All Stories


আর্যভট্ট


আর্যভট্টের কাজ থেকে তার জন্মসাল সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া গেলেও (কলি যুগের ৩৬০০ বছর অতিক্রমের পর ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতবিদ আর্যভট্টের জন্ম হয়)তার জন্মস্থান নিয়ে সুবিশেষ কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আর্যভট্টের অন্যতম ভাষ্যকার প্রথম ভাস্করের ভাষ্য অনুযায়ী তার জন্ম হয়েছিল অশ্মকা নামের একটি জায়গায়। প্রাচীন বৌদ্ধ এবং হিন্দু রীতিতে এই জায়গাটিকে নর্মদা এবং গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী স্থানে দক্ষিণ গুজরাট এবং উত্তর মহারাষ্ট্রের আশেপাশের একটি জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কিছু তথ্যমতে জানা যায় যে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কুসুমপুরায় গিয়েছিলেন। তিনি কুসুমপুরায়ই বসবাস করতেন,তার ভাষ্যকার প্রথম ভাস্কর এই স্থানকে পাটালিপুত্র নগরী অভিহিত করেছেন। তিনি কুসুমপুরের আর্যভ নামে খ্যাত ছিলেন। তার কাজের অধিকাংশই তিনি করেছিলেন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানেই তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষাশেষে তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। কেউ কেউ বলেছেন, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবেও আর্যভট্ট দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
প্রাচীন ভারতীয় গণিতের ইতিহাসে আর্যভট্টের হাত ধরেই ক্লাসিকাল যুগ (কিংবা স্বর্ণযুগ) শুরু হয়। গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত আর্যভট্টের বিভিন্ন কাজ মূলত দুটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মাঝে ‘আর্যভট্টীয়’ একটি, যেটি উদ্ধার করা গিয়েছে। এটি রচিত চার খণ্ডে, মোট ১১৮টি স্তোত্রে। অন্য যে কাজটি সম্পর্কে জানা যায় সেটি হল ‘আর্য-সিদ্ধান্ত’। আর্য-সিদ্ধান্তের কোন পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে বরাহমিহির, ব্রহ্মগুপ্ত এবং প্রথম ভাস্করের কাজে এটির উল্লেখ মেলে। আর্যভট্ট গ্রন্থ রচনা করেছেন পদবাচ্যের আকারে।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে আর্যভট্ট এই গ্রন্থটি সংকলন করেন। এ চারটি অধ্যায়‌ দশগীতিকা, গণিতপাদ, কালক্রিয়াপদ ও গোলপাদ। দশগীতিকা, কালক্রিয়া ও গোলপাদ অধ্যায়ে গোলীয় ত্রিকোণমিতি ও জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত বিষয়াবলী রয়েছে। অন্যদিকে গণিত পাদে আছে পাটীগণিত, বীজগণিত, সমতল ত্রিকোণমিতি, দ্বিঘাত সমীকরণ, প্রথম n সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার ঘাতবিশিষ্ট পদ সমূহের বর্গ ও ঘনের সমষ্টি এবং একটি সাইন অণুপাতের সারণি রয়েছ। তাছাড়া এই অধ্যায়ে সে সময়কার জনপ্রিয় জ্যোতিষচর্চার প্রয়োজনীয় ৩৩টি গাণিতিক প্রক্রিয়ার বর্ণনা রয়েছে। গণিতপাদে আর্যভট্ট পাই-এর মান তথা বৃত্তের পরিধির সঙ্গে এর ব্যাসের মান ৩.১৪১৬ হিসাবে চিহ্নিত করেন। তিনি ভারতবর্ষে শূন্যের প্রচলন করেন।
আর্যভট্টের কাজে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির পূর্ণ ব্যবহার পাওয়া যায়। আর্যভট্ট অবশ্য তার কাজে প্রচলিত ব্রাহ্মী লিপি ব্যবহার করেননি। পদবাচ্যের আকারে গ্রন্থ রচনা করায় সংখ্যা উপস্থাপনের একটি নিজস্ব পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন তিনি। সেখানে সংখ্যাকে শব্দের আকারে উপস্থাপন করা হত। ব্যঞ্জনবর্ণগুলোকে তিনি ব্যবহার করতেন বিভিন্ন অঙ্ক হিসেবে আর স্বরবর্ণগুলোর সাহায্যে বুঝিয়ে দিতেন যে কোন অঙ্কটি কোন অবস্থানে রয়েছে। সে দিক থেকে তার ব্যবহৃত দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থা ঠিক আজকের দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থার মত নয়, তবে পদ্ধতিগত বিবেচনায় আজকের দশমিক সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তার দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে শূন্য ছিল কিনা সে বিষয়ে দ্বন্দ্ব্ব রয়েছে। শূন্যের সমতুল্য একটি ধারণা তার কাজে ছিল, সেটিকে বলা হয়েছে ‘খ’ (শূণ্যতা অর্থে)। ‘খ’ এর ধারণাটি কোন অঙ্ক হিসেবে ছিল নাকি শূন্যস্থান জ্ঞাপক চিহ্ন হিসেবে ছিল সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রচলিত বইগুলোতে সেটিকে শূন্যস্থান জ্ঞাপক চিহ্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও Georges Ifrah দাবি করেছেন যে আর্যভট্ট পরোক্ষভাবে সেটিকে একটি দশমিক অঙ্ক হিসেবেই ব্যবহার করতেন। তবে দশমিক পদ্ধতিকে ব্যবহার করে তিনিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ গাণিতিক প্রক্রিয়া বর্ণনা করেন, এর মাঝে ছিল সংখ্যার বর্গমূল ও ঘনমূল নির্ণয়। এটিই ছিল দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গরূপে স্থাপিত করার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি, কারণ স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় এ সংখ্যার উপস্থাপন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সভ্যতায় ব্যবহার করা হলেও স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলোর ব্যবহারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়নি, সুতরাং এটির পদ্ধতিগত উপযোগিতা সম্পূর্ণরূপে অণুধাবিত হয়নি। সে সময় সবচেয়ে জরুরি ছিল দশমিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পদ্ধতিগত সাধারণীকরণ নিশ্চিত করা, যেটি সর্বপ্রথম করেন আর্যভট্ট। তাই তিনিই পূর্ণাঙ্গ দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি প্রবর্তনের কৃতিত্বের দাবিদার। ৪৯৮ সালের দিকের একটি কাজে আর্যভট্টের একটি কাজে দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থার বিবৃতিতে স্থানম স্থানম দশ গুণম বাক্যাংশটি পাওয়া যায় যার অর্থ হল- স্থান থেকে স্থানে দশ গুণ করে পরিবর্তিত হয়। এখান থেকে স্পষ্টতই বর্তমান দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতি মেলে।

আর্যভট্টের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক অবদান হচ্ছে আধুনিক ত্রিকোণমিতির সূত্রপাত করা। ত্রিকোণমিতির ব্যবহারে আর্যভট্ট সাইন, ভারসাইন (Versine = ১ - Cosine), বিপরীত সাইনের ব্যবহার করেন। সূর্য সিদ্ধান্তে এ সংক্রান্ত কিছু কাজ থাকলেও আর্যভট্টের কাজে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ মেলে। সাইন ফাংশনের জন্য যুগ্ম ও অর্ধ কোণের সূত্রগুলো তিনি জানতেন বলে ধারণা করা হয়। আর্যভট্টের ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ ত্রিকোণমিতিক সম্পর্কগুলোর একটি হল- sin (n+১)x কে sin x এবং sin (n-১)x এর সাহায্যে প্রকাশ করা। আর্যভট্ট একটি সাইন টেবিল তৈরি করেছিলেন, যেটিতে ৩ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট পার্থক্যে ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত সাইন এবং ভারসাইনের মান উল্লেখ করা ছিল। তার ব্যবহার করা এই সূত্রটি দিয়ে খুব সহজেই এই সাইন টেবিলটি recursively তৈরি করে ফেলা সম্ভব। সেই সূত্রটি হল-

sin (n + ১) x - sin nx = sin nx - sin (n - ১) x - (১/২২৫)sin nx

আর্যভট্টের তৈরি করা সাইন টেবিলটি এখানে উল্লেখ করা হল। বলে রাখা যেতে পারে আর্যভট্ট তার সাইন টেবিলে সরাসরি sinθ এর বদলে Rsinθ ব্যবহার করেছেন। এখানে R দ্বারা একটি নির্দিষ্ট বৃত্তের ব্যাসার্ধ বোঝানো হচ্ছে। আর্যভট্ট এই ব্যাসার্ধের মান ব্যবহার করেছিলেন ৩৪৩৮, এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যে আর্যভট্ট এক মিনিট পরিমাণ কোণের জন্য একক ব্যাসার্ধের বৃত্তে বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্যকে এক একক হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। একটি বৃত্তের সম্পূর্ণ পরিধি তার কেন্দ্রে (৩৬০ × ৬০) = ২১৬০০ মিনিট কোণ ধারণ করে। সে হিসেবে বৃত্তের পরিধি হল ২১৬০০ একক এবং ঐ বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২১৬০০/২π, আর্যভট্টের হিসেবে পাওয়া π = ৩.১৪১৬ ব্যবহার করলে ব্যাসার্ধের মান প্রায় ৩৪৩৮ হয়।

