয়র,  রাজস্থানরনথাম্ভোরচিতোর ইত্যাদি দূর্গ দখল করতে হচ্ছে এবং সেজন্য অনেক যুদ্ধ বিগ্রহে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কাজেই প্রশ্ন হলকেন একই দূর্গ বা একই অঞ্চল বিভিন্ন বাদশাহকে বারবার জয় করবার প্রয়োজন কেন হচ্ছেউত্তর একটাই----- মুসলমানরা কোন দূর্গ বা অঞ্চলে বেশীদিন তাদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হন নাই। স্থানীয় এসব রাজারা ক্রামাগত বিদ্রোহ করা স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেমুসলমান শাসনকে অস্বীকার করেছে। তাই একই অঞ্চল বারবার বাদশাহদের জয় করার প্রয়োজন হয়েছে। এই তথ্য থেকে এটাই প্রমানিত হয় যেভারতের হিন্দু শাক্তি আক্রমনকারী মুসলমান শক্তির সঙ্গে নিরন্তর সংঘর্ষ করেছে এবং অসংখ্য হিন্দু বীর এই সংঘর্ষে রক্ত দিয়েছেপ্রাণ দিয়েছে। বিদেশী মুসলমান শক্তিকে এক মুহূর্তেও নিশ্চিন্তে থাকতে দেননি।

তাই .কে.এম মুন্সী লিখেছেন---

"এ হল স্বাধীনতা রক্ষার খাতিরে নিতান্ত বালক থেকে শুরু করে মৃত্য-পথ-যাত্রী বৃদ্ধ পর্যন্ত অগনিত মানুষের বিরামহীন সংঘর্ষনিরন্তর বীরত্ব প্রদর্শন ও প্রাণ বিসর্জনের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। এ হল মাসের পর মাসকখনো বছরের পর বছর ধরে দূর্গের অভ্যন্তরে থাকা বীর যোদ্ধাদের যুদ্ধের ইতিহাস। দূর্গ আক্রমনকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলতে থাকা এক বিরামহীন সংগ্রামের ইতিহাস। এ হল সম্মান রক্ষার্থে হাজার হাজার হিন্দু নারীর জলন্ত অগ্নিতে আত্মাহুতি দেবার এক দীর্ঘ ইতিহাস। এ হল দাসত্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পিতামাতার ধারা অবোধ শিশুকে কূপের জলে নিক্ষেপ করার এক করুণ ইতিহাস। এ হল অন্তহীন হামলাকারীদের নিরন্তর আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য তরুণ যোদ্ধাদের দ্বারা ম্ৃত সৈনিকের স্থান পূরণ করার এক বিভীষিকাময় ইতিহাস।"

আমরা সেই মাটিতে বাস করছিযে মাটি হাজার বছর ধরে কোটি পিতারমাতার ভাইয়েরবোনের অশ্রুজলে সিক্ত। পিতা মাতা ভাইয়ের সমনে বোনকে টেনে নিয়ে গিয়ে হারেমে নির্লজ্জ কুকুরের মত ব্যবহার করেছেভাই খোজা হয়ে তাকে পাহারা দিয়েছে। 
এ সেই করুণ ইতিহাস যেখানে কন্যা সন্তানের জন্মকে অভিশাপ মনে করে পিতা মাতা গঙ্গাসাগরে ভগবানের নামে উৎসর্গ করে দিয়েছে। নিজ হাতে সন্তান হত্যার বুকফাটা আর্তনাদ পিতা মাতা হাজার হাজার বছর চেপে রেখেছে। 
কারন সন্তান জন্মের পর বিসর্জনের যে কষ্ট তার চেয়ে বেশী কষ্ট হবে যখন চোখের সামনে মুসলমানরা ধরে নিয়ে কুকুরের মত ব্যবহার করবে। 
যেখানে দিনের পর দিনমাসের পর মাসবছরের পর বছরযুগের পর যুগশতাব্দীর পর শতাব্দী চলেছে। হিন্দুর রক্তে হোলি খেলাজিজিয়াখেরাজ আদায়ের ফলে বুভূক্ষ মানুষের হাহাকার। 
এ সেই মাটিতে আমরা বাস করছি, যে মাটিতে হাজার বছর ধরে মিশেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্ত ও অশ্রুর বন্যা, পিতার হাহাকার , বোনের আর্ত চিৎকার, ভাইয়ের রক্ত, মাতার অসহায় দৃষ্টি। 
সে মাটি আজও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদে।
মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাৎকার করা হয়েছে

অনেকের এই ধারনা থাকতে পারে যে, মুসলমানদের দ্বারা ব্যপক হারে হিন্দু হত্যা হিন্দুর সম্পত্তি লুটপাট করে এআত্মসাত করা, হিন্দু নারীদের জোর করে ধরে নিয়ে লুটের মালে পরিনত করা ইত্যাদি ঘটনা এক কালে মধ্যযুগে ঘটেছে বটে, তবে আজ আর তার পুনরাব্ৃত্তি হবেনা। আজ দেশ ও সমাজ সভ্যতার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে, তাই মুসলমানদের কাছ থেকে এই সব বর্বরতা আশঙ্কা নেই। মধ্য যুগ নেই তাই মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হবে না। এই সব ব্যক্তিদের জানা নেই যে সমস্ত পৃথিবী সভ্যতার পথে অগ্রসর হলেও ইসলাম ও কোরান এবং সে সঙ্গে মুসলমান সমাজ আজও সেই মধ্য যুগেই দাঁড়িয়ে আছে। তারা সভ্যতার পথে এক পা ও অগ্রসর হয়নি। যে কোরান ও হাদিস মধ্য যুগের মুসলমানদের সমস্ত কাজে অনুপ্রানিত করত, সেই একই কোরান ও হাদিস আজকের মুসলমান সমাজকেও পূর্বোক্ত সকল রকম কাজে একই ভাবে প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে। কোরানের ও হাদিসের কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই কাফেরের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গির কোন পরিবর্তন হয়নি। শুধু সুযোগের অপেক্ষা মাত্র। অনুকুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজও মুসলমানরা কাফের কেটে রক্তা গঙ্গা বইয়ে দিবে। কাফেরর মৃতদেহ দিয়ে পাহাড় তৈরী করবে, কাফের নারীদের লুটের মালে পরিণত করবে এবং কাফেরদের মন্দির ভেঙে ধূলায় মিশিয়ে দেবে। তফাত শুধু এই, এক কালের তলোয়ার, শূল, বর্শা, তীর ধনুক ইত্যাদির বদলে আজ একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, মার্টার, রকেট, বোমা, বিমান ইত্যাদি উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে। উদ্দেশ্য একটাই, কাফের নির্মূল করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা। 


মুসলমানদের মন মানিসকতা যে কোন পরিবর্তন নেই তার উদাহারন হল ২০০২ সালেও আফগানিস্থানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মূর্তি যা সারা বিশ্বের বাধা নিষেদকে অমান্য করে মুসলমানরা ধ্বংস করে ফেলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যা ঘটেছিল তা অনেকেরই হয়তো মনে আছে । 

আনোয়ার শেখের ভাষায়__ 

"বিগত ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলায় হিন্দুদের উপর যে নারকীয় বর্বরতার অনুষ্টান করা হয়েছে আর তুলনা মানব ইতিহাসে অনুপস্থিত। বহু ক্ষেত্রে সমগ্র অধিবাসীকেই ঘিরে ফেলে অত্যাচার চালানো হয়েছে। মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাতকার করা হয়েছে। মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেঝেতে আছাড় মেরে শিশুদের মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছে, তারপর বয়ষ্ক পুরুষদের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে, চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে এবং সব শেষে ধড় থেকে মাথা আলাদা করা হয়েছে। চরম উল্লাসের আনন্দ পাবার জন্য পরিবারের সবাইকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে সেই ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।" 
[Anwar Sheikh, This is Jehad] 
ইসলাম সম্পর্কে -মনিষীদের বানী

"ইসলাম হচ্ছে এক রাজনৈতিক আক্রমনকারী পরধর্ম অসহিষ্ণু বিস্তারবাদী আন্দোলন। যারা আল্লাহ মানে না, যাদের কোরানে বিশ্বাস নেই কিংবা মূর্তি পূজার মাধ্যমে উপাসনা করে, এমন  নাগরিকদের দেশের উপর আক্রমন করে তাদের পরাভূত কয়া, তাদের সম্পত্তি লুটপাট করা, তাদের মহিলাদের লুটের মাল হিসেবে সৈনিকদের দ্বারা বলতকার করানো, তাদের ধর্মান্তরন করে মুসলমান করা, আর যারা ধররান্তরিত হলো না, তাদের উপর অত্যাচারের পূনরাবৃত্তি অবিরত চালু রাখা---- এই হচ্ছেকোরানের শিক্ষা"

পৃথিবীর দুইটি ধর্ম সম্প্রদায় আছে অন্য সমস্ত ধর্মমতের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধতা অত্যুগ্র-- সে হচ্ছে খৃষ্টান আর মুসলমান ধর্ম। তারা নিজের ধর্ম পালন করে সন্তুষ্ট নয়, অন্য ধর্মকে সংহার করতে উদ্যত। এই জন্য তাদের ধর্ম গ্রহন করা ছাড়া তাদের সঙ্গে মেলবার অন্য কোন উপায় নেই।"
--------রবীন্দ্রনাথ।  (রবীন্দ্র রচনাবলী, জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃ-৩৫৬)

