information about theology and science
All Stories
শেষ পর্ব
মুসলমান পরাধীনতার যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস একটু মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করলে দেখা যাবে যে, যখনই কোন নতুন ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসনে বসেছেন তখনেই তাকে রাজ্য বিস্তারের জন্য দৌয়াতে হচ্ছে। তাকে গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যভারত ও দক্ষিণ ভারতে অভিযান করতে হচ্ছে। গোয়ালিয়র, রাজস্থান, রনথাম্ভোর, চিতোর ইত্যাদি দূর্গ দখল করতে হচ্ছে এবং সেজন্য অনেক যুদ্ধ বিগ্রহে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কাজেই প্রশ্ন হল, কেন একই দূর্গ বা একই অঞ্চল বিভিন্ন বাদশাহকে বারবার জয় করবার প্রয়োজন কেন হচ্ছে? উত্তর একটাই----- মুসলমানরা কোন দূর্গ বা অঞ্চলে বেশীদিন তাদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হন নাই। স্থানীয় এসব রাজারা ক্রামাগত বিদ্রোহ করা স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে; মুসলমান শাসনকে অস্বীকার করেছে। তাই একই অঞ্চল বারবার বাদশাহদের জয় করার প্রয়োজন হয়েছে। এই তথ্য থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে, ভারতের হিন্দু শাক্তি আক্রমনকারী মুসলমান শক্তির সঙ্গে নিরন্তর সংঘর্ষ করেছে এবং অসংখ্য হিন্দু বীর এই সংঘর্ষে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে। বিদেশী মুসলমান শক্তিকে এক মুহূর্তেও নিশ্চিন্তে থাকতে দেননি।
তাই ড.কে.এম মুন্সী লিখেছেন---
"এ হল স্বাধীনতা রক্ষার খাতিরে নিতান্ত বালক থেকে শুরু করে মৃত্য-পথ-যাত্রী বৃদ্ধ পর্যন্ত অগনিত মানুষের বিরামহীন সংঘর্ষ, নিরন্তর বীরত্ব প্রদর্শন ও প্রাণ বিসর্জনের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। এ হল মাসের পর মাস, কখনো বছরের পর বছর ধরে দূর্গের অভ্যন্তরে থাকা বীর যোদ্ধাদের যুদ্ধের ইতিহাস। দূর্গ আক্রমনকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলতে থাকা এক বিরামহীন সংগ্রামের ইতিহাস। এ হল সম্মান রক্ষার্থে হাজার হাজার হিন্দু নারীর জলন্ত অগ্নিতে আত্মাহুতি দেবার এক দীর্ঘ ইতিহাস। এ হল দাসত্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পিতামাতার ধারা অবোধ শিশুকে কূপের জলে নিক্ষেপ করার এক করুণ ইতিহাস। এ হল অন্তহীন হামলাকারীদের নিরন্তর আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য তরুণ যোদ্ধাদের দ্বারা ম্ৃত সৈনিকের স্থান পূরণ করার এক বিভীষিকাময় ইতিহাস।"
আমরা সেই মাটিতে বাস করছি, যে মাটি হাজার বছর ধরে কোটি পিতার, মাতার ভাইয়ের, বোনের অশ্রুজলে সিক্ত। পিতা মাতা ভাইয়ের সমনে বোনকে টেনে নিয়ে গিয়ে হারেমে নির্লজ্জ কুকুরের মত ব্যবহার করেছে, ভাই খোজা হয়ে তাকে পাহারা দিয়েছে।
এ সেই করুণ ইতিহাস যেখানে কন্যা সন্তানের জন্মকে অভিশাপ মনে করে পিতা মাতা গঙ্গাসাগরে ভগবানের নামে উৎসর্গ করে দিয়েছে। নিজ হাতে সন্তান হত্যার বুকফাটা আর্তনাদ পিতা মাতা হাজার হাজার বছর চেপে রেখেছে।
কারন সন্তান জন্মের পর বিসর্জনের যে কষ্ট তার চেয়ে বেশী কষ্ট হবে যখন চোখের সামনে মুসলমানরা ধরে নিয়ে কুকুরের মত ব্যবহার করবে।
যেখানে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী চলেছে। হিন্দুর রক্তে হোলি খেলা, জিজিয়া, খেরাজ আদায়ের ফলে বুভূক্ষ মানুষের হাহাকার।
এ সেই মাটিতে আমরা বাস করছি, যে মাটিতে হাজার বছর ধরে মিশেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্ত ও অশ্রুর বন্যা, পিতার হাহাকার , বোনের আর্ত চিৎকার, ভাইয়ের রক্ত, মাতার অসহায় দৃষ্টি।
সে মাটি আজও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদে।
মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাৎকার করা হয়েছে
অনেকের এই ধারনা থাকতে পারে যে, মুসলমানদের দ্বারা ব্যপক হারে হিন্দু হত্যা হিন্দুর সম্পত্তি লুটপাট করে এআত্মসাত করা, হিন্দু নারীদের জোর করে ধরে নিয়ে লুটের মালে পরিনত করা ইত্যাদি ঘটনা এক কালে মধ্যযুগে ঘটেছে বটে, তবে আজ আর তার পুনরাব্ৃত্তি হবেনা। আজ দেশ ও সমাজ সভ্যতার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে, তাই মুসলমানদের কাছ থেকে এই সব বর্বরতা আশঙ্কা নেই। মধ্য যুগ নেই তাই মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হবে না। এই সব ব্যক্তিদের জানা নেই যে সমস্ত পৃথিবী সভ্যতার পথে অগ্রসর হলেও ইসলাম ও কোরান এবং সে সঙ্গে মুসলমান সমাজ আজও সেই মধ্য যুগেই দাঁড়িয়ে আছে। তারা সভ্যতার পথে এক পা ও অগ্রসর হয়নি। যে কোরান ও হাদিস মধ্য যুগের মুসলমানদের সমস্ত কাজে অনুপ্রানিত করত, সেই একই কোরান ও হাদিস আজকের মুসলমান সমাজকেও পূর্বোক্ত সকল রকম কাজে একই ভাবে প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে। কোরানের ও হাদিসের কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই কাফেরের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গির কোন পরিবর্তন হয়নি। শুধু সুযোগের অপেক্ষা মাত্র। অনুকুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজও মুসলমানরা কাফের কেটে রক্তা গঙ্গা বইয়ে দিবে। কাফেরর মৃতদেহ দিয়ে পাহাড় তৈরী করবে, কাফের নারীদের লুটের মালে পরিণত করবে এবং কাফেরদের মন্দির ভেঙে ধূলায় মিশিয়ে দেবে। তফাত শুধু এই, এক কালের তলোয়ার, শূল, বর্শা, তীর ধনুক ইত্যাদির বদলে আজ একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, মার্টার, রকেট, বোমা, বিমান ইত্যাদি উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে। উদ্দেশ্য একটাই, কাফের নির্মূল করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা।
মুসলমানদের মন মানিসকতা যে কোন পরিবর্তন নেই তার উদাহারন হল ২০০২ সালেও আফগানিস্থানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মূর্তি যা সারা বিশ্বের বাধা নিষেদকে অমান্য করে মুসলমানরা ধ্বংস করে ফেলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যা ঘটেছিল তা অনেকেরই হয়তো মনে আছে ।
আনোয়ার শেখের ভাষায়__
"বিগত ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলায় হিন্দুদের উপর যে নারকীয় বর্বরতার অনুষ্টান করা হয়েছে আর তুলনা মানব ইতিহাসে অনুপস্থিত। বহু ক্ষেত্রে সমগ্র অধিবাসীকেই ঘিরে ফেলে অত্যাচার চালানো হয়েছে। মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাতকার করা হয়েছে। মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেঝেতে আছাড় মেরে শিশুদের মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছে, তারপর বয়ষ্ক পুরুষদের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে, চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে এবং সব শেষে ধড় থেকে মাথা আলাদা করা হয়েছে। চরম উল্লাসের আনন্দ পাবার জন্য পরিবারের সবাইকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে সেই ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।"
[Anwar Sheikh, This is Jehad]
ইসলাম সম্পর্কে -মনিষীদের বানী
"ইসলাম হচ্ছে এক রাজনৈতিক আক্রমনকারী পরধর্ম অসহিষ্ণু বিস্তারবাদী আন্দোলন। যারা আল্লাহ মানে না, যাদের কোরানে বিশ্বাস নেই কিংবা মূর্তি পূজার মাধ্যমে উপাসনা করে, এমন নাগরিকদের দেশের উপর আক্রমন করে তাদের পরাভূত কয়া, তাদের সম্পত্তি লুটপাট করা, তাদের মহিলাদের লুটের মাল হিসেবে সৈনিকদের দ্বারা বলতকার করানো, তাদের ধর্মান্তরন করে মুসলমান করা, আর যারা ধররান্তরিত হলো না, তাদের উপর অত্যাচারের পূনরাবৃত্তি অবিরত চালু রাখা---- এই হচ্ছেকোরানের শিক্ষা"
----গোপাল গডসে ।
পৃথিবীর দুইটি ধর্ম সম্প্রদায় আছে অন্য সমস্ত ধর্মমতের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধতা অত্যুগ্র-- সে হচ্ছে খৃষ্টান আর মুসলমান ধর্ম। তারা নিজের ধর্ম পালন করে সন্তুষ্ট নয়, অন্য ধর্মকে সংহার করতে উদ্যত। এই জন্য তাদের ধর্ম গ্রহন করা ছাড়া তাদের সঙ্গে মেলবার অন্য কোন উপায় নেই।"
--------রবীন্দ্রনাথ। (রবীন্দ্র রচনাবলী, জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃ-৩৫৬)
"বস্তুত মুসলমান যদি কখনও বলে হিন্দুর সহিত মিলন করিতে চাই, সে যে ছলনা ছাড়া আরা কিছু হইতে পারে ভাবিয়ে পাওয়া কঠিন।"
"হিন্দু মুসলমান মিলন একটি গালভরা শব্দ, যুগে যুগে এমন অনেক গালভরা বাক্যই উদ্ভাবিত হইয়াছে, কিন্তু ঐ গাল ভরানোর অতিরিক্ত সে আর কোন কাজেই আসে নাই।"
--------শরৎচন্দ্র । (শরত রচনাবলী জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, তৃতীয় খণ্ড, পৃ-৪৭৩)
"ইসলাম ধর্মীরা কোরানের দুইটি আয়াত, 'পৌত্তলিকদের যেখানে পাও হত্যা কর' এবং 'অতএব ধর্মযুদ্ধে তাদের বন্দী কএ হয় বশ্যতার অঙ্গীকার নতুবা মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দাও, অনুযায়ী ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বলে যে, বহু দেবদেবীতে বিশ্বাসী পৌত্তালিকদের হত্যা বা নির্যাতন করা ঈশ্বএর নির্দেশ এবং অবশ্যিক। সুতরাং ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ঈশ্বরের নির্দেশ পালনে তত্যুতসাহিতা সেই পৌত্তলিকগণকে হত্যা ও নির্যাতন করতে একালে বা সেকালে কখনই বিরত হয় নাই।"
------ রাজা রামমোহন রায়।
(তুহাফাত-উল-মুওয়াদ্দীন, রামমোহন স্মরণ, মার্চ ১৯৮৯, পরিশিষ্ট, প্ৃ-৩১)
"আপনার মত (প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান) শিক্ষিত সংস্কৃতিবান এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি আজ এমন দর্শনের প্রচারক হয়ে গেলেন, যে দর্শন মানবতার পক্ষে ভয়াবহ বিপজ্জনক এবং যে দর্শন ন্যায় ও শুভ চিন্তাধারা থেকে উদ্ভুত যাবতীয় নীতিমালার পক্ষে ক্ষতিকারক।"
---মুসলিম লীগের প্রাক্তন সহযোগী সদস্য মি যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল।
ইসলাম সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দঃ-
এ বিষয়ে মুসলমানরা অত্যান্ত স্থুল দ্ৃষ্টি সম্পূর্ণ এবং সাম্প্রদায়ীক মনভাবাপন্ন। তাদের সিদ্ধ বাক্য শুধু একটিই
লা-ইলাহা-ইল্লাল্লা-মোহাম্মদুর-রাসুলাল্লহ
অর্থাৎ- ঈশ্বর মাত্র একজন এবং মোহাম্মদ তার রসুল,
এই সিদ্ধ বাক্যের বাইরে আর যা কিছু আছে সবই নিকৃষ্ট বস্তু এবং অবিলম্বে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলতে হবে এই হল মুসলমানদের কথা, এ কথায় যে বিশ্বাস করেনা সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক মুহুর্তের হুশিয়ারী দিয়ে তাকে হত্যা করা হবে। যা কিছু এই উপাসনা পদ্ধতির অন্তর্গত নয় তাকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করতে হবে। এ বিশ্বাসের সাথে মিলছে না এমন যত গ্রন্থ আছে সেগুলিকে দগ্ধ করতে হবে।
প্রসান্ত মহাসগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত পাচ শত বর্ষ ব্যপি পৃথিবীর বুকে এই একি কারনে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে, এই হল ইসলাম।"
(স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী (প্রকটিক্যাল বেদান্ত), ৪র্থ খণ্ড, পৃ-১২৫ ও ২য় খণ্ড, পৃ-৩৫২)
ইসলাম সম্মর্কে বি আর আম্মেদকারঃ-
ইসলামের ভাতৃত্ব মোটেই বিশ্ব ভাতৃত্ব নয় এটা কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যই যারা মুসলমান তারাই কেবল এর সুযোগ পাবে কিন্তু অমুসলমানরা পাবে কেবল শত্রুতা। যেখানেই ইসলামিক শাষন রয়েছে সেটাই মুসলমানদের নিজের দেশ, বস্তুত ইসলাম একজন প্রকৃত মুসলমানকে কখনোই ভারতকে তার নিজের দেশ বলে মেনে নিতে দেবেনা বা হিন্দুদেরকে তার আত্মীয় বলে স্বীকার করতে দিতে পারেনা।
ইসলাম সম্পর্কে মোহনদাশ করমচাদ গান্ধীঃ-
জাতীয় স্বাধীনতা আন্দলনে মুসলমানরা কোন আগ্রহ দেখায়নী, মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সত্য তারা ভারতকে নিজের দেশ বলে স্বীকার করেনা।
হজরত মোহাম্মদের নিরপেক্ষ জীবনীকার ও বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার উইলিয়াম মূর বলেছেনঃ-
কোরান ও ইসলামের তরবারী মানব সভ্যতা, স্বাধীনতা ও সত্যের সবচেয়ে বড় শত্রু যা আজ পর্যন্ত মানুষ দেখেছে।
ইসলাম সম্পর্কে আনোয়ার শেখঃ-
ইসলাম এমন একটা ধর্ম বিশ্বাষ যা সমস্ত মানব জাতিককে দুটি চীর বিভদমান জাতি গোষ্টিতে ভাগ করে দিয়েছে। একদল যারা আল্লাহ ও মোহাম্মদকে বিশ্বাষ করে অর্থাৎ আল্লাহর দল মুসলমানরা আর এক দল হল শয়তানের দল অর্থাৎ সব অমুসলমানরা।
ইসলাম সম্পর্কে রাজা রামমোহন রায়ঃ-
ঐসব দৈবী নির্দেশে আস্থা রাখার জন্য ইসলাম ধর্মীরা ব্রাম্মন জাতীর অনেক ক্ষতি করেছেন ও তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছেন, এমনকি মৃত্যু ভয়ও দেখিয়েছে তবু তারা ধর্ম পরিত্যাগ করতে পারেনি । ইসলাম অনুবর্তীরা কোরানের পবিত্র শ্লোকের মর্মানুসারে অবিশ্বাসীদের ধর্ম যুদ্ধ করে বেধে আনো এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মুক্ত করে দাও বা বশ্যতা স্বীকার করাও এগুলি ঈশ্বরের নির্দেশ বলে উল্লেখ করে যেন পৌত্তলিকদের বধ করা তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা ঈশ্বর আদেশে অবস্য কর্তব্য। মুসলমানদের মতে পৌত্তলিকদের মধ্যে ব্রাম্মনেরাই সবছেয়ে বড় পৌত্তলিক সে জন্যই ইসলামানুবর্তীরা সর্বদাই ধর্মাউন্মাদে মত্ত হয় এবং তাদের আল্লার আদেশ মানবার উতসাহে বহু দেবদেবাদিদের ও শেষ পয়গম্ভরের ধর্ম প্রচারে অবিশ্বাসীদের বধ করতে ত্রুটি করেনি।
