আবির্ভাব সময় অর্থাৎ কল্কি অবতার কখন আসবে তা বিভিন্ন পুরাণ অনুসারে।।
( কল্কি অবতার কখন পৃথিবীতে আসবে)

" অথাসো যুগসন্ধ্যায় দস্যু প্রয়াসু রাজেষু।
জনিতা বিষ্ণুযশসো নাম্না কল্কির্জগৎপতিঃ"।
অনুবাদঃ তারপর যুগসন্ধিকালে ( কলি যুগের শেষে সত্যযুহের শুরুতে) ; অর্থাৎ কলিযুগের অন্তে নৃপতিরা যখন দস্যুপ্রায় হয়ে যাবে,তখন ভগবান কল্কি অবতার নামে বিষ্ণুযশ নামক ব্রাক্ষ্মণের পুত্ররূপে অবতরণ করবেন।

"" কলেদির্ব্য সহস্রাব্দপ্রমানস্যান্তপাদয়োঃ।
শম্ভলগ্রামকং প্রাপ্য ব্রাক্ষ্মণঃ সঞ্জনিষ্যতি।।
এই শ্লোকে উক্ত " কলেঃ" ও ""সহস্রাব্দপ্রমানস্যান্তপাদয়োঃ"" শব্দটিতে "" অস্য অন্তপাদয়ো" শব্দগুলো থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়ে যে, কলিযুগের অন্তে বা শেষ দিকে ভগবান শম্ভলগ্রামে ব্রাক্ষ্মণ গৃহে জন্মগ্রহণ করবেন।

অর্থাৎ কলিযুগের অন্তে আমি কল্কি অবতার রূপে অবতার রূপে অবতীর্ণ হব।।

" যুগান্তে পাপিনোহশুদ্ধাংশ্ছিত্ত্বা তীক্ষ্মাসিধারয়া।
স্থাপয়ামসা যো ধর্মং কৃতাদৌ তং নমাম্যহম"।।
অনুবাদঃ যিনি কলিযুগের অন্তে বা শেষে অশুদ্ধ পাপীদের তীক্ষ্ণ খড়্গ দ্বারা ছেদন করে #সত্যযুগের ধর্ম সংস্থাপন করেন,সেই কল্কি অবতারকে নমস্কার করি।।


" শ্রৌতস্মার্তধর্মে বিপ্লববমত্যন্তমুপগতে ক্ষীণপ্রয়াসে।
চ কলাবশেষ জগৎস্রষ্টাশ্চরাচর উত্তরোরদিমরস্যন্তময়স্য সর্বময়স্য ব্রক্ষ্মময়স্যাত্মস্বরূপিনো ভগবতো বাসুদেব স্বাংশঃ সম্ভলগ্রামপ্রধানব্রাক্ষ্মণবিষ্ণুযশসো গৃহে অষ্টগুণৈদ্ধিসমন্তিতঃ কল্কিরূপী জগত্যত্রাবতীর্থ সকলম্লেচ্ছদস্যুদুষ্টাচরণতেচসামশে-ষানামপরিচ্ছিন্নমমাহাত্ম্যশক্তিঃ ক্ষয়ং করিষ্যতি।।
অনুবাদঃ "শ্রৌত ও স্মার্ত ধর্ম অত্যন্ত বিপ্লবপ্রাপ্ত ও #কলিক্ষীণপ্রায় হলে,যিনি চরাচরের গুরু ও আদিভূত, যিনি অন্তময়,সর্বময়,ব্রক্ষ্মময় ও পরমাত্মাস্বরূপ, সেই ভগবান বাসুদেব স্বাংশরূপে শম্ভল গ্রামের প্রধান ব্রাক্ষ্মণ বিষ্ণুযশার গৃহে অষ্টৈশ্বর্যসম্পন্ন, অসীমশক্তি ও মহাত্মাশালী কল্কিরূপে অবতীর্ণ হয়ে ম্লেচ্ছ, দস্যু ও দুরাত্মাদিগের ক্ষয় করবেন।





" আপনার আবির্ভাব সাধুগণের সম্মানবৃদ্ধি, ব্রাক্ষ্মণদিগের অভ্যূথান, দেবগণের রক্ষক,সত্যযুগের পুনঃঅধিকার লাভ,ধর্মের বৃদ্ধি ও কলির নিধন হচ্ছে "।।

প্রশ্নঃ সত্যযুগ কখন আসবে বা কলি যুগের শেষ কবে হবে?
উত্তরঃ যুগের শেষ কখন হবে তা জানতে হলে আগে আমাদের প্রতিটি যুগের আয়ুষ্কাল সম্পর্কে জানতে হবে।ভাগবত পুরাণের তয় স্কন্ধে বলা আছে।( ছবি নিচে দেওয়া দেখে নিন)
সত্যযুগের আয়ুষ্কালঃ ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার বছর।
ত্রেতাযুগেরঃ ১২ লক্ষ ৯৬ হাজার বছর
দ্বাপরযুগের ঃ ৮ লক্ষ ৬৪ হাজার বছর
কলিযুগেরঃ ৪ লক্ষ ৩২ হাজার বছর।
মুমিন ভাইদের বলি যে দাদা কলিযুগের তো সবে মাত্র শুরু হলো অর্থাৎ দ্বাপরযুগ শেষ হলো কৃষ্ণের হাত ধরে আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর আগে এবং কলি যুগের এখনো বাকি প্রায় ৪ লক্ষ ২৭ হাজার বছর।
হাস্যকর বিষয়টি হলো আপনার অতীতে আসা নবীকেই ভবিষ্যতের কল্কিঅবতার বানায় ফেললেন বাহ্ ভাই বাহ্।
এবারে আমার এই সকল পুরাণের রেফারেন্স খন্ডন করবেন এবং বলবেন যে কল্কি অবতার যে কলিযুগের #শুরুতে আসবে এই কথা আপনি কোথায় পেয়েছেন।