"বস্তুত মুসলমান যদি কখনও বলে হিন্দুর সহিত মিলন করিতে চাই, সে যে ছলনা ছাড়া আরা কিছু হইতে পারে ভাবিয়ে পাওয়া কঠিন।"
"হিন্দু মুসলমান মিলন একটি গালভরা শব্দ, যুগে যুগে এমন অনেক গালভরা বাক্যই উদ্ভাবিত হইয়াছে, কিন্তু ঐ গাল ভরানোর অতিরিক্ত সে আর কোন কাজেই আসে নাই।"
--------শরৎচন্দ্র । (শরত রচনাবলী জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, তৃতীয় খণ্ড, পৃ-৪৭৩)

"ইসলাম ধর্মীরা কোরানের দুইটি আয়াত, 'পৌত্তলিকদের যেখানে পাও হত্যা কর' এবং 'অতএব ধর্মযুদ্ধে তাদের বন্দী কএ হয় বশ্যতার অঙ্গীকার নতুবা মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দাও, অনুযায়ী ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বলে যে, বহু দেবদেবীতে বিশ্বাসী পৌত্তালিকদের হত্যা বা নির্যাতন করা ঈশ্বএর নির্দেশ এবং অবশ্যিক। সুতরাং ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ঈশ্বরের নির্দেশ পালনে তত্যুতসাহিতা  সেই পৌত্তলিকগণকে হত্যা ও নির্যাতন করতে একালে বা সেকালে কখনই বিরত হয় নাই।"
(তুহাফাত-উল-মুওয়াদ্দীন, রামমোহন স্মরণ, মার্চ ১৯৮৯, পরিশিষ্ট, প্ৃ-৩১)

"আপনার মত (প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান) শিক্ষিত সংস্কৃতিবান এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি আজ এমন দর্শনের প্রচারক হয়ে গেলেন, যে দর্শন মানবতার পক্ষে ভয়াবহ বিপজ্জনক এবং যে দর্শন ন্যায় ও শুভ চিন্তাধারা থেকে উদ্ভুত যাবতীয় নীতিমালার পক্ষে ক্ষতিকারক।"
---মুসলিম লীগের প্রাক্তন সহযোগী সদস্য মি যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল।

ইসলাম সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দঃ-
এ বিষয়ে মুসলমানরা অত্যান্ত স্থুল দ্ৃষ্টি সম্পূর্ণ এবং সাম্প্রদায়ীক মনভাবাপন্ন। তাদের সিদ্ধ বাক্য শুধু একটিই
লা-ইলাহা-ইল্লাল্লা-মোহাম্মদুর-রাসুলাল্লহ
অর্থাৎ- ঈশ্বর মাত্র একজন এবং মোহাম্মদ তার রসুল,
এই সিদ্ধ বাক্যের বাইরে আর যা কিছু আছে সবই নিকৃষ্ট বস্তু এবং অবিলম্বে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলতে হবে এই হল মুসলমানদের কথা, এ কথায় যে বিশ্বাস করেনা সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক মুহুর্তের হুশিয়ারী দিয়ে তাকে হত্যা করা হবে। যা কিছু এই উপাসনা পদ্ধতির অন্তর্গত নয় তাকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করতে হবে। এ বিশ্বাসের সাথে মিলছে না এমন যত গ্রন্থ আছে সেগুলিকে দগ্ধ করতে হবে।
প্রসান্ত মহাসগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত পাচ শত বর্ষ ব্যপি পৃথিবীর বুকে এই একি কারনে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে, এই হল ইসলাম।"
(স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী (প্রকটিক্যাল বেদান্ত), ৪র্থ খণ্ড, পৃ-১২৫ ও ২য় খণ্ড, পৃ-৩৫২)

ইসলাম সম্মর্কে বি আর আম্মেদকারঃ-
ইসলামের ভাতৃত্ব মোটেই বিশ্ব ভাতৃত্ব নয় এটা কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যই যারা মুসলমান তারাই কেবল এর সুযোগ পাবে কিন্তু অমুসলমানরা পাবে কেবল শত্রুতা। যেখানেই ইসলামিক শাষন রয়েছে সেটাই মুসলমানদের নিজের দেশ, বস্তুত ইসলাম একজন প্রকৃত মুসলমানকে কখনোই ভারতকে তার নিজের দেশ বলে মেনে নিতে দেবেনা বা হিন্দুদেরকে তার আত্মীয় বলে স্বীকার করতে দিতে পারেনা।

ইসলাম সম্পর্কে মোহনদাশ করমচাদ গান্ধীঃ-
জাতীয় স্বাধীনতা আন্দলনে মুসলমানরা কোন আগ্রহ দেখায়নী, মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সত্য তারা ভারতকে নিজের দেশ বলে স্বীকার করেনা।

হজরত মোহাম্মদের নিরপেক্ষ জীবনীকার ও বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার উইলিয়াম মূর বলেছেনঃ-
কোরান ও ইসলামের তরবারী মানব সভ্যতা, স্বাধীনতা ও সত্যের সবচেয়ে বড় শত্রু যা আজ পর্যন্ত মানুষ দেখেছে।

ইসলাম সম্পর্কে আনোয়ার শেখঃ-
ইসলাম এমন একটা ধর্ম বিশ্বাষ যা সমস্ত মানব জাতিককে দুটি চীর বিভদমান জাতি গোষ্টিতে ভাগ করে দিয়েছে। একদল যারা আল্লাহ ও মোহাম্মদকে বিশ্বাষ করে অর্থাৎ আল্লাহর দল মুসলমানরা আর এক দল হল শয়তানের দল অর্থাৎ সব অমুসলমানরা।

ইসলাম সম্পর্কে রাজা রামমোহন রায়ঃ-
ঐসব দৈবী নির্দেশে আস্থা রাখার জন্য ইসলাম ধর্মীরা ব্রাম্মন জাতীর অনেক ক্ষতি করেছেন ও তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছেন, এমনকি মৃত্যু ভয়ও দেখিয়েছে তবু তারা ধর্ম পরিত্যাগ করতে পারেনি । ইসলাম অনুবর্তীরা কোরানের পবিত্র শ্লোকের মর্মানুসারে অবিশ্বাসীদের ধর্ম যুদ্ধ করে বেধে আনো এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মুক্ত করে দাও বা বশ্যতা স্বীকার করাও এগুলি ঈশ্বরের নির্দেশ বলে উল্লেখ করে যেন পৌত্তলিকদের বধ করা তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা ঈশ্বর আদেশে অবস্য কর্তব্য। মুসলমানদের মতে পৌত্তলিকদের মধ্যে ব্রাম্মনেরাই সবছেয়ে বড় পৌত্তলিক সে জন্যই ইসলামানুবর্তীরা সর্বদাই ধর্মাউন্মাদে মত্ত হয় এবং তাদের আল্লার আদেশ মানবার উতসাহে বহু দেবদেবাদিদের ও শেষ পয়গম্ভরের ধর্ম প্রচারে অবিশ্বাসীদের বধ করতে ত্রুটি করেনি।

ইসলাম সম্পর্কে রোনাল রেগানঃ-
সম্প্রতি আমরা একটা ধর্মযুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি আক্ষরিক অর্থেই কারন মুসলমানরা তাদের জিহাদের মূল ধারনতা ফিরে আসছে যে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রান সেওয়াটাই তাদের স্বর্গে যাওয়ার উপায়।

ইসলাম সম্পর্কে মার্গারেট থ্যচারঃ-
আজকের দিনে বল সে হিজমের মত চরমপন্থী ইসলামও একটা সশস্র মতবাদ, এটা একটা আক্রমনাত্বক ধর্মতত্ব যা সশস্র ধর্মান্ধ অনুগামীদের দ্বারা প্রসার লাভ করেছে। কমনিউনিজমের এটাকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক দীর্ঘ মেয়াদী রণনীতি প্রয়োজন।