ইসলাম সম্পর্কে রোনাল রেগানঃ-
সম্প্রতি আমরা একটা ধর্মযুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি আক্ষরিক অর্থেই কারন মুসলমানরা তাদের জিহাদের মূল ধারনতা ফিরে আসছে যে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রান সেওয়াটাই তাদের স্বর্গে যাওয়ার উপায়।
ইসলাম সম্পর্কে মার্গারেট থ্যচারঃ-
আজকের দিনে বল সে হিজমের মত চরমপন্থী ইসলামও একটা সশস্র মতবাদ, এটা একটা আক্রমনাত্বক ধর্মতত্ব যা সশস্র ধর্মান্ধ অনুগামীদের দ্বারা প্রসার লাভ করেছে। কমনিউনিজমের এটাকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক দীর্ঘ মেয়াদী রণনীতি প্রয়োজন।
ইসলাম সম্পর্কে উইলিয়াম গ্লাক্সটোনঃ-
যতদিন কোরান আছে ততদিন পৃথিবীতে শান্তি নেই।
ইসলাম সম্পর্কে নীরদচন্দ্র চৌধুরীঃ-
মুসলিম ধর্ম বিশ্বাসের বিধান অনুযায়ী মুসলমানও তেমনি সকল মুসলমানকে আপন ও সকল হিন্দুকে পর মনে করিতে বাধ্য । বরঞ্চ মুসলমান সমাজের আভ্যন্তরিন সাম্য ও ভাত্ৃ ভাবের জন্য অমুসলমান সম্বন্ধে তাহারা আরো বেশি সজ্ঞান । মুসলমান ধর্ম শাস্রের নির্দেশ মত মুসলিম মাত্রের ই নিকট পৃথিবী দুই ভাগে ভিবক্ত-
১। দারওল ইসলাম ২। দারওল হরব ।
দারওল ইসলামের অর্থ ইসলামের দেশ অর্থাৎ যে দেশে মুসলমান ধর্মাবলম্বী শসক কর্তীক অধিক্ৃত ও শাষিত।
দারওল হরবের অর্থ যুদ্ধের দেশ, যে দেশে যুদ্ধ করিয়া ইসলামের প্রাধান্য স্থাপন করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান অনুসারে কোন মুসলমান অমুসলমানের অধীন থাকতে পারেনা শুধু তাই নয় অমুসলমান জগত এবং মুসলমান জগতের মধ্যে চিরন্তন বিরোধ, এই জন্যই অমুসলমান জগতের নাম করন হইয়াছে দারওল হরব -যুদ্ধের দেশ।
এই নির্দেশের জন্য অমুসলমান ও মুসলমান রাজ্যের মধ্যে কোন মৈত্রী হতে পারে না। যতদিন পর্যন্তনা দারওল হরব দারওল ইসলামে পরিনত হইবে ততদিন পর্যন্ত বিশ্বাসী মুসলমান মাত্রকেই জিহাদ বা ধর্ম যুদ্ধ চালাইতে হইবে।
জিহাদের নির্দেশ অনুযায়ী অবিশ্বাসীকে হয় (১) মুসলমান হইতে হইবে কিংবা (২) মুসলমানের প্রধান্য স্বীকার করিয়া ও জিজিয়া দিতে স্বীকৃত হইয়ে আশ্রিত হইয়া থাকিতে হইবে কিংবা (৩) যুদ্ধ করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান জানিলে এই তিন পথের এক পথ ভিন্ন মুসলমানের অমুসলমানের নিকট যাইবার চতুর্থ আর কোন পথ নাই।
ইসলাম সম্পর্কে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ঃ-
যখন ধর্মের প্রতি মোহ তাহাদের কমিবে, যখন বুঝিবে যে কোন ধর্মই হোক তাহার গোড়ামী লইয়া গর্ব করিবার মত এমন লজ্জাকর ব্যপার, এত বড় বর্বরতা মানুষের আর দ্বিতীয় নাই, কিন্তু সে বোঝার এখনো অনেক বিলম্ব এবং জগতশুদ্ধলোক মিলিয়া মুসলমানের শিক্ষার ব্যবস্থা না করিলে ইহাদের কোন দিন চোখ খুলিবে কিনা সন্দেহ।
উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি
মুসলিম পণ্ডিতদের ভাষ্য- ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শান্তির ধর্ম এবং একমাত্র বেহেস্ত লাবের অধিকারী।
ভারতবর্ষের সাধারণ হিন্দুরা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে-- এই হল বেশ কিছু সংখ্যক আধুনিক পণ্ডিত ও রাজনীতিকদের গবেষণা।
ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কোনদিন সম্প্রীতি ছিল না। ইতিহাস ঘেটে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, শুধু বাঙালী হিন্দু মুসলমানই নয়, পৃথিবীর কীন সম্প্রদায়ের সঙ্গেই মুসলমানদের সম্প্রতি ছিল না এবং এখনো নেই। সারা পৃথিবীতে জাতিগত সন্ত্রাসের প্রায় সবগুলিই মুসলমান সম্প্রদায় কর্ত্ৃক পরিচালিত। এর কারণ অবশ্য ইসলাম ধর্ম। ইসলাম কাউকে সহ্য করে না। পরমত সহিষ্ণুতা ইসলামের অভিধানে নেই। এটা ইসলামের জন্মগত চরিত্র। একজন হিন্দু যখন প্রার্থন করছেন- সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হোক, মঙ্গল হোক, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ভয়শূন্য হোক, নিরোগ ও শান্তি লাভ করুক; তখন একজন মুসলমান প্রার্থনা করছে, শুধু মুসলিম উম্মাহর (জাতির) উপর শান্তি বর্ষিত হোক, অন্যান্য জাতি ধ্বংস হোক।
যেখানে একজন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন লোক মনে করছেন হত্যা, লুণ্ঠন, বিধর্মী অত্যাচার অন্যায়, সেখানে একজন মুসলমানের কাছে ঐ সব অপকর্মগুলি পরম ধরম ও অবশ্য পালনীয় কর্ম। কাফের হত্যা, তাদের সম্পত্তি লুট করা ধর্ম, তাদের বউ, মেয়ে দখল করে ভোগ করা ধর্ম। আক্রমন, আগ্রাসন, অমুসলিম হত্যা করে তাদের সমত্তি লুট করা এবং নারী ও শিশু অপহরন আজকের সভ্যতায় বর্বরতা ব্লে বিবেচিত হলেও মুসলমানের কাছে এই অপকর্মগুলি পরম ধর্ম । বলা বাহুল্য এই সমস্ত উপায়েই পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ইতিহাস না পড়া কিছু স্বঘোষিত পন্ডিত প্রচার করেছেন, ভারত উপ-মহাদেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা এবং উচ্চবর্ণ নিন্ম বর্ণ বিরোধ। এর ফলে নিন্মবর্ণের লোকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কথাটি যে সর্বাংশে মিথ্যা তা ইতিহাস পাঠক মাত্রই জানেন।
প্রকৃত তথ্য হল -- আক্রমণ, আগ্রাসন, লুণ্ঠন, বন্দী, জিম্মি, জিজিয়া এবং অন্যান্য কৌশলে এদেরকে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তারা আবার স্বধর্মে ফিরে না আসার কারণ দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক মুসলিম শাসন।
৬৩২ খৃষ্টাব্দে হজরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মদিনার লোকেরা স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন, কিন্তু হজরত আবু বকর কঠোর নীতি অবলম্বন করে তাদেরকে ইসলামে থাকতে বাধ্য করে।
ঐতিহাসিক ম্যূর বলেন- "সমগ্র উপদ্বীপের লোক স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন" (এম এ ছালাম; ইসলামের ইতিহাস, পৃষ্ঠা- ১৯)
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্বল্পকালীন যুদ্ধ শেষে তারা আবার স্বধর্মে ফিরে এসেছিলেন।
১৯৪৬ সালে নোয়াখলীতে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু রায়ট শেষ হলে তারা আবার স্বধর্মে ফেরত আসেন। কিন্তু ৬০০ থেকে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত যারা মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা আর স্বধর্মে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। কারন সহস্র বছর তাদের ঘাড়ের উপর ঝুলছিল রেশমী সুতায় বাধা তলোয়ার। আজ তাদের সন্তানগন ভুলেই গেছে তাদের পূর্ব পুরুষগণ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, মনের তাগিদে হয়নি।
কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল কি
ইসলামের আভির্বাব থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমগ্র মধ্যযুগ ধরে মুসলমানরা সারা বিশ্বে যে তান্ডব করেছে, তার নজির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগকে ইসলামী চিন্তাবিদ্গন আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ (অন্ধকার যুগ) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু নানা কারণে আধুনিক মুক্ত নিন্তাবিদগণ ইসলামের আবির্ভাবের দিন থেকেই আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ শুরু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন এবং এই সময়টিকে মধ্যযুগ বলে চিহ্নিত করে বর্বরতার যুগ বা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নামকরণ করেছেন। আরব, ইরান ও ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এ কথা চরম সত্য বলে এক বাক্যে সবাই গণ্য করেন।
ভারত উপমহাদেশে হিন্দু সভ্যতা অধপতনের কোন ধারাবাহিক ইতিহাস নেই। আর এ কারনেই পণ্ডিতগন হিন্দু অধপতনের ও ইসলাম বিস্তারের কারন খুজতে গিয়ে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভুল করেছেন মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত ইতিহাস না পড়ে। অনেকে সব ই জানেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে সত্য প্রকাশ করেন নি। কিন্তু ইতিহাস লিখতে গেলে সত্য ইতিহাসই লেখা উচিত। ইতিহসে জোচ্চুরি চলে না। অথচ আমাদের দেশে তা দিব্যি চলে আসছে। আমাদের উচিত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে একটি সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা।
আচার্য যদুনাথ সরকারের সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরণ রেখে--
"সত্য প্রিয়ই হোউক আর অপ্রিয়ই হোউক সাধারণের গৃহীত হউক আর প্রচলিত মতের বিরোধী হউক তাহা ভাবিব না। আমাদের স্বদেশ গৌরবকে আঘাত করুক আর না করুক তাহাতে আক্ষেপ করিব না, সত্য প্রচার করিবার জন্য সমাজের বা বন্ধুবর্গের মধ্যে উপহাস ও গঞ্জনা সহিতে হয় সহিব। কিন্তু তবুও সত্যকে বুঝিব, গ্রহন করিব, ইহাই ঐতিহাসিকের প্রতিজ্ঞা।"
ভারতবর্ষে হিন্দুদের অধপতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে একই সঙ্গে ইসলাম বিস্তার এবং সেই সঙ্গে মুসলমানদের ধর্ম এবং আচার সম্পর্কে সাম্যক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এ কারনেই আলোচনার প্রথমেই পাঠকেদের জানিয়ে দেওয়া দরকার ইদলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল কোরান, যা একতি ঐশীগ্রন্থ বলে পরিচিত। কোরানের পরেই হাদিস। হাদিস হল হজরত মুহাম্মদের প্রামাণিক উক্তি ও কর্ম। মুসলমানগণ ও দুটি গ্রহন্থের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হলে দাবি এবং মুসলমান বাদশাহগণ কোরান-হাদিস অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেতেন। এ ব্যপারে সহযোগিতা নিতেন ওলেমা ও মাওলানাদের । আমি বোঝার সুবিধার্থে কোরান-হাদিসের বানী এবং তার প্রয়োগ এক সঙ্গে আলোচনা করব যাতে পাঠকগণ বাস্তব অবস্থা ও তাত্ত্বিক ব্যখ্যা বুঝতে কষ্ট বোধ না করেন।
কাফের,মুসরিক
ইসলামে কাফের হল বিধর্মী
আর মুসরিক হল পৌত্তালিক (মূর্তিপুজারী) কাফের।
মুনাফেক
মুনাফেক হল বাইরে ইসলাম ধর্মালম্বী কিন্তু ভিতরে ইসলমের শত্রু।
সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার নবী বিরোধী গোষ্ঠীকে এই নাম দিয়ে কোরানে বারবার দিক্কার দেওয়া হয়েছে। এই গোষ্টির নেতা ছিলেন আব্দুল্লা ইবন উবাই।
'জেহাদ'
ইসলামের আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল 'জেহাদ'। কোরানের পরিভাষায় জেহাদ হচ্ছে 'জেহাদ ফি সবিলিল্লা' (আল্লার পথে সংগ্রাম)। বিধর্মী নাশের যুদ্ধই হল জেহাদ। অনেকে বলেন, জেহাদের অর্থ ধর্মযুদ্ধ। এ কথাটা ভুল।
'গণিমা' বা গনিমতের মাল
জেহাদের নিত্যসঙ্গী হচ্ছে 'গণিমা' বা গনিমতের মাল। জেহাদে কাফেরদের কাছ থেকে যে সব মাল কেড়ে আনা হয় তার নাম গনিমতের মাল।
'জিজিয়া'
হিদাইয়া গ্রহন্থের মতে, জেদ করে যারা কাফেরির পাপে অটল থেকে যায়, তাদের কাছ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রের পাওনা আক্কেল সেলামীর নাম জিজিয়া। এই কর অত্যান্ত হীনতার সঙ্গে পৌছে দিতে হয় পবিত্র মুসলমানদের কাছে।
'ফেই'
এর অর্থ হচ্ছে বিনা যুদ্ধে পাওয়া লুটের মাল, যার সবটাই পয়গম্ব হজরত মুহাম্মদের পাওনা। জিজিয়াকে ফায় এর মধ্যে ধরা হয়।
জিম্মি
ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মায় থাকা জিজিয়া করদাতা কাফেররা হচ্ছে জিম্মি। এরা জেহাদে পরাজিত ইসলামী রাষ্ট্রের অধম নাগরিক।
গাজী
কাফের খুন করে যে মুজাহিদ জয়ী হয় তাকে বলা হয় গাজী। (One who slays an infidel-Hughes) হজরত মুহাম্মদ মদিনা বাশের দশ বছরের মধ্যে ৮২ বার জেহাদ করেছিলেন। তার মধ্যে ২৬/২৭ টিতে নেতৃত দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই সব জেহাদকে বলা হয় গাজোয়াত। অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি গাজী হয়েছিলেন। হাদিসে এও দেখা যায় যে, গাজোয়াতগুলির বেশিরভাগই ছিল হানাদারী অর্থাৎ শুত্রুকে নোটিশ না দিয়ে আক্রমন। বৈরাম খার নির্দেশে নিরস্র ও বন্দী হোমরাজ বিক্রমজিত ওরফে হিমুকে হত্যা করে বালক আকবর 'গাজী' হয়েছিলেন।
'জান্নাতুল ফিরদৌস'
এটি ইসলামের সর্বোচ্চ স্বর্গ। যুদ্ধে গিয়ে যারা মারা যাবে তারা শহীদ। এরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি ঐ সর্বোচ্চ স্বর্গে চলে যাবে। জেহাদ না করা মুসলমান যত ধার্মিকই হোক ঐ স্বর্গে যেতে পারবে না।মক্কাবাসীরা কেন ইসলাম গ্রহন করেছিলো
হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী, ৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি
ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে
সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ
যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ
হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয়
করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের
সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই
অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল
বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান
মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের
সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন,
"কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে
সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।
মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে
এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু
সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন
উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে
আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা
দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন
"কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর
আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা
যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই
তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের
ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ
এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের
উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য।
(কো-৮/৩৯)
এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট
কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য
যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি
প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে
অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত
মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা
করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে
দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি,
সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা
অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা
বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ
করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন
এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।
হয় ইসলাম নয় মৃত্যু
এখন দেখা যাক, ইসলামে প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের বিধান আছে কিনা, নাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া ?
বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে এ সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে।
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,--
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(ঐ, পৃ-৯৫, আবু ইউসুফ, কিতাব-আল খারেজ, প্ৃ-১৯৫)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
অনুরূপ কয়েকটি হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে ?
১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবে, পুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
আজকাল অনেকে বলেন, এসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু তা ঠিক নয়।
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে,
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি ল অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ ও চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-৯/৩৯)
হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী, ৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি
ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে
সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ
যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ
হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয়
করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের
সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই
অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল
বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান
মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের
সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন,
"কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে
সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।
মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে
এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু
সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন
উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে
আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা
দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন
"কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর
আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা
যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই
তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের
ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ
এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের
উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য।
(কো-৮/৩৯)
এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট
কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য
যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি
প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে
অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত
মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা
করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে
দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি,
সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা
অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা
বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ
করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন
এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।
এখন দেখা যাক, ইসলামে প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের বিধান আছে কিনা, নাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া ?
বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে এ সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে।
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,--
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(ঐ, পৃ-৯৫, আবু ইউসুফ, কিতাব-আল খারেজ, প্ৃ-১৯৫)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
অনুরূপ কয়েকটি হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে ?
১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবে, পুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
আজকাল অনেকে বলেন, এসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু তা ঠিক নয়।
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে,
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি ল অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ ও চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-৯/৩৯)
নোয়াখালী দাঙ্গা ছিল পরিকল্পিত
গোলাম সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া আছে- "জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা হইয়াছে।" (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)
তখনকার কংগ্রেস সভাপতি আচার্য্য যে বি ক্ৃপানলী সে সময় নোয়াখালী ঘুরে যা দেখেছিলেন তা তিনি প্রকাশ করেছেন এই ভাষায়, "নোয়াখালী এবং ত্রিপুরার জন উন্মত্ততার সব কিছুই ছিল প্রশিক্ষিত নেতৃত্বের অধীনে ব্যপকভাবে পরিকল্পিত। রাশ্তাঘাট কেটে দেওয়া হয়েছিল, যত্র তত্র বন্দুকের ব্যবহার হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গুণ্ডাদের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাজার হাজার হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে অথবা জোর পূর্বক বিবাহ করা হয়েছে। তাদের পূজার স্থানকে অপবিত্র করা হয়েছে। এমনকি শিশুদের প্রতিও কোন রকম করুণা দেখানো হয়নি। (অমৃত বাজার পত্রিকা, ২২/১০/১৯৪৬) স্টেটসম্যান পত্রিকার জনৈক সাংবাদিক নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চলে রিপোর্ট করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হয়েছিলেন তা মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন ব্যবস্থা বা ইসলাম প্রতিষ্ঠাও ততপরবর্তী কালের আরব ইরান ও অন্যান্য অঞ্চলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে-
"নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০ ই অক্টোবর সকালে একদল লোক ঐ মেয়েটির বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে (মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়। মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।"
(দি স্টেটসম্যান, ২৬/১০/১৯৪৬)
আধুনিক সাংবাদিক ও প্রতিবেধকগণ এই ধরনের ঘটনাকে গুণ্ডাদের কার্যকলাপ বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু আপনারা প্রথমেই পবিত্র কোরান, হাদিস ও সুন্নার উল্লেখ থেকে দেখেছেন যে এগুলোর কোনটিই গুণ্ডা বা স্বেচ্ছাচারী বাদশাহদের কর্ম নয়। এর প্রতিটি ঘটনাই ইসলাম ধর্মসম্মত পবিত্র কাজ।
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)
একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ ) তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে।
তার ভাষায়-
সমস্ত আরব জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosque, the prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midras. He said to them, "If you embrace islam, you will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No. 392 of Sahih al bukhari- vol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)
পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
সেই সুত্রে পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)
আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে। সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)
একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ ) তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে।
তার ভাষায়-

সমস্ত আরব জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosque, the prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midras. He said to them, "If you embrace islam, you will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No. 392 of Sahih al bukhari- vol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)
পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
সেই সুত্রে পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)
আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে। সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'
ইসলামি শান্তি ও বিধর্মী সংহার-শেষ পর্ব
শেষ পর্ব
মুসলমান পরাধীনতার যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস একটু মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করলে দেখা যাবে যে, যখনই কোন নতুন ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসনে বসেছেন তখনেই তাকে রাজ্য বিস্তারের জন্য দৌয়াতে হচ্ছে। তাকে গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যভারত ও দক্ষিণ ভারতে অভিযান করতে হচ্ছে। গোয়ালিয়র, রাজস্থান, রনথাম্ভোর, চিতোর ইত্যাদি দূর্গ দখল করতে হচ্ছে এবং সেজন্য অনেক যুদ্ধ বিগ্রহে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কাজেই প্রশ্ন হল, কেন একই দূর্গ বা একই অঞ্চল বিভিন্ন বাদশাহকে বারবার জয় করবার প্রয়োজন কেন হচ্ছে? উত্তর একটাই----- মুসলমানরা কোন দূর্গ বা অঞ্চলে বেশীদিন তাদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হন নাই। স্থানীয় এসব রাজারা ক্রামাগত বিদ্রোহ করা স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে; মুসলমান শাসনকে অস্বীকার করেছে। তাই একই অঞ্চল বারবার বাদশাহদের জয় করার প্রয়োজন হয়েছে। এই তথ্য থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে, ভারতের হিন্দু শাক্তি আক্রমনকারী মুসলমান শক্তির সঙ্গে নিরন্তর সংঘর্ষ করেছে এবং অসংখ্য হিন্দু বীর এই সংঘর্ষে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে। বিদেশী মুসলমান শক্তিকে এক মুহূর্তেও নিশ্চিন্তে থাকতে দেননি।
তাই ড.কে.এম মুন্সী লিখেছেন---
"এ হল স্বাধীনতা রক্ষার খাতিরে নিতান্ত বালক থেকে শুরু করে মৃত্য-পথ-যাত্রী বৃদ্ধ পর্যন্ত অগনিত মানুষের বিরামহীন সংঘর্ষ, নিরন্তর বীরত্ব প্রদর্শন ও প্রাণ বিসর্জনের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। এ হল মাসের পর মাস, কখনো বছরের পর বছর ধরে দূর্গের অভ্যন্তরে থাকা বীর যোদ্ধাদের যুদ্ধের ইতিহাস। দূর্গ আক্রমনকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলতে থাকা এক বিরামহীন সংগ্রামের ইতিহাস। এ হল সম্মান রক্ষার্থে হাজার হাজার হিন্দু নারীর জলন্ত অগ্নিতে আত্মাহুতি দেবার এক দীর্ঘ ইতিহাস। এ হল দাসত্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পিতামাতার ধারা অবোধ শিশুকে কূপের জলে নিক্ষেপ করার এক করুণ ইতিহাস। এ হল অন্তহীন হামলাকারীদের নিরন্তর আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য তরুণ যোদ্ধাদের দ্বারা ম্ৃত সৈনিকের স্থান পূরণ করার এক বিভীষিকাময় ইতিহাস।"