একাধিক অজানা রাশি সংবলিত সমীকরণ (সাধারণভাবে ডায়োফ্যান্টাইন সমীকরণ নামে পরিচিত) সমাধান করার একটি সাধারণ পদ্ধতি তৈরি করেন আর্যভট্ট। এটির নাম ছিল "কুত্তক"। প্রথম ভাস্করের কাজে কুত্তক পদ্ধতির ব্যাখ্যা দেবার সময় একটি উদাহরণ ব্যবহার করা হয়েছে- "এমন সংখ্যা নির্ণয় কর যাকে 8 দিয়ে ভাগ করলে 5, 9 দিয়ে ভাগ করলে 4 এবং 7 দিয়ে ভাগ করলে 1 অবশিষ্ট থাকে।" পরবর্তীকালে এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতবর্ষে কুত্তক পদ্ধতিটিই আদর্শ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আর্যভট্টের কাজে প্রথম n সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার ঘাতবিশিষ্ট পদ সমূহের বর্গ ও ঘনের সমষ্টির সূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়।

আর্যভট্টীয় বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে আর্যভট্ট লিখেছেন- “চার এর সাথে একশ যোগ করে তাকে আট দিয়ে গুণ করে তার সাথে বাষট্টি হাজার যোগ করা হলে বিশ হাজার একক ব্যাসের বৃত্তের পরিধি পাওয়া যায়”। সে হিসেবে আর্যভট্ট পাই এর মান নির্ণয় করেছিলেন ((4+100)×8+62000)/20000 = 62832/20000 = 3.1416, যেটা তার সময় পর্যন্ত যেকোন গণিতবিদের বের করা মানগুলোর মাঝে সবচেয়ে সঠিক।

আর্যভট্টীয় বইটির গোলপাদ অংশে আর্যভট্ট উদাহরণের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন যে পৃথিবী নিজ অক্ষের সাপেক্ষে ঘোরে। তিনি পৃথিবীর আক্ষিক গতির হিসাবও করেছিলেন। তার হিসেবে পৃথিবীর পরিধি ছিল ৩৯,৯৬৮ কিলোমিটার, যেটা সে সময় পর্যন্ত বের করা যেকোন পরিমাপের চেয়ে শুদ্ধতর (ভুল মাত্র ০.২%)। সৌর জগৎে গ্রহগুলোর কক্ষপথের আকৃতি তার ভাষ্যে ছিল উপবৃত্তাকৃতির, এক বছর সময়কালের প্রায় সঠিক একটি পরিমাপ করেছিলেন, সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের সঠিক কারণ উল্লেখ করা এবং তার সময় নির্ধারণ করা। তিনি সৌরজগতের পৃথিবীকেন্দ্রিক নাকি সূর্যকেন্দ্রিক মডেল ব্যবহার করেছিলেন সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। B.L. van der Waerden, Hugh Thurston এর লেখায় আর্যভট্টের জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত হিসাব নিকাশের পদ্ধতিকে সরাসরি সূর্যকেন্দ্রিক বলে দাবি করা হয়েছে। Noel Swerdlow অবশ্য এ জন্য B.L. van der Waerden এর প্রত্যক্ষ সমালোচনা করেছেন এবং বিভিন্ন ব্যাখ্যার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে আর্যভট্টের ধারণায় সৌরজগত পৃথিবীকেন্দ্রিকই ছিল। অপর দিকে Dennis Duke এর মতে, আর্যভট্টের কাজের পদ্ধতি সূর্যকেন্দ্রিক ছিল, তবে সেটি আর্যভট্ট লক্ষ করেননি কিংবা জানতেন না।

আর্যভট্ট সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের হিন্দু পৌরাণিক ধারণার পরিবর্তে প্রকৃত কারণগুলো ব্যাখ্যা করে গেছেন। সেই সাথে তিনি সূর্য গ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের সময়কাল নির্ণয়ের পদ্ধতিও বের করেছিলেন। আর্যভট্ট বলেছিলেন যে চাঁদের আলো আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলনেরই ফলাফল।

তথ্যঃ-

  1.  Bharati Ray (১ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। Different Types of History। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 95–। আইএসবিএন 978-81-317-1818-6। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২
  2.  B. S. Yadav (২৮ অক্টোবর ২০১০)। Ancient Indian Leaps Into Mathematics। Springer। পৃষ্ঠা 88–। আইএসবিএন 978-0-8176-4694-3। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২
  3. ↑ ঝাঁপ দাও:   K. V. Sarma (২০০১)। "Āryabhaṭa: His name, time and provenance" (PDF)। Indian Journal of History of Science। 36 (4): 105–115।
  4.  Ansari, S.M.R. (মার্চ ১৯৭৭)। "Aryabhata I, His Life and His Contributions"। Bulletin of the Astronomical Society of India। 5 (1): 10–18। বিবকোড:1977BASI....5...10A। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-২২
  5.  Cooke (১৯৯৭)। "The Mathematics of the Hindus"। পৃষ্ঠা 204। Aryabhata himself (one of at least two mathematicians bearing that name) lived in the late 5th and the early 6th centuries at Kusumapura (Pataliutra, a village near the city of Patna) and wrote a book called Aryabhatiya. |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

গ্রেটেস্ট ম্যাথমেটিশিয়ান অব দ্য ওয়ার্ল্ড


আর্যভট্ট


আর্যভট্টের কাজ থেকে তার জন্মসাল সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া গেলেও (কলি যুগের ৩৬০০ বছর অতিক্রমের পর ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতবিদ আর্যভট্টের জন্ম হয়)তার জন্মস্থান নিয়ে সুবিশেষ কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আর্যভট্টের অন্যতম ভাষ্যকার প্রথম ভাস্করের ভাষ্য অনুযায়ী তার জন্ম হয়েছিল অশ্মকা নামের একটি জায়গায়। প্রাচীন বৌদ্ধ এবং হিন্দু রীতিতে এই জায়গাটিকে নর্মদা এবং গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী স্থানে দক্ষিণ গুজরাট এবং উত্তর মহারাষ্ট্রের আশেপাশের একটি জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কিছু তথ্যমতে জানা যায় যে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কুসুমপুরায় গিয়েছিলেন। তিনি কুসুমপুরায়ই বসবাস করতেন,তার ভাষ্যকার প্রথম ভাস্কর এই স্থানকে পাটালিপুত্র নগরী অভিহিত করেছেন। তিনি কুসুমপুরের আর্যভ নামে খ্যাত ছিলেন। তার কাজের অধিকাংশই তিনি করেছিলেন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানেই তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষাশেষে তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। কেউ কেউ বলেছেন, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবেও আর্যভট্ট দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
প্রাচীন ভারতীয় গণিতের ইতিহাসে আর্যভট্টের হাত ধরেই ক্লাসিকাল যুগ (কিংবা স্বর্ণযুগ) শুরু হয়। গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত আর্যভট্টের বিভিন্ন কাজ মূলত দুটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মাঝে ‘আর্যভট্টীয়’ একটি, যেটি উদ্ধার করা গিয়েছে। এটি রচিত চার খণ্ডে, মোট ১১৮টি স্তোত্রে। অন্য যে কাজটি সম্পর্কে জানা যায় সেটি হল ‘আর্য-সিদ্ধান্ত’। আর্য-সিদ্ধান্তের কোন পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে বরাহমিহির, ব্রহ্মগুপ্ত এবং প্রথম ভাস্করের কাজে এটির উল্লেখ মেলে। আর্যভট্ট গ্রন্থ রচনা করেছেন পদবাচ্যের আকারে।
মাত্র ২৩ বছর বয়সে আর্যভট্ট এই গ্রন্থটি সংকলন করেন। এ চারটি অধ্যায়‌ দশগীতিকা, গণিতপাদ, কালক্রিয়াপদ ও গোলপাদ। দশগীতিকা, কালক্রিয়া ও গোলপাদ অধ্যায়ে গোলীয় ত্রিকোণমিতি ও জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত বিষয়াবলী রয়েছে। অন্যদিকে গণিত পাদে আছে পাটীগণিত, বীজগণিত, সমতল ত্রিকোণমিতি, দ্বিঘাত সমীকরণ, প্রথম n সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার ঘাতবিশিষ্ট পদ সমূহের বর্গ ও ঘনের সমষ্টি এবং একটি সাইন অণুপাতের সারণি রয়েছ। তাছাড়া এই অধ্যায়ে সে সময়কার জনপ্রিয় জ্যোতিষচর্চার প্রয়োজনীয় ৩৩টি গাণিতিক প্রক্রিয়ার বর্ণনা রয়েছে। গণিতপাদে আর্যভট্ট পাই-এর মান তথা বৃত্তের পরিধির সঙ্গে এর ব্যাসের মান ৩.১৪১৬ হিসাবে চিহ্নিত করেন। তিনি ভারতবর্ষে শূন্যের প্রচলন করেন।
আর্যভট্টের কাজে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির পূর্ণ ব্যবহার পাওয়া যায়। আর্যভট্ট অবশ্য তার কাজে প্রচলিত ব্রাহ্মী লিপি ব্যবহার করেননি। পদবাচ্যের আকারে গ্রন্থ রচনা করায় সংখ্যা উপস্থাপনের একটি নিজস্ব পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন তিনি। সেখানে সংখ্যাকে শব্দের আকারে উপস্থাপন করা হত। ব্যঞ্জনবর্ণগুলোকে তিনি ব্যবহার করতেন বিভিন্ন অঙ্ক হিসেবে আর স্বরবর্ণগুলোর সাহায্যে বুঝিয়ে দিতেন যে কোন অঙ্কটি কোন অবস্থানে রয়েছে। সে দিক থেকে তার ব্যবহৃত দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থা ঠিক আজকের দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থার মত নয়, তবে পদ্ধতিগত বিবেচনায় আজকের দশমিক সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তার দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে শূন্য ছিল কিনা সে বিষয়ে দ্বন্দ্ব্ব রয়েছে। শূন্যের সমতুল্য একটি ধারণা তার কাজে ছিল, সেটিকে বলা হয়েছে ‘খ’ (শূণ্যতা অর্থে)। ‘খ’ এর ধারণাটি কোন অঙ্ক হিসেবে ছিল নাকি শূন্যস্থান জ্ঞাপক চিহ্ন হিসেবে ছিল সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রচলিত বইগুলোতে সেটিকে শূন্যস্থান জ্ঞাপক চিহ্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও Georges Ifrah দাবি করেছেন যে আর্যভট্ট পরোক্ষভাবে সেটিকে একটি দশমিক অঙ্ক হিসেবেই ব্যবহার করতেন। তবে দশমিক পদ্ধতিকে ব্যবহার করে তিনিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ গাণিতিক প্রক্রিয়া বর্ণনা করেন, এর মাঝে ছিল সংখ্যার বর্গমূল ও ঘনমূল নির্ণয়। এটিই ছিল দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গরূপে স্থাপিত করার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি, কারণ স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় এ সংখ্যার উপস্থাপন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সভ্যতায় ব্যবহার করা হলেও স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলোর ব্যবহারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়নি, সুতরাং এটির পদ্ধতিগত উপযোগিতা সম্পূর্ণরূপে অণুধাবিত হয়নি। সে সময় সবচেয়ে জরুরি ছিল দশমিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পদ্ধতিগত সাধারণীকরণ নিশ্চিত করা, যেটি সর্বপ্রথম করেন আর্যভট্ট। তাই তিনিই পূর্ণাঙ্গ দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি প্রবর্তনের কৃতিত্বের দাবিদার। ৪৯৮ সালের দিকের একটি কাজে আর্যভট্টের একটি কাজে দশমিক সংখ্যা ব্যবস্থার বিবৃতিতে স্থানম স্থানম দশ গুণম বাক্যাংশটি পাওয়া যায় যার অর্থ হল- স্থান থেকে স্থানে দশ গুণ করে পরিবর্তিত হয়। এখান থেকে স্পষ্টতই বর্তমান দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতি মেলে।