ইসলাম সম্পর্কে উইলিয়াম গ্লাক্সটোনঃ-
যতদিন কোরান আছে ততদিন পৃথিবীতে শান্তি নেই।

ইসলাম সম্পর্কে নীরদচন্দ্র চৌধুরীঃ-
মুসলিম ধর্ম বিশ্বাসের বিধান অনুযায়ী মুসলমানও তেমনি সকল মুসলমানকে আপন ও সকল হিন্দুকে পর মনে করিতে বাধ্য । বরঞ্চ মুসলমান সমাজের আভ্যন্তরিন সাম্য ও ভাত্ৃ ভাবের জন্য অমুসলমান সম্বন্ধে তাহারা আরো বেশি সজ্ঞান । মুসলমান ধর্ম শাস্রের নির্দেশ মত মুসলিম মাত্রের ই নিকট পৃথিবী দুই ভাগে ভিবক্ত-
১। দারওল ইসলাম  ২। দারওল হরব ।
দারওল ইসলামের অর্থ ইসলামের দেশ অর্থাৎ যে দেশে মুসলমান ধর্মাবলম্বী শসক কর্তীক  অধিক্ৃত ও শাষিত।
দারওল হরবের অর্থ যুদ্ধের দেশ, যে দেশে যুদ্ধ করিয়া ইসলামের প্রাধান্য স্থাপন করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান অনুসারে কোন মুসলমান অমুসলমানের অধীন থাকতে পারেনা শুধু তাই নয় অমুসলমান জগত এবং মুসলমান জগতের মধ্যে চিরন্তন বিরোধ, এই জন্যই অমুসলমান জগতের নাম করন হইয়াছে দারওল হরব -যুদ্ধের দেশ।
এই নির্দেশের জন্য অমুসলমান ও মুসলমান রাজ্যের মধ্যে কোন মৈত্রী হতে পারে না। যতদিন পর্যন্তনা দারওল হরব দারওল ইসলামে পরিনত হইবে ততদিন পর্যন্ত বিশ্বাসী মুসলমান মাত্রকেই জিহাদ বা ধর্ম যুদ্ধ চালাইতে হইবে।
জিহাদের নির্দেশ অনুযায়ী অবিশ্বাসীকে হয় (১) মুসলমান হইতে হইবে কিংবা (২) মুসলমানের প্রধান্য স্বীকার করিয়া ও জিজিয়া দিতে স্বীকৃত হইয়ে আশ্রিত হইয়া থাকিতে হইবে কিংবা (৩) যুদ্ধ করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান জানিলে এই তিন পথের এক পথ ভিন্ন মুসলমানের  অমুসলমানের নিকট যাইবার চতুর্থ আর কোন পথ নাই।

ইসলাম সম্পর্কে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ঃ-
যখন ধর্মের প্রতি মোহ তাহাদের কমিবে, যখন বুঝিবে যে কোন ধর্মই হোক তাহার গোড়ামী লইয়া গর্ব করিবার মত এমন লজ্জাকর ব্যপার, এত বড় বর্বরতা মানুষের আর দ্বিতীয় নাই, কিন্তু সে বোঝার এখনো অনেক বিলম্ব এবং জগতশুদ্ধলোক মিলিয়া মুসলমানের শিক্ষার ব্যবস্থা না করিলে ইহাদের কোন দিন চোখ খুলিবে কিনা সন্দেহ।
উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি

মুসলিম পণ্ডিতদের ভাষ্যইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্মশান্তির ধর্ম এবং একমাত্র বেহেস্ত লাবের অধিকারী।
ভারতবর্ষের সাধারণ হিন্দুরা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে-- এই হল বেশ কিছু সংখ্যক আধুনিক পণ্ডিত ও রাজনীতিকদের গবেষণা।

ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কোনদিন সম্প্রীতি ছিল না। ইতিহাস ঘেটে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, শুধু বাঙালী হিন্দু মুসলমানই নয়, পৃথিবীর কীন সম্প্রদায়ের সঙ্গেই মুসলমানদের সম্প্রতি ছিল না এবং এখনো নেই। সারা পৃথিবীতে জাতিগত সন্ত্রাসের প্রায় সবগুলিই মুসলমান সম্প্রদায় কর্ত্ৃক পরিচালিত। এর কারণ অবশ্য ইসলাম ধর্ম। ইসলাম কাউকে সহ্য করে না। পরমত সহিষ্ণুতা ইসলামের অভিধানে নেই। এটা ইসলামের জন্মগত চরিত্র। একজন হিন্দু যখন প্রার্থন করছেন- সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হোক, মঙ্গল হোক, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ভয়শূন্য হোক, নিরোগ ও শান্তি লাভ করুক; তখন একজন মুসলমান প্রার্থনা করছে, শুধু মুসলিম উম্মাহর (জাতির) উপর শান্তি বর্ষিত হোক, অন্যান্য জাতি ধ্বংস হোক।

যেখানে একজন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন লোক মনে করছেন হত্যা, লুণ্ঠন, বিধর্মী অত্যাচার অন্যায়, সেখানে একজন মুসলমানের কাছে ঐ সব অপকর্মগুলি পরম ধরম ও অবশ্য পালনীয় কর্ম। কাফের হত্যা, তাদের সম্পত্তি লুট করা ধর্ম, তাদের বউ, মেয়ে দখল করে ভোগ করা ধর্ম। আক্রমন, আগ্রাসন, অমুসলিম হত্যা করে তাদের সমত্তি লুট করা এবং নারী ও শিশু অপহরন আজকের সভ্যতায় বর্বরতা ব্লে বিবেচিত হলেও মুসলমানের কাছে এই অপকর্মগুলি পরম ধর্ম । বলা বাহুল্য এই সমস্ত উপায়েই পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 
ইতিহাস না পড়া কিছু স্বঘোষিত পন্ডিত প্রচার করেছেন, ভারত উপ-মহাদেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা এবং উচ্চবর্ণ নিন্ম বর্ণ বিরোধ। এর ফলে নিন্মবর্ণের লোকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কথাটি যে সর্বাংশে মিথ্যা তা ইতিহাস পাঠক মাত্রই জানেন। 
প্রকৃত তথ্য হল -- আক্রমণ, আগ্রাসন, লুণ্ঠন, বন্দী, জিম্মি, জিজিয়া এবং অন্যান্য কৌশলে এদেরকে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তারা আবার স্বধর্মে ফিরে না আসার কারণ দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক মুসলিম শাসন। 
৬৩২ খৃষ্টাব্দে হজরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মদিনার লোকেরা স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন, কিন্তু হজরত আবু বকর কঠোর নীতি অবলম্বন করে তাদেরকে ইসলামে থাকতে বাধ্য করে।
ঐতিহাসিক ম্যূর বলেন- "সমগ্র উপদ্বীপের লোক স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন" (এম এ ছালাম; ইসলামের ইতিহাস, পৃষ্ঠা- ১৯)

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্বল্পকালীন যুদ্ধ শেষে তারা আবার স্বধর্মে ফিরে এসেছিলেন।

১৯৪৬ সালে নোয়াখলীতে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু রায়ট শেষ হলে তারা আবার স্বধর্মে ফেরত আসেন। কিন্তু ৬০০ থেকে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত যারা মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা আর স্বধর্মে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। কারন সহস্র বছর তাদের ঘাড়ের উপর ঝুলছিল রেশমী সুতায় বাধা তলোয়ার। আজ তাদের সন্তানগন ভুলেই গেছে তাদের পূর্ব পুরুষগণ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, মনের তাগিদে হয়নি
কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল কি
ইসলামের আভির্বাব থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমগ্র মধ্যযুগ ধরে মুসলমানরা সারা বিশ্বে যে তান্ডব করেছেতার নজির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগকে ইসলামী চিন্তাবিদ্গন আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ (অন্ধকার যুগহিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু নানা কারণে আধুনিক মুক্ত নিন্তাবিদগণ ইসলামের আবির্ভাবের দিন থেকেই আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ শুরু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন এবং এই সময়টিকে মধ্যযুগ বলে চিহ্নিত করে বর্বরতার যুগ বা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নামকরণ করেছেন। আরবইরান ও ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এ কথা চরম সত্য বলে এক বাক্যে সবাই গণ্য করেন।
ভারত উপমহাদেশে হিন্দু সভ্যতা অধপতনের কোন ধারাবাহিক ইতিহাস নেই। আর এ কারনেই পণ্ডিতগন হিন্দু অধপতনের ও ইসলাম বিস্তারের কারন খুজতে গিয়ে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভুল করেছেন মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত ইতিহাস না পড়ে। অনেকে সব ই জানেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে সত্য প্রকাশ করেন নি। কিন্তু ইতিহাস লিখতে গেলে সত্য ইতিহাসই লেখা উচিত। ইতিহসে জোচ্চুরি চলে না। অথচ আমাদের দেশে তা দিব্যি চলে আসছে। আমাদের উচিত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে একটি সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা।
আচার্য যদুনাথ সরকারের সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরণ রেখে--
"সত্য প্রিয়ই হোউক আর অপ্রিয়ই হোউক সাধারণের গৃহীত হউক আর প্রচলিত মতের বিরোধী হউক তাহা ভাবিব না। আমাদের স্বদেশ গৌরবকে আঘাত করুক আর না করুক তাহাতে আক্ষেপ করিব না, সত্য প্রচার করিবার জন্য সমাজের বা বন্ধুবর্গের মধ্যে উপহাস ও গঞ্জনা সহিতে হয় সহিব। কিন্তু তবুও সত্যকে বুঝিব, গ্রহন করিব, ইহাই ঐতিহাসিকের প্রতিজ্ঞা।"

