information about theology and science
All Stories
(https://aryarishidot.blogspot.com/2017/11/blog-post.html)দ্বিতীয় পর্বের পরঃ-
পর্ব-৩
শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেবের আদেশে ধ্বংস করা হয়েছিল কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির
শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেব ক্ষমতায় বসেই হিন্দু নির্যাতনের জন্য আরও কঠোর নীতি ঘোষনা করলেন। তিনি জিজিয়া কর পুনঃ প্রবর্তন করলেন। উদয়পুর ও চিতোর অধিকার করে দুই'শ এর অধিক দেব মন্দির ধ্বংস করলেন। শিখ গুরু তেগ বাহাদুর আওরঙ্গজেবের হিন্দু বিরোদী নীতি অমান্য করেন এবং কাশ্মীরের ব্রাম্মনদের আওরঙ্গজেব প্রবর্তিত হিন্দু বিরোধী নীতি অমান্য করতে উপদেশ দেন। এ জন্য আওরঙ্গজেবের সম্মূখে উপস্থিত করা হল এবং মৃত্যুভয় দেখিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলা হলে তিনি ধর্ম ত্যাগ অপেক্ষা মৃত্যুই শ্রেয় বিবেচনা করলেন। সম্রাটের আদেশে ততক্ষনাত তাকে হত্যা করা হল। পাঞ্জাবের বর্তমান পাতিয়ালা ও মেওয়াট অঞ্চলে 'সৎনামী' হিন্দু সম্প্রদায়ের বাস ছিল। একজন মুসলমান সৈন্য একজন সৎনামী ভক্তকে হত্যা করলে সৎনামীরা বিদ্রহী হয়, ফলে আওরঙ্গজেবের বাহিনী সৎনামী হিন্দুদের প্রায় সকলকে হত্যা করেন।
আরঙ্গজেবের সমসাময়িক মুসলমান লিপিকার সাকি মুস্তাইদ খা লিখেছেন, "১০৭৯ হিজরী ১৭ই জিলকদ (১৮এপ্রিল, ১৬৬৯) সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে খবর পৌছালো যে, থাট্টা সুলতান বিশেষ করে বারানসীর মুর্খ ব্রাম্মনরা তাদের মোটা মোটা ছেড়া গ্রন্থ থেক কি সব জংলী তত্ব ছাত্রদের শিক্ষা দিচ্ছে। কাফের হিন্দুদের সঙ্গে কিছু মুসলমান ছাত্র ও সেখানে এসব ছাই ভস্ম শিখতে যাচ্ছে। এমনকি বহু দূর দেশ থেকেও বহু ছাত্র ওসব ডাকিনী বিদ্যা শিখতে বারানসীতে উপস্থিত হচ্ছে। এ খবর শোনা মাত্র ধর্মের দিক নির্দেশকারী সম্রাট এক হুকুম জারী করে বললেন, সমস্ত প্রদেশের শাসনকর্তারা যেন স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ভাবে কাফেরদের মন্দির ও বিদ্যালয়সমূহ ধ্বংস করে দেন। এই মর্মে তাদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, তারা যেন মূর্তি পূজা এবং এই ধরনের শিক্ষা কেন্দ্রগুলোকে চিরকালের জন্য স্তব্ধ করে দেন। পরবর্তী রবিউল আউয়াল মাসের ১৫ তারিখে সম্রাটের কাছে খবর এলো যে , সম্রাটের আজ্ঞানুসারে সরকারী কর্ম কর্তারা বেনারসের বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করেছে।"
[Elliot & Dowson, VII-183-184]
সাকি মুস্তাইদ খা আরও লিখেছেন, "১০৮০ হিজরীর রমজান মাসে (ডিসেম্বর, ১৬৬৯ খৃ) সম্রাটের রাজত্বকালের ত্রয়োদশ বছরে অত্যাচারীদের (হিন্দুদের) অবিচল শত্রু ও ন্যায় বিচারের অনুরাগী সম্রাট (আরঙ্গজেব) ডেরা বসুরায় নামে পরিচিত মথুরার হিন্দু মন্দিরট ধ্বংস করতে আদেশ দিলে অনতিবিলম্বে মেকী ধর্মের সুদৃঢ় ঘাটি মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হল। ঠিক সেই জায়গাতেই বহু টাকা ব্যয় করে এক বিশাল মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করা হল।
এখানে লক্ষ করার বিষয় হল আজও মথুরায় গেলে দেখা যাবে যে, সাবেক মন্দিরের ধ্বংস বা ধূলিস্যাত করা হয়নি; শুধু তাকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে মাত্র। ঠিক তেমনি পূর্ববর্তী বিবরণে কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে; ক্কিন্তু আজও কাশীতে গেলে দেখা যায় যে, ধ্বংস করার নামে তাকে শুধু মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে মাত্র। এসব ঘটনা ও তার বিবরণ থেকে এই সিন্ধান্তেই আসতে হয় যে, এই সব বিবরনে যেখানেই মন্দির ধ্বংস করার কথা আছে, সে সমস্ত ক্ষেত্রেই মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর বুঝতে হবে। এটিই নিয়ম, কেননা হজরত মোহাম্মদ মক্কার কেবলেস্বর মন্দিরকে ধূলিস্যাত করেননি, শুধু মূর্তিগুলো ভেঙ্গে দিয়ে এবং ছবিগুলোকে ফেলে দিয়ে কাবা শরীফ নামকরন করেছেন। এটি একটি সুন্নত। এই সুন্নত অনুসরন করা মুসলমান শাসকের নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়ড়িয়েছিল। হিন্দু জনসাধারনকে বাধ্যতামূলকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিয়ে তাদেরই মন্দিরকে ঘসে মেজে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করে মসজিদের রূপ দিয়ে নও মুসলমানের সেখানে নামাজ শিক্ষা দেওয়া ও পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।
৩ টি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর করা হত