আর্যভট্টের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক অবদান হচ্ছে আধুনিক ত্রিকোণমিতির সূত্রপাত করা। ত্রিকোণমিতির ব্যবহারে আর্যভট্ট সাইন, ভারসাইন (Versine = ১ - Cosine), বিপরীত সাইনের ব্যবহার করেন। সূর্য সিদ্ধান্তে এ সংক্রান্ত কিছু কাজ থাকলেও আর্যভট্টের কাজে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ মেলে। সাইন ফাংশনের জন্য যুগ্ম ও অর্ধ কোণের সূত্রগুলো তিনি জানতেন বলে ধারণা করা হয়। আর্যভট্টের ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ ত্রিকোণমিতিক সম্পর্কগুলোর একটি হল- sin (n+১)x কে sin x এবং sin (n-১)x এর সাহায্যে প্রকাশ করা। আর্যভট্ট একটি সাইন টেবিল তৈরি করেছিলেন, যেটিতে ৩ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট পার্থক্যে ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত সাইন এবং ভারসাইনের মান উল্লেখ করা ছিল। তার ব্যবহার করা এই সূত্রটি দিয়ে খুব সহজেই এই সাইন টেবিলটি recursively তৈরি করে ফেলা সম্ভব। সেই সূত্রটি হল-

sin (n + ১) x - sin nx = sin nx - sin (n - ১) x - (১/২২৫)sin nx

আর্যভট্টের তৈরি করা সাইন টেবিলটি এখানে উল্লেখ করা হল। বলে রাখা যেতে পারে আর্যভট্ট তার সাইন টেবিলে সরাসরি sinθ এর বদলে Rsinθ ব্যবহার করেছেন। এখানে R দ্বারা একটি নির্দিষ্ট বৃত্তের ব্যাসার্ধ বোঝানো হচ্ছে। আর্যভট্ট এই ব্যাসার্ধের মান ব্যবহার করেছিলেন ৩৪৩৮, এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যে আর্যভট্ট এক মিনিট পরিমাণ কোণের জন্য একক ব্যাসার্ধের বৃত্তে বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্যকে এক একক হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। একটি বৃত্তের সম্পূর্ণ পরিধি তার কেন্দ্রে (৩৬০ × ৬০) = ২১৬০০ মিনিট কোণ ধারণ করে। সে হিসেবে বৃত্তের পরিধি হল ২১৬০০ একক এবং ঐ বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২১৬০০/২π, আর্যভট্টের হিসেবে পাওয়া π = ৩.১৪১৬ ব্যবহার করলে ব্যাসার্ধের মান প্রায় ৩৪৩৮ হয়।

একাধিক অজানা রাশি সংবলিত সমীকরণ (সাধারণভাবে ডায়োফ্যান্টাইন সমীকরণ নামে পরিচিত) সমাধান করার একটি সাধারণ পদ্ধতি তৈরি করেন আর্যভট্ট। এটির নাম ছিল "কুত্তক"। প্রথম ভাস্করের কাজে কুত্তক পদ্ধতির ব্যাখ্যা দেবার সময় একটি উদাহরণ ব্যবহার করা হয়েছে- "এমন সংখ্যা নির্ণয় কর যাকে 8 দিয়ে ভাগ করলে 5, 9 দিয়ে ভাগ করলে 4 এবং 7 দিয়ে ভাগ করলে 1 অবশিষ্ট থাকে।" পরবর্তীকালে এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতবর্ষে কুত্তক পদ্ধতিটিই আদর্শ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আর্যভট্টের কাজে প্রথম n সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার ঘাতবিশিষ্ট পদ সমূহের বর্গ ও ঘনের সমষ্টির সূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়।

আর্যভট্টীয় বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে আর্যভট্ট লিখেছেন- “চার এর সাথে একশ যোগ করে তাকে আট দিয়ে গুণ করে তার সাথে বাষট্টি হাজার যোগ করা হলে বিশ হাজার একক ব্যাসের বৃত্তের পরিধি পাওয়া যায়”। সে হিসেবে আর্যভট্ট পাই এর মান নির্ণয় করেছিলেন ((4+100)×8+62000)/20000 = 62832/20000 = 3.1416, যেটা তার সময় পর্যন্ত যেকোন গণিতবিদের বের করা মানগুলোর মাঝে সবচেয়ে সঠিক।

আর্যভট্টীয় বইটির গোলপাদ অংশে আর্যভট্ট উদাহরণের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন যে পৃথিবী নিজ অক্ষের সাপেক্ষে ঘোরে। তিনি পৃথিবীর আক্ষিক গতির হিসাবও করেছিলেন। তার হিসেবে পৃথিবীর পরিধি ছিল ৩৯,৯৬৮ কিলোমিটার, যেটা সে সময় পর্যন্ত বের করা যেকোন পরিমাপের চেয়ে শুদ্ধতর (ভুল মাত্র ০.২%)। সৌর জগৎে গ্রহগুলোর কক্ষপথের আকৃতি তার ভাষ্যে ছিল উপবৃত্তাকৃতির, এক বছর সময়কালের প্রায় সঠিক একটি পরিমাপ করেছিলেন, সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের সঠিক কারণ উল্লেখ করা এবং তার সময় নির্ধারণ করা। তিনি সৌরজগতের পৃথিবীকেন্দ্রিক নাকি সূর্যকেন্দ্রিক মডেল ব্যবহার করেছিলেন সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। B.L. van der Waerden, Hugh Thurston এর লেখায় আর্যভট্টের জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত হিসাব নিকাশের পদ্ধতিকে সরাসরি সূর্যকেন্দ্রিক বলে দাবি করা হয়েছে। Noel Swerdlow অবশ্য এ জন্য B.L. van der Waerden এর প্রত্যক্ষ সমালোচনা করেছেন এবং বিভিন্ন ব্যাখ্যার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে আর্যভট্টের ধারণায় সৌরজগত পৃথিবীকেন্দ্রিকই ছিল। অপর দিকে Dennis Duke এর মতে, আর্যভট্টের কাজের পদ্ধতি সূর্যকেন্দ্রিক ছিল, তবে সেটি আর্যভট্ট লক্ষ করেননি কিংবা জানতেন না।

আর্যভট্ট সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের হিন্দু পৌরাণিক ধারণার পরিবর্তে প্রকৃত কারণগুলো ব্যাখ্যা করে গেছেন। সেই সাথে তিনি সূর্য গ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের সময়কাল নির্ণয়ের পদ্ধতিও বের করেছিলেন। আর্যভট্ট বলেছিলেন যে চাঁদের আলো আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলনেরই ফলাফল।

তথ্যঃ-

  1.  Bharati Ray (১ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। Different Types of History। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 95–। আইএসবিএন 978-81-317-1818-6। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২
  2.  B. S. Yadav (২৮ অক্টোবর ২০১০)। Ancient Indian Leaps Into Mathematics। Springer। পৃষ্ঠা 88–। আইএসবিএন 978-0-8176-4694-3। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২
  3. ↑ ঝাঁপ দাও:   K. V. Sarma (২০০১)। "Āryabhaṭa: His name, time and provenance" (PDF)। Indian Journal of History of Science। 36 (4): 105–115।
  4.  Ansari, S.M.R. (মার্চ ১৯৭৭)। "Aryabhata I, His Life and His Contributions"। Bulletin of the Astronomical Society of India। 5 (1): 10–18। বিবকোড:1977BASI....5...10A। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-২২
  5.  Cooke (১৯৯৭)। "The Mathematics of the Hindus"। পৃষ্ঠা 204। Aryabhata himself (one of at least two mathematicians bearing that name) lived in the late 5th and the early 6th centuries at Kusumapura (Pataliutra, a village near the city of Patna) and wrote a book called Aryabhatiya. |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