ভারতবর্ষে হিন্দুদের অধপতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে একই সঙ্গে ইসলাম বিস্তার এবং সেই সঙ্গে মুসলমানদের ধর্ম এবং আচার সম্পর্কে সাম্যক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এ কারনেই আলোচনার প্রথমেই পাঠকেদের জানিয়ে দেওয়া দরকার ইদলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল কোরান, যা একতি ঐশীগ্রন্থ বলে পরিচিত। কোরানের পরেই হাদিস। হাদিস হল হজরত মুহাম্মদের প্রামাণিক উক্তি ও কর্ম। মুসলমানগণ ও দুটি গ্রহন্থের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হলে দাবি এবং মুসলমান বাদশাহগণ কোরান-হাদিস অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেতেন। এ ব্যপারে সহযোগিতা নিতেন ওলেমা ও মাওলানাদের । আমি বোঝার সুবিধার্থে কোরান-হাদিসের বানী এবং তার প্রয়োগ এক সঙ্গে আলোচনা করব যাতে পাঠকগণ বাস্তব অবস্থা ও তাত্ত্বিক ব্যখ্যা বুঝতে কষ্ট বোধ না করেন।

কাফের,মুসরিক
ইসলামে কাফের হল বিধর্মী
আর মুসরিক হল পৌত্তালিক (মূর্তিপুজারী) কাফের।
মুনাফেক
মুনাফেক হল বাইরে ইসলাম ধর্মালম্বী কিন্তু ভিতরে ইসলমের শত্রু।
সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার নবী বিরোধী গোষ্ঠীকে এই নাম দিয়ে কোরানে বারবার দিক্কার দেওয়া হয়েছে। এই গোষ্টির নেতা ছিলেন আব্দুল্লা ইবন উবাই।
'জেহাদ'
ইসলামের আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল 'জেহাদ'। কোরানের পরিভাষায় জেহাদ হচ্ছে 'জেহাদ ফি সবিলিল্লা' (আল্লার পথে সংগ্রাম)। বিধর্মী নাশের যুদ্ধই হল জেহাদ। অনেকে বলেন, জেহাদের অর্থ ধর্মযুদ্ধ। এ কথাটা ভুল।
'গণিমা' বা গনিমতের মাল
জেহাদের নিত্যসঙ্গী হচ্ছে 'গণিমা' বা গনিমতের মাল। জেহাদে কাফেরদের কাছ থেকে যে সব মাল কেড়ে আনা হয় তার নাম গনিমতের মাল। 
'জিজিয়া'
হিদাইয়া গ্রহন্থের মতে, জেদ করে যারা কাফেরির পাপে অটল থেকে যায়, তাদের কাছ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রের পাওনা আক্কেল সেলামীর নাম জিজিয়া। এই কর অত্যান্ত হীনতার সঙ্গে পৌছে দিতে হয় পবিত্র মুসলমানদের কাছে।
'ফেই'
 এর অর্থ হচ্ছে বিনা যুদ্ধে পাওয়া লুটের মাল, যার সবটাই পয়গম্ব হজরত মুহাম্মদের পাওনা। জিজিয়াকে ফায় এর মধ্যে ধরা হয়।
জিম্মি
ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মায় থাকা জিজিয়া করদাতা কাফেররা হচ্ছে জিম্মি। এরা জেহাদে পরাজিত ইসলামী রাষ্ট্রের অধম নাগরিক।
গাজী
কাফের খুন করে যে মুজাহিদ জয়ী হয় তাকে বলা হয় গাজী। (One who slays an infidel-Hughes) হজরত মুহাম্মদ মদিনা বাশের দশ বছরের মধ্যে ৮২ বার জেহাদ করেছিলেন। তার মধ্যে ২৬/২৭ টিতে নেতৃত দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই সব জেহাদকে বলা হয় গাজোয়াত। অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি গাজী হয়েছিলেন। হাদিসে এও দেখা যায় যে, গাজোয়াতগুলির বেশিরভাগই ছিল হানাদারী অর্থাৎ শুত্রুকে নোটিশ না দিয়ে আক্রমন। বৈরাম খার নির্দেশে নিরস্র ও বন্দী হোমরাজ বিক্রমজিত ওরফে হিমুকে হত্যা করে বালক আকবর 'গাজী' হয়েছিলেন।
'জান্নাতুল ফিরদৌস'
এটি ইসলামের সর্বোচ্চ স্বর্গ। যুদ্ধে গিয়ে যারা মারা যাবে তারা শহীদ। এরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি ঐ সর্বোচ্চ স্বর্গে চলে যাবে। জেহাদ না করা মুসলমান যত ধার্মিকই হোক ঐ স্বর্গে যেতে পারবে না।

মক্কাবাসীরা কেন ইসলাম গ্রহন করেছিলো 

হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয় করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন, "কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।

মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন "কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য। (কো-৮/৩৯)

এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি, সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।

হয় ইসলাম নয় মৃত্যু

এখন দেখা যাকইসলামে প্রকৃত পক্ষে ধরনের বিধান আছে কিনানাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া  ?


বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না  তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে। 
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে
"
বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিতকিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেনতিনি বলেন যেতিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়। 
(
মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনপৃ-৯৪সারাক্সী মাবসুতভলিউম-১০পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,-- 
"
আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(পৃ-৯৫আবু ইউসুফকিতাব-আল খারেজপ্ৃ-১৯৫) 
(
একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যেরোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যেতাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবেআর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে। 
(
পৃ-৯৮সারকসী মাবসুতভলিউম-১০পৃ-২৪)


অনুরূপ কয়েকটি  হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করেতাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া  উচিত হবে ?


১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবেপুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ততাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে। 
(
মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনমজীদ খদ্দুরিপৃ-২৩৮মবসুতভ্লিউম-১০পৃ-১১৭-১৯)

আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ 
"
হে আমার খোদাএই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬) 
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেনতবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী কাফের। (কো-৭১/২৭)

আজকাল অনেকে বলেনএসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যকিন্তু তা ঠিক নয়। 
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন-- 
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়মক্কার বিরুদ্ধেও নয়ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবীপৃ-২৭০)

(
পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে )


মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে
"
আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-, পৃ-২৩৬)

ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না। 
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে
"
লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (.২১৭) 

এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে  (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত -২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।

নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-/৩৯)

নোয়াখালী দাঙ্গা ছিল পরিকল্পিত

গোলাম সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া আছে- "জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা হইয়াছে।" (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)

তখনকার কংগ্রেস সভাপতি আচার্য্য যে বি ক্ৃপানলী সে সময় নোয়াখালী ঘুরে যা দেখেছিলেন তা তিনি প্রকাশ করেছেন এই ভাষায়, "নোয়াখালী এবং ত্রিপুরার জন উন্মত্ততার সব কিছুই ছিল প্রশিক্ষিত নেতৃত্বের অধীনে ব্যপকভাবে পরিকল্পিত। রাশ্তাঘাট কেটে দেওয়া হয়েছিল, যত্র তত্র বন্দুকের ব্যবহার হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গুণ্ডাদের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাজার হাজার হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে অথবা জোর পূর্বক বিবাহ করা হয়েছে। তাদের পূজার স্থানকে অপবিত্র করা হয়েছে। এমনকি শিশুদের প্রতিও কোন রকম করুণা দেখানো হয়নি। (অমৃত বাজার পত্রিকা, ২২/১০/১৯৪৬) স্টেটসম্যান পত্রিকার জনৈক সাংবাদিক নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চলে রিপোর্ট করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হয়েছিলেন তা মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন ব্যবস্থা বা ইসলাম প্রতিষ্ঠাও ততপরবর্তী কালের আরব ইরান ও অন্যান্য অঞ্চলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে-

"নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০ ই অক্টোবর সকালে একদল  লোক ঐ মেয়েটির বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে  (মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়। মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।"
(দি স্টেটসম্যান, ২৬/১০/১৯৪৬)
আধুনিক সাংবাদিক ও প্রতিবেধকগণ এই ধরনের ঘটনাকে গুণ্ডাদের কার্যকলাপ বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু আপনারা প্রথমেই পবিত্র কোরান, হাদিস ও সুন্নার উল্লেখ থেকে দেখেছেন যে এগুলোর কোনটিই গুণ্ডা বা স্বেচ্ছাচারী বাদশাহদের কর্ম নয়। এর প্রতিটি ঘটনাই ইসলাম ধর্মসম্মত পবিত্র কাজ।
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)

একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ )  তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে। 
তার ভাষায়-

"Islam came out as the enemy of the 'Butt. The word 'But' as every-  body knows is an Arabic word and means an idol. Not many people  however Imow what the derivation of the word 'But' is. 'But' is the Arabic  corruption of Buddha. Thus the origin of the word indicates that in the  Moslem mind idol worship had come to be indentified with the religion of  Islam destroyed Buddhism not only in India but wherever it  Buddha  went ". Dr Babasäheb B.R. Ambedkar's Writings and Speeches, Published  by Govt. of Maharastra, Vol. 3, p- 229-230)
সমস্ত আরব  জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা  ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosquethe prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midrasHe said to them, "If you embrace islamyou will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No392 of Sahih al bukharivol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)

পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
 সেই সুত্রে  পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)

আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে।  সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'