এক কালে আজকের করাচির নাম ছিল দেবল বা দেবালয়। কারন, যেখানে সুমুদ্রের পাড়ে ছিল বিশাল একটি মন্দির । সমুদ্রের অনেক দূর থেকে এই মন্দিরের চূড়া দেখা যেত। মহাম্মদ বিন কাশিম ৭১২ খ্রষ্টাব্দে সেই মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তির করে উপমহাদেশে এই বর্বর কাজের সূত্রপাত করেন। সেই সময়কার মুসলমান ঐতিহাসিকরা এই দানবীয় কাজকে মেকি দেব-দেবীর বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর মহান বিজয় বলে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
ইসলামী চিন্তাবিদের মতে মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর করা খুব সোজা এবং তিনটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব । প্রথমত, মন্দিরের বিগ্রহগুলোকে ভেঙে ফেলতে হবে। দ্বিতীয়ত, আজান দেবার জন্য একটি মিনার তৈরী করতে হবে এবং শেষ খুতবা দেবার জন্য মিনার বানাতে হবে। কত কম সময়ের মধ্যে এই কর্ম সমাধান করা সম্ভব আজমীরের 'আড়াই দিন কা ঝোপড়া' তার স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। বিগত ১০০০ বছরে লক্ষ লক্ষ মন্দির মুসলমানেরা ভেঙে ধূলিসাত করেছে; নয়তো মসজিদে রূপান্তর করেছে এমনি উপায়ে। সুলতান মাহমুদ সোমনাথের সুদ্ৃশ্য মন্দির ধ্বংস করেছে। বাবরের দ্বারা অযোধ্যার রাম মন্দির, আওরঙ্গজেবের দ্বারাকাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরা ও মথুরার কেশব মন্দির ভাঙা ও মসজিদে রূপান্তর করা এর অন্যতম উদাহারণ। হজরত মহাম্মদই প্রথম এই পথ দেখিয়ছেন। তার আদর্শ অনুসরণে আজ পর্যন্ত এ কাজ চলছে তো চলছেই।
ঢাকার ওয়ারী এলাকার শিব-মন্দির ভেঙে ইসলামী বিদ্যালয়, বানিয়া নগরের সীতানাথ মন্দির, ক্যাপিট্যাল ঈদ্গা ময়দান, টিকাটুলীর শিব মন্দির, রাজধানী মার্কেট ও মসজিদ, টিপু সুলতান রোদের রাধ-কৃষ্ণের মন্দির হয়েছে মানিকগঞ্জ হাউজ।
সাকি মুস্তাইদ খার বিবরণ অনুসারে বুন্দেলখন্ডের রাজা নরসিং দেব যুবরাজ সেলিমকে নানাভাবে সাহায্য করার পুরুষ্কার হিসেবে মথুরায় মন্দির নির্মান করার অনুমতি লাভ করেন এবং ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ঐ বিশাল মন্দির নির্মান করেন। আওরঙ্গজেবের আদেশে সেই মন্দিরকে ভেঙ্গে মসজিদ তৈরী করা হয়। এই সংবাদে উল্লেসিত মুস্তাইদ খা লিখেছেন,
ইনসাল্লা, ভাগ্যগুনে আমরা ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়েছি। যে কর্ম সমাধা করা নিতান্ত দুঃসাধ্য ছিল, মেকি দেব দেবীর উপাসনালয় ধ্বংসকারী এই সম্রাটের রাজত্বে তাও সম্ভব হল। সত্য ধর্মের প্রতি (সম্রাটের) এই বিপুল সমর্থন উদ্ধত হিন্দু রাজাদের চরম আঘাত হানলো পুতুল দেবতার মত তারাও তাদের ভয়ার্ত মুখ দেয়ালের দিকে ফিরিয়ে রাখলো।
মন্দির তো ভাঙা হল। কিন্তু মন্দিরের বিগ্রহের কি হবে ? সে ব্যপারে সাকি মুস্তাইদ খা লিখেছেন, "জংলী সেই সব মন্দির থেকে মূল্যবান রত্নখচিত সেই সব বিগ্রহ পাওয়া গেল সেগুলোকে আগ্রায় নিয়ে আসা হল এবং সেখানে নবাব বেগম সাহেবার মসজিদের সিড়ির নীচে ফেলে রাখা হল; যাতে সত্য ধর্মে বিশ্বসীরা (মসজিদে যাওয়ার আসার সময়) সেগুলোকে চিরকাল পায়ের তলায় মাড়িয়ে যেতে পারে।"
সাকি মুস্তাইদ খা আরও লিখেছেন-
"রবিউল আখির মাসের ২৪ তারিখে খাঞ্জাহান বাহাদুর কয়েক গাড়ী হিন্দু বিগ্রহ নিয়ে যোধপুর ফেরলেন। সেখানকার অনেক মন্দির ভেঙে এ সব বিগ্রহ সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই কাজের জন্য মহামান্য সম্রাট তাকে খুবই প্রশংসা করলেন। এই সব বিগ্রহের বেশীর ভাগই মূল্যন সোনা, রূপা, পিতল, তামা বা পাঠরের তৈরী ছিল। সম্রাটের হুকুম হল কিছু বিগ্রহ জঞ্জাল হিসেবে এখানে সেখানে ফেলে রাখতে যাতে বিশ্বাসীরা মসজিদে যাতায়তের সময় সেগুলোকে মাড়াতে পারে।"
পরে পাথরের মূর্তি গুলোকে ভেঙে খোয়া করা হয় এবং সেই খোয়া দিয়ে জাম-ই-মসজিদের চাতাল মোজাইক কয়া হয়; যাতে নামাজীরা এসব বিগ্রহকে মাড়িয়ে নামাজ পড়ে আল্লার নাম রোশন করতে পারে।
কাশীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দির এবং ১৬৭০ খৃষ্টাব্দে মথুরার বিখ্যাত কেশব রায় মন্দির ধ্বংস করা হল। এই সংবাদ বিদ্যুতবেগে সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ল। উল্লেখিত উভয় মন্দিরের জায়গাতেই বিশাল দুই মসজিদ খাড়া করা হল যা আজও সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং যে কেউ কাশী বা মথুরা ভ্রমনে গেলে অনেক দূর থেকেই তা দেখতে পাবেন
[R.C.Majumder, BVB. Vol.VII,p-265]
ঐতিহাসিক এ কে মজুমদার লিখেছেন, "মেঘ যেমন পৃথিবীর জল বর্ষণ করে ঔরঙ্গজেব সেই রকম সমস্ত দেশ জুড়ে বর্বরতা বর্ষন করলেন।"