Posted at June 05, 2020 |  by Arya ঋষি

⚔️[প্রথম পর্ব]⚔️

...ভারতবর্ষের ইতিহাসে খুবই কম সংখ্যক কিংবদন্তির নামের পূর্বে “মহান” অথবা ইংরেজি “The Great” প্রত্যয়ে ভূষিত হয়েছেন।...আমি সেই তিন মহানের নাম স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি - আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, সম্রাট অশোকা এবং সম্রাট আকবর।...তাদের নামের পূর্বে এই “মহান” ভূষণ অতি সহজে অলংকৃত হয়নি।...এর জন্য তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক অবিস্মরণীয় সব কর্মকান্ড করতে হয়েছিল।
...এই ভারতীয় পুণ্যভূমি একের পর এক পুণ্যবান জন্ম দিয়েছেন।...যেমন, কণিস্ক, চন্দ্রগুপ্ত, পৃথ্বীরাজ, রানা প্রতাপ, বাজীরাও, শিবাজী, রণজিৎ সিং, রাজা রাজা চোল-এর মত আরও অনেকজন।...কিন্তু ভারতীয় ইতিহাসবিদরা কেউ তাদেরকে “মহান” অথবা “The Great” বলে আখ্যায়িত করেন নি।
...এটার একটাই কারন হতে পারে। “মহান” উপাধি প্রাপ্ত হওয়া খুবই শক্ত কাজ।...মহান উপাধিতে ভূষিত হতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে নির্মম খুনী হতে হবে।...এবং আপনাকে অবশ্যই হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোতে কোন না কোনভাবে আঘাতকারী হতেই হবে।
...এই সন্ত্রাসবাদীদের নামের তালিকায় প্রথমেই আসবে আলেকজান্ডার এর নাম, যিনি সমস্ত বিশ্বজয়ের অভিলাষে অগণিত মানুষ হত্যার পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠেছিলেন।...পরবর্তীতে রাজা পুরু (Porus) এর কাছে অনাকাঙ্খিত ভাবে প্রায় পরাজিত হন তিনি।...নিজের জীবন এবং বাকি বেঁচে থাকা বেশিরভাগ সৈন্য যারা ম্যালেরিয়ায় ভুগছিল তাদের বাঁচানোর জন্য লজ্জাজনক ভাবে পালিয়ে যান।
...কিন্তু আমাদের ভারতের মহান ইতিহাসবিদগণ এটাকে পোরাসের পরাজয় বলে মনে করেন।...মনে হচ্ছে তারা দেশ ও হিন্দুবিরোধী মোল্লা ইরফান হাবিবের মত ইতিহাসবিদ কম, কবি ও সৃষ্টিশীল লেখক বেশী।...কিন্তু অপরপক্ষে গ্রীক ইতিহাসবিদগণ আলেক্সজান্ডারের এই পরাজয় কিছু লেখায় স্বীকার করেছেন!...কিন্তু এই ব্যাপারটি ছাড়াও মূল বিষয়টি হচ্ছে তিনি আক্রমণ করেছেন এবং অসংখ্য প্রাণ হত্যা করেছেন তাই তিনি “মহান“।
...তার পরেই আসে রাজা অশোকার নাম যিনি তার শাসনামলে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেন এবং হঠাৎ করেই তার অনুশোচনা উদয় হয়।...এমনকি একজন জনপ্রিয় সৃষ্টিশীল ইতিহাসবিদ পরিচালক রাজা অশোকার অগণিত স্ত্রীদের মধ্যে অন্যতম এক স্ত্রীর সাথে তার প্রেমের গল্প নিয়ে একটি চলচিত্র পর্যন্ত তৈরী করেছেন।
...কিন্তু মোদ্দাকথা হচ্ছে তিনি “মহান” উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন কারণ অনুতপ্ত হওয়ার পূর্বে তিনি অগণিত তাজা প্রানের রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন যা তখনকার সময়ের অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।...তাছাড়া তিনি হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোত থেকে পথ বিচ্যুত হয়েছিলেন।
...সম্রাট অশোকার মৃত্যুর পরে আরও কয়েকশ বছর ঐ রকম কৃতিত্বের কেউ পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি।...তারপরে এলো বর্বর লুটেরাদের যুগ।...যারা পশ্চিম এশিয়া থেকে এসেছিল ইসলামের ঝাণ্ডা হাতে এবং সন্ত্রাসী জিহাদি কর্মকান্ডের পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।
...তাহলে তাদের মধ্যে কে “মহান” উপাধির মত এমন লোভনীয় গুণবাচক বিশেষণে বিশেষিত হবেন তা নিয়ে দীর্ঘ শতাব্দী ধরে ভারতীয় সেকুলার বামপন্থী ইতিহাসবিদদের একটা বিতর্ক চলছিল।
...এবং অবশেষে এল সেই কুখ্যাত মুঘল বাবর যার পিতা তীমুর ও মাতা ছিলেন চেঙ্গিস খানদের বংশধর।...একজন নৃশংস লুটেরা, ধর্ষক, খুনী, সমকামী শিশু যৌনচারী।...এই সেই জেহাদি বাবর যার ভারতের প্রত্যেক স্কুলের ইতিহাস বইয়ের প্রথম পাতায় তার প্রতিচ্ছবি থাকার মত বিরল সম্মান রয়েছে।
(চলবে)....

আকবর দ্যা গ্রেট (প্রকৃত ইতিহাস) :

⚔️[প্রথম পর্ব]⚔️

...ভারতবর্ষের ইতিহাসে খুবই কম সংখ্যক কিংবদন্তির নামের পূর্বে “মহান” অথবা ইংরেজি “The Great” প্রত্যয়ে ভূষিত হয়েছেন।...আমি সেই তিন মহানের নাম স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি - আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, সম্রাট অশোকা এবং সম্রাট আকবর।...তাদের নামের পূর্বে এই “মহান” ভূষণ অতি সহজে অলংকৃত হয়নি।...এর জন্য তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক অবিস্মরণীয় সব কর্মকান্ড করতে হয়েছিল।
...এই ভারতীয় পুণ্যভূমি একের পর এক পুণ্যবান জন্ম দিয়েছেন।...যেমন, কণিস্ক, চন্দ্রগুপ্ত, পৃথ্বীরাজ, রানা প্রতাপ, বাজীরাও, শিবাজী, রণজিৎ সিং, রাজা রাজা চোল-এর মত আরও অনেকজন।...কিন্তু ভারতীয় ইতিহাসবিদরা কেউ তাদেরকে “মহান” অথবা “The Great” বলে আখ্যায়িত করেন নি।
...এটার একটাই কারন হতে পারে। “মহান” উপাধি প্রাপ্ত হওয়া খুবই শক্ত কাজ।...মহান উপাধিতে ভূষিত হতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে নির্মম খুনী হতে হবে।...এবং আপনাকে অবশ্যই হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোতে কোন না কোনভাবে আঘাতকারী হতেই হবে।
...এই সন্ত্রাসবাদীদের নামের তালিকায় প্রথমেই আসবে আলেকজান্ডার এর নাম, যিনি সমস্ত বিশ্বজয়ের অভিলাষে অগণিত মানুষ হত্যার পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠেছিলেন।...পরবর্তীতে রাজা পুরু (Porus) এর কাছে অনাকাঙ্খিত ভাবে প্রায় পরাজিত হন তিনি।...নিজের জীবন এবং বাকি বেঁচে থাকা বেশিরভাগ সৈন্য যারা ম্যালেরিয়ায় ভুগছিল তাদের বাঁচানোর জন্য লজ্জাজনক ভাবে পালিয়ে যান।
...কিন্তু আমাদের ভারতের মহান ইতিহাসবিদগণ এটাকে পোরাসের পরাজয় বলে মনে করেন।...মনে হচ্ছে তারা দেশ ও হিন্দুবিরোধী মোল্লা ইরফান হাবিবের মত ইতিহাসবিদ কম, কবি ও সৃষ্টিশীল লেখক বেশী।...কিন্তু অপরপক্ষে গ্রীক ইতিহাসবিদগণ আলেক্সজান্ডারের এই পরাজয় কিছু লেখায় স্বীকার করেছেন!...কিন্তু এই ব্যাপারটি ছাড়াও মূল বিষয়টি হচ্ছে তিনি আক্রমণ করেছেন এবং অসংখ্য প্রাণ হত্যা করেছেন তাই তিনি “মহান“।
...তার পরেই আসে রাজা অশোকার নাম যিনি তার শাসনামলে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেন এবং হঠাৎ করেই তার অনুশোচনা উদয় হয়।...এমনকি একজন জনপ্রিয় সৃষ্টিশীল ইতিহাসবিদ পরিচালক রাজা অশোকার অগণিত স্ত্রীদের মধ্যে অন্যতম এক স্ত্রীর সাথে তার প্রেমের গল্প নিয়ে একটি চলচিত্র পর্যন্ত তৈরী করেছেন।
...কিন্তু মোদ্দাকথা হচ্ছে তিনি “মহান” উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন কারণ অনুতপ্ত হওয়ার পূর্বে তিনি অগণিত তাজা প্রানের রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন যা তখনকার সময়ের অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।...তাছাড়া তিনি হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোত থেকে পথ বিচ্যুত হয়েছিলেন।
...সম্রাট অশোকার মৃত্যুর পরে আরও কয়েকশ বছর ঐ রকম কৃতিত্বের কেউ পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি।...তারপরে এলো বর্বর লুটেরাদের যুগ।...যারা পশ্চিম এশিয়া থেকে এসেছিল ইসলামের ঝাণ্ডা হাতে এবং সন্ত্রাসী জিহাদি কর্মকান্ডের পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।
...তাহলে তাদের মধ্যে কে “মহান” উপাধির মত এমন লোভনীয় গুণবাচক বিশেষণে বিশেষিত হবেন তা নিয়ে দীর্ঘ শতাব্দী ধরে ভারতীয় সেকুলার বামপন্থী ইতিহাসবিদদের একটা বিতর্ক চলছিল।
...এবং অবশেষে এল সেই কুখ্যাত মুঘল বাবর যার পিতা তীমুর ও মাতা ছিলেন চেঙ্গিস খানদের বংশধর।...একজন নৃশংস লুটেরা, ধর্ষক, খুনী, সমকামী শিশু যৌনচারী।...এই সেই জেহাদি বাবর যার ভারতের প্রত্যেক স্কুলের ইতিহাস বইয়ের প্রথম পাতায় তার প্রতিচ্ছবি থাকার মত বিরল সম্মান রয়েছে।
(চলবে)....