ইসলামি শান্তি ও বিধর্মী সংহার-শেষ পর্ব

শেষ পর্ব
                                                    মুসলমান পরাধীনতার যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস একটু মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করলে দেখা যাবে যেযখনই কোন নতুন ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসনে বসেছেন তখনেই তাকে রাজ্য বিস্তারের জন্য দৌয়াতে হচ্ছে। তাকে গুজরাটরাজস্থানমধ্যভারত ও দক্ষিণ ভারতে অভিযান করতে হচ্ছে। গোয়ালিয়র,  রাজস্থানরনথাম্ভোরচিতোর ইত্যাদি দূর্গ দখল করতে হচ্ছে এবং সেজন্য অনেক যুদ্ধ বিগ্রহে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কাজেই প্রশ্ন হলকেন একই দূর্গ বা একই অঞ্চল বিভিন্ন বাদশাহকে বারবার জয় করবার প্রয়োজন কেন হচ্ছেউত্তর একটাই----- মুসলমানরা কোন দূর্গ বা অঞ্চলে বেশীদিন তাদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হন নাই। স্থানীয় এসব রাজারা ক্রামাগত বিদ্রোহ করা স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেমুসলমান শাসনকে অস্বীকার করেছে। তাই একই অঞ্চল বারবার বাদশাহদের জয় করার প্রয়োজন হয়েছে। এই তথ্য থেকে এটাই প্রমানিত হয় যেভারতের হিন্দু শাক্তি আক্রমনকারী মুসলমান শক্তির সঙ্গে নিরন্তর সংঘর্ষ করেছে এবং অসংখ্য হিন্দু বীর এই সংঘর্ষে রক্ত দিয়েছেপ্রাণ দিয়েছে। বিদেশী মুসলমান শক্তিকে এক মুহূর্তেও নিশ্চিন্তে থাকতে দেননি।

তাই .কে.এম মুন্সী লিখেছেন---

"এ হল স্বাধীনতা রক্ষার খাতিরে নিতান্ত বালক থেকে শুরু করে মৃত্য-পথ-যাত্রী বৃদ্ধ পর্যন্ত অগনিত মানুষের বিরামহীন সংঘর্ষনিরন্তর বীরত্ব প্রদর্শন ও প্রাণ বিসর্জনের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। এ হল মাসের পর মাসকখনো বছরের পর বছর ধরে দূর্গের অভ্যন্তরে থাকা বীর যোদ্ধাদের যুদ্ধের ইতিহাস। দূর্গ আক্রমনকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলতে থাকা এক বিরামহীন সংগ্রামের ইতিহাস। এ হল সম্মান রক্ষার্থে হাজার হাজার হিন্দু নারীর জলন্ত অগ্নিতে আত্মাহুতি দেবার এক দীর্ঘ ইতিহাস। এ হল দাসত্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পিতামাতার ধারা অবোধ শিশুকে কূপের জলে নিক্ষেপ করার এক করুণ ইতিহাস। এ হল অন্তহীন হামলাকারীদের নিরন্তর আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য তরুণ যোদ্ধাদের দ্বারা ম্ৃত সৈনিকের স্থান পূরণ করার এক বিভীষিকাময় ইতিহাস।"

আমরা সেই মাটিতে বাস করছিযে মাটি হাজার বছর ধরে কোটি পিতারমাতার ভাইয়েরবোনের অশ্রুজলে সিক্ত। পিতা মাতা ভাইয়ের সমনে বোনকে টেনে নিয়ে গিয়ে হারেমে নির্লজ্জ কুকুরের মত ব্যবহার করেছেভাই খোজা হয়ে তাকে পাহারা দিয়েছে। 
এ সেই করুণ ইতিহাস যেখানে কন্যা সন্তানের জন্মকে অভিশাপ মনে করে পিতা মাতা গঙ্গাসাগরে ভগবানের নামে উৎসর্গ করে দিয়েছে। নিজ হাতে সন্তান হত্যার বুকফাটা আর্তনাদ পিতা মাতা হাজার হাজার বছর চেপে রেখেছে। 
কারন সন্তান জন্মের পর বিসর্জনের যে কষ্ট তার চেয়ে বেশী কষ্ট হবে যখন চোখের সামনে মুসলমানরা ধরে নিয়ে কুকুরের মত ব্যবহার করবে। 
যেখানে দিনের পর দিনমাসের পর মাসবছরের পর বছরযুগের পর যুগশতাব্দীর পর শতাব্দী চলেছে। হিন্দুর রক্তে হোলি খেলাজিজিয়াখেরাজ আদায়ের ফলে বুভূক্ষ মানুষের হাহাকার। 
এ সেই মাটিতে আমরা বাস করছি, যে মাটিতে হাজার বছর ধরে মিশেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্ত ও অশ্রুর বন্যা, পিতার হাহাকার , বোনের আর্ত চিৎকার, ভাইয়ের রক্ত, মাতার অসহায় দৃষ্টি। 
সে মাটি আজও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদে।
মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাৎকার করা হয়েছে

অনেকের এই ধারনা থাকতে পারে যে, মুসলমানদের দ্বারা ব্যপক হারে হিন্দু হত্যা হিন্দুর সম্পত্তি লুটপাট করে এআত্মসাত করা, হিন্দু নারীদের জোর করে ধরে নিয়ে লুটের মালে পরিনত করা ইত্যাদি ঘটনা এক কালে মধ্যযুগে ঘটেছে বটে, তবে আজ আর তার পুনরাব্ৃত্তি হবেনা। আজ দেশ ও সমাজ সভ্যতার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে, তাই মুসলমানদের কাছ থেকে এই সব বর্বরতা আশঙ্কা নেই। মধ্য যুগ নেই তাই মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হবে না। এই সব ব্যক্তিদের জানা নেই যে সমস্ত পৃথিবী সভ্যতার পথে অগ্রসর হলেও ইসলাম ও কোরান এবং সে সঙ্গে মুসলমান সমাজ আজও সেই মধ্য যুগেই দাঁড়িয়ে আছে। তারা সভ্যতার পথে এক পা ও অগ্রসর হয়নি। যে কোরান ও হাদিস মধ্য যুগের মুসলমানদের সমস্ত কাজে অনুপ্রানিত করত, সেই একই কোরান ও হাদিস আজকের মুসলমান সমাজকেও পূর্বোক্ত সকল রকম কাজে একই ভাবে প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে। কোরানের ও হাদিসের কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই কাফেরের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গির কোন পরিবর্তন হয়নি। শুধু সুযোগের অপেক্ষা মাত্র। অনুকুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজও মুসলমানরা কাফের কেটে রক্তা গঙ্গা বইয়ে দিবে। কাফেরর মৃতদেহ দিয়ে পাহাড় তৈরী করবে, কাফের নারীদের লুটের মালে পরিণত করবে এবং কাফেরদের মন্দির ভেঙে ধূলায় মিশিয়ে দেবে। তফাত শুধু এই, এক কালের তলোয়ার, শূল, বর্শা, তীর ধনুক ইত্যাদির বদলে আজ একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, মার্টার, রকেট, বোমা, বিমান ইত্যাদি উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে। উদ্দেশ্য একটাই, কাফের নির্মূল করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা। 


মুসলমানদের মন মানিসকতা যে কোন পরিবর্তন নেই তার উদাহারন হল ২০০২ সালেও আফগানিস্থানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মূর্তি যা সারা বিশ্বের বাধা নিষেদকে অমান্য করে মুসলমানরা ধ্বংস করে ফেলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যা ঘটেছিল তা অনেকেরই হয়তো মনে আছে । 

আনোয়ার শেখের ভাষায়__ 

"বিগত ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলায় হিন্দুদের উপর যে নারকীয় বর্বরতার অনুষ্টান করা হয়েছে আর তুলনা মানব ইতিহাসে অনুপস্থিত। বহু ক্ষেত্রে সমগ্র অধিবাসীকেই ঘিরে ফেলে অত্যাচার চালানো হয়েছে। মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাতকার করা হয়েছে। মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেঝেতে আছাড় মেরে শিশুদের মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছে, তারপর বয়ষ্ক পুরুষদের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে, চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে এবং সব শেষে ধড় থেকে মাথা আলাদা করা হয়েছে। চরম উল্লাসের আনন্দ পাবার জন্য পরিবারের সবাইকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে সেই ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।" 
[Anwar Sheikh, This is Jehad] 
ইসলাম সম্পর্কে -মনিষীদের বানী

"ইসলাম হচ্ছে এক রাজনৈতিক আক্রমনকারী পরধর্ম অসহিষ্ণু বিস্তারবাদী আন্দোলন। যারা আল্লাহ মানে না, যাদের কোরানে বিশ্বাস নেই কিংবা মূর্তি পূজার মাধ্যমে উপাসনা করে, এমন  নাগরিকদের দেশের উপর আক্রমন করে তাদের পরাভূত কয়া, তাদের সম্পত্তি লুটপাট করা, তাদের মহিলাদের লুটের মাল হিসেবে সৈনিকদের দ্বারা বলতকার করানো, তাদের ধর্মান্তরন করে মুসলমান করা, আর যারা ধররান্তরিত হলো না, তাদের উপর অত্যাচারের পূনরাবৃত্তি অবিরত চালু রাখা---- এই হচ্ছেকোরানের শিক্ষা"