মধ্য যুগে ভারতে হিন্দু প্রজা পীড়নকারী মুসলমান শাসন বর্ণনা করতে গিয়ে ঐতিহাসিক ইলিয়ট বলেছেন, "আমরা অবাক হব না যদি দেখি যে এই সব অত্যাচারী শাসকদের আমলে ন্যায় বিচার কলুষিত ও পক্ষপাত দুষ্ট অথবা যদি দেখি যে, অকথ্য নির্যাতন ও অত্যাচারের মধ্য দিয়ে সর্বত্র রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ ভাবে পুরুষের পুরুষাঙ্গ ও মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হচ্ছে অথবা যদি দেখি, যে সব রাজকর্মচারীকে রক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারাই দূবৃর্ত্ত, ডাকাতের সর্দার বা উচ্ছেদকারী হানাদার রূপে অত্মপ্রকাশ করেছে।"
জালালউদ্দিন সিংহাসনে আরোহণ করে সূবর্ণ গ্রাম থেকে শেখ জহিরকে নিয়ে এসে তার উপদেশ অনুসারে রাজকার্য পরিচালনা শুরু করেন। তিনি পূর্ববঙ্গে ইসলাম ধর্ম বিস্তারের জন্য ঘোষণা করলেন যে, সকলকে মুসলমান হতে হবে নয়তো প্রাণ দিতে হবে। এই ঘোষনার পরে পূর্ববঙ্গের অনেকে কামরূপ আসাম ও কাছারের জঙ্গলে পালিয়ে যান। কিন্তু তথাকথিত নিন্মবর্ণের অনেক হিন্দুই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। ঐতিহাসিক রজনীকান্ত চক্রবর্তীর মতে, জালালউদ্দিনের ইসলাম ধর্ম প্রচারের ফলেই পূর্ব বাংলায় মুসলমানের সংখ্যা এত বেশী। (গৌড়ের ইতিহাস, রজনীকান্ত চক্রবর্তী, পৃ-৪৫-৪৬)
কিন্তু আমাদের ঐতিহাসিকরা এইসব বিষয়গুলি সযত্নে এড়িয়ে চলেন। তাদের মূল দিক নির্দেশই হল বিদেশীমুসলমান শাসকদের মহান করে দেখাও, মুসলমান শাসনের যুগকে পরাধীনতার যুগ বলে কখনো দেখিও না বরং ভারতের ইতিহাসের স্বর্ণ যুগ হিসেবে দেখাও। ঐসব মুসলমান শাসকরা হিন্দুদের উপর যে নারকীয় অত্যাচার করেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্তে ভারতবর্ষের মাটি কর্দমাক্ত করেছে। হিন্দুর ছিন্ন মুন্ড দিয়ে যে পাহাড় তৈরী করেছে তা ইতিহাসের বই থেকে লোপাট করে দাও। তারা লক্ষ লক্ষ হিন্দু মন্দিরকে ধ্বংস করেছে বা মসজিদে রূপান্তরিত করেছে তা ইতিহাসের বই থেকে সম্পূর্ণ মুছে দাও। এই নীতি অনুসরণের কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিকগন বলেন এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা হবে। বলা বাহুল্য এই নীতি অনুসরণ করে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানতে না গিয়ে ঐতিহাসিকগণ জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ও যে জগন্য অপরাধ করে চলেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য।
তাজমহল ছিল শিব মন্দির
ঐসব বিশ্বাষঘাতক ঐতিহাসিকদের কারনেই পৃথিবীর মানুষ আজ তেজোমহালয় শিব মন্দিরকে একটি কবর বলে জানে। অথচ সম্রাট শাহজাহানের সভাসদ অবদুর হামিদ লাহোরী তার বাদশাহ নামার ৪০৩ ও ৪০৪ পৃষ্ঠায় তাজমহলের প্রকৃত ইতিহাস লিপিদ্ধ করেছেন।
তাজমহল সম্পর্কে মধ্যযুগের এই একমাত্র প্রামাণ্য গ্রন্থ খানাকে উপেক্ষা করে আধুনিক লেখকগন এক দৈব বাণী পেয়ে রাজা পরমার্দিদেবের তৈরী শিব মন্দিরটিকে শাহজাহানের স্ত্রীর কবর বলে চালিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সভাসদ যেখানে বলেছেন বিশাল ইমারতটি রাজা জয় সিংহের ছিল, সম্রাট শাহাজাহান সেটি তার কাছ থেকে নেন।
সেখানে আধুনিক ঐতিহাসিকগন দৈবী ক্ষমতা বলে সেটি নির্মানের শ্রমিক থেকে টাকার অংক পর্যন্ত কষে বের করেছেন। অথচ চান্দেলরাজ পরমার্দিদের(পরমল) কর্তৃক ১১৫৬ খৃষ্টাব্দে নির্মিত তেজোমহালয় শিব মন্দিরকে শাহজাহান মুর্তিশূণ্য করে ইসলামী রূপ দিয়েছিলেন সেকথা তার সভাসদই বর্ণনা করে গিয়েছেন।
এমনকি শাহজাহানের স্ত্রীর নাম আরজুমান্দ বানু পরিবর্তন করা হয় মন্দিরের নামের সাথে সংগতি রেখে।
মুলতঃ সম্রাট শাহজাহান মন্দিরটিকে অপবিত্র করার জন্যই এমন ব্যবস্থা করেছিলেন। অথচ আজ মিথ্যা প্রেমের কত কাহিনী প্রচার হয়েছে আমাদের জ্ঞানপাপী ঐতিহাসিকদের কল্যানে।
একটি আমেরিকান ল্যাবরেটরী দ্বারা কার্বন 14 পরীক্ষায় এবং নিউ ইয়র্কের প্র্যাট স্কুল অফ প্রফেসর কর্তৃক প্রবর্তিত তেজের নদী প্রান্তের একটি কাঠের টুকরাটি প্রকাশ করেছে যে শাহজাহানের চেয়ে 300 বছরের পুরনো দরজাটি দাড়িয়েছে। 11 শতকের পর থেকে বারবার মুসলিম আগ্রাসীদের দ্বারা তাজতের দরজাগুলি ভেঙ্গে যায়, সময়-কাল পরিবর্তিত হতে থাকে। তাজ মসজিদটি অনেক পুরানো। এটি 1155 এডি এর অন্তর্গত, যথা, শাহজাহানের প্রায় 500 বছর আগের।
জ্যান্ত কাফের ধরে আনলে ২ টাকা আর মাথা কেটে আনলে ১ টাকা
সুলতান নাসিরুউদ্দিনের সেনাপতি উলুঘ খা হিমালয়ের পাদদেশে গাড়োয়াল অঞ্চলে গিয়ে সৈন্যদের হুকুম দিয়েছিল- যে একটা জ্যান্ত কাফের ধরে আনতে পারবে সে দু টাকা আর যে কাফেরের কাটা মুন্ডু আনতে পারবে সে এক টাকা পাবে। ক্ষুদার্ত কুকুরের মত মুসলমান কাফেরের খোকে চুতুর্দিকে বের হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ২০ দিন ধরে সেই হত্যা কান্ড চলতে থাকে। কাটা মানুষের মাথা ও কবন্ধের (মাথা হীন দেহ) স্তুপ পাহাড়ের সমান উচু হয়ে যায়,- এই ইতিহাস আমাদের ঐতিহাসিকরা কেমন করে ভুলে যেতে বলেন?
এদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু নারী ও শিশুকে ক্রীতদাস-দাসী হিসেবে কাবুল, কান্দাহার, গজনী, বাগদাদ এমনকি সুদুর দামাস্কাসে নিয়ে গিয়ে সেখানকার ক্রীতদাসের হাটে বিক্রয় হতে থাকলো। সুন্দরী হিন্দু নারীরা মুসলমানদের লালসার শিকারে পরিনত হতে থাকলো। উজির নাজিররা নিজেরা হিন্দু কন্যা জোর করে ধরে আনতে লাগলো, কিছু নিজেরা রেখে কিছু সম্রাটের জন্য উপহার পাঠিয়ে কিছু মিনা বাজারে বিক্রী করে ভারতবর্ষে যে হাহাকার স্ৃষ্টি করেছিল তা ঐতিহাসিকরা কি করে ভূলতে বলেন ?
আগে হিন্দু সমাজের মেয়েরা ঘোমটা কাকে বলে জানত না । মুসলমানদের লালসার হাত হতে রক্ষা পাবার জন্যই হিন্দু নারীদের ঘোমটার প্রচলন শুরু হয়। অনেকেরই জানা নেই যে বাংলা তথা উত্তর ভারতে হিন্দু মেয়েদের কেন রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেয়া হয়। কোন বৈদিক যজ্ঞই রাত্রে করার নিয়ম নেই । দিনের আলো থাকতে থাকতেই যজ্ঞ শেষ করার বিধি, তা সত্ত্বেও উত্তর ভারতে ও বাংলায় কেন রাতে যজ্ঞ করা হয় এবং বর রাতে কনের বাড়ীতে যাওয়ার নিয়ম হল। কারন রাতের অন্ধকারে কুমারী কন্যাকে পাত্রস্থ করে মুসলমানদের অগোচরে শ্বশুর বাড়ী পাঠিয়ে দেবার জন্যই এই বিধি প্রচলিত হয়। পক্ষান্তরে দাক্ষিণোত্যে মুসলমানদের অনুপ্রবেশ কম হওয়ায় আজও দিনের আলোতেই সেখানে বিবাহ অনুষ্টান ও যজ্ঞ সম্পুন্ন করা হয়।
মুসলমান শাষকরা তো বটেই, তাদের অনুচররা এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মুসলমানরা সিন্ধুকী (গুপ্তচর) লাগিয়ে হিন্দুর ঘরের সুন্দুরী মেয়েদের খোজখবর নিত এবং গায়ের জোরে তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে লুটের মালে পরিণত করত। এ ব্যপারে ড রমেশ চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন, "দীনেশ চন্দ্র সেন হিন্দু মুসলমানের প্রীতির সম্বন্ধে উচ্ছাসিত ভাষায় প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তিনিও লিখেছেন যে , মুসলমান রাজা ও শ্রেষ্ট ব্যক্তিগন সিন্ধুকী (গুপ্তচর) লাগিয়ে ক্রমাগত সুন্দরী হিন্দু ললনাদের অপহরণ করেছেন। ষোড়শ শতাব্দীতে ময়মনসিংহের জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ানগণ এবং শ্রীহট্টের বানিয়াচঙ্গের দেওয়ানগণ এই রূপে শত শত হিন্দু কন্যাকে যে বল পূর্বক বিয়ে করেছিলেন তার অবধি নাই। ঢাকার শাখারী বাজারের গোপন কুঠুরী ঘর তৈরীর পিছনেও এই ট্রাজেডি বিদ্যমান তা আপনারা সবাই জানেন।
"যদি কোনো গবেষক উপরোক্ত তথ্যাবলীর মধ্যে একটিও ভূল বলে প্রমান করতে পারেন, তাহলে আমরা তার কাছে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকব।"
চলবে.......