Posted at June 05, 2020 |  by Arya ঋষি
১ নারীর অবস্থান পুরুষের নিচে (Quran 4:34, 2:228)
২ তাদের মর্যাদা পুরুষের অর্ধেক (Quran 2:282, 4:11 Sahih Bukhari 3:48:826, 1:142)
৩ নারী পুরুষের যৌন দাসী (Ibn Hisham-al-Sira al-nabawiyya, Cairo, 1963)
৪ তারা পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি (Sahih Bukhari 5:59:524)
৫ তারা কুকুরের সমতুল্য (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493, 1:9:486 Sahih Muslim 4:1032, 4:1034, 4:1038-39 Abu Dawud 2:704)
৬ ভালোবাসার অযোগ্য (Sahih Bukhari 7:62:17 Abu Dawud 41:5119)
৭ তাদের বন্ধক রাখা যায় (Sahih Bukhari 5:59:369)
৮ রজ্বচক্র চলাকালীন তারা অপবিত্র (Quran 2:222 Al-Tabari Vol.1 p.280) হজ্ব করার অযোগ্য (Sahih Bukhari 1:6:302)
৯ তারা নিকৃষ্ট (Sahih Bukhari 9:88:219) বুদ্ধিহীন (Sahih Bukhari 2:24:541) অকৃতজ্ঞ (Sahih Bukhari 1:2:28) খেলার পুতুল (Al-Musanaf Vol.1 Part 2 p.263) হাড়ের মত বক্রতা যুক্ত (Sahih Muslim 8:3466-68 Sahih Bukhari 7:62:113, 7:62:114, 4:55:548)
১০ তারা পুরুষের চাষযোগ্য ক্ষেত্র (Quran 2:223 Abu Dawud 11:2138)
১১ তারা শয়তানের রূপ (Sahih Muslim 8:3240)
১২ তাদের মাঝে নিহিত আছে যাবতীয় খারাপ (Sahih Bukhari 4:52:110, 4:52:111)
১৩ তারা বিশ্বাস ঘাতক (Sahih Bukhari 4:55:547)
১৪ পুরুষের জন্যে ক্ষতিকারক (Sahih Bukhari 7:62:33)
১৫ নেত্রিত্ব দেওয়ার অযোগ্য (Sahih Bukhari 9:88:219)
১৬ প্রার্থনা ভঙ্গ হওয়ার কারন (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493)
১৭ স্বামীর যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে তারা বাধ্য (Sahih Muslim 8:3368)
১৮ পুরুষ কত্রিক ধর্ষনের অনুমোদন (Quran 70:29-30 Abu Dawud 11:2153, 31:4006 Sahih Bukhari 5:59:459 Sahih Bukhari 8:77:600, 8:3432, 8:3371)
১৯ স্বামীর বাধ্য না হলে তাদের প্রার্থনা গৃহিত হবে না (Muslim Scholar Al-Suyuti while commenting on Quran 4:34 Mishkat al-Masabih Book I, Section ‘Duties of husband and wife’, Hadith No. ii, 60)
২০ পুরুষ পারবে চারজন নারীকে বিয়ে করতে (Quran 4:3)
২১ তালাকের অধিকার রয়েছে শুধু পুরুষেরই (Sahih Bukhari 8:4871-82 Mishkat al-Masabih, Book 1, duties of parents, Hadith No. 15)
২২ স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রয়েছে পুরুষের (Quran 4:34 Sahih Muslim 4:2127) যার কারনে কোন জবাব চাওয়া হবে না (Abu Dawud 11:2142)
২৩ বেহেস্তে পুরুষের জন্যে রয়েছে বহু (Virgin) রমনী সম্ভগের ব্যাবস্থা (Quran 33:48, 44:51-54, 55:56-58, 78:31-35 Ibn Kathir Tafsir of 55:72 Sahih Muslim 40:6795, 40:6796 Sahih Bukhari 4:54:476 Al-Tirmidhi, Sunan. Vol. IV Chap. 21 Hadith: 2687 Sunan Ibn Maja, Zuhd-Book of Abstinence 39)
২৪ শুধুমাত্র নীরবতাই তাদের বিয়ের সম্মতি (Sahih Bukhari 9:86:100, 9:86:101, 9:85:79)
২৫ স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত অন্য পুরুষের কাছাকাছি হওয়া নিষিদ্ধ (Sahih Bukhari 4:52:250)
২৬ তাদের একমাত্র কাজ পুরুষের সেবা করা (Mishkat al-Masabih, Book 1, Duties of Husband and Wife, Hadith Number 62 Mishkat al-Masabih, Book 1, duty towards children Hadith Number 43)
২৭ সর্বদা নিজেদের আবদ্ধ রাখতে হবে পর্দায় (Sahih Bukhari 5:59:462, 6:60:282)
২৮ মৃত্যুর পর তাদের অধিকাংশের জন্যে রয়েছে দোজখের আগুন (Sahih Muslim 36:6596, 36:6597 Sahih Bukhari 7:62:124, 1:2:29, 7:62:124, 2:18:161)

ইসলামে নারীর মর্যাদা কেমন

১ নারীর অবস্থান পুরুষের নিচে (Quran 4:34, 2:228)
২ তাদের মর্যাদা পুরুষের অর্ধেক (Quran 2:282, 4:11 Sahih Bukhari 3:48:826, 1:142)
৩ নারী পুরুষের যৌন দাসী (Ibn Hisham-al-Sira al-nabawiyya, Cairo, 1963)
৪ তারা পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি (Sahih Bukhari 5:59:524)
৫ তারা কুকুরের সমতুল্য (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493, 1:9:486 Sahih Muslim 4:1032, 4:1034, 4:1038-39 Abu Dawud 2:704)
৬ ভালোবাসার অযোগ্য (Sahih Bukhari 7:62:17 Abu Dawud 41:5119)
৭ তাদের বন্ধক রাখা যায় (Sahih Bukhari 5:59:369)
৮ রজ্বচক্র চলাকালীন তারা অপবিত্র (Quran 2:222 Al-Tabari Vol.1 p.280) হজ্ব করার অযোগ্য (Sahih Bukhari 1:6:302)
৯ তারা নিকৃষ্ট (Sahih Bukhari 9:88:219) বুদ্ধিহীন (Sahih Bukhari 2:24:541) অকৃতজ্ঞ (Sahih Bukhari 1:2:28) খেলার পুতুল (Al-Musanaf Vol.1 Part 2 p.263) হাড়ের মত বক্রতা যুক্ত (Sahih Muslim 8:3466-68 Sahih Bukhari 7:62:113, 7:62:114, 4:55:548)
১০ তারা পুরুষের চাষযোগ্য ক্ষেত্র (Quran 2:223 Abu Dawud 11:2138)
১১ তারা শয়তানের রূপ (Sahih Muslim 8:3240)
১২ তাদের মাঝে নিহিত আছে যাবতীয় খারাপ (Sahih Bukhari 4:52:110, 4:52:111)
১৩ তারা বিশ্বাস ঘাতক (Sahih Bukhari 4:55:547)
১৪ পুরুষের জন্যে ক্ষতিকারক (Sahih Bukhari 7:62:33)
১৫ নেত্রিত্ব দেওয়ার অযোগ্য (Sahih Bukhari 9:88:219)
১৬ প্রার্থনা ভঙ্গ হওয়ার কারন (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493)
১৭ স্বামীর যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে তারা বাধ্য (Sahih Muslim 8:3368)
১৮ পুরুষ কত্রিক ধর্ষনের অনুমোদন (Quran 70:29-30 Abu Dawud 11:2153, 31:4006 Sahih Bukhari 5:59:459 Sahih Bukhari 8:77:600, 8:3432, 8:3371)
১৯ স্বামীর বাধ্য না হলে তাদের প্রার্থনা গৃহিত হবে না (Muslim Scholar Al-Suyuti while commenting on Quran 4:34 Mishkat al-Masabih Book I, Section ‘Duties of husband and wife’, Hadith No. ii, 60)
২০ পুরুষ পারবে চারজন নারীকে বিয়ে করতে (Quran 4:3)
২১ তালাকের অধিকার রয়েছে শুধু পুরুষেরই (Sahih Bukhari 8:4871-82 Mishkat al-Masabih, Book 1, duties of parents, Hadith No. 15)
২২ স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রয়েছে পুরুষের (Quran 4:34 Sahih Muslim 4:2127) যার কারনে কোন জবাব চাওয়া হবে না (Abu Dawud 11:2142)
২৩ বেহেস্তে পুরুষের জন্যে রয়েছে বহু (Virgin) রমনী সম্ভগের ব্যাবস্থা (Quran 33:48, 44:51-54, 55:56-58, 78:31-35 Ibn Kathir Tafsir of 55:72 Sahih Muslim 40:6795, 40:6796 Sahih Bukhari 4:54:476 Al-Tirmidhi, Sunan. Vol. IV Chap. 21 Hadith: 2687 Sunan Ibn Maja, Zuhd-Book of Abstinence 39)
২৪ শুধুমাত্র নীরবতাই তাদের বিয়ের সম্মতি (Sahih Bukhari 9:86:100, 9:86:101, 9:85:79)
২৫ স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত অন্য পুরুষের কাছাকাছি হওয়া নিষিদ্ধ (Sahih Bukhari 4:52:250)
২৬ তাদের একমাত্র কাজ পুরুষের সেবা করা (Mishkat al-Masabih, Book 1, Duties of Husband and Wife, Hadith Number 62 Mishkat al-Masabih, Book 1, duty towards children Hadith Number 43)
২৭ সর্বদা নিজেদের আবদ্ধ রাখতে হবে পর্দায় (Sahih Bukhari 5:59:462, 6:60:282)
২৮ মৃত্যুর পর তাদের অধিকাংশের জন্যে রয়েছে দোজখের আগুন (Sahih Muslim 36:6596, 36:6597 Sahih Bukhari 7:62:124, 1:2:29, 7:62:124, 2:18:161)