পৃথিবীর দুইটি ধর্ম সম্প্রদায় আছে অন্য সমস্ত ধর্মমতের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধতা অত্যুগ্র-- সে হচ্ছে খৃষ্টান আর মুসলমান ধর্ম। তারা নিজের ধর্ম পালন করে সন্তুষ্ট নয়, অন্য ধর্মকে সংহার করতে উদ্যত। এই জন্য তাদের ধর্ম গ্রহন করা ছাড়া তাদের সঙ্গে মেলবার অন্য কোন উপায় নেই।"
--------রবীন্দ্রনাথ।  (রবীন্দ্র রচনাবলী, জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃ-৩৫৬)

"বস্তুত মুসলমান যদি কখনও বলে হিন্দুর সহিত মিলন করিতে চাই, সে যে ছলনা ছাড়া আরা কিছু হইতে পারে ভাবিয়ে পাওয়া কঠিন।"
"হিন্দু মুসলমান মিলন একটি গালভরা শব্দ, যুগে যুগে এমন অনেক গালভরা বাক্যই উদ্ভাবিত হইয়াছে, কিন্তু ঐ গাল ভরানোর অতিরিক্ত সে আর কোন কাজেই আসে নাই।"
--------শরৎচন্দ্র । (শরত রচনাবলী জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, তৃতীয় খণ্ড, পৃ-৪৭৩)

"ইসলাম ধর্মীরা কোরানের দুইটি আয়াত, 'পৌত্তলিকদের যেখানে পাও হত্যা কর' এবং 'অতএব ধর্মযুদ্ধে তাদের বন্দী কএ হয় বশ্যতার অঙ্গীকার নতুবা মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দাও, অনুযায়ী ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বলে যে, বহু দেবদেবীতে বিশ্বাসী পৌত্তালিকদের হত্যা বা নির্যাতন করা ঈশ্বএর নির্দেশ এবং অবশ্যিক। সুতরাং ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ঈশ্বরের নির্দেশ পালনে তত্যুতসাহিতা  সেই পৌত্তলিকগণকে হত্যা ও নির্যাতন করতে একালে বা সেকালে কখনই বিরত হয় নাই।"
(তুহাফাত-উল-মুওয়াদ্দীন, রামমোহন স্মরণ, মার্চ ১৯৮৯, পরিশিষ্ট, প্ৃ-৩১)

"আপনার মত (প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান) শিক্ষিত সংস্কৃতিবান এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি আজ এমন দর্শনের প্রচারক হয়ে গেলেন, যে দর্শন মানবতার পক্ষে ভয়াবহ বিপজ্জনক এবং যে দর্শন ন্যায় ও শুভ চিন্তাধারা থেকে উদ্ভুত যাবতীয় নীতিমালার পক্ষে ক্ষতিকারক।"
---মুসলিম লীগের প্রাক্তন সহযোগী সদস্য মি যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল।

ইসলাম সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দঃ-
এ বিষয়ে মুসলমানরা অত্যান্ত স্থুল দ্ৃষ্টি সম্পূর্ণ এবং সাম্প্রদায়ীক মনভাবাপন্ন। তাদের সিদ্ধ বাক্য শুধু একটিই
লা-ইলাহা-ইল্লাল্লা-মোহাম্মদুর-রাসুলাল্লহ
অর্থাৎ- ঈশ্বর মাত্র একজন এবং মোহাম্মদ তার রসুল,
এই সিদ্ধ বাক্যের বাইরে আর যা কিছু আছে সবই নিকৃষ্ট বস্তু এবং অবিলম্বে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলতে হবে এই হল মুসলমানদের কথা, এ কথায় যে বিশ্বাস করেনা সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক মুহুর্তের হুশিয়ারী দিয়ে তাকে হত্যা করা হবে। যা কিছু এই উপাসনা পদ্ধতির অন্তর্গত নয় তাকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করতে হবে। এ বিশ্বাসের সাথে মিলছে না এমন যত গ্রন্থ আছে সেগুলিকে দগ্ধ করতে হবে।
প্রসান্ত মহাসগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত পাচ শত বর্ষ ব্যপি পৃথিবীর বুকে এই একি কারনে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে, এই হল ইসলাম।"
(স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী (প্রকটিক্যাল বেদান্ত), ৪র্থ খণ্ড, পৃ-১২৫ ও ২য় খণ্ড, পৃ-৩৫২)

ইসলাম সম্মর্কে বি আর আম্মেদকারঃ-
ইসলামের ভাতৃত্ব মোটেই বিশ্ব ভাতৃত্ব নয় এটা কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যই যারা মুসলমান তারাই কেবল এর সুযোগ পাবে কিন্তু অমুসলমানরা পাবে কেবল শত্রুতা। যেখানেই ইসলামিক শাষন রয়েছে সেটাই মুসলমানদের নিজের দেশ, বস্তুত ইসলাম একজন প্রকৃত মুসলমানকে কখনোই ভারতকে তার নিজের দেশ বলে মেনে নিতে দেবেনা বা হিন্দুদেরকে তার আত্মীয় বলে স্বীকার করতে দিতে পারেনা।

ইসলাম সম্পর্কে মোহনদাশ করমচাদ গান্ধীঃ-
জাতীয় স্বাধীনতা আন্দলনে মুসলমানরা কোন আগ্রহ দেখায়নী, মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সত্য তারা ভারতকে নিজের দেশ বলে স্বীকার করেনা।

হজরত মোহাম্মদের নিরপেক্ষ জীবনীকার ও বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার উইলিয়াম মূর বলেছেনঃ-
কোরান ও ইসলামের তরবারী মানব সভ্যতা, স্বাধীনতা ও সত্যের সবচেয়ে বড় শত্রু যা আজ পর্যন্ত মানুষ দেখেছে।

ইসলাম সম্পর্কে আনোয়ার শেখঃ-
ইসলাম এমন একটা ধর্ম বিশ্বাষ যা সমস্ত মানব জাতিককে দুটি চীর বিভদমান জাতি গোষ্টিতে ভাগ করে দিয়েছে। একদল যারা আল্লাহ ও মোহাম্মদকে বিশ্বাষ করে অর্থাৎ আল্লাহর দল মুসলমানরা আর এক দল হল শয়তানের দল অর্থাৎ সব অমুসলমানরা।

ইসলাম সম্পর্কে রাজা রামমোহন রায়ঃ-
ঐসব দৈবী নির্দেশে আস্থা রাখার জন্য ইসলাম ধর্মীরা ব্রাম্মন জাতীর অনেক ক্ষতি করেছেন ও তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছেন, এমনকি মৃত্যু ভয়ও দেখিয়েছে তবু তারা ধর্ম পরিত্যাগ করতে পারেনি । ইসলাম অনুবর্তীরা কোরানের পবিত্র শ্লোকের মর্মানুসারে অবিশ্বাসীদের ধর্ম যুদ্ধ করে বেধে আনো এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মুক্ত করে দাও বা বশ্যতা স্বীকার করাও এগুলি ঈশ্বরের নির্দেশ বলে উল্লেখ করে যেন পৌত্তলিকদের বধ করা তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা ঈশ্বর আদেশে অবস্য কর্তব্য। মুসলমানদের মতে পৌত্তলিকদের মধ্যে ব্রাম্মনেরাই সবছেয়ে বড় পৌত্তলিক সে জন্যই ইসলামানুবর্তীরা সর্বদাই ধর্মাউন্মাদে মত্ত হয় এবং তাদের আল্লার আদেশ মানবার উতসাহে বহু দেবদেবাদিদের ও শেষ পয়গম্ভরের ধর্ম প্রচারে অবিশ্বাসীদের বধ করতে ত্রুটি করেনি।

ইসলাম সম্পর্কে রোনাল রেগানঃ-
সম্প্রতি আমরা একটা ধর্মযুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি আক্ষরিক অর্থেই কারন মুসলমানরা তাদের জিহাদের মূল ধারনতা ফিরে আসছে যে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রান সেওয়াটাই তাদের স্বর্গে যাওয়ার উপায়।

ইসলাম সম্পর্কে মার্গারেট থ্যচারঃ-
আজকের দিনে বল সে হিজমের মত চরমপন্থী ইসলামও একটা সশস্র মতবাদ, এটা একটা আক্রমনাত্বক ধর্মতত্ব যা সশস্র ধর্মান্ধ অনুগামীদের দ্বারা প্রসার লাভ করেছে। কমনিউনিজমের এটাকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক দীর্ঘ মেয়াদী রণনীতি প্রয়োজন।