আমরা সেই মাটিতে বাস করছি, যে মাটি হাজার বছর ধরে কোটি পিতার, মাতার ভাইয়ের, বোনের অশ্রুজলে সিক্ত। পিতা মাতা ভাইয়ের সমনে বোনকে টেনে নিয়ে গিয়ে হারেমে নির্লজ্জ কুকুরের মত ব্যবহার করেছে, ভাই খোজা হয়ে তাকে পাহারা দিয়েছে।
এ সেই করুণ ইতিহাস যেখানে কন্যা সন্তানের জন্মকে অভিশাপ মনে করে পিতা মাতা গঙ্গাসাগরে ভগবানের নামে উৎসর্গ করে দিয়েছে। নিজ হাতে সন্তান হত্যার বুকফাটা আর্তনাদ পিতা মাতা হাজার হাজার বছর চেপে রেখেছে।
কারন সন্তান জন্মের পর বিসর্জনের যে কষ্ট তার চেয়ে বেশী কষ্ট হবে যখন চোখের সামনে মুসলমানরা ধরে নিয়ে কুকুরের মত ব্যবহার করবে।
যেখানে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী চলেছে। হিন্দুর রক্তে হোলি খেলা, জিজিয়া, খেরাজ আদায়ের ফলে বুভূক্ষ মানুষের হাহাকার।
এ সেই মাটিতে আমরা বাস করছি, যে মাটিতে হাজার বছর ধরে মিশেছে কোটি কোটি হিন্দুর রক্ত ও অশ্রুর বন্যা, পিতার হাহাকার , বোনের আর্ত চিৎকার, ভাইয়ের রক্ত, মাতার অসহায় দৃষ্টি।
সে মাটি আজও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদে।
মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাৎকার করা হয়েছে
অনেকের এই ধারনা থাকতে পারে যে, মুসলমানদের দ্বারা ব্যপক হারে হিন্দু হত্যা হিন্দুর সম্পত্তি লুটপাট করে এআত্মসাত করা, হিন্দু নারীদের জোর করে ধরে নিয়ে লুটের মালে পরিনত করা ইত্যাদি ঘটনা এক কালে মধ্যযুগে ঘটেছে বটে, তবে আজ আর তার পুনরাব্ৃত্তি হবেনা। আজ দেশ ও সমাজ সভ্যতার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে, তাই মুসলমানদের কাছ থেকে এই সব বর্বরতা আশঙ্কা নেই। মধ্য যুগ নেই তাই মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হবে না। এই সব ব্যক্তিদের জানা নেই যে সমস্ত পৃথিবী সভ্যতার পথে অগ্রসর হলেও ইসলাম ও কোরান এবং সে সঙ্গে মুসলমান সমাজ আজও সেই মধ্য যুগেই দাঁড়িয়ে আছে। তারা সভ্যতার পথে এক পা ও অগ্রসর হয়নি। যে কোরান ও হাদিস মধ্য যুগের মুসলমানদের সমস্ত কাজে অনুপ্রানিত করত, সেই একই কোরান ও হাদিস আজকের মুসলমান সমাজকেও পূর্বোক্ত সকল রকম কাজে একই ভাবে প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে। কোরানের ও হাদিসের কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই কাফেরের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গির কোন পরিবর্তন হয়নি। শুধু সুযোগের অপেক্ষা মাত্র। অনুকুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আজও মুসলমানরা কাফের কেটে রক্তা গঙ্গা বইয়ে দিবে। কাফেরর মৃতদেহ দিয়ে পাহাড় তৈরী করবে, কাফের নারীদের লুটের মালে পরিণত করবে এবং কাফেরদের মন্দির ভেঙে ধূলায় মিশিয়ে দেবে। তফাত শুধু এই, এক কালের তলোয়ার, শূল, বর্শা, তীর ধনুক ইত্যাদির বদলে আজ একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, মার্টার, রকেট, বোমা, বিমান ইত্যাদি উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে। উদ্দেশ্য একটাই, কাফের নির্মূল করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা।
মুসলমানদের মন মানিসকতা যে কোন পরিবর্তন নেই তার উদাহারন হল ২০০২ সালেও আফগানিস্থানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মূর্তি যা সারা বিশ্বের বাধা নিষেদকে অমান্য করে মুসলমানরা ধ্বংস করে ফেলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যা ঘটেছিল তা অনেকেরই হয়তো মনে আছে ।
আনোয়ার শেখের ভাষায়__
"বিগত ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলায় হিন্দুদের উপর যে নারকীয় বর্বরতার অনুষ্টান করা হয়েছে আর তুলনা মানব ইতিহাসে অনুপস্থিত। বহু ক্ষেত্রে সমগ্র অধিবাসীকেই ঘিরে ফেলে অত্যাচার চালানো হয়েছে। মা এবং মেয়েকে এক সঙ্গে তাদের বাবা ভাইয়ের সামনে বলাতকার করা হয়েছে। মহিলাদের স্তন কেটে ফেলা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেঝেতে আছাড় মেরে শিশুদের মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছে, তারপর বয়ষ্ক পুরুষদের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে, চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে এবং সব শেষে ধড় থেকে মাথা আলাদা করা হয়েছে। চরম উল্লাসের আনন্দ পাবার জন্য পরিবারের সবাইকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে সেই ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।"
[Anwar Sheikh, This is Jehad]
ইসলাম সম্পর্কে -মনিষীদের বানী
"ইসলাম হচ্ছে এক রাজনৈতিক আক্রমনকারী পরধর্ম অসহিষ্ণু বিস্তারবাদী আন্দোলন। যারা আল্লাহ মানে না, যাদের কোরানে বিশ্বাস নেই কিংবা মূর্তি পূজার মাধ্যমে উপাসনা করে, এমন নাগরিকদের দেশের উপর আক্রমন করে তাদের পরাভূত কয়া, তাদের সম্পত্তি লুটপাট করা, তাদের মহিলাদের লুটের মাল হিসেবে সৈনিকদের দ্বারা বলতকার করানো, তাদের ধর্মান্তরন করে মুসলমান করা, আর যারা ধররান্তরিত হলো না, তাদের উপর অত্যাচারের পূনরাবৃত্তি অবিরত চালু রাখা---- এই হচ্ছেকোরানের শিক্ষা"
----গোপাল গডসে ।
পৃথিবীর দুইটি ধর্ম সম্প্রদায় আছে অন্য সমস্ত ধর্মমতের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধতা অত্যুগ্র-- সে হচ্ছে খৃষ্টান আর মুসলমান ধর্ম। তারা নিজের ধর্ম পালন করে সন্তুষ্ট নয়, অন্য ধর্মকে সংহার করতে উদ্যত। এই জন্য তাদের ধর্ম গ্রহন করা ছাড়া তাদের সঙ্গে মেলবার অন্য কোন উপায় নেই।"
--------রবীন্দ্রনাথ। (রবীন্দ্র রচনাবলী, জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃ-৩৫৬)
"বস্তুত মুসলমান যদি কখনও বলে হিন্দুর সহিত মিলন করিতে চাই, সে যে ছলনা ছাড়া আরা কিছু হইতে পারে ভাবিয়ে পাওয়া কঠিন।"
"হিন্দু মুসলমান মিলন একটি গালভরা শব্দ, যুগে যুগে এমন অনেক গালভরা বাক্যই উদ্ভাবিত হইয়াছে, কিন্তু ঐ গাল ভরানোর অতিরিক্ত সে আর কোন কাজেই আসে নাই।"
--------শরৎচন্দ্র । (শরত রচনাবলী জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ, তৃতীয় খণ্ড, পৃ-৪৭৩)
"ইসলাম ধর্মীরা কোরানের দুইটি আয়াত, 'পৌত্তলিকদের যেখানে পাও হত্যা কর' এবং 'অতএব ধর্মযুদ্ধে তাদের বন্দী কএ হয় বশ্যতার অঙ্গীকার নতুবা মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দাও, অনুযায়ী ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে বলে যে, বহু দেবদেবীতে বিশ্বাসী পৌত্তালিকদের হত্যা বা নির্যাতন করা ঈশ্বএর নির্দেশ এবং অবশ্যিক। সুতরাং ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় উন্মাদনা এবং ঈশ্বরের নির্দেশ পালনে তত্যুতসাহিতা সেই পৌত্তলিকগণকে হত্যা ও নির্যাতন করতে একালে বা সেকালে কখনই বিরত হয় নাই।"
------ রাজা রামমোহন রায়।
(তুহাফাত-উল-মুওয়াদ্দীন, রামমোহন স্মরণ, মার্চ ১৯৮৯, পরিশিষ্ট, প্ৃ-৩১)
"আপনার মত (প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান) শিক্ষিত সংস্কৃতিবান এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি আজ এমন দর্শনের প্রচারক হয়ে গেলেন, যে দর্শন মানবতার পক্ষে ভয়াবহ বিপজ্জনক এবং যে দর্শন ন্যায় ও শুভ চিন্তাধারা থেকে উদ্ভুত যাবতীয় নীতিমালার পক্ষে ক্ষতিকারক।"
---মুসলিম লীগের প্রাক্তন সহযোগী সদস্য মি যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল।
ইসলাম সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দঃ-
এ বিষয়ে মুসলমানরা অত্যান্ত স্থুল দ্ৃষ্টি সম্পূর্ণ এবং সাম্প্রদায়ীক মনভাবাপন্ন। তাদের সিদ্ধ বাক্য শুধু একটিই
লা-ইলাহা-ইল্লাল্লা-মোহাম্মদুর-রাসুলাল্লহ
অর্থাৎ- ঈশ্বর মাত্র একজন এবং মোহাম্মদ তার রসুল,
এই সিদ্ধ বাক্যের বাইরে আর যা কিছু আছে সবই নিকৃষ্ট বস্তু এবং অবিলম্বে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলতে হবে এই হল মুসলমানদের কথা, এ কথায় যে বিশ্বাস করেনা সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক মুহুর্তের হুশিয়ারী দিয়ে তাকে হত্যা করা হবে। যা কিছু এই উপাসনা পদ্ধতির অন্তর্গত নয় তাকে মুহুর্তের মধ্যে ধ্বংস করতে হবে। এ বিশ্বাসের সাথে মিলছে না এমন যত গ্রন্থ আছে সেগুলিকে দগ্ধ করতে হবে।
প্রসান্ত মহাসগর থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত পাচ শত বর্ষ ব্যপি পৃথিবীর বুকে এই একি কারনে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে, এই হল ইসলাম।"
(স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী (প্রকটিক্যাল বেদান্ত), ৪র্থ খণ্ড, পৃ-১২৫ ও ২য় খণ্ড, পৃ-৩৫২)
ইসলাম সম্মর্কে বি আর আম্মেদকারঃ-
ইসলামের ভাতৃত্ব মোটেই বিশ্ব ভাতৃত্ব নয় এটা কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্যই যারা মুসলমান তারাই কেবল এর সুযোগ পাবে কিন্তু অমুসলমানরা পাবে কেবল শত্রুতা। যেখানেই ইসলামিক শাষন রয়েছে সেটাই মুসলমানদের নিজের দেশ, বস্তুত ইসলাম একজন প্রকৃত মুসলমানকে কখনোই ভারতকে তার নিজের দেশ বলে মেনে নিতে দেবেনা বা হিন্দুদেরকে তার আত্মীয় বলে স্বীকার করতে দিতে পারেনা।
ইসলাম সম্পর্কে মোহনদাশ করমচাদ গান্ধীঃ-
জাতীয় স্বাধীনতা আন্দলনে মুসলমানরা কোন আগ্রহ দেখায়নী, মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সত্য তারা ভারতকে নিজের দেশ বলে স্বীকার করেনা।
হজরত মোহাম্মদের নিরপেক্ষ জীবনীকার ও বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার উইলিয়াম মূর বলেছেনঃ-
কোরান ও ইসলামের তরবারী মানব সভ্যতা, স্বাধীনতা ও সত্যের সবচেয়ে বড় শত্রু যা আজ পর্যন্ত মানুষ দেখেছে।
ইসলাম সম্পর্কে আনোয়ার শেখঃ-
ইসলাম এমন একটা ধর্ম বিশ্বাষ যা সমস্ত মানব জাতিককে দুটি চীর বিভদমান জাতি গোষ্টিতে ভাগ করে দিয়েছে। একদল যারা আল্লাহ ও মোহাম্মদকে বিশ্বাষ করে অর্থাৎ আল্লাহর দল মুসলমানরা আর এক দল হল শয়তানের দল অর্থাৎ সব অমুসলমানরা।
ইসলাম সম্পর্কে রাজা রামমোহন রায়ঃ-
ঐসব দৈবী নির্দেশে আস্থা রাখার জন্য ইসলাম ধর্মীরা ব্রাম্মন জাতীর অনেক ক্ষতি করেছেন ও তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছেন, এমনকি মৃত্যু ভয়ও দেখিয়েছে তবু তারা ধর্ম পরিত্যাগ করতে পারেনি । ইসলাম অনুবর্তীরা কোরানের পবিত্র শ্লোকের মর্মানুসারে অবিশ্বাসীদের ধর্ম যুদ্ধ করে বেধে আনো এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মুক্ত করে দাও বা বশ্যতা স্বীকার করাও এগুলি ঈশ্বরের নির্দেশ বলে উল্লেখ করে যেন পৌত্তলিকদের বধ করা তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা ঈশ্বর আদেশে অবস্য কর্তব্য। মুসলমানদের মতে পৌত্তলিকদের মধ্যে ব্রাম্মনেরাই সবছেয়ে বড় পৌত্তলিক সে জন্যই ইসলামানুবর্তীরা সর্বদাই ধর্মাউন্মাদে মত্ত হয় এবং তাদের আল্লার আদেশ মানবার উতসাহে বহু দেবদেবাদিদের ও শেষ পয়গম্ভরের ধর্ম প্রচারে অবিশ্বাসীদের বধ করতে ত্রুটি করেনি।
ইসলাম সম্পর্কে রোনাল রেগানঃ-
সম্প্রতি আমরা একটা ধর্মযুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছি আক্ষরিক অর্থেই কারন মুসলমানরা তাদের জিহাদের মূল ধারনতা ফিরে আসছে যে খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে প্রান সেওয়াটাই তাদের স্বর্গে যাওয়ার উপায়।
ইসলাম সম্পর্কে মার্গারেট থ্যচারঃ-
আজকের দিনে বল সে হিজমের মত চরমপন্থী ইসলামও একটা সশস্র মতবাদ, এটা একটা আক্রমনাত্বক ধর্মতত্ব যা সশস্র ধর্মান্ধ অনুগামীদের দ্বারা প্রসার লাভ করেছে। কমনিউনিজমের এটাকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক দীর্ঘ মেয়াদী রণনীতি প্রয়োজন।
ইসলাম সম্পর্কে উইলিয়াম গ্লাক্সটোনঃ-
যতদিন কোরান আছে ততদিন পৃথিবীতে শান্তি নেই।
ইসলাম সম্পর্কে নীরদচন্দ্র চৌধুরীঃ-
মুসলিম ধর্ম বিশ্বাসের বিধান অনুযায়ী মুসলমানও তেমনি সকল মুসলমানকে আপন ও সকল হিন্দুকে পর মনে করিতে বাধ্য । বরঞ্চ মুসলমান সমাজের আভ্যন্তরিন সাম্য ও ভাত্ৃ ভাবের জন্য অমুসলমান সম্বন্ধে তাহারা আরো বেশি সজ্ঞান । মুসলমান ধর্ম শাস্রের নির্দেশ মত মুসলিম মাত্রের ই নিকট পৃথিবী দুই ভাগে ভিবক্ত-
১। দারওল ইসলাম ২। দারওল হরব ।
দারওল ইসলামের অর্থ ইসলামের দেশ অর্থাৎ যে দেশে মুসলমান ধর্মাবলম্বী শসক কর্তীক অধিক্ৃত ও শাষিত।
দারওল হরবের অর্থ যুদ্ধের দেশ, যে দেশে যুদ্ধ করিয়া ইসলামের প্রাধান্য স্থাপন করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান অনুসারে কোন মুসলমান অমুসলমানের অধীন থাকতে পারেনা শুধু তাই নয় অমুসলমান জগত এবং মুসলমান জগতের মধ্যে চিরন্তন বিরোধ, এই জন্যই অমুসলমান জগতের নাম করন হইয়াছে দারওল হরব -যুদ্ধের দেশ।
এই নির্দেশের জন্য অমুসলমান ও মুসলমান রাজ্যের মধ্যে কোন মৈত্রী হতে পারে না। যতদিন পর্যন্তনা দারওল হরব দারওল ইসলামে পরিনত হইবে ততদিন পর্যন্ত বিশ্বাসী মুসলমান মাত্রকেই জিহাদ বা ধর্ম যুদ্ধ চালাইতে হইবে।
জিহাদের নির্দেশ অনুযায়ী অবিশ্বাসীকে হয় (১) মুসলমান হইতে হইবে কিংবা (২) মুসলমানের প্রধান্য স্বীকার করিয়া ও জিজিয়া দিতে স্বীকৃত হইয়ে আশ্রিত হইয়া থাকিতে হইবে কিংবা (৩) যুদ্ধ করিতে হইবে।
ইসলামের বিধান জানিলে এই তিন পথের এক পথ ভিন্ন মুসলমানের অমুসলমানের নিকট যাইবার চতুর্থ আর কোন পথ নাই।
ইসলাম সম্পর্কে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ঃ-
যখন ধর্মের প্রতি মোহ তাহাদের কমিবে, যখন বুঝিবে যে কোন ধর্মই হোক তাহার গোড়ামী লইয়া গর্ব করিবার মত এমন লজ্জাকর ব্যপার, এত বড় বর্বরতা মানুষের আর দ্বিতীয় নাই, কিন্তু সে বোঝার এখনো অনেক বিলম্ব এবং জগতশুদ্ধলোক মিলিয়া মুসলমানের শিক্ষার ব্যবস্থা না করিলে ইহাদের কোন দিন চোখ খুলিবে কিনা সন্দেহ।
উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি
মুসলিম পণ্ডিতদের ভাষ্য- ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শান্তির ধর্ম এবং একমাত্র বেহেস্ত লাবের অধিকারী।
ভারতবর্ষের সাধারণ হিন্দুরা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে-- এই হল বেশ কিছু সংখ্যক আধুনিক পণ্ডিত ও রাজনীতিকদের গবেষণা।
ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কোনদিন সম্প্রীতি ছিল না। ইতিহাস ঘেটে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, শুধু বাঙালী হিন্দু মুসলমানই নয়, পৃথিবীর কীন সম্প্রদায়ের সঙ্গেই মুসলমানদের সম্প্রতি ছিল না এবং এখনো নেই। সারা পৃথিবীতে জাতিগত সন্ত্রাসের প্রায় সবগুলিই মুসলমান সম্প্রদায় কর্ত্ৃক পরিচালিত। এর কারণ অবশ্য ইসলাম ধর্ম। ইসলাম কাউকে সহ্য করে না। পরমত সহিষ্ণুতা ইসলামের অভিধানে নেই। এটা ইসলামের জন্মগত চরিত্র। একজন হিন্দু যখন প্রার্থন করছেন- সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হোক, মঙ্গল হোক, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ভয়শূন্য হোক, নিরোগ ও শান্তি লাভ করুক; তখন একজন মুসলমান প্রার্থনা করছে, শুধু মুসলিম উম্মাহর (জাতির) উপর শান্তি বর্ষিত হোক, অন্যান্য জাতি ধ্বংস হোক।
যেখানে একজন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন লোক মনে করছেন হত্যা, লুণ্ঠন, বিধর্মী অত্যাচার অন্যায়, সেখানে একজন মুসলমানের কাছে ঐ সব অপকর্মগুলি পরম ধরম ও অবশ্য পালনীয় কর্ম। কাফের হত্যা, তাদের সম্পত্তি লুট করা ধর্ম, তাদের বউ, মেয়ে দখল করে ভোগ করা ধর্ম। আক্রমন, আগ্রাসন, অমুসলিম হত্যা করে তাদের সমত্তি লুট করা এবং নারী ও শিশু অপহরন আজকের সভ্যতায় বর্বরতা ব্লে বিবেচিত হলেও মুসলমানের কাছে এই অপকর্মগুলি পরম ধর্ম । বলা বাহুল্য এই সমস্ত উপায়েই পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ইতিহাস না পড়া কিছু স্বঘোষিত পন্ডিত প্রচার করেছেন, ভারত উপ-মহাদেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা এবং উচ্চবর্ণ নিন্ম বর্ণ বিরোধ। এর ফলে নিন্মবর্ণের লোকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কথাটি যে সর্বাংশে মিথ্যা তা ইতিহাস পাঠক মাত্রই জানেন।
প্রকৃত তথ্য হল -- আক্রমণ, আগ্রাসন, লুণ্ঠন, বন্দী, জিম্মি, জিজিয়া এবং অন্যান্য কৌশলে এদেরকে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তারা আবার স্বধর্মে ফিরে না আসার কারণ দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক মুসলিম শাসন।
৬৩২ খৃষ্টাব্দে হজরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মদিনার লোকেরা স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন, কিন্তু হজরত আবু বকর কঠোর নীতি অবলম্বন করে তাদেরকে ইসলামে থাকতে বাধ্য করে।
ঐতিহাসিক ম্যূর বলেন- "সমগ্র উপদ্বীপের লোক স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন" (এম এ ছালাম; ইসলামের ইতিহাস, পৃষ্ঠা- ১৯)
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্বল্পকালীন যুদ্ধ শেষে তারা আবার স্বধর্মে ফিরে এসেছিলেন।
১৯৪৬ সালে নোয়াখলীতে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু রায়ট শেষ হলে তারা আবার স্বধর্মে ফেরত আসেন। কিন্তু ৬০০ থেকে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত যারা মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা আর স্বধর্মে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। কারন সহস্র বছর তাদের ঘাড়ের উপর ঝুলছিল রেশমী সুতায় বাধা তলোয়ার। আজ তাদের সন্তানগন ভুলেই গেছে তাদের পূর্ব পুরুষগণ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, মনের তাগিদে হয়নি।
কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল কি
ইসলামের আভির্বাব থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমগ্র মধ্যযুগ ধরে মুসলমানরা সারা বিশ্বে যে তান্ডব করেছে, তার নজির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগকে ইসলামী চিন্তাবিদ্গন আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ (অন্ধকার যুগ) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু নানা কারণে আধুনিক মুক্ত নিন্তাবিদগণ ইসলামের আবির্ভাবের দিন থেকেই আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ শুরু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন এবং এই সময়টিকে মধ্যযুগ বলে চিহ্নিত করে বর্বরতার যুগ বা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নামকরণ করেছেন। আরব, ইরান ও ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এ কথা চরম সত্য বলে এক বাক্যে সবাই গণ্য করেন।
ভারত উপমহাদেশে হিন্দু সভ্যতা অধপতনের কোন ধারাবাহিক ইতিহাস নেই। আর এ কারনেই পণ্ডিতগন হিন্দু অধপতনের ও ইসলাম বিস্তারের কারন খুজতে গিয়ে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভুল করেছেন মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত ইতিহাস না পড়ে। অনেকে সব ই জানেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে সত্য প্রকাশ করেন নি। কিন্তু ইতিহাস লিখতে গেলে সত্য ইতিহাসই লেখা উচিত। ইতিহসে জোচ্চুরি চলে না। অথচ আমাদের দেশে তা দিব্যি চলে আসছে। আমাদের উচিত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে একটি সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা।
আচার্য যদুনাথ সরকারের সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরণ রেখে--
"সত্য প্রিয়ই হোউক আর অপ্রিয়ই হোউক সাধারণের গৃহীত হউক আর প্রচলিত মতের বিরোধী হউক তাহা ভাবিব না। আমাদের স্বদেশ গৌরবকে আঘাত করুক আর না করুক তাহাতে আক্ষেপ করিব না, সত্য প্রচার করিবার জন্য সমাজের বা বন্ধুবর্গের মধ্যে উপহাস ও গঞ্জনা সহিতে হয় সহিব। কিন্তু তবুও সত্যকে বুঝিব, গ্রহন করিব, ইহাই ঐতিহাসিকের প্রতিজ্ঞা।"
ভারতবর্ষে হিন্দুদের অধপতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে একই সঙ্গে ইসলাম বিস্তার এবং সেই সঙ্গে মুসলমানদের ধর্ম এবং আচার সম্পর্কে সাম্যক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এ কারনেই আলোচনার প্রথমেই পাঠকেদের জানিয়ে দেওয়া দরকার ইদলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল কোরান, যা একতি ঐশীগ্রন্থ বলে পরিচিত। কোরানের পরেই হাদিস। হাদিস হল হজরত মুহাম্মদের প্রামাণিক উক্তি ও কর্ম। মুসলমানগণ ও দুটি গ্রহন্থের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হলে দাবি এবং মুসলমান বাদশাহগণ কোরান-হাদিস অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেতেন। এ ব্যপারে সহযোগিতা নিতেন ওলেমা ও মাওলানাদের । আমি বোঝার সুবিধার্থে কোরান-হাদিসের বানী এবং তার প্রয়োগ এক সঙ্গে আলোচনা করব যাতে পাঠকগণ বাস্তব অবস্থা ও তাত্ত্বিক ব্যখ্যা বুঝতে কষ্ট বোধ না করেন।
কাফের,মুসরিক
ইসলামে কাফের হল বিধর্মী
আর মুসরিক হল পৌত্তালিক (মূর্তিপুজারী) কাফের।
মুনাফেক
মুনাফেক হল বাইরে ইসলাম ধর্মালম্বী কিন্তু ভিতরে ইসলমের শত্রু।
সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার নবী বিরোধী গোষ্ঠীকে এই নাম দিয়ে কোরানে বারবার দিক্কার দেওয়া হয়েছে। এই গোষ্টির নেতা ছিলেন আব্দুল্লা ইবন উবাই।
'জেহাদ'
ইসলামের আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল 'জেহাদ'। কোরানের পরিভাষায় জেহাদ হচ্ছে 'জেহাদ ফি সবিলিল্লা' (আল্লার পথে সংগ্রাম)। বিধর্মী নাশের যুদ্ধই হল জেহাদ। অনেকে বলেন, জেহাদের অর্থ ধর্মযুদ্ধ। এ কথাটা ভুল।
'গণিমা' বা গনিমতের মাল
জেহাদের নিত্যসঙ্গী হচ্ছে 'গণিমা' বা গনিমতের মাল। জেহাদে কাফেরদের কাছ থেকে যে সব মাল কেড়ে আনা হয় তার নাম গনিমতের মাল।
'জিজিয়া'
হিদাইয়া গ্রহন্থের মতে, জেদ করে যারা কাফেরির পাপে অটল থেকে যায়, তাদের কাছ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রের পাওনা আক্কেল সেলামীর নাম জিজিয়া। এই কর অত্যান্ত হীনতার সঙ্গে পৌছে দিতে হয় পবিত্র মুসলমানদের কাছে।
'ফেই'
এর অর্থ হচ্ছে বিনা যুদ্ধে পাওয়া লুটের মাল, যার সবটাই পয়গম্ব হজরত মুহাম্মদের পাওনা। জিজিয়াকে ফায় এর মধ্যে ধরা হয়।
জিম্মি
ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মায় থাকা জিজিয়া করদাতা কাফেররা হচ্ছে জিম্মি। এরা জেহাদে পরাজিত ইসলামী রাষ্ট্রের অধম নাগরিক।
গাজী
কাফের খুন করে যে মুজাহিদ জয়ী হয় তাকে বলা হয় গাজী। (One who slays an infidel-Hughes) হজরত মুহাম্মদ মদিনা বাশের দশ বছরের মধ্যে ৮২ বার জেহাদ করেছিলেন। তার মধ্যে ২৬/২৭ টিতে নেতৃত দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই সব জেহাদকে বলা হয় গাজোয়াত। অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি গাজী হয়েছিলেন। হাদিসে এও দেখা যায় যে, গাজোয়াতগুলির বেশিরভাগই ছিল হানাদারী অর্থাৎ শুত্রুকে নোটিশ না দিয়ে আক্রমন। বৈরাম খার নির্দেশে নিরস্র ও বন্দী হোমরাজ বিক্রমজিত ওরফে হিমুকে হত্যা করে বালক আকবর 'গাজী' হয়েছিলেন।
'জান্নাতুল ফিরদৌস'
এটি ইসলামের সর্বোচ্চ স্বর্গ। যুদ্ধে গিয়ে যারা মারা যাবে তারা শহীদ। এরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি ঐ সর্বোচ্চ স্বর্গে চলে যাবে। জেহাদ না করা মুসলমান যত ধার্মিকই হোক ঐ স্বর্গে যেতে পারবে না।মক্কাবাসীরা কেন ইসলাম গ্রহন করেছিলো
হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী, ৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি
ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে
সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ
যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ
হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয়
করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের
সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই
অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল
বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান
মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের
সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন,
"কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে
সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।
মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে
এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু
সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন
উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে
আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা
দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন
"কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর
আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা
যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই
তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের
ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ
এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের
উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য।
(কো-৮/৩৯)
এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট
কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য
যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি
প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে
অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত
মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা
করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে
দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি,
সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা
অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা
বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ
করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন
এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।
হয় ইসলাম নয় মৃত্যু
এখন দেখা যাক, ইসলামে প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের বিধান আছে কিনা, নাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া ?
বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে এ সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে।
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,--
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(ঐ, পৃ-৯৫, আবু ইউসুফ, কিতাব-আল খারেজ, প্ৃ-১৯৫)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
অনুরূপ কয়েকটি হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে ?
১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবে, পুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
আজকাল অনেকে বলেন, এসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু তা ঠিক নয়।
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে,
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি ল অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ ও চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-৯/৩৯)
হজরত মুহাম্মদ মক্কা জয়ের (জানুয়ারী, ৬৩০খ্ৃ) আগে আরব দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যপক উদ্যোগ নেননি। তিনি
ঐ সময় মদিনার মোহাদির ও আনসার গোষ্টী মিলিয়ে সে যুগের ছোট আকারের মুসলমান সমাজেকে
সংহত করে বিভিন্ন আরব ও ইহুদি গোষ্টির বিরুদ্ধে অবিরাম হানা যুদ্ধ আর পুর্ণাজ্ঞ
যুদ্ধ চালিয়ে শক্তি সঞ্চয় করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পূর্ণ শক্তির মূহুর্তে তিনি দশ
হাজার সৈন্য নিয়ে অতর্কিতে মক্কায় ঝাপিয়ে পড়েন এবং বিনা রক্তপাতেই তিনি মক্কা জয়
করেন। মক্কাবাসীরা বিপদে পড়ে ও মৃত্যুর ভয়ে ইসলাম গ্রহন করে।
তাদের নেতা আবু সুফিয়ান হযরতের
সাথে অলিখিত চুক্তির শর্ত মেনে বাধ্য হন ইসলাম গ্রহন করতে। স্যার উইলিয়াম মূর এই
অলিখিত বোঝা-পড়ার বিবরণ দিয়েছেন এই ভাবে, 'বিশাল
বাহিনী সমেত পয়গম্বরের মক্কা অভিযানের খবর পেয়ে আগের দিন সন্ধ্যাবেলা আবু সুফিয়ান
মদিনার পথ ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রসর হন। পথে পয়গম্বরের চাচা আল আব্বাসের
সঙ্গে তার দেখা হয়। আব্বাস আকে পয়গম্বরের কাছে নিয়ে যান। হযরত তাকে বলেন,
"কাল সকালে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে।"
সকাল বেলা আব্বাসের সঙ্গে
সুফিয়ান নত শিরে পয়গম্বরের শিবিরে উপস্থিত হন।
মূরের ভাষায়,--
"(কোরেশ নেতা যখন কাছে
এলেন) পয়গম্বর তীব্রস্বরে বলে উঠলেন; "ধিক তোমাকে আবু সুফিয়ান, তুমি কি আজও বোঝনি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই?" উত্তরে আবু
সুইয়ান বলেন, "হে মান্যবর, আর কোন
উপাস্য যদি থাকতেন, তাবে তিনি যথার্থ আমার কোন কাজে
আসতেন।" নবীজী বললেন, তবে তুমি মানছো যে , আমি আমার প্রভূর রসুল ? সুফিয়ান , "হে মান্যবর, এ নিয়ে আমার এখনো একটু আধটু দ্বিধা
দ্বন্ধ আছে"
একথা শুনে আব্বাস চেচিয়ে উঠলেন
"কি আপদ এটা দ্বিধা দ্বন্দের সময় নয়। এই মুহূর্তে ইসলামের কলেমায় বিশ্বাস কর
আর সাক্ষ্য দাও, তা না হলে বিপদ হবে তোমার গর্দানের।"
এই বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা
যায় আবু সুফিয়ান গর্দানের ভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং পরের দিনা বেশীর ভাগ কোরেশই
তার অনুসরণ করে।
হযরত মুহাম্মদ কেন কোরেশদের
ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করলেন? কারণ
এটি কোরানের বানী। আল্লাহ বলেছেন, প্ৃথিবী থেকে পৌত্তালিদের
উতখাত করে সারা বিশ্বে আল্লার ধর্ম প্রতিষ্টা করাই মুসলমানের পরম কর্তব্য।
(কো-৮/৩৯)
এটিই আল্লাহর পথে শ্রেষ্ট
কর্মোদ্যম, এটিই আদি ও অকৃত্রিম জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করত তাহলে তাদের কি করা হত ? মধ্য
যুগের বিখ্যাত ওলেমা কাজী মুগিসউদ্দিন সুলতান আলাউদ্দিনের নিকট এই রকম একটি
প্রশ্নের সমাধান চেয়েছিলেন। উত্তরে মুগিসউদ্দিন বলেছেন,---
"আল্লাহতালা ইহাদিগকে
অসম্মানজনক অবস্থার মধ্যে রাখা ধার্মিকতার অংশ বলিয়া গণ্য করেন। কারন ইহারা হজরত
মুহাম্মদ মোস্তফার ধর্মের সর্বাপক্ষা মারাক্তক শত্রু। এই জন্য হজরত ইহাদিগকে হত্যা
করা, ইহাদের ধন সম্পদ লুঠ করা এবং ইহাদিগকে
দাস-দাসী হিসাবে গ্রহন করিবার আদেশ দিয়াছেন। আমরা যে ইমামের মাযাহাব মানিয়া চলি,
সেই ইমাম আজম আবু হানিফাই শুধু ইহাদিগকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা
অথবা ইহাদিগকে মারিয়া কাটিয়া ধন সম্পদ লুট করিয়া দাস দাসী হিসাবে গ্রহণ করিবার কথা
বলিয়াছেন। অন্যান্য ইমাম ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইহাদের জন্য দুইটি পন্থা নির্দেশ
করিয়াছেন, হয় তাহারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিবে, নতুবা তাহাদিগকে হত্যা করিতে হইবে।"
(জিয়া উদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শহী, পৃ-২৩৯)
বলা বাহুল্য সম্রাট আলাউদ্দিন
এই নীতিতেই ভারত শাসন করতেন।
এখন দেখা যাক, ইসলামে প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের বিধান আছে কিনা, নাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া ?
বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে এ সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে।
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে,
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।'
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়।
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,--
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(ঐ, পৃ-৯৫, আবু ইউসুফ, কিতাব-আল খারেজ, প্ৃ-১৯৫)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে।
(ঐ, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)
অনুরূপ কয়েকটি হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে ?
১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবে, পুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)
আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।" (কো-৭১/২৬)
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)
আজকাল অনেকে বলেন, এসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু তা ঠিক নয়।
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন--
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।"
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)
(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)
মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে,
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)
ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি ল অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)
আমি এর আগেই বলেছি , জাহেলিয়ার যুগ ইসলামের আগে ছিল না ইসলামের আভির্বাবের পরে শুরু হয়েছে তা হলা মুসকিল।
কারণ ইসলামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রায় সর্বত্রই মুসলমানরাই প্রথমে গায়ে পড়ে আক্রমণ ও চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়েছে।
"হয় ইসলাম গ্রহণ কর , নাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে, তোমার সম্পদ কেড়ে নেয়া হবে",-- এটা কোন নৈতিকতার মধ্য পড়ে না।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
অথচ ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে এটাই মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো একটা ব্যপার লক্ষ করার মত। তা হল ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে পবিত্র মাস সমুহে অস্র ধারণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এ নিয়ম ভঙ্গ করে পবিত্র মাসেও হত্যা ও লুণ্ঠন চালাতে শুরু করললেন। এ সম্পর্কে কোরানে বলা হয়েছে,
"লোকে তোমাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, বল সেই সময় যুদ্ধ করা মহাপাপ। (২.২১৭)
এই নিয়ম ভঙ্গ করে আল্লার নবী (পবিত্র মাস) মুহরমের শুরুতে আল তায়েফের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেন এবং সফর মাসে তা দখন না কারা পর্যন্ত চল্লিশ দিন যাবত অভিযান অব্যাহত রাখেন। এই পবিত্র মাস সমূহে যুদ্ধকে জায়েজ করার জন্য কোরানে পবিত্র মাস সমূহে (পবিত্র মাস হল শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ, এবং মহরম) যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিধান (পবিত্র কোরানে উল্লেখিত ২-২১৭) সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বাতিল করে দেন।
নবীজী মক্কা থেকে মদীনা যান ৬২২ খৃষ্টাব্দে, তার আগে যেহাদের কোন আয়াত নাজিল হয়নি। নবীজীর মক্কাবাস কালে ইসলাম ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ সহবাসের আয়াতগুলো হিজরতের আগে নাজিল হয়েছিল। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পরেই অবস্থা বদলে যায় এবং জেহাদের আয়াতগুলি নাজিল হতে শুরু হয় এবং আল্লাহ মুসলমানদের বলেন যদি তোমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন।" (কো-৯/৩৯)
নোয়াখালী দাঙ্গা ছিল পরিকল্পিত
গোলাম সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া আছে- "জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা হইয়াছে।" (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)
তখনকার কংগ্রেস সভাপতি আচার্য্য যে বি ক্ৃপানলী সে সময় নোয়াখালী ঘুরে যা দেখেছিলেন তা তিনি প্রকাশ করেছেন এই ভাষায়, "নোয়াখালী এবং ত্রিপুরার জন উন্মত্ততার সব কিছুই ছিল প্রশিক্ষিত নেতৃত্বের অধীনে ব্যপকভাবে পরিকল্পিত। রাশ্তাঘাট কেটে দেওয়া হয়েছিল, যত্র তত্র বন্দুকের ব্যবহার হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গুণ্ডাদের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাজার হাজার হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে অথবা জোর পূর্বক বিবাহ করা হয়েছে। তাদের পূজার স্থানকে অপবিত্র করা হয়েছে। এমনকি শিশুদের প্রতিও কোন রকম করুণা দেখানো হয়নি। (অমৃত বাজার পত্রিকা, ২২/১০/১৯৪৬) স্টেটসম্যান পত্রিকার জনৈক সাংবাদিক নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চলে রিপোর্ট করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হয়েছিলেন তা মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন ব্যবস্থা বা ইসলাম প্রতিষ্ঠাও ততপরবর্তী কালের আরব ইরান ও অন্যান্য অঞ্চলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে-
"নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০ ই অক্টোবর সকালে একদল লোক ঐ মেয়েটির বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে (মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়। মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।"
(দি স্টেটসম্যান, ২৬/১০/১৯৪৬)
আধুনিক সাংবাদিক ও প্রতিবেধকগণ এই ধরনের ঘটনাকে গুণ্ডাদের কার্যকলাপ বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু আপনারা প্রথমেই পবিত্র কোরান, হাদিস ও সুন্নার উল্লেখ থেকে দেখেছেন যে এগুলোর কোনটিই গুণ্ডা বা স্বেচ্ছাচারী বাদশাহদের কর্ম নয়। এর প্রতিটি ঘটনাই ইসলাম ধর্মসম্মত পবিত্র কাজ।
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)
একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ ) তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে।
তার ভাষায়-
সমস্ত আরব জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosque, the prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midras. He said to them, "If you embrace islam, you will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No. 392 of Sahih al bukhari- vol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)
পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
সেই সুত্রে পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)
আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে। সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'
হজরত মুহাম্মদের আচরণ এই সমস্ত ঘটনা থেকেই জেহাদে ইসলাম প্রসারের অঙ্গরূপে দেব মন্দির ও দেব প্রাতিমা ধ্বংস অবশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গজনীর সুলতান মাহাম্মুদ প্রভৃতি ইসলামিষ্ট সুলতানগন দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় কোরানের সেই আয়াতটিই উচ্চারণ করতেন যা কাবা গৃহের দেব প্রতিমা ধ্বংসের সময় সগর্জনে আউয়েছিলেন মুহাম্মদ নিজে। এম এস পিকথলের অনুবাদে- "Truth hath come and falsehood hath vanished away. Lo! Flasehood is over bound to vanish" (Koran-17/81)
একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে ফিরজ শাহ তোঘলক সিকান্দার, লোদী, আওরঙ্গজেব প্রমুখ ভারতীয় শাসনকর্তাগণ হযরত মুহাম্মদের সুন্না প্রয়োগ করেই কোট কোটি লেককে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। ইরানেও এমনটি হয়েছিলো। সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি। মুসলমানরা ৬৫১ খৃষ্টাব্দেই ইরান দখল করে তাদের দেব মন্দির সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং জোর করে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করেছিলেন। যারা ইসলাম গ্রহন করেনি তারা পালিয়ে যায়। এ সময় শেষ আর্য সম্রাট আপ্তেস্বর (যর্জাদিগিদ) ইরান থেকে পালিয়ে খোরাসানে চলে যান। যারা জাননি (অগ্নি উপাসক আর্যরা) খৃষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যভাগে খলিফা আল-মুতারক্কিলের সময় (৮৪৭-৮৬১ ) তারা চরমভাবে নির্যাতিত হন। অনেকে ইরানের পূর্ব দিকে পার্বত্য কোহিস্থানে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। অনেকে আরগ সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। (বর্তমানে ভারতের অগ্নি উপাসকরা তাদেরই বংশধর)বাকিরা কুল কিনারা না পেয়ে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য হয়।
(সূত্র- পারস্য সাহিত্য পরিক্রমা, পার্বতীচরণ চট্টোপাধায়,)
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাথমিক ইসলামের ইতিহাসও প্রায় একই রকম। এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। ইদানীং কিছু লেখক বলে থাকেন, হিন্দুরা ভারত থেকে বৌদ্ধদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে ভীমরাও রমজী আম্বেদকর বলেছেন, "ইসলামের জন্ম হয়েছে 'বুত' বা 'বুদ্ধের' শত্রু হিসেবে। শুধু ভারতেই নয়, প্ৃথিবীর যেখানে সলাম গেছে সেখানেই তারা বৌদ্ধদেরে ধ্বংস করেছে।
তার ভাষায়-

সমস্ত আরব জুড়ে ইহুদিদের অনেকগুলি গোষ্টী ছিল এবং তারা ছিল বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী। প্রথম যুগের মুসলমানরা এদের ধন সম্পত্তি আত্নসাত করেই শক্তিশালী হয়। কাইনুকা, নাজির, কুরাইজা, খায়বার এবং মুত্তালিক গোষ্টিকে উতখাত করে যে সম্পদ আসে তার সবটাই হযরত মুহাম্মদ নিয়ে নেন। কুরাইজা ধ্বংসের ফলে যে গণিমতের মাল পাওয়া যায় তার পরিমান ৪০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা (দিনার)। এই ধন সম্পদ লুট করার কৌশলও আছে। হাদিস সহি মুসলিম এর ৪৬৩ নং হাদিসে এরকম একটি বিবরণ আছে। এই হাদিসের বক্তা আবু হুরাইয়া বলেন-
While we were in the mosque, the prophet came out side, "let us go to the Jews,' we went out till we reached bait-ul-midras. He said to them, "If you embrace islam, you will be safe'
অর্থাৎ পয়গম্বর ইহুদিদের মুসলমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, এইটেই জেহাদের খাটি ও সর্বোত্তম পদ্ধতি। হাদিস এরপর বলছে ইহুদিরা এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি, তখন হযরত মুহাম্মদ বলেন,
"You should know that the earth belongs to allah and his Apostle and I want to expel you from this land. (Hadis No. 392 of Sahih al bukhari- vol-iv)
অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত ধন সম্পত্তিই মুসলমানের হকের পাওনা। কেননা আল্লাহ ও তার রসুলই তার মালিক। আর এই হাদিস অনুসারেই যে কোন বিধর্মীর সম্পত্তি যে কোন মুসলমান কেড়ে নিতে পারে এবং গনিমতের মাল হিসেবে নির্দ্বিধায় ভোগ করতে পারে। এই হল হাদিসের কথা।
দেখা যাক, এ ব্যপারে কোরান কি বলে। "সুরাতুল তওবায়' স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে, 'যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না ও পরকালেও না এবং সত্য ধর্ম অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে অনুগত্যের নির্দশন স্বরূপ স্বহস্তে জিজিয়া কর দেয়। (কোরান-৯/২৯)
পৌত্তলিকদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক কেমন হবে সে কথাও কোরানে আছে। মহান হজের দিন আল্লাহ ও তার রসুলের পক্ষ হতে মানুষের প্রতি এ এক ঘোষণা যে, আল্লাহর সাথে পৌত্তলিকদের কোন সম্পর্ক নেই এবং রাসুলের সঙ্গেও নয়।(কো-৯/১,২,৩)
সেই সুত্রে পৌত্তালিকদের নির্বিচারে হত্যার আয়াতটিও নাজিল হয়।
সুরাতুল তওবার (সুরা-৯) ৫নং আয়াতে লেখা আছে "নিষিদ্ধ মাস অতীত হলে পৌত্তলিকদের যেখানে পাবে বধ করবে, বন্ধী করবে এবং ঘাটি গেড়ে ওত পেতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি তওবা করে এবং যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। (কো-৯/৫)
"আল্লাহ বণি-আরব-বহুত্ত্ববাদীদের ইসলাম গ্রহন বা হত্যা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প দেননি। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অসম্মতি জানায় তাহলে তাদের মুসলমানদের সাথে চুক্তি করার ও তাদের জিম্মি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মহিলা ও শিশুদের বন্দী ও পুরুষদের যদ্ধবন্দী করে তাহলে মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। পুরুষদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা হবে মুক্ত, কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে তাদের হত্যা করতে হবে। (মজিদ খদ্দুরী, মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-২৩৮)
আল্লাহর নবী অমুসলিমদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন--
১। কিতাবধারী অর্থাৎ ইহুদি ও খ্ৃষ্টান এবং
২। যাদের নিকট কিতাব অবতীর্ণ হয়নি অর্থাৎ পৌত্তালিক।
ভারত উপ মহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় এই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ প্রথম শ্রেনী অর্থ কীতাবধারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয় ছিলেন। কারন এই ধর্ম গুলো সেমেটিক। এ কারনে এদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেন। যদিও জিজিয়ার উদ্দেশ্যই হলো চুড়ান্ত ধর্মীয় লক্ষ্য অর্জন, শ্ত্রুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস সাধন নয়। নিয়ম অনুসারে ভারতীয় সুলতানগন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ বা হত্যা ছাড়া আর কোন পন্থা নির্ধারণের হেতু নেই। যদিও ইসলামের উপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়েছে যে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সেইটিই ইসলাম মতে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে তাকে অবশ্যই চুড়ান্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই হাদিসটি হল- "আবু ইউসুফের মতে যুদ্ধবন্দীদের ভাগ্য নির্ধারণ তথা মুসলমানদের স্বার্থে তাদের হত্যা করা অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে বা নির্ধারণ করার ভার ইমামের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।' (আবু ইউসুফ, কিতাব আল রাদ, পৃ-৮৮-৮৯)
ভারতীয় সুলতানগণ কোরান ও হাদিসের নিয়মগুলো প্রয়োগ করতেন আলেম ও মাওলানাদের ব্যখ্যার উপর নির্ভর করে। সুলতান আলাউদ্দিন জ্ঞানীদের নিকট এমন একটি পন্থা বা নিয়ম জানতে চাইলেন যা দ্বারা হিন্দুদেরকে শায়েস্তা করা যায়। জ্ঞানীগণ পরামর্শ দিলেন, শুধু হিন্দুদের নিকট যেন এই পরিমাণ মাল দৌলত না থাকে যা দিয়ে তারা ভাল অস্ত্র কিনে ভাল পোষাক পরে ও মনোমত ভোগ সম্ভোগ করে দিন কাটাতে পারে। ক্ষত্রিয়দের নিকট খেরাজের কোন অংশই মাফ করা হবে না।
এই হিসাব মতে ঘোড়ায় চড়া, তলোয়ার হাতে নেওয়া, ভাল কাপড় পরা, পান খাওয়া প্রভ্ৃতি কাজ বন্ধ হয়ে গেল। বস্তুত হিন্দুদের ঘরে এমন কোন সোন, চান্দি ও তস্কা অবশিষ্ট ছিল না যার বলে তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারে। এই প্রকার অসহায় অবস্থার ফলে হিন্দুর বাচ্ছারা মুসলমানদের ঘরে চাকুরী ক্রএ দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিল। (জিয়াউদ্দিন বারাউনী, তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী; পৃষ্ঠা-২৩৭) এখানে আমরা দেখছি যে, কোরানের বাণী "হয় ইসলাম গ্রহণ নতুবা হত্যা' এই ব্বিধান মানা হয়নি। কারন, আলেম ও শাষনকর্তাগণ বুঝেছিলেন, এই ব্যবস্থা নিলে ভারতীয়রা বিদ্রোহ করতে পারে এবং তাহলে তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মূল লক্ষকে সামনে রেখে একটু কৌশলগতভাবে এগিয়েছিলেন। আমরা দেখছি, এই কৌশলগত এগোনোরও হাদিস আছে, আছে ঐতিহাসিক পটভূমি। ৬২৪ খৃষ্টাব্দে বদরের যুদ্ধে অনেক পৌত্তালিক কোরেশ বন্দী হলে মুহাম্মদের নিকট দুটি প্রস্তাব আসে। আবু বকর প্রস্তাব করেছিলেন, এদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। অন্য একটি প্রস্তাব আসে হযরত ওমরের কাছ থেকে। তিনি সব পৌত্তালিকে সংহার করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেন। তিনি কিছু বন্ধীকে হত্যা করেন ও বাকিদের মুক্তিপনের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এখানে হযরত মুহাম্মদের উদ্দেশ্য ছিল বাকিদের ইসলামে টেনে আনা এবং তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।
তাই এই আয়াত টি মুহাম্মদের জীবনের আলোকে মিলিয়ে নিলে এর অর্থ দাড়ঁড়ায় এই রূপ-
১। ইসলমা গ্রহনের সম্ভাবনা না থাকলে বন্দীদের ব্যপকবাভে নিপাত করতে হবে।
২। অল্পাংশের কাছ থেকে নিতে হবে মুক্তিপণ। অবশ্য আবু বকর বাইজেনটাইন যুদ্ধের সময় মত পরিবর্তন করেন যা আমরা পূর্বেই উল্ল্যেখ করেছি--"হয় মুসলমান হওয়া, না হয় হত্যা'
No comments
Posted at June 10, 2020 |  by
Arya ঋষি
1. Director General of Police (DGP) :
Particularly, The highest authority of any state in police is DGP ( Director General Of Police ). In India, the Director General of Police (DGP) is a three star rank and the highest ranking police officer in Indian States and Union Territories. All DGPs are Indian Police Service (IPS) officers. The DGP is usually the head of the state police force in every Indian state. There may also be additional officers in the state who hold the rank of DGP. Common appointments for such officers include Director of Vigilance and Anti-Corruption Bureau, Director General of Prisons, Director General of fire forces and civil defence, Criminal Investigation Department (CID), Police Housing Society etc. Additionally officers who hold the rank of DGP may have commensurate appointments in central government organisations such as Director, Central Bureau of Investigation (CBI), DG Central Reserve Police Force (CRPF) etc. The rank insignia of a Director General of Police or Additional Director General of Police or Commissioner of Police (state) is the national emblem over crossed sword and baton.
2. Additional Director General Of Police (ADGP) :
In India the Additional Director General of Police (ADG) is a 3 star rank, the highest ranking police officer in Indian State and Territories. All ADGs are Indian Police Service (IPS) officers. The equivalent position or designation in the state governments or federal government are Commissioner of Police, special or additional secretary and Cabinet Secretariat. The rank insignia of an ADG is the national emblem over a crossed sword and baton.
3. Inspector General Of Police/ Special Inspector General Of Police (IGP/SIGP) :
An Inspector General of Police or Inspector-General of Police is a senior officer in the police force or police service of several nations. The rank usually refers to the head of a large regional command within a police service, and in many countries refers to the most senior officer of the entire national police.
4. Deputy Inspector General Of Police (DIGP) :
Deputy Inspector General of Police (DIG) or Additional Commissioner of Police is a one-star rank in the Indian Police Service (IPS). The officer holding this rank is above a Senior Superintendent of Police or Deputy Commissioner of Police and under an Inspector General of Police or Joint Commissioner of Police. It is roughly analogous to the ranks of commander and assistant chief constable in the UK police service.As per protocol the DIG rank of police is above the rank of Lt Col and below the rank of a Col of the Army.
5. Superintendent of Police/Deputy Commissioner Of Police (SP/DCP) :
In India, a District Superintendent of Police (SP) or Deputy Commissioner of Police (DCP) heads the police force of a district. Superintendents of Police are officers of the Indian Police Service. They are entrusted with the responsibility of maintaining law and order and related issues of a district of a state or a union territory of India. They are assisted by the officers of the State Police Service and other State Police officials. Their rank badge is the State Emblem above one star, although those selected for higher rank or with fifteen or more years’ service wear the State Emblem above two stars. The rank below it is Additional Deputy Commissioner of Police (ADL.DCP) or Additional Superintendent of Police (ASP), while the rank above it is Senior Superintendent of Police (SSP) or Additional Commissioner of Police (ACP). The rank of superintendent of police is equivalent to the rank of lieutenant colonel of the Indian army.
6. Superintendent of Police/Deputy Commissioner Of Police (Junior Management Level)
Work same as SP.
7. Additional Superintendent Of Police/Deputy Commissioner of Police (ASP/DCP) [Less than 10 years of service]
Additional Superintendent of Police or Additional Deputy Commissioner of Police (Addl. S.P. or Addl.D.C.P.) is still in use in India where the officer holding this rank can be from Indian Police Service or from Indian States Police Services like West Bengal police Service(W.B.P.S.),Odisha Police Service(O.P.S.), Maharashtra Police Service(M.P.S.) etc.The rank above it is Superintendent of police (S.P.) or Deputy commissioner of police (D.C.P.), and the rank below it is Deputy superintendent of Police (Dy.S.P. / D.S.P. ) or A.C.P.(Assistant Commissioner of Police)
8. Deputy Superintendent of Police/Assistant Commissioner Of Police (DSP/ACP) :
In India, senior officers of the rank of assistant superintendent/assistant commissioner of police or above may belong to the national Indian Police Service or state police services, whereas Indian inspectors and constables belong to the individual provincial police forces.The rank of Assistant Commissioner is also used in Indian Income Tax, Customs, Central Excise and Service Tax Administration, as an officer of Indian Revenue Service.
9. Police Inspector (P.I.) :
Inspector is both a police rank and an administrative position, both used in a number of contexts. However, it is not an equivalent rank in each police force.
10. Assistant Police Inspector (A.P.I.) :
Inspector is both a police rank and an administrative position, both used in a number of contexts. However, it is not an equivalent rank in each police force.
11. Police Sub-Inspector (SI) :
A sub-inspector (SI) is generally in command of few police personnel (with head constables, the equivalent of corporals, commanding police outposts). He is the lowest ranked officer who under Indian Police rules and regulations can file a charge sheet in court, and is usually the first investigating officer. Officers subordinate to him cannot file charge sheets, but can only investigate cases on his behalf.
12. Assistant Police Sub-Inspector (ASI) :
In the police forces of India, an assistant sub-inspector (ASI) is a non-gazetted police officer ranking above a police head constable and below a sub-inspector. The rank insignia for an ASI is one star, and a red and blue striped ribbon at the outer edge of the shoulder straps.
13. Head Constable (HC) :
Head constable in the Indian police is equivalent to sergeant in police forces in other countries. Head constables wear three point-down chevrons on their sleeve or three bars on their epaulettes.
14. Police Constable (PC) :
Police Constable (abbreviated PC) is the lowest police rank in India followed by Head Constable. General law and order being a state subject in India, each state government recruits police constables. A Police Constable has no shoulder insignia while a Head Constable has one strip or one Chevron depending upon the state. All senior officers are Indian Police Service officers appointed through Civil Services Exam. Since each state has its own police force, the uniforms and insignia of the police varies, though the rank structure is same. The central paramilitary forces under the Ministry of Internal Affairs also maintains the same ranks as state police even though their jurisdiction varies considerably.All the POLICE constable wear (khaki)coloured uniform which indicate that he/she is a police officer. Police Constables in India have been seen in possession of guns but their ability to use them is known to be subjected to authorization passed by the chain of command in the police force.
Police Rank(INDIA)
1. Director General of Police (DGP) :
Particularly, The highest authority of any state in police is DGP ( Director General Of Police ). In India, the Director General of Police (DGP) is a three star rank and the highest ranking police officer in Indian States and Union Territories. All DGPs are Indian Police Service (IPS) officers. The DGP is usually the head of the state police force in every Indian state. There may also be additional officers in the state who hold the rank of DGP. Common appointments for such officers include Director of Vigilance and Anti-Corruption Bureau, Director General of Prisons, Director General of fire forces and civil defence, Criminal Investigation Department (CID), Police Housing Society etc. Additionally officers who hold the rank of DGP may have commensurate appointments in central government organisations such as Director, Central Bureau of Investigation (CBI), DG Central Reserve Police Force (CRPF) etc. The rank insignia of a Director General of Police or Additional Director General of Police or Commissioner of Police (state) is the national emblem over crossed sword and baton.
2. Additional Director General Of Police (ADGP) :
In India the Additional Director General of Police (ADG) is a 3 star rank, the highest ranking police officer in Indian State and Territories. All ADGs are Indian Police Service (IPS) officers. The equivalent position or designation in the state governments or federal government are Commissioner of Police, special or additional secretary and Cabinet Secretariat. The rank insignia of an ADG is the national emblem over a crossed sword and baton.
3. Inspector General Of Police/ Special Inspector General Of Police (IGP/SIGP) :
An Inspector General of Police or Inspector-General of Police is a senior officer in the police force or police service of several nations. The rank usually refers to the head of a large regional command within a police service, and in many countries refers to the most senior officer of the entire national police.
4. Deputy Inspector General Of Police (DIGP) :
Deputy Inspector General of Police (DIG) or Additional Commissioner of Police is a one-star rank in the Indian Police Service (IPS). The officer holding this rank is above a Senior Superintendent of Police or Deputy Commissioner of Police and under an Inspector General of Police or Joint Commissioner of Police. It is roughly analogous to the ranks of commander and assistant chief constable in the UK police service.As per protocol the DIG rank of police is above the rank of Lt Col and below the rank of a Col of the Army.
5. Superintendent of Police/Deputy Commissioner Of Police (SP/DCP) :
In India, a District Superintendent of Police (SP) or Deputy Commissioner of Police (DCP) heads the police force of a district. Superintendents of Police are officers of the Indian Police Service. They are entrusted with the responsibility of maintaining law and order and related issues of a district of a state or a union territory of India. They are assisted by the officers of the State Police Service and other State Police officials. Their rank badge is the State Emblem above one star, although those selected for higher rank or with fifteen or more years’ service wear the State Emblem above two stars. The rank below it is Additional Deputy Commissioner of Police (ADL.DCP) or Additional Superintendent of Police (ASP), while the rank above it is Senior Superintendent of Police (SSP) or Additional Commissioner of Police (ACP). The rank of superintendent of police is equivalent to the rank of lieutenant colonel of the Indian army.
6. Superintendent of Police/Deputy Commissioner Of Police (Junior Management Level)
Work same as SP.
7. Additional Superintendent Of Police/Deputy Commissioner of Police (ASP/DCP) [Less than 10 years of service]
Additional Superintendent of Police or Additional Deputy Commissioner of Police (Addl. S.P. or Addl.D.C.P.) is still in use in India where the officer holding this rank can be from Indian Police Service or from Indian States Police Services like West Bengal police Service(W.B.P.S.),Odisha Police Service(O.P.S.), Maharashtra Police Service(M.P.S.) etc.The rank above it is Superintendent of police (S.P.) or Deputy commissioner of police (D.C.P.), and the rank below it is Deputy superintendent of Police (Dy.S.P. / D.S.P. ) or A.C.P.(Assistant Commissioner of Police)
8. Deputy Superintendent of Police/Assistant Commissioner Of Police (DSP/ACP) :
In India, senior officers of the rank of assistant superintendent/assistant commissioner of police or above may belong to the national Indian Police Service or state police services, whereas Indian inspectors and constables belong to the individual provincial police forces.The rank of Assistant Commissioner is also used in Indian Income Tax, Customs, Central Excise and Service Tax Administration, as an officer of Indian Revenue Service.
9. Police Inspector (P.I.) :
Inspector is both a police rank and an administrative position, both used in a number of contexts. However, it is not an equivalent rank in each police force.
10. Assistant Police Inspector (A.P.I.) :
Inspector is both a police rank and an administrative position, both used in a number of contexts. However, it is not an equivalent rank in each police force.
11. Police Sub-Inspector (SI) :
A sub-inspector (SI) is generally in command of few police personnel (with head constables, the equivalent of corporals, commanding police outposts). He is the lowest ranked officer who under Indian Police rules and regulations can file a charge sheet in court, and is usually the first investigating officer. Officers subordinate to him cannot file charge sheets, but can only investigate cases on his behalf.
12. Assistant Police Sub-Inspector (ASI) :
In the police forces of India, an assistant sub-inspector (ASI) is a non-gazetted police officer ranking above a police head constable and below a sub-inspector. The rank insignia for an ASI is one star, and a red and blue striped ribbon at the outer edge of the shoulder straps.
13. Head Constable (HC) :
Head constable in the Indian police is equivalent to sergeant in police forces in other countries. Head constables wear three point-down chevrons on their sleeve or three bars on their epaulettes.
14. Police Constable (PC) :
Police Constable (abbreviated PC) is the lowest police rank in India followed by Head Constable. General law and order being a state subject in India, each state government recruits police constables. A Police Constable has no shoulder insignia while a Head Constable has one strip or one Chevron depending upon the state. All senior officers are Indian Police Service officers appointed through Civil Services Exam. Since each state has its own police force, the uniforms and insignia of the police varies, though the rank structure is same. The central paramilitary forces under the Ministry of Internal Affairs also maintains the same ranks as state police even though their jurisdiction varies considerably.All the POLICE constable wear (khaki)coloured uniform which indicate that he/she is a police officer. Police Constables in India have been seen in possession of guns but their ability to use them is known to be subjected to authorization passed by the chain of command in the police force.
Posted at June 09, 2020 |  by
Arya ঋষি
Subscribe to:
Posts (Atom)
ধর্ম্মতত্ত্ব
Powered by Blogger.
iOS
5/Life%20Style/feat-tab
Business
5/Cars/feat-tab
Search This Blog
Post Top Ad
Your Ad Spot
Post Top Ad
Your Ad Spot
Technology
3/Tech/feat-grid
Fashion
5/Life%20Style/feat2
Header Ads

Breaking News
Music
Menu Footer Widget
Featured
Android
5/Tech/feat-tab
Fashion
5/Cars/feat-tab
blogger-disqus-facebook
Send Quick Message
Menu
Categories
Sports
3/Sports/col-left
Technology
3/Technology/post-list
Technology
3/Technology/col-right
Popular Posts
Popular Posts
- Religion (1)
- আল্লা তালাহ (1)
- ইতিহাস (6)
- ইতিহাস বিকৃতি (5)
- ইসলামিক বিশ্লেষণ (9)
- ইসলামে বর্বরতা (8)
- ইসলামে যৌনতা (1)
- কাবা ঘর (4)
- জিহাদ বিষয় (1)
- প্রাণের উৎপত্তি (3)
- বই (2)
- বিজ্ঞান (7)
- রহস্য (4)
Labels
Discussion
Tags
Text Widget
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.
Blog Archive
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.