Posted at June 03, 2020 |  by Arya ঋষি
ইফকের ঘটনা - 
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ

*ইবনে কাসির (রহ) এর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৪/২৯৩-৩০১ পৃষ্ঠা । ই,ফা;
* সুলাইমান নদভি (রহ) এর সিরাতে আয়েশা এর ১২০-১৩৩ পৃষ্ঠা । রাহনুমা প্রকাশনী ।
* আর রাহীকুল মাখতুম ।

রাসুল (সা) যখন কোন সফরে বের হতেন তখন স্ত্রী নির্বাচনের জন্য লটারি করতেন । বনু মুস্তালিক যুদ্ধের অভিযানে সফরসাথী হিসেবে লটারিতে আয়েশা (রা) এর নাম আসে । আয়েশা (রা) যাত্রাকালে প্রিয় ভগ্নী আসমা (রা) এর একটি হার ধার নেন । হারটির আংটা এত দুর্বল যে বারবার খুলে যাচ্ছিল । আয়েশা (রা) বয়স ছিল ১৪ বছর । সফরকালে রাতের বেলায় এক অপরিচিত জাগাতে যাত্রাবিরতি হয় । আয়েশা (রা) প্রকৃতির দাকে সাড়া দিতে দূরে চলে গেলেন । ফেরার সময় হটাত গলায় হাত দিয়ে দেখলেন ধার করা হারটি নেই । তিনি প্রচণ্ডে গাবরে গেলেন । প্রথমত তার বয়স ছিল কম আর তার উপরে হারটি ছিল ধার করা । হতভম্ব হতে তিনি হারটি খুজতে লাগলেন । বয়স কম হওয়ার কারনে তার ভ্রমন অভিজ্ঞতা ছিল না । তিনি ভেবেছিলেন যাত্রা শুরু হওয়ার আগেই তিনি হার খুজে পাবেন আর সময়মত হাওদাতে পোঁছে জাবেন । তিনি কাউকে ঘটনাটি জানালেন না, না তাঁর জন্য কাউকে অপেক্ষা করার নির্দেশ দিলেন ।

খুজতে খুজতে হার পেয়ে জান কিন্তু ততক্ষণে কাফেলা রওনা হয়ে গেছে । তারা ভেবেছিল আয়েশা (রা) কাফেলার মদ্ধেই রয়েছেন । এদিকে আয়েশা (রা) কাফেলার স্থানে এসে কাউকে পেলেন না । তিনি চাদর মুড়ি দিয়ে সেখানেই পড়ে রইলেন । ভাবলেন, যখন কাফেলা বুঝতে পারবে তখন আবার ফিরে আসবে । সাফওয়ান (রা) ছিলেন সে কাফেলার রক্ষণাবেক্ষণকারী । কেউ পিছে পরলে বা কিছু হারিয়ে গেলে তা পৌঁছে দেয়া তাঁর কাজ । তিনি আয়েশা (রা) কে চাঁদর মুড়ি দেয়া অবস্থাতেও চিনতে পারলেন । কারন পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার আগেই তিনি আয়েশা (রা)কে দেখেছিলেন । আয়েশা (রা) তখন ঘুমিয়ে পড়েছিল । তাঁকে সজাগ করার জন্য সাফওয়ান (রা) জোরে ইন্না লিল্লাহ বলে আওয়াজ দিলেন এবং বললেনঃ এ যে রাসুল (সা) এর সহধর্মিণী ! আল্লাহ্‌ আপনার উপর রহম করুন ! কি করে আপনি পিছে রয়ে গেলেন ? আয়েশা (রা) জবাব দিলেন না । সাফওয়ান (রা) একটি উট এনে তাঁকে আয়েশা (রা) কে আবরণ করতে বলে দূরে সরে দাঁড়ান । আয়েশা (রা) উটের পিঠে আরোহণ করলে তিনি উটের লাগাম ধরে সামনে পথ চলতে থাকেন । অনেক কষ্ট করেও ভরের আগে তাঁরা কাফেলাকে ধরতে পারলেন না ।

+ ঘটনা এখানেই শেষ এবং যে কোন সফরে এমনটা ঘটা একদম স্বাভাবিক কিন্তু যাদের অন্তরে নোংরা চিন্তা রয়েছে তারা এই নরমাল ঘটনাকে নিয়ে কুৎসা রটাতে লাগল । কিন্তু যারা পবিত্র তারা শোনা মাত্রই বলতেন এটা পরিষ্কার অপবাদ ছাড়া কিছুই না । এ ঘটনা সব জায়গায় ছড়ানর মুল হতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ওরফে মুনাফিকদের সর্দার ।

+ এদিকে আয়েশা (রা) মদিনা পৌঁছানোর পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাই তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানতেন না আর রাসুল (সা) ভীষণ চিন্তিত ছিলেন যার দরুন তিনি আগের মত আর আয়েশা (রা) এইবার সেবা যত্ন করলেন না ফলে আয়েশা (রা) মনে কষ্ট পেয়ে , রাসুলের অনুমতি নিয়ে নিজ বাপের বাড়ি চলে যান । পরে মেসতাহ (রা) এর মা তাঁকে পুরো ঘটনা বলেন । শুনে আয়েশা (রা) রাত দিন কাদতে থাকলেন ।

+ ঐদিকে আয়েশা (রা) বিরুদ্ধে অপবাদকারীরা আরও জোরে স্বরে তাদের মিথ্যা কুৎসা রটাতে থাকে । প্রায় ১ মাস হয়ে যায় কোন মীমাংসা হয় না । মুনাফিক আর অল্প সংখ্যক মানুষ ছাড়া সবাই মানতেন যে আয়েশা (রা) ছিলেন নির্দোষ । তারপরেও স্বচ্ছতার সাথে রাসুল (সা)তদন্ত করলেন । উসামা ও আলী (রা) সাথে পরামর্শ করলেন । উসামা (রা) বলেন হে আল্লাহ্‌র রাসুল আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না । আলী (রা) আরও তদন্তের পরামর্শ দিলেন । পরে লোকদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন তাঁর মদ্ধে আমরা দোষের কিছু দেখি না কেবল এতটুকুই যে তিনি তখন ঘুমিয়ে পড়েন ।

+ রাসুল (সা) বুকভরা কষ্ট নিয়ে সবার উদ্দেশে ভাষণ দিলেন । বললেন লোক সকল। মানুষের কি হয়েছে ? তারা আমার পরিবার সম্পর্কে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে । তারা মিথ্যা বলছে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে । এরপরে রাসুল (সা) আবু বকর (রা) এর ঘরে আসেন আর আয়েশা (রা)কে বলেন তুমি তো জানো ঘটনা । আল্লাহকে ভয় করো আর লোকেরা যা বলছে তাতে লিপ্ত হয়ে থাকলে তুমি আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করো । আল্লাহ্‌ তওবা কবুলকারী ।

+ আয়েশা (রা) বলেন আমার সম্পর্কে যেসব কথা বলা হচ্ছে সে ব্যাপারে আমি তওবা করব না । যদি আমি স্বীকার করি তবে আল্লাহ্‌ জানেন যে আমি নির্দোষ। যা ঘটেই নাই তা স্বীকার হয়ে যাবে । ধৈর্য ধরাই উত্তম ।

+ এ পর্যায়ে নাযিল হয়, সুরা নুর ২৪:১১,১৯ নং আয়াতঃ যারা মিথ্যা অপবাদ রটনা করেছে,তারা তোমাদেরই একটি দল । তোমরা একে নিজেদের জন্যে খারাপ মনে করো না, বরং এটা তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক । তাদের প্রত্যেকের জন্যে ততটুকু আছে যতটুকু সে গোনাহ করেছে এবং তাদের মদ্ধে যে এ ব্যাপারে আগ্রনি ভূমিকা নিয়েছে , তার জন্য রয়েছে বিরাট শাস্তি । যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে বেভিচার প্রসার লাভ করুক তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে । আল্লাহ্‌ জানেন তোমরা জানো না ।

+ বর্তমান সময়ের মর্মান্তিক ইসলাম বিদ্বেষীরা দাবি তোলে "যেহেতু আয়াত নাযিল হতে এক মাসের বেশি সময় লেগেছে" এতে বুঝা যায় মোহাম্মদ আসলে কনফিউজড ছিলেন যে তিনি কি ধরনের আয়াত উপস্থাপন করবেন । তিনি আসলে মাসিক অবস্থা দেখে নিচ্ছিত হতে চাইছিলেন, আয়েশা নির্দোষ কিনা, তানা হলে এক মাস অপেক্ষা কেন ?