ইসলাম সম্পর্কে উইলিয়াম গ্লাক্সটোনঃ-
যতদিন কোরান আছে ততদিন পৃথিবীতে শান্তি নেই।

ইসলাম সম্পর্কে নীরদচন্দ্র চৌধুরীঃ-
মুসলিম ধর্ম বিশ্বাসের বিধান অনুযায়ী মুসলমানও তেমনি সকল মুসলমানকে আপন ও সকল হিন্দুকে পর মনে করিতে বাধ্য । বরঞ্চ মুসলমান সমাজের আভ্যন্তরিন সাম্য ও ভাত্ৃ ভাবের জন্য অমুসলমান সম্বন্ধে তাহারা আরো বেশি সজ্ঞান । মুসলমান ধর্ম শাস্রের নির্দেশ মত মুসলিম মাত্রের ই নিকট পৃথিবী দুই ভাগে ভিবক্ত-
১। দারওল ইসলাম  ২। দারওল হরব ।
দারওল ইসলামের অর্থ ইসলামের দেশ অর্থাৎ যে দেশে মুসলমান ধর্মাবলম্বী শসক কর্তীক  অধিক্ৃত ও শাষিত।
দারওল হরবের অর্থ যুদ্ধের দেশ, যে দেশে যুদ্ধ করিয়া ইসলামের প্রাধান্য স্থাপন করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান অনুসারে কোন মুসলমান অমুসলমানের অধীন থাকতে পারেনা শুধু তাই নয় অমুসলমান জগত এবং মুসলমান জগতের মধ্যে চিরন্তন বিরোধ, এই জন্যই অমুসলমান জগতের নাম করন হইয়াছে দারওল হরব -যুদ্ধের দেশ।
এই নির্দেশের জন্য অমুসলমান ও মুসলমান রাজ্যের মধ্যে কোন মৈত্রী হতে পারে না। যতদিন পর্যন্তনা দারওল হরব দারওল ইসলামে পরিনত হইবে ততদিন পর্যন্ত বিশ্বাসী মুসলমান মাত্রকেই জিহাদ বা ধর্ম যুদ্ধ চালাইতে হইবে।
জিহাদের নির্দেশ অনুযায়ী অবিশ্বাসীকে হয় (১) মুসলমান হইতে হইবে কিংবা (২) মুসলমানের প্রধান্য স্বীকার করিয়া ও জিজিয়া দিতে স্বীকৃত হইয়ে আশ্রিত হইয়া থাকিতে হইবে কিংবা (৩) যুদ্ধ করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান জানিলে এই তিন পথের এক পথ ভিন্ন মুসলমানের  অমুসলমানের নিকট যাইবার চতুর্থ আর কোন পথ নাই।

ইসলাম সম্পর্কে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ঃ-
যখন ধর্মের প্রতি মোহ তাহাদের কমিবে, যখন বুঝিবে যে কোন ধর্মই হোক তাহার গোড়ামী লইয়া গর্ব করিবার মত এমন লজ্জাকর ব্যপার, এত বড় বর্বরতা মানুষের আর দ্বিতীয় নাই, কিন্তু সে বোঝার এখনো অনেক বিলম্ব এবং জগতশুদ্ধলোক মিলিয়া মুসলমানের শিক্ষার ব্যবস্থা না করিলে ইহাদের কোন দিন চোখ খুলিবে কিনা সন্দেহ।
উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি

মুসলিম পণ্ডিতদের ভাষ্যইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্মশান্তির ধর্ম এবং একমাত্র বেহেস্ত লাবের অধিকারী।
ভারতবর্ষের সাধারণ হিন্দুরা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে-- এই হল বেশ কিছু সংখ্যক আধুনিক পণ্ডিত ও রাজনীতিকদের গবেষণা।

ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কোনদিন সম্প্রীতি ছিল না। ইতিহাস ঘেটে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, শুধু বাঙালী হিন্দু মুসলমানই নয়, পৃথিবীর কীন সম্প্রদায়ের সঙ্গেই মুসলমানদের সম্প্রতি ছিল না এবং এখনো নেই। সারা পৃথিবীতে জাতিগত সন্ত্রাসের প্রায় সবগুলিই মুসলমান সম্প্রদায় কর্ত্ৃক পরিচালিত। এর কারণ অবশ্য ইসলাম ধর্ম। ইসলাম কাউকে সহ্য করে না। পরমত সহিষ্ণুতা ইসলামের অভিধানে নেই। এটা ইসলামের জন্মগত চরিত্র। একজন হিন্দু যখন প্রার্থন করছেন- সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হোক, মঙ্গল হোক, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ভয়শূন্য হোক, নিরোগ ও শান্তি লাভ করুক; তখন একজন মুসলমান প্রার্থনা করছে, শুধু মুসলিম উম্মাহর (জাতির) উপর শান্তি বর্ষিত হোক, অন্যান্য জাতি ধ্বংস হোক।

যেখানে একজন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন লোক মনে করছেন হত্যা, লুণ্ঠন, বিধর্মী অত্যাচার অন্যায়, সেখানে একজন মুসলমানের কাছে ঐ সব অপকর্মগুলি পরম ধরম ও অবশ্য পালনীয় কর্ম। কাফের হত্যা, তাদের সম্পত্তি লুট করা ধর্ম, তাদের বউ, মেয়ে দখল করে ভোগ করা ধর্ম। আক্রমন, আগ্রাসন, অমুসলিম হত্যা করে তাদের সমত্তি লুট করা এবং নারী ও শিশু অপহরন আজকের সভ্যতায় বর্বরতা ব্লে বিবেচিত হলেও মুসলমানের কাছে এই অপকর্মগুলি পরম ধর্ম । বলা বাহুল্য এই সমস্ত উপায়েই পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 
ইতিহাস না পড়া কিছু স্বঘোষিত পন্ডিত প্রচার করেছেন, ভারত উপ-মহাদেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা এবং উচ্চবর্ণ নিন্ম বর্ণ বিরোধ। এর ফলে নিন্মবর্ণের লোকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কথাটি যে সর্বাংশে মিথ্যা তা ইতিহাস পাঠক মাত্রই জানেন। 
প্রকৃত তথ্য হল -- আক্রমণ, আগ্রাসন, লুণ্ঠন, বন্দী, জিম্মি, জিজিয়া এবং অন্যান্য কৌশলে এদেরকে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তারা আবার স্বধর্মে ফিরে না আসার কারণ দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক মুসলিম শাসন। 
৬৩২ খৃষ্টাব্দে হজরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মদিনার লোকেরা স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন, কিন্তু হজরত আবু বকর কঠোর নীতি অবলম্বন করে তাদেরকে ইসলামে থাকতে বাধ্য করে।
ঐতিহাসিক ম্যূর বলেন- "সমগ্র উপদ্বীপের লোক স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন" (এম এ ছালাম; ইসলামের ইতিহাস, পৃষ্ঠা- ১৯)

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্বল্পকালীন যুদ্ধ শেষে তারা আবার স্বধর্মে ফিরে এসেছিলেন।

১৯৪৬ সালে নোয়াখলীতে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু রায়ট শেষ হলে তারা আবার স্বধর্মে ফেরত আসেন। কিন্তু ৬০০ থেকে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত যারা মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা আর স্বধর্মে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। কারন সহস্র বছর তাদের ঘাড়ের উপর ঝুলছিল রেশমী সুতায় বাধা তলোয়ার। আজ তাদের সন্তানগন ভুলেই গেছে তাদের পূর্ব পুরুষগণ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, মনের তাগিদে হয়নি
কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল কি
ইসলামের আভির্বাব থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমগ্র মধ্যযুগ ধরে মুসলমানরা সারা বিশ্বে যে তান্ডব করেছেতার নজির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগকে ইসলামী চিন্তাবিদ্গন আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ (অন্ধকার যুগহিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু নানা কারণে আধুনিক মুক্ত নিন্তাবিদগণ ইসলামের আবির্ভাবের দিন থেকেই আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ শুরু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন এবং এই সময়টিকে মধ্যযুগ বলে চিহ্নিত করে বর্বরতার যুগ বা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নামকরণ করেছেন। আরবইরান ও ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এ কথা চরম সত্য বলে এক বাক্যে সবাই গণ্য করেন।
ভারত উপমহাদেশে হিন্দু সভ্যতা অধপতনের কোন ধারাবাহিক ইতিহাস নেই। আর এ কারনেই পণ্ডিতগন হিন্দু অধপতনের ও ইসলাম বিস্তারের কারন খুজতে গিয়ে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভুল করেছেন মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত ইতিহাস না পড়ে। অনেকে সব ই জানেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে সত্য প্রকাশ করেন নি। কিন্তু ইতিহাস লিখতে গেলে সত্য ইতিহাসই লেখা উচিত। ইতিহসে জোচ্চুরি চলে না। অথচ আমাদের দেশে তা দিব্যি চলে আসছে। আমাদের উচিত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে একটি সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা।
আচার্য যদুনাথ সরকারের সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরণ রেখে--
"সত্য প্রিয়ই হোউক আর অপ্রিয়ই হোউক সাধারণের গৃহীত হউক আর প্রচলিত মতের বিরোধী হউক তাহা ভাবিব না। আমাদের স্বদেশ গৌরবকে আঘাত করুক আর না করুক তাহাতে আক্ষেপ করিব না, সত্য প্রচার করিবার জন্য সমাজের বা বন্ধুবর্গের মধ্যে উপহাস ও গঞ্জনা সহিতে হয় সহিব। কিন্তু তবুও সত্যকে বুঝিব, গ্রহন করিব, ইহাই ঐতিহাসিকের প্রতিজ্ঞা।"