ইসলামি শান্তি ও বিধর্মী সংহার-পর্ব~৩
(https://aryarishidot.blogspot.com/2017/11/blog-post.html)দ্বিতীয় পর্বের পরঃ-
পর্ব-৩
শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেবের আদেশে ধ্বংস করা হয়েছিল কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির
শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেব ক্ষমতায় বসেই হিন্দু নির্যাতনের জন্য আরও কঠোর নীতি ঘোষনা করলেন। তিনি জিজিয়া কর পুনঃ প্রবর্তন করলেন। উদয়পুর ও চিতোর অধিকার করে দুই'শ এর অধিক দেব মন্দির ধ্বংস করলেন। শিখ গুরু তেগ বাহাদুর আওরঙ্গজেবের হিন্দু বিরোদী নীতি অমান্য করেন এবং কাশ্মীরের ব্রাম্মনদের আওরঙ্গজেব প্রবর্তিত হিন্দু বিরোধী নীতি অমান্য করতে উপদেশ দেন। এ জন্য আওরঙ্গজেবের সম্মূখে উপস্থিত করা হল এবং মৃত্যুভয় দেখিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলা হলে তিনি ধর্ম ত্যাগ অপেক্ষা মৃত্যুই শ্রেয় বিবেচনা করলেন। সম্রাটের আদেশে ততক্ষনাত তাকে হত্যা করা হল। পাঞ্জাবের বর্তমান পাতিয়ালা ও মেওয়াট অঞ্চলে 'সৎনামী' হিন্দু সম্প্রদায়ের বাস ছিল। একজন মুসলমান সৈন্য একজন সৎনামী ভক্তকে হত্যা করলে সৎনামীরা বিদ্রহী হয়, ফলে আওরঙ্গজেবের বাহিনী সৎনামী হিন্দুদের প্রায় সকলকে হত্যা করেন।
আরঙ্গজেবের সমসাময়িক মুসলমান লিপিকার সাকি মুস্তাইদ খা লিখেছেন, "১০৭৯ হিজরী ১৭ই জিলকদ (১৮এপ্রিল, ১৬৬৯) সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে খবর পৌছালো যে, থাট্টা সুলতান বিশেষ করে বারানসীর মুর্খ ব্রাম্মনরা তাদের মোটা মোটা ছেড়া গ্রন্থ থেক কি সব জংলী তত্ব ছাত্রদের শিক্ষা দিচ্ছে। কাফের হিন্দুদের সঙ্গে কিছু মুসলমান ছাত্র ও সেখানে এসব ছাই ভস্ম শিখতে যাচ্ছে। এমনকি বহু দূর দেশ থেকেও বহু ছাত্র ওসব ডাকিনী বিদ্যা শিখতে বারানসীতে উপস্থিত হচ্ছে। এ খবর শোনা মাত্র ধর্মের দিক নির্দেশকারী সম্রাট এক হুকুম জারী করে বললেন, সমস্ত প্রদেশের শাসনকর্তারা যেন স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ভাবে কাফেরদের মন্দির ও বিদ্যালয়সমূহ ধ্বংস করে দেন। এই মর্মে তাদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, তারা যেন মূর্তি পূজা এবং এই ধরনের শিক্ষা কেন্দ্রগুলোকে চিরকালের জন্য স্তব্ধ করে দেন। পরবর্তী রবিউল আউয়াল মাসের ১৫ তারিখে সম্রাটের কাছে খবর এলো যে , সম্রাটের আজ্ঞানুসারে সরকারী কর্ম কর্তারা বেনারসের বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করেছে।"
[Elliot & Dowson, VII-183-184]
সাকি মুস্তাইদ খা আরও লিখেছেন, "১০৮০ হিজরীর রমজান মাসে (ডিসেম্বর, ১৬৬৯ খৃ) সম্রাটের রাজত্বকালের ত্রয়োদশ বছরে অত্যাচারীদের (হিন্দুদের) অবিচল শত্রু ও ন্যায় বিচারের অনুরাগী সম্রাট (আরঙ্গজেব) ডেরা বসুরায় নামে পরিচিত মথুরার হিন্দু মন্দিরট ধ্বংস করতে আদেশ দিলে অনতিবিলম্বে মেকী ধর্মের সুদৃঢ় ঘাটি মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হল। ঠিক সেই জায়গাতেই বহু টাকা ব্যয় করে এক বিশাল মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করা হল।
এখানে লক্ষ করার বিষয় হল আজও মথুরায় গেলে দেখা যাবে যে, সাবেক মন্দিরের ধ্বংস বা ধূলিস্যাত করা হয়নি; শুধু তাকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে মাত্র। ঠিক তেমনি পূর্ববর্তী বিবরণে কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে; ক্কিন্তু আজও কাশীতে গেলে দেখা যায় যে, ধ্বংস করার নামে তাকে শুধু মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে মাত্র। এসব ঘটনা ও তার বিবরণ থেকে এই সিন্ধান্তেই আসতে হয় যে, এই সব বিবরনে যেখানেই মন্দির ধ্বংস করার কথা আছে, সে সমস্ত ক্ষেত্রেই মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর বুঝতে হবে। এটিই নিয়ম, কেননা হজরত মোহাম্মদ মক্কার কেবলেস্বর মন্দিরকে ধূলিস্যাত করেননি, শুধু মূর্তিগুলো ভেঙ্গে দিয়ে এবং ছবিগুলোকে ফেলে দিয়ে কাবা শরীফ নামকরন করেছেন। এটি একটি সুন্নত। এই সুন্নত অনুসরন করা মুসলমান শাসকের নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়ড়িয়েছিল। হিন্দু জনসাধারনকে বাধ্যতামূলকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিয়ে তাদেরই মন্দিরকে ঘসে মেজে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করে মসজিদের রূপ দিয়ে নও মুসলমানের সেখানে নামাজ শিক্ষা দেওয়া ও পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।
৩ টি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর করা হত