= উপরের বিদ্বেষীদের যুক্তিগুলি খুবি দুর্বল কারনঃ

* আয়েশা (রা) থেকে স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক হাদিস এসেছে কিন্তু তিনি কখনো মা হতে পারেননি তাই অবশ্যই এভাবে রাসুল (সা) তাঁকে বিচার করবেন না । আর "রাসুল (সা) তার মাসিকের অপেক্ষায় ছিলেন" এই শব্দে সহিহ হাদিস অথবা বিশুদ্ধ ইতিহাস থেকে তৎকালীন কউল থেকে প্রমান করুন ? এটি একটি ভিত্তিহীন ভুল অনুমান । সুরা নাজম ৫৩:২৮ = সত্যের কাছে অনুমানের কোনই দাম নাই ।

*আয়েশা (রা) তখন রাসুল (সা) এর কাছে ছিলেন না তিনি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন ।

* ওহী নাজিলের আগেও রাসুল (সা) গুনাহ করে থাকলে আয়েশা (রা) কে তওবা করতে বলেছিলেন । এর মানে ওহী নাজিলের আগে তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত দেননি এ ব্যাপারে ।

* যদি নিজেই আয়াত বানাবেন তো সাহাবিদের সাথে পরামর্শের কি দরকার - ইচ্ছা মত বানালেই তো হত ! এর থেকে প্রমানিত হয় যে নবী মুহাম্মদ (সা) নিজে কুরআন আয়াত বানাননি বরং আল্লাহ্‌ই ওহী নাজিলের মাদ্ধমে সত্য কথা ফাঁশ করেছেন ।

+ উইলিয়াম মেইবার তার "লাইফ অফ মুহাম্মদ" বইতে এই ইফকের ঘটনা নিয়ে অনেক অনেক মিথ্যাচার করেছে । যার ভিত্তি নাই । নিজের মনগড়া গল্প বিশুদ্ধ ইতিহাসে ঢুকিয়েছেন যা খুবি মূর্খতার পরিচয় । এই ইসলাম বিদ্বেষী আয়েশা (রা) কে চরিত্রহীন প্রমান করতে চেয়েছেন । যেমন একবার হাসসান (রা) অনুতপ্ত হয়ে আয়েশা (রা) কে কবিতা শোনান - "তিনি পবিত্র , ধৈর্যশিলা , নির্দোষ , তিনি সরলা নারীর গশত খান না" - উইলিয়াম মেইবার এই কবিতা নিইয়ে লিখেন যে, কবিতা খুব চমৎকার কারন তাতে আয়েশা এর পবিত্রতা সৌন্দর্য বুদ্দিমত্তা আর নিখুত কমনীয় দেহের বর্ণনা ছিল ।

= উইলিয়াম মেইবার বাচ্চাসুলভ দাবি করলেন । হাসসান (রা) যখন কবিতাটি পাঠ করেন তখন আয়েশা (রা) এর বয়স ৪০ বছর । তাছাড়া কবিতার কথাও দেহের কথা নাই । লেখক যেই লাইনে বেশি ঘাবলা করেছে তা হলঃ "তিনি সরলা, নারীর গশত খান না" লেখক জানে না আরবি ব্যাকরণে "কারো গশত ভক্ষণ করা" বলতে গীবতকে বুঝানো হয় । আসলে এর দ্বারা বুঝায় যে আয়েশা (রা) কারো গীবত করেন না । অনেক নোংরা বাজে কথা ঐ মূর্খ লেখক উইলিয়াম মেইবার বলার পরেই অবশ্য হতাশ হয়ে লিখতে বাধ্য হন- আয়েশার আগের জীবন আমাদের আশ্বস্ত করে তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন । 

এ ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পেরেছি একজন পবিত্র নারীর ওপর বেভিচারের অপবাদ কেউ দিলে তার কি করা উচিত । আর কুরআন নারীর ওপর অপবাদ আরোপ কারীদের শাস্তি আরোপ করেছে । সুরা নুর ২৪:৪= যারা সতিসাধ্যি নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতপর স্বপক্ষে চারজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনো তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না । এরাই নাফরমান ।

মিসতাহ (রা) ভুলক্রমে এ কুৎসায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলেন । অথচ তার ভরন পোষণ করতেন আবু বকর (রা) । নিজের মেয়েকে উক্ত অপবাদ দিতে দেখে তিনি মিসতাহ (রা) সাহায্য করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেন । তখন সুরা নুরের ২২ নং আয়াত নাযিল হয়ঃ তোমাদের মধ্যে যারা উচ্চ মর্যাদার ও আর্থিক প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন কসম না খায় যে, তারা আত্মীয় স্বজনকে অভাবগ্রস্থকে এবং আল্লাহ্‌র পথে হিজরতকারিদেরকে কিছুই দেবে না। তাদের ক্ষমা করা উচিত এবং দোষত্রুটি উপেক্ষা করা উচিত । তোমরা কি কামনা করো না যে আল্লাহ্‌ তোমাদের ক্ষমা করেন ? আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু । 

এ ঘটনা গুলা প্রমান করে কুরআন রাসুল (সা) এর নিজের কোন পার্সোনাল বই ছিল না । তানা হলে নিজ স্ত্রীকে নিজে বাজে মন্তব্যকারীর সাহায্য বন্ধ হতে দেখে উনার খুশি হওয়া উচিৎ ছিল । এটাই স্বাভাবিক ও মানবীয় । এ ঘটনা বাস্তব প্রমান কুরআন মানুষের তৈরি বই না বরং আল্লাহ্‌র কুরআন এটাই সত্য ।

প্রশ্নঃ আয়েশাকে বাঁচাতে মুহাম্মদ নিজেই কুরআনের আয়াত বানিয়েছেন ?

ইফকের ঘটনা - 
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ

*ইবনে কাসির (রহ) এর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৪/২৯৩-৩০১ পৃষ্ঠা । ই,ফা;
* সুলাইমান নদভি (রহ) এর সিরাতে আয়েশা এর ১২০-১৩৩ পৃষ্ঠা । রাহনুমা প্রকাশনী ।
* আর রাহীকুল মাখতুম ।

রাসুল (সা) যখন কোন সফরে বের হতেন তখন স্ত্রী নির্বাচনের জন্য লটারি করতেন । বনু মুস্তালিক যুদ্ধের অভিযানে সফরসাথী হিসেবে লটারিতে আয়েশা (রা) এর নাম আসে । আয়েশা (রা) যাত্রাকালে প্রিয় ভগ্নী আসমা (রা) এর একটি হার ধার নেন । হারটির আংটা এত দুর্বল যে বারবার খুলে যাচ্ছিল । আয়েশা (রা) বয়স ছিল ১৪ বছর । সফরকালে রাতের বেলায় এক অপরিচিত জাগাতে যাত্রাবিরতি হয় । আয়েশা (রা) প্রকৃতির দাকে সাড়া দিতে দূরে চলে গেলেন । ফেরার সময় হটাত গলায় হাত দিয়ে দেখলেন ধার করা হারটি নেই । তিনি প্রচণ্ডে গাবরে গেলেন । প্রথমত তার বয়স ছিল কম আর তার উপরে হারটি ছিল ধার করা । হতভম্ব হতে তিনি হারটি খুজতে লাগলেন । বয়স কম হওয়ার কারনে তার ভ্রমন অভিজ্ঞতা ছিল না । তিনি ভেবেছিলেন যাত্রা শুরু হওয়ার আগেই তিনি হার খুজে পাবেন আর সময়মত হাওদাতে পোঁছে জাবেন । তিনি কাউকে ঘটনাটি জানালেন না, না তাঁর জন্য কাউকে অপেক্ষা করার নির্দেশ দিলেন ।

খুজতে খুজতে হার পেয়ে জান কিন্তু ততক্ষণে কাফেলা রওনা হয়ে গেছে । তারা ভেবেছিল আয়েশা (রা) কাফেলার মদ্ধেই রয়েছেন । এদিকে আয়েশা (রা) কাফেলার স্থানে এসে কাউকে পেলেন না । তিনি চাদর মুড়ি দিয়ে সেখানেই পড়ে রইলেন । ভাবলেন, যখন কাফেলা বুঝতে পারবে তখন আবার ফিরে আসবে । সাফওয়ান (রা) ছিলেন সে কাফেলার রক্ষণাবেক্ষণকারী । কেউ পিছে পরলে বা কিছু হারিয়ে গেলে তা পৌঁছে দেয়া তাঁর কাজ । তিনি আয়েশা (রা) কে চাঁদর মুড়ি দেয়া অবস্থাতেও চিনতে পারলেন । কারন পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার আগেই তিনি আয়েশা (রা)কে দেখেছিলেন । আয়েশা (রা) তখন ঘুমিয়ে পড়েছিল । তাঁকে সজাগ করার জন্য সাফওয়ান (রা) জোরে ইন্না লিল্লাহ বলে আওয়াজ দিলেন এবং বললেনঃ এ যে রাসুল (সা) এর সহধর্মিণী ! আল্লাহ্‌ আপনার উপর রহম করুন ! কি করে আপনি পিছে রয়ে গেলেন ? আয়েশা (রা) জবাব দিলেন না । সাফওয়ান (রা) একটি উট এনে তাঁকে আয়েশা (রা) কে আবরণ করতে বলে দূরে সরে দাঁড়ান । আয়েশা (রা) উটের পিঠে আরোহণ করলে তিনি উটের লাগাম ধরে সামনে পথ চলতে থাকেন । অনেক কষ্ট করেও ভরের আগে তাঁরা কাফেলাকে ধরতে পারলেন না ।