ভারতবর্ষে হিন্দুদের অধপতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে একই সঙ্গে ইসলাম বিস্তার এবং সেই সঙ্গে মুসলমানদের ধর্ম এবং আচার সম্পর্কে সাম্যক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এ কারনেই আলোচনার প্রথমেই পাঠকেদের জানিয়ে দেওয়া দরকার ইদলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল কোরান, যা একতি ঐশীগ্রন্থ বলে পরিচিত। কোরানের পরেই হাদিস। হাদিস হল হজরত মুহাম্মদের প্রামাণিক উক্তি ও কর্ম। মুসলমানগণ ও দুটি গ্রহন্থের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হলে দাবি এবং মুসলমান বাদশাহগণ কোরান-হাদিস অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেতেন। এ ব্যপারে সহযোগিতা নিতেন ওলেমা ও মাওলানাদের । আমি বোঝার সুবিধার্থে কোরান-হাদিসের বানী এবং তার প্রয়োগ এক সঙ্গে আলোচনা করব যাতে পাঠকগণ বাস্তব অবস্থা ও তাত্ত্বিক ব্যখ্যা বুঝতে কষ্ট বোধ না করেন।

কাফের,মুসরিক
ইসলামে কাফের হল বিধর্মী
আর মুসরিক হল পৌত্তালিক (মূর্তিপুজারী) কাফের।
মুনাফেক
মুনাফেক হল বাইরে ইসলাম ধর্মালম্বী কিন্তু ভিতরে ইসলমের শত্রু।
সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার নবী বিরোধী গোষ্ঠীকে এই নাম দিয়ে কোরানে বারবার দিক্কার দেওয়া হয়েছে। এই গোষ্টির নেতা ছিলেন আব্দুল্লা ইবন উবাই।
'জেহাদ'
ইসলামের আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল 'জেহাদ'। কোরানের পরিভাষায় জেহাদ হচ্ছে 'জেহাদ ফি সবিলিল্লা' (আল্লার পথে সংগ্রাম)। বিধর্মী নাশের যুদ্ধই হল জেহাদ। অনেকে বলেন, জেহাদের অর্থ ধর্মযুদ্ধ। এ কথাটা ভুল।
'গণিমা' বা গনিমতের মাল
জেহাদের নিত্যসঙ্গী হচ্ছে 'গণিমা' বা গনিমতের মাল। জেহাদে কাফেরদের কাছ থেকে যে সব মাল কেড়ে আনা হয় তার নাম গনিমতের মাল। 
'জিজিয়া'
হিদাইয়া গ্রহন্থের মতে, জেদ করে যারা কাফেরির পাপে অটল থেকে যায়, তাদের কাছ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রের পাওনা আক্কেল সেলামীর নাম জিজিয়া। এই কর অত্যান্ত হীনতার সঙ্গে পৌছে দিতে হয় পবিত্র মুসলমানদের কাছে।
'ফেই'
 এর অর্থ হচ্ছে বিনা যুদ্ধে পাওয়া লুটের মাল, যার সবটাই পয়গম্ব হজরত মুহাম্মদের পাওনা। জিজিয়াকে ফায় এর মধ্যে ধরা হয়।
জিম্মি
ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মায় থাকা জিজিয়া করদাতা কাফেররা হচ্ছে জিম্মি। এরা জেহাদে পরাজিত ইসলামী রাষ্ট্রের অধম নাগরিক।
গাজী
কাফের খুন করে যে মুজাহিদ জয়ী হয় তাকে বলা হয় গাজী। (One who slays an infidel-Hughes) হজরত মুহাম্মদ মদিনা বাশের দশ বছরের মধ্যে ৮২ বার জেহাদ করেছিলেন। তার মধ্যে ২৬/২৭ টিতে নেতৃত দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই সব জেহাদকে বলা হয় গাজোয়াত। অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি গাজী হয়েছিলেন। হাদিসে এও দেখা যায় যে, গাজোয়াতগুলির বেশিরভাগই ছিল হানাদারী অর্থাৎ শুত্রুকে নোটিশ না দিয়ে আক্রমন। বৈরাম খার নির্দেশে নিরস্র ও বন্দী হোমরাজ বিক্রমজিত ওরফে হিমুকে হত্যা করে বালক আকবর 'গাজী' হয়েছিলেন।
'জান্নাতুল ফিরদৌস'
এটি ইসলামের সর্বোচ্চ স্বর্গ। যুদ্ধে গিয়ে যারা মারা যাবে তারা শহীদ। এরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি ঐ সর্বোচ্চ স্বর্গে চলে যাবে। জেহাদ না করা মুসলমান যত ধার্মিকই হোক ঐ স্বর্গে যেতে পারবে না।

মক্কাবাসীরা কেন ইসলাম গ্রহন করেছিলো 

হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয় করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন, "কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।

মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন "কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য। (কো-৮/৩৯)

এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি, সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।

হয় ইসলাম নয় মৃত্যু

এখন দেখা যাকইসলামে প্রকৃত পক্ষে ধরনের বিধান আছে কিনানাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া  ?


বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না  তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে। 
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে
"
বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিতকিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেনতিনি বলেন যেতিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়। 
(
মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনপৃ-৯৪সারাক্সী মাবসুতভলিউম-১০পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,-- 
"
আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(পৃ-৯৫আবু ইউসুফকিতাব-আল খারেজপ্ৃ-১৯৫) 
(
একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যেরোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যেতাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবেআর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে। 
(
পৃ-৯৮সারকসী মাবসুতভলিউম-১০পৃ-২৪)


অনুরূপ কয়েকটি  হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করেতাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া  উচিত হবে ?


১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবেপুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ততাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে। 
(
মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনমজীদ খদ্দুরিপৃ-২৩৮মবসুতভ্লিউম-১০পৃ-১১৭-১৯)

আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ 
"
হে আমার খোদাএই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬) 
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেনতবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী কাফের। (কো-৭১/২৭)

আজকাল অনেকে বলেনএসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যকিন্তু তা ঠিক নয়। 
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন-- 
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়মক্কার বিরুদ্ধেও নয়ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবীপৃ-২৭০)

(
পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে )


মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে
"
আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-, পৃ-২৩৬)

ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না। 
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে
"
লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (.২১৭) 

এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে  (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত -২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।

নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-/৩৯)

নোয়াখালী দাঙ্গা ছিল পরিকল্পিত

গোলাম সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া আছে- "জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা হইয়াছে।" (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)

তখনকার কংগ্রেস সভাপতি আচার্য্য যে বি ক্ৃপানলী সে সময় নোয়াখালী ঘুরে যা দেখেছিলেন তা তিনি প্রকাশ করেছেন এই ভাষায়, "নোয়াখালী এবং ত্রিপুরার জন উন্মত্ততার সব কিছুই ছিল প্রশিক্ষিত নেতৃত্বের অধীনে ব্যপকভাবে পরিকল্পিত। রাশ্তাঘাট কেটে দেওয়া হয়েছিল, যত্র তত্র বন্দুকের ব্যবহার হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গুণ্ডাদের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাজার হাজার হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে অথবা জোর পূর্বক বিবাহ করা হয়েছে। তাদের পূজার স্থানকে অপবিত্র করা হয়েছে। এমনকি শিশুদের প্রতিও কোন রকম করুণা দেখানো হয়নি। (অমৃত বাজার পত্রিকা, ২২/১০/১৯৪৬) স্টেটসম্যান পত্রিকার জনৈক সাংবাদিক নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চলে রিপোর্ট করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হয়েছিলেন তা মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন ব্যবস্থা বা ইসলাম প্রতিষ্ঠাও ততপরবর্তী কালের আরব ইরান ও অন্যান্য অঞ্চলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে-

"নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০ ই অক্টোবর সকালে একদল  লোক ঐ মেয়েটির বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে  (মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়। মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।"
(দি স্টেটসম্যান, ২৬/১০/১৯৪৬)
আধুনিক সাংবাদিক ও প্রতিবেধকগণ এই ধরনের ঘটনাকে গুণ্ডাদের কার্যকলাপ বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু আপনারা প্রথমেই পবিত্র কোরান, হাদিস ও সুন্নার উল্লেখ থেকে দেখেছেন যে এগুলোর কোনটিই গুণ্ডা বা স্বেচ্ছাচারী বাদশাহদের কর্ম নয়। এর প্রতিটি ঘটনাই ইসলাম ধর্মসম্মত পবিত্র কাজ।
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)

একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ )  তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে। 
তার ভাষায়-

"Islam came out as the enemy of the 'Butt. The word 'But' as every-  body knows is an Arabic word and means an idol. Not many people  however Imow what the derivation of the word 'But' is. 'But' is the Arabic  corruption of Buddha. Thus the origin of the word indicates that in the  Moslem mind idol worship had come to be indentified with the religion of  Islam destroyed Buddhism not only in India but wherever it  Buddha  went ". Dr Babasäheb B.R. Ambedkar's Writings and Speeches, Published  by Govt. of Maharastra, Vol. 3, p- 229-230)
সমস্ত আরব  জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা  ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosquethe prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midrasHe said to them, "If you embrace islamyou will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No392 of Sahih al bukharivol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)

পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
 সেই সুত্রে  পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)

আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে।  সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'



Posted at June 10, 2020 |  by Arya ঋষি

Tags

Text Widget

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.

Blog Archive

© 2013 Arya Rishi. WP Theme-junkie converted by Bloggertheme9Published..Blogger Templates
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.
back to top