এক কালে আজকের করাচির নাম ছিল দেবল বা দেবালয়। কারন, যেখানে সুমুদ্রের পাড়ে ছিল বিশাল একটি মন্দির । সমুদ্রের অনেক দূর থেকে এই মন্দিরের চূড়া দেখা যেত। মহাম্মদ বিন কাশিম ৭১২ খ্রষ্টাব্দে সেই মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তির করে উপমহাদেশে এই বর্বর কাজের সূত্রপাত করেন। সেই সময়কার মুসলমান ঐতিহাসিকরা এই দানবীয় কাজকে মেকি দেব-দেবীর বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর মহান বিজয় বলে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
ইসলামী চিন্তাবিদের মতে মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তর করা খুব সোজা এবং তিনটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব । প্রথমত, মন্দিরের বিগ্রহগুলোকে ভেঙে ফেলতে হবে। দ্বিতীয়ত, আজান দেবার জন্য একটি মিনার তৈরী করতে হবে এবং শেষ খুতবা দেবার জন্য মিনার বানাতে হবে। কত কম সময়ের মধ্যে এই কর্ম সমাধান করা সম্ভব আজমীরের 'আড়াই দিন কা ঝোপড়া' তার স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। বিগত ১০০০ বছরে লক্ষ লক্ষ মন্দির মুসলমানেরা ভেঙে ধূলিসাত করেছে; নয়তো মসজিদে রূপান্তর করেছে এমনি উপায়ে। সুলতান মাহমুদ সোমনাথের সুদ্ৃশ্য মন্দির ধ্বংস করেছে। বাবরের দ্বারা অযোধ্যার রাম মন্দির, আওরঙ্গজেবের দ্বারাকাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরা ও মথুরার কেশব মন্দির ভাঙা ও মসজিদে রূপান্তর করা এর অন্যতম উদাহারণ। হজরত মহাম্মদই প্রথম এই পথ দেখিয়ছেন। তার আদর্শ অনুসরণে আজ পর্যন্ত এ কাজ চলছে তো চলছেই।
ঢাকার ওয়ারী এলাকার শিব-মন্দির ভেঙে ইসলামী বিদ্যালয়, বানিয়া নগরের সীতানাথ মন্দির, ক্যাপিট্যাল ঈদ্গা ময়দান, টিকাটুলীর শিব মন্দির, রাজধানী মার্কেট ও মসজিদ, টিপু সুলতান রোদের রাধ-কৃষ্ণের মন্দির হয়েছে মানিকগঞ্জ হাউজ।
সাকি মুস্তাইদ খার বিবরণ অনুসারে বুন্দেলখন্ডের রাজা নরসিং দেব যুবরাজ সেলিমকে নানাভাবে সাহায্য করার পুরুষ্কার হিসেবে মথুরায় মন্দির নির্মান করার অনুমতি লাভ করেন এবং ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ঐ বিশাল মন্দির নির্মান করেন। আওরঙ্গজেবের আদেশে সেই মন্দিরকে ভেঙ্গে মসজিদ তৈরী করা হয়। এই সংবাদে উল্লেসিত মুস্তাইদ খা লিখেছেন,
ইনসাল্লা, ভাগ্যগুনে আমরা ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়েছি। যে কর্ম সমাধা করা নিতান্ত দুঃসাধ্য ছিল, মেকি দেব দেবীর উপাসনালয় ধ্বংসকারী এই সম্রাটের রাজত্বে তাও সম্ভব হল। সত্য ধর্মের প্রতি (সম্রাটের) এই বিপুল সমর্থন উদ্ধত হিন্দু রাজাদের চরম আঘাত হানলো পুতুল দেবতার মত তারাও তাদের ভয়ার্ত মুখ দেয়ালের দিকে ফিরিয়ে রাখলো।
মন্দির তো ভাঙা হল। কিন্তু মন্দিরের বিগ্রহের কি হবে ? সে ব্যপারে সাকি মুস্তাইদ খা লিখেছেন, "জংলী সেই সব মন্দির থেকে মূল্যবান রত্নখচিত সেই সব বিগ্রহ পাওয়া গেল সেগুলোকে আগ্রায় নিয়ে আসা হল এবং সেখানে নবাব বেগম সাহেবার মসজিদের সিড়ির নীচে ফেলে রাখা হল; যাতে সত্য ধর্মে বিশ্বসীরা (মসজিদে যাওয়ার আসার সময়) সেগুলোকে চিরকাল পায়ের তলায় মাড়িয়ে যেতে পারে।"
সাকি মুস্তাইদ খা আরও লিখেছেন-
"রবিউল আখির মাসের ২৪ তারিখে খাঞ্জাহান বাহাদুর কয়েক গাড়ী হিন্দু বিগ্রহ নিয়ে যোধপুর ফেরলেন। সেখানকার অনেক মন্দির ভেঙে এ সব বিগ্রহ সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই কাজের জন্য মহামান্য সম্রাট তাকে খুবই প্রশংসা করলেন। এই সব বিগ্রহের বেশীর ভাগই মূল্যন সোনা, রূপা, পিতল, তামা বা পাঠরের তৈরী ছিল। সম্রাটের হুকুম হল কিছু বিগ্রহ জঞ্জাল হিসেবে এখানে সেখানে ফেলে রাখতে যাতে বিশ্বাসীরা মসজিদে যাতায়তের সময় সেগুলোকে মাড়াতে পারে।"
পরে পাথরের মূর্তি গুলোকে ভেঙে খোয়া করা হয় এবং সেই খোয়া দিয়ে জাম-ই-মসজিদের চাতাল মোজাইক কয়া হয়; যাতে নামাজীরা এসব বিগ্রহকে মাড়িয়ে নামাজ পড়ে আল্লার নাম রোশন করতে পারে।
কাশীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দির এবং ১৬৭০ খৃষ্টাব্দে মথুরার বিখ্যাত কেশব রায় মন্দির ধ্বংস করা হল। এই সংবাদ বিদ্যুতবেগে সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ল। উল্লেখিত উভয় মন্দিরের জায়গাতেই বিশাল দুই মসজিদ খাড়া করা হল যা আজও সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং যে কেউ কাশী বা মথুরা ভ্রমনে গেলে অনেক দূর থেকেই তা দেখতে পাবেন
[R.C.Majumder, BVB. Vol.VII,p-265]
ঐতিহাসিক এ কে মজুমদার লিখেছেন, "মেঘ যেমন পৃথিবীর জল বর্ষণ করে ঔরঙ্গজেব সেই রকম সমস্ত দেশ জুড়ে বর্বরতা বর্ষন করলেন।"
মধ্য যুগে ভারতে হিন্দু প্রজা পীড়নকারী মুসলমান শাসন বর্ণনা করতে গিয়ে ঐতিহাসিক ইলিয়ট বলেছেন, "আমরা অবাক হব না যদি দেখি যে এই সব অত্যাচারী শাসকদের আমলে ন্যায় বিচার কলুষিত ও পক্ষপাত দুষ্ট অথবা যদি দেখি যে, অকথ্য নির্যাতন ও অত্যাচারের মধ্য দিয়ে সর্বত্র রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ ভাবে পুরুষের পুরুষাঙ্গ ও মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হচ্ছে অথবা যদি দেখি, যে সব রাজকর্মচারীকে রক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারাই দূবৃর্ত্ত, ডাকাতের সর্দার বা উচ্ছেদকারী হানাদার রূপে অত্মপ্রকাশ করেছে।"
জালালউদ্দিন সিংহাসনে আরোহণ করে সূবর্ণ গ্রাম থেকে শেখ জহিরকে নিয়ে এসে তার উপদেশ অনুসারে রাজকার্য পরিচালনা শুরু করেন। তিনি পূর্ববঙ্গে ইসলাম ধর্ম বিস্তারের জন্য ঘোষণা করলেন যে, সকলকে মুসলমান হতে হবে নয়তো প্রাণ দিতে হবে। এই ঘোষনার পরে পূর্ববঙ্গের অনেকে কামরূপ আসাম ও কাছারের জঙ্গলে পালিয়ে যান। কিন্তু তথাকথিত নিন্মবর্ণের অনেক হিন্দুই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। ঐতিহাসিক রজনীকান্ত চক্রবর্তীর মতে, জালালউদ্দিনের ইসলাম ধর্ম প্রচারের ফলেই পূর্ব বাংলায় মুসলমানের সংখ্যা এত বেশী। (গৌড়ের ইতিহাস, রজনীকান্ত চক্রবর্তী, পৃ-৪৫-৪৬)
কিন্তু আমাদের ঐতিহাসিকরা এইসব বিষয়গুলি সযত্নে এড়িয়ে চলেন। তাদের মূল দিক নির্দেশই হল বিদেশীমুসলমান শাসকদের মহান করে দেখাও, মুসলমান শাসনের যুগকে পরাধীনতার যুগ বলে কখনো দেখিও না বরং ভারতের ইতিহাসের স্বর্ণ যুগ হিসেবে দেখাও। ঐসব মুসলমান শাসকরা হিন্দুদের উপর যে নারকীয় অত্যাচার করেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্তে ভারতবর্ষের মাটি কর্দমাক্ত করেছে। হিন্দুর ছিন্ন মুন্ড দিয়ে যে পাহাড় তৈরী করেছে তা ইতিহাসের বই থেকে লোপাট করে দাও। তারা লক্ষ লক্ষ হিন্দু মন্দিরকে ধ্বংস করেছে বা মসজিদে রূপান্তরিত করেছে তা ইতিহাসের বই থেকে সম্পূর্ণ মুছে দাও। এই নীতি অনুসরণের কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিকগন বলেন এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা হবে। বলা বাহুল্য এই নীতি অনুসরণ করে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানতে না গিয়ে ঐতিহাসিকগণ জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ও যে জগন্য অপরাধ করে চলেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য।
তাজমহল ছিল শিব মন্দির
ঐসব বিশ্বাষঘাতক ঐতিহাসিকদের কারনেই পৃথিবীর মানুষ আজ তেজোমহালয় শিব মন্দিরকে একটি কবর বলে জানে। অথচ সম্রাট শাহজাহানের সভাসদ অবদুর হামিদ লাহোরী তার বাদশাহ নামার ৪০৩ ও ৪০৪ পৃষ্ঠায় তাজমহলের প্রকৃত ইতিহাস লিপিদ্ধ করেছেন।
তাজমহল সম্পর্কে মধ্যযুগের এই একমাত্র প্রামাণ্য গ্রন্থ খানাকে উপেক্ষা করে আধুনিক লেখকগন এক দৈব বাণী পেয়ে রাজা পরমার্দিদেবের তৈরী শিব মন্দিরটিকে শাহজাহানের স্ত্রীর কবর বলে চালিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সভাসদ যেখানে বলেছেন বিশাল ইমারতটি রাজা জয় সিংহের ছিল, সম্রাট শাহাজাহান সেটি তার কাছ থেকে নেন।
সেখানে আধুনিক ঐতিহাসিকগন দৈবী ক্ষমতা বলে সেটি নির্মানের শ্রমিক থেকে টাকার অংক পর্যন্ত কষে বের করেছেন। অথচ চান্দেলরাজ পরমার্দিদের(পরমল) কর্তৃক ১১৫৬ খৃষ্টাব্দে নির্মিত তেজোমহালয় শিব মন্দিরকে শাহজাহান মুর্তিশূণ্য করে ইসলামী রূপ দিয়েছিলেন সেকথা তার সভাসদই বর্ণনা করে গিয়েছেন।
এমনকি শাহজাহানের স্ত্রীর নাম আরজুমান্দ বানু পরিবর্তন করা হয় মন্দিরের নামের সাথে সংগতি রেখে।
মুলতঃ সম্রাট শাহজাহান মন্দিরটিকে অপবিত্র করার জন্যই এমন ব্যবস্থা করেছিলেন। অথচ আজ মিথ্যা প্রেমের কত কাহিনী প্রচার হয়েছে আমাদের জ্ঞানপাপী ঐতিহাসিকদের কল্যানে।
একটি আমেরিকান ল্যাবরেটরী দ্বারা কার্বন 14 পরীক্ষায় এবং নিউ ইয়র্কের প্র্যাট স্কুল অফ প্রফেসর কর্তৃক প্রবর্তিত তেজের নদী প্রান্তের একটি কাঠের টুকরাটি প্রকাশ করেছে যে শাহজাহানের চেয়ে 300 বছরের পুরনো দরজাটি দাড়িয়েছে। 11 শতকের পর থেকে বারবার মুসলিম আগ্রাসীদের দ্বারা তাজতের দরজাগুলি ভেঙ্গে যায়, সময়-কাল পরিবর্তিত হতে থাকে। তাজ মসজিদটি অনেক পুরানো। এটি 1155 এডি এর অন্তর্গত, যথা, শাহজাহানের প্রায় 500 বছর আগের।
জ্যান্ত কাফের ধরে আনলে ২ টাকা আর মাথা কেটে আনলে ১ টাকা
সুলতান নাসিরুউদ্দিনের সেনাপতি উলুঘ খা হিমালয়ের পাদদেশে গাড়োয়াল অঞ্চলে গিয়ে সৈন্যদের হুকুম দিয়েছিল- যে একটা জ্যান্ত কাফের ধরে আনতে পারবে সে দু টাকা আর যে কাফেরের কাটা মুন্ডু আনতে পারবে সে এক টাকা পাবে। ক্ষুদার্ত কুকুরের মত মুসলমান কাফেরের খোকে চুতুর্দিকে বের হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ২০ দিন ধরে সেই হত্যা কান্ড চলতে থাকে। কাটা মানুষের মাথা ও কবন্ধের (মাথা হীন দেহ) স্তুপ পাহাড়ের সমান উচু হয়ে যায়,- এই ইতিহাস আমাদের ঐতিহাসিকরা কেমন করে ভুলে যেতে বলেন?
এদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু নারী ও শিশুকে ক্রীতদাস-দাসী হিসেবে কাবুল, কান্দাহার, গজনী, বাগদাদ এমনকি সুদুর দামাস্কাসে নিয়ে গিয়ে সেখানকার ক্রীতদাসের হাটে বিক্রয় হতে থাকলো। সুন্দরী হিন্দু নারীরা মুসলমানদের লালসার শিকারে পরিনত হতে থাকলো। উজির নাজিররা নিজেরা হিন্দু কন্যা জোর করে ধরে আনতে লাগলো, কিছু নিজেরা রেখে কিছু সম্রাটের জন্য উপহার পাঠিয়ে কিছু মিনা বাজারে বিক্রী করে ভারতবর্ষে যে হাহাকার স্ৃষ্টি করেছিল তা ঐতিহাসিকরা কি করে ভূলতে বলেন ?
আগে হিন্দু সমাজের মেয়েরা ঘোমটা কাকে বলে জানত না । মুসলমানদের লালসার হাত হতে রক্ষা পাবার জন্যই হিন্দু নারীদের ঘোমটার প্রচলন শুরু হয়। অনেকেরই জানা নেই যে বাংলা তথা উত্তর ভারতে হিন্দু মেয়েদের কেন রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেয়া হয়। কোন বৈদিক যজ্ঞই রাত্রে করার নিয়ম নেই । দিনের আলো থাকতে থাকতেই যজ্ঞ শেষ করার বিধি, তা সত্ত্বেও উত্তর ভারতে ও বাংলায় কেন রাতে যজ্ঞ করা হয় এবং বর রাতে কনের বাড়ীতে যাওয়ার নিয়ম হল। কারন রাতের অন্ধকারে কুমারী কন্যাকে পাত্রস্থ করে মুসলমানদের অগোচরে শ্বশুর বাড়ী পাঠিয়ে দেবার জন্যই এই বিধি প্রচলিত হয়। পক্ষান্তরে দাক্ষিণোত্যে মুসলমানদের অনুপ্রবেশ কম হওয়ায় আজও দিনের আলোতেই সেখানে বিবাহ অনুষ্টান ও যজ্ঞ সম্পুন্ন করা হয়।
মুসলমান শাষকরা তো বটেই, তাদের অনুচররা এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মুসলমানরা সিন্ধুকী (গুপ্তচর) লাগিয়ে হিন্দুর ঘরের সুন্দুরী মেয়েদের খোজখবর নিত এবং গায়ের জোরে তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে লুটের মালে পরিণত করত। এ ব্যপারে ড রমেশ চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন, "দীনেশ চন্দ্র সেন হিন্দু মুসলমানের প্রীতির সম্বন্ধে উচ্ছাসিত ভাষায় প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তিনিও লিখেছেন যে , মুসলমান রাজা ও শ্রেষ্ট ব্যক্তিগন সিন্ধুকী (গুপ্তচর) লাগিয়ে ক্রমাগত সুন্দরী হিন্দু ললনাদের অপহরণ করেছেন। ষোড়শ শতাব্দীতে ময়মনসিংহের জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ানগণ এবং শ্রীহট্টের বানিয়াচঙ্গের দেওয়ানগণ এই রূপে শত শত হিন্দু কন্যাকে যে বল পূর্বক বিয়ে করেছিলেন তার অবধি নাই। ঢাকার শাখারী বাজারের গোপন কুঠুরী ঘর তৈরীর পিছনেও এই ট্রাজেডি বিদ্যমান তা আপনারা সবাই জানেন।
"যদি কোনো গবেষক উপরোক্ত তথ্যাবলীর মধ্যে একটিও ভূল বলে প্রমান করতে পারেন, তাহলে আমরা তার কাছে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকব।"
চলবে.......
No comments
Posted at December 29, 2018 |  by
Arya ঋষি
Subscribe to:
Posts (Atom)
ধর্ম্মতত্ত্ব
Powered by Blogger.
iOS
5/Life%20Style/feat-tab
Business
5/Cars/feat-tab
Search This Blog
Post Top Ad
Your Ad Spot
Post Top Ad
Your Ad Spot
Technology
3/Tech/feat-grid
Fashion
5/Life%20Style/feat2
Header Ads

Breaking News
Music
Menu Footer Widget
Featured
Android
5/Tech/feat-tab
Fashion
5/Cars/feat-tab
blogger-disqus-facebook
Send Quick Message
Menu
Categories
Sports
3/Sports/col-left
Technology
3/Technology/post-list
Technology
3/Technology/col-right
Popular Posts
Popular Posts
- Religion (1)
- আল্লা তালাহ (1)
- ইতিহাস (6)
- ইতিহাস বিকৃতি (5)
- ইসলামিক বিশ্লেষণ (9)
- ইসলামে বর্বরতা (8)
- ইসলামে যৌনতা (1)
- কাবা ঘর (4)
- জিহাদ বিষয় (1)
- প্রাণের উৎপত্তি (3)
- বই (2)
- বিজ্ঞান (7)
- রহস্য (4)
Labels
Discussion
Tags
Text Widget
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.
Blog Archive
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.