বিভিন্ন পুরাণ অনুসারে এর সপক্ষে বিভিন্ন পুরাণের শ্লোক দেখুনঃ-

অনুবাদঃ হে সুপ্রিয় পরীক্ষিত! সর্ব্যাপী ভগবান বিষ্ণু সর্বশক্তিমান সর্বস্বরূপ হয়ে তিনি বিশ্ব চরাচরের প্রকৃত শিক্ষক, জগৎগুরু।সাধু সজ্জনের ধর্ম রক্ষার জন্য ও তাদের কর্মবন্ধন ছেদন করে জন্ম মৃত্যু আবর্ত থেকে মুক্তি দান হেতু , তিনি স্বয়ং অবতার গ্রহণ করবেন।


অনুবাদঃ শ্রীভগবান অষ্টসিদ্ধি ও সকল সদ্ গুণের সর্বশ্রেষ্ঠ আধার।তিনি বিশ্বচরাচরের রক্ষক ও সকলের প্রভু। তিনি দেবদত্ত্ব নামক দ্রুতগামী অশ্বের উপর আসীন থেকে তরবারি হস্তে দুষ্ট দমন করবেন।


অনুবাদঃ হে পরীক্ষিৎ! এর বেশি আর কি বলব! কলিযুগের শেষ প্রান্তে মানুষের স্বভাব গদর্ভসম দুঃসহ হয়ে উঠবে। তারা বস্তুত সংসারের ভারবাহক ও সম্পূর্ণরূপে বিষয়ী হয়ে যাবে। এইরূপ দুঃসহ পরিস্থিতে ধর্মরক্ষা হেতু সত্ত্বগুণ ধারণ করে স্বয়ং ভগবান অবতার গ্রহণ করবেন।

সম্ভবিষ্যতি।বাসুদেবে ভগবতি সত্ত্বমূর্ত্ত্বৌ হৃদি স্থিতে"।।
অনুবাদঃ তাদের হৃদয় মন্দির পবিত্র হলে সেখানে সত্ত্ববিগ্রহ ভগবান বাসুদেব বিরাজমান থাকবেন যার ফলে তাদের বংশধরগণ পূর্ববৎ বলবান ও সক্ষম দেহধারী হয়ে যাবেন।


অনুবাদঃ প্রজানয়নরঞ্জন শ্রীহরিই ধর্মের সংরক্ষক। তিনি স্বয়ং প্রভু । সেই শ্রীভগবান যখন কল্কিরূপে অবতরণ করবেন তখনই সত্ত্বযুগের আরম্ভ হবে আর প্রজাগণ স্বাভাবিক ভাবেই বংশপরম্পরায় সত্ত্বগুনসম্পন্ন হয়ে যাবেন।




এবারে কল্কিপুরাণ থেকে দেখি চলুন।"" কল্কিপুরাণে"" কি বলা হয়েছে কল্কি অবতারের ব্যাপারে ঈশ্বর নাকি ঈশ্বরের দূত ঃ-








"কালেন ব্রক্ষ্মণো নাশে প্রলয়ে ময়ি সঙ্গতাঃ।অহমেবাসমেবাগ্রে নান্যৎ,কার্য্যমিদং মম।।২।।
অনুবাদঃ কল্কি কহিলেন। যে সময় মহাপ্রলয় উপস্থিত হইবে,যখন ব্রক্ষাও বিলয় প্রাপ্ত হইবেন,তখন সমুদয় আমাতেই লীন থাকিবে।পূর্বে কেবল আমিই ছিলাম,আর কিছুই ছিল না,ব্রক্ষ্মা প্রভৃতি সমুদায় জীব ও সমুদয় পদার্থ আমা হইতেই সৃষ্ট হইয়াছে।





অনুবাদঃ নাথ! যিনি জগতের নাথ জগতের প্রার্থনীয় সর্ব্বান্তর্যামী প্রভু সাক্ষাৎ নারায়ণ, সেই কল্কিকে আপনি কি রূপে প্রহার করিবেন।




কাল স্বভাবসংস্কার- নামাদ্যা প্রকৃতিঃ পরা।যস্যেক্ষয়া সুজত্যন্তুং মহাহহংকারকাদিকান্। যন্ময়য়া জগতযাত্রা সর্গস্থিত্যন্তসঙ্গিতা।
য এবাদ্যঃ ম এবান্তে তস্যায়ং সোহয়মীশ্বরঃ""।।




অনুবাদঃ যে সকল রাজা নারীর অবয়ব প্রাপ্ত হইয়া পদ্মা সখী হইয়াছিলেন, তাহারা ত্বরান্বিত হইয়া জগৎপতি বিষ্ণু তথা কল্কিকে দেখিবার জন্য আগমন করিলেন।।


অনুবাদঃ মরু দেবাপি ও মুনিগণ, কল্কির এই আশ্বাস বাক্য শ্রবণ করিয়া বিস্ময়াবিষ্ট হৃদয় হইয়া নিঃসংশয় রূপে স্থির করিলেন যে, তিনিই হরি ও ঈশ্বর।।






সকল পুরাণ কিন্তু কল্কিকে ঈশ্বর, পরমাত্মা,পরমেশ্বর বলছে 
।


0 Comments: