নবী মুহাম্মদ (সা) শিশুকামি ছিলেন ইসলামিক বিশ্লেষণঃ

Posted by Arya ঋষি  |  at  June 04, 2019 No comments


প্রশ্নঃ নবী মুহাম্মদ (সা) শিশুকামি ছিলেন তাই তিনি আয়েশা (রা)কে শিশু অবস্থায় বিয়ে করে ? ৬ বছরের বিয়ে অমানবিক ?
লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ "নবী মুহাম্মদ (সা) শিশুকামি ছিলেন " - এই দাবির পক্ষে বিশুদ্ধ ইতিহাস থেকে সনদ সহ পারলে প্রমান করুন তৎকালীন ইতিহাস থেকে । শিশুকামি বা পিডোফিলিয়া হল মানসিক রোগ , তথা যারা শিশুদের প্রতি যৌন তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে বুঝায় । প্রশ্নকর্তাকে প্রমান করতে বলেছি যে "নবী মুহাম্মদ (সা) আয়েশা (রা) প্রতি যৌন আসক্তি ভুগছিল" তৎকালীন বিশুদ্ধ ইতিহাস থেকে প্রমান করুন ? এখন আমরা বিশুদ্ধ ইতিহাস থেকে জানতে পারি রাসুল (সা) আয়েশা(রা) কে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁদের সুখের সংসার ছিল সুতরাং এর থেকে প্রমান হয় যে রাসুলের প্রতি প্রশ্ন কর্তার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যাচার ।

রাসুল (সা) নাকি অল্প বয়সে বিয়ে করে অমানবিক কাজ করেছেন - নাস্তিক ধর্মের একটি কমন ফতোয়া হল "সম্মতি থাকলে" সব ! করা যাবে এখানে কেউই ফ্যাক্ট না ! এখানে তাদের আপত্তি নাই অথচ যত চুলকানি পবিত্র বিয়ে নিয়ে । নিজের পরিবার সন্তানের কল্যাণ চেয়ে, কোন ভাল খাটি চরিত্রবান পুরুষের কাছে বিয়ে দিলে এখানে আপত্তি আসার কোন সম্পর্ক নাই যদি সেই সংসার, সুখের হয় ।

দুনিয়ার কোন দেশেই মেয়েদের বিয়ের বয়স পারফেক্ট নির্ধারণ করে দেয়া হয় নাই । একেক দেশে একেক রকম বিয়ের বয়স ।
* যেমনঃ parental kidnapping in america: an historical and cultural analysis- by maureen dabbagh, page 128 এ উল্লেখ আছেঃ

উনবিনশ শতাব্দীতে বেশিরভাগ অ্যামেরিকান রাজ্যে বিয়ের বয়সের সর্ব নিন্ম বয়স ছিল ১০ বছর এবং ডেলাওয়ারে বিয়ের বয়স ছিল মেয়েদের ৭ বছর ।

* নিউইয়র্কে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত বিয়ের বয়স ছিল ১০ বছর । ১৮৮৫ সালের পর থেকে দেশের আইন "সম্মতি আইন" পরিবর্তন হয় ১৮৮৯ সালে । Newyork এ ১৬ বছর এবং ১৮৯৫ সালে হয় ১৮ বয়স । এই পরিবর্তনের আগে সম্মতির বয়স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ স্থানে ১০ বা ১২ বছর ছিল বিয়ের বয়স ।

রেফারেন্স দেখুনঃ prostitution and sex work - by melissa hope ditmore, page: 21 {introduction}
অ্যামেরিকার সংবিধান তৈরিতে যেসব বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছে তার মদ্ধে Spirit of laws বইটি অন্যতম । এই বইয়ের ১৬ খণ্ডে ২৬৪ পৃষ্ঠায় ফ্রেঞ্চ দার্শনিক Montesquew উল্লেখ করেন উষ্ণ অঞ্চলের মেয়েরা ৮,৯,১০ বছর বয়সেই বিয়ের জন্য উপযুক্ত হয়ে যায় আর ২০ বছর বয়সে তাদের বিয়ের জন্য বৃদ্ধ ভাবা হয় ।

আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানো তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসার যখন ৮ বছর হয় তখন বিয়ে করেন । শেখ ফজিলাতুন্নেসার জন্ম ১৯৩০ সালে আর তার বিয়ে ১৯৩৮ সালে । দেখুনঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী, by মুজিবুর রহমান ।

আম্মাজান আয়েশা (রা) নিজেই (তৎকালীন আরবের) মেয়েদের জন্য বিয়ের বয়স নির্ধারণ তথা উল্লেখ করে দিয়েছিলেন । তিনি বলেন মেয়ে যখন ৯ বছরে উপনীত হয়ে যায় তখন সে মহিলা হয়ে যায় । (তিরমিজি, কিতাবুন নিকাহ) । তাই সে সময়কার আরব মেয়েদের জন্য যে ৯ বছরে বিয়ের জন্য উপযুক্ত ছিল তার প্রমান স্বয়ং আয়েশা (রা) নিজেই । অল্প বয়সে বিয়ে তখন খুবি নরমাল ব্যাপার ছিল ।

অল্প বয়সে বিয়ে কোন ভাবেই অমানবিক না ।
* হযরত আয়েশা (রা) এর সম্মতিঃ

+ ই,ফা। বুখারি ৮ নং খণ্ড, হাদিস নং: ৪৭০৭- আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা) বলেছেন দুবার করে আমাকে সপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে । এক লোক রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল । আমাকে দেখে বলল এ হল তোমার স্ত্রী । তখন আমি পর্দা খুলে দেখি, সে তুমিই । তখন আয়েশা (রা) বলেন এ সপ্ন যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় তবে তিনি তা বাস্তবে পরিনত করবেন ।

+ হাকিম, সিলসিলা আহাদিস সহিফা লি আলবানি, হাদিস নং ১১৪২ এবং পিস পাবলিকেশন এর রাসুল (সা) এর স্ত্রীগন কেমন ছিলেন, পৃষ্ঠাঃ ৩৬ । হাদিস সহিহ । আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা) বলেছেন হে আয়েশা তুমি কি এতে খুশি নও যে তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার স্ত্রী হবে ? আয়েশা (রা) বলেন কেন নয় ? তখন রাসুল সা বললেন তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার স্ত্রী ।

উদাহরনঃ ধরেন কোন এক বিদ্বেষীরা এক দম্পতির সুখের সংসার নিয়ে আদালতে মামলা করল যে এই মেয়েকে তার স্বামী অল্প বয়সে বিয়ে করেছে এবং মেয়ের পরিবার রাজি ছিল এতে আমাদের সমস্যা ! তো বিচারপতি এই অল্প বয়স্কা মেয়েকে কোর্টে জিজ্ঞাসা করল , তোমার পরিবার তোমাকে ৬ বছরে বিয়ে দিয়েছিল তোমার কি আপত্তি আছে ? তুমি কি তোমার স্বামীর সাথে অসুখী ? মেয়ে জবাব দিলঃ জজসাহেব আমার স্বামী হলেন সত্যবাদি এবং সব থেকে খাটি চরিত্রবান মানুষ তাই আমার এই বিয়ে নিয়ে কোন আপত্তি নাই বিন্দুমাত্র এবং আমার স্বামীর সাথে আমি অনেক আনন্দেই আছি আলহামদুলিল্লাহ । আমার পরিবার আমাকে বিয়ে দিয়ে ভাল কাজ করেছেন । বিচারপতি রায় দিলেনঃ তুমি তোমার সংসার নিয়ে অনেক সুখেই আছ তাই এখানে অন্যদের আপত্তি গ্রহণযোগ্য এবং অযৌক্তিক । আশা করি বুঝতে পারছেন ।

আরও মজার বিষয় হচ্ছে নাস্তিক ধর্মের আলোকেও এই বিয়েও কোন আপত্তিকর কিছুই নয় । কেন জানেন ? কারন নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডেও আসলে এটি কোন অভিযোগের মধ্যেই পড়ে না কারন নাস্তিক ধর্মের দেবদ্যূত ড হুমায়ূন আজাদ তার "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৪৩ পৃষ্ঠায় বলেছেনঃ নৈতিকতার সীমা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ । আমার কোন কাজ যেন অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে,এটুকু । নাস্তিক ধর্মের এই ফতোয়ার আলোকে কি প্রমান হয়েছে যে নবী (সা) জোর করে আয়েশা (রা) কে বিয়ে করেছেন ? উত্তর হচ্ছে না । এই বিয়ের ফলে কি কেউ বিন্দুমাত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ? উত্তর হচ্ছে না । সুতরাং যেহেতু এই বিয়ের ফলে কেউই কোন ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি তাই নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডে এই বিয়ে আসলে কোন আপত্তিকর অথবা অভিযোগ হিসেবে গণ্য করার কিছুই নেই এবং নাস্তিক ধর্মের আলোকেও এই বিয়ে সম্পূর্ণ জায়েজ প্রমাণিত ।   

প্রশ্নঃ 

* আয়েশা (রা) কি এই বিয়েতে অখুশি ছিলেন ?

* তিনি কি তাঁর স্বামীকে ভালবাসতেন না ?

* অল্প বয়সে বিয়ে করার দরুন তাঁর কি বিন্দুমাত্র কোন ক্ষতি হয়েছে ?

* ফলাফল কি ভাল নাকি খারাপ হয়েছিল এই বিয়েতে ?

* কেউ যদি তাঁর সংসার এবং স্বামী নিয়ে খুশি এবং সুখি হয় এতে আপনার কি অধিকার আছে এখানে আপত্তি করার ?

About the Author

Write admin description here..

Get Updates

Subscribe to our e-mail newsletter to receive updates.

Share This Post

Related posts

0 Comments:

Tags

Text Widget

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.

Blog Archive

© 2013 Arya Rishi. WP Theme-junkie converted by Bloggertheme9Published..Blogger Templates
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.
back to top