+ ঘটনা এখানেই শেষ এবং যে কোন সফরে এমনটা ঘটা একদম স্বাভাবিক কিন্তু যাদের অন্তরে নোংরা চিন্তা রয়েছে তারা এই নরমাল ঘটনাকে নিয়ে কুৎসা রটাতে লাগল । কিন্তু যারা পবিত্র তারা শোনা মাত্রই বলতেন এটা পরিষ্কার অপবাদ ছাড়া কিছুই না । এ ঘটনা সব জায়গায় ছড়ানর মুল হতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ওরফে মুনাফিকদের সর্দার ।

+ এদিকে আয়েশা (রা) মদিনা পৌঁছানোর পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাই তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানতেন না আর রাসুল (সা) ভীষণ চিন্তিত ছিলেন যার দরুন তিনি আগের মত আর আয়েশা (রা) এইবার সেবা যত্ন করলেন না ফলে আয়েশা (রা) মনে কষ্ট পেয়ে , রাসুলের অনুমতি নিয়ে নিজ বাপের বাড়ি চলে যান । পরে মেসতাহ (রা) এর মা তাঁকে পুরো ঘটনা বলেন । শুনে আয়েশা (রা) রাত দিন কাদতে থাকলেন ।

+ ঐদিকে আয়েশা (রা) বিরুদ্ধে অপবাদকারীরা আরও জোরে স্বরে তাদের মিথ্যা কুৎসা রটাতে থাকে । প্রায় ১ মাস হয়ে যায় কোন মীমাংসা হয় না । মুনাফিক আর অল্প সংখ্যক মানুষ ছাড়া সবাই মানতেন যে আয়েশা (রা) ছিলেন নির্দোষ । তারপরেও স্বচ্ছতার সাথে রাসুল (সা)তদন্ত করলেন । উসামা ও আলী (রা) সাথে পরামর্শ করলেন । উসামা (রা) বলেন হে আল্লাহ্‌র রাসুল আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা ভাল ছাড়া আর কিছুই জানি না । আলী (রা) আরও তদন্তের পরামর্শ দিলেন । পরে লোকদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন তাঁর মদ্ধে আমরা দোষের কিছু দেখি না কেবল এতটুকুই যে তিনি তখন ঘুমিয়ে পড়েন ।

+ রাসুল (সা) বুকভরা কষ্ট নিয়ে সবার উদ্দেশে ভাষণ দিলেন । বললেন লোক সকল। মানুষের কি হয়েছে ? তারা আমার পরিবার সম্পর্কে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে । তারা মিথ্যা বলছে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে । এরপরে রাসুল (সা) আবু বকর (রা) এর ঘরে আসেন আর আয়েশা (রা)কে বলেন তুমি তো জানো ঘটনা । আল্লাহকে ভয় করো আর লোকেরা যা বলছে তাতে লিপ্ত হয়ে থাকলে তুমি আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করো । আল্লাহ্‌ তওবা কবুলকারী ।

+ আয়েশা (রা) বলেন আমার সম্পর্কে যেসব কথা বলা হচ্ছে সে ব্যাপারে আমি তওবা করব না । যদি আমি স্বীকার করি তবে আল্লাহ্‌ জানেন যে আমি নির্দোষ। যা ঘটেই নাই তা স্বীকার হয়ে যাবে । ধৈর্য ধরাই উত্তম ।

+ এ পর্যায়ে নাযিল হয়, সুরা নুর ২৪:১১,১৯ নং আয়াতঃ যারা মিথ্যা অপবাদ রটনা করেছে,তারা তোমাদেরই একটি দল । তোমরা একে নিজেদের জন্যে খারাপ মনে করো না, বরং এটা তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক । তাদের প্রত্যেকের জন্যে ততটুকু আছে যতটুকু সে গোনাহ করেছে এবং তাদের মদ্ধে যে এ ব্যাপারে আগ্রনি ভূমিকা নিয়েছে , তার জন্য রয়েছে বিরাট শাস্তি । যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে বেভিচার প্রসার লাভ করুক তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে । আল্লাহ্‌ জানেন তোমরা জানো না ।

+ বর্তমান সময়ের মর্মান্তিক ইসলাম বিদ্বেষীরা দাবি তোলে "যেহেতু আয়াত নাযিল হতে এক মাসের বেশি সময় লেগেছে" এতে বুঝা যায় মোহাম্মদ আসলে কনফিউজড ছিলেন যে তিনি কি ধরনের আয়াত উপস্থাপন করবেন । তিনি আসলে মাসিক অবস্থা দেখে নিচ্ছিত হতে চাইছিলেন, আয়েশা নির্দোষ কিনা, তানা হলে এক মাস অপেক্ষা কেন ?

= উপরের বিদ্বেষীদের যুক্তিগুলি খুবি দুর্বল কারনঃ

* আয়েশা (রা) থেকে স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক হাদিস এসেছে কিন্তু তিনি কখনো মা হতে পারেননি তাই অবশ্যই এভাবে রাসুল (সা) তাঁকে বিচার করবেন না । আর "রাসুল (সা) তার মাসিকের অপেক্ষায় ছিলেন" এই শব্দে সহিহ হাদিস অথবা বিশুদ্ধ ইতিহাস থেকে তৎকালীন কউল থেকে প্রমান করুন ? এটি একটি ভিত্তিহীন ভুল অনুমান । সুরা নাজম ৫৩:২৮ = সত্যের কাছে অনুমানের কোনই দাম নাই ।

*আয়েশা (রা) তখন রাসুল (সা) এর কাছে ছিলেন না তিনি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন ।

* ওহী নাজিলের আগেও রাসুল (সা) গুনাহ করে থাকলে আয়েশা (রা) কে তওবা করতে বলেছিলেন । এর মানে ওহী নাজিলের আগে তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত দেননি এ ব্যাপারে ।

* যদি নিজেই আয়াত বানাবেন তো সাহাবিদের সাথে পরামর্শের কি দরকার - ইচ্ছা মত বানালেই তো হত ! এর থেকে প্রমানিত হয় যে নবী মুহাম্মদ (সা) নিজে কুরআন আয়াত বানাননি বরং আল্লাহ্‌ই ওহী নাজিলের মাদ্ধমে সত্য কথা ফাঁশ করেছেন ।

+ উইলিয়াম মেইবার তার "লাইফ অফ মুহাম্মদ" বইতে এই ইফকের ঘটনা নিয়ে অনেক অনেক মিথ্যাচার করেছে । যার ভিত্তি নাই । নিজের মনগড়া গল্প বিশুদ্ধ ইতিহাসে ঢুকিয়েছেন যা খুবি মূর্খতার পরিচয় । এই ইসলাম বিদ্বেষী আয়েশা (রা) কে চরিত্রহীন প্রমান করতে চেয়েছেন । যেমন একবার হাসসান (রা) অনুতপ্ত হয়ে আয়েশা (রা) কে কবিতা শোনান - "তিনি পবিত্র , ধৈর্যশিলা , নির্দোষ , তিনি সরলা নারীর গশত খান না" - উইলিয়াম মেইবার এই কবিতা নিইয়ে লিখেন যে, কবিতা খুব চমৎকার কারন তাতে আয়েশা এর পবিত্রতা সৌন্দর্য বুদ্দিমত্তা আর নিখুত কমনীয় দেহের বর্ণনা ছিল ।

= উইলিয়াম মেইবার বাচ্চাসুলভ দাবি করলেন । হাসসান (রা) যখন কবিতাটি পাঠ করেন তখন আয়েশা (রা) এর বয়স ৪০ বছর । তাছাড়া কবিতার কথাও দেহের কথা নাই । লেখক যেই লাইনে বেশি ঘাবলা করেছে তা হলঃ "তিনি সরলা, নারীর গশত খান না" লেখক জানে না আরবি ব্যাকরণে "কারো গশত ভক্ষণ করা" বলতে গীবতকে বুঝানো হয় । আসলে এর দ্বারা বুঝায় যে আয়েশা (রা) কারো গীবত করেন না । অনেক নোংরা বাজে কথা ঐ মূর্খ লেখক উইলিয়াম মেইবার বলার পরেই অবশ্য হতাশ হয়ে লিখতে বাধ্য হন- আয়েশার আগের জীবন আমাদের আশ্বস্ত করে তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন । 

এ ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পেরেছি একজন পবিত্র নারীর ওপর বেভিচারের অপবাদ কেউ দিলে তার কি করা উচিত । আর কুরআন নারীর ওপর অপবাদ আরোপ কারীদের শাস্তি আরোপ করেছে । সুরা নুর ২৪:৪= যারা সতিসাধ্যি নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতপর স্বপক্ষে চারজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনো তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না । এরাই নাফরমান ।

মিসতাহ (রা) ভুলক্রমে এ কুৎসায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলেন । অথচ তার ভরন পোষণ করতেন আবু বকর (রা) । নিজের মেয়েকে উক্ত অপবাদ দিতে দেখে তিনি মিসতাহ (রা) সাহায্য করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেন । তখন সুরা নুরের ২২ নং আয়াত নাযিল হয়ঃ তোমাদের মধ্যে যারা উচ্চ মর্যাদার ও আর্থিক প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন কসম না খায় যে, তারা আত্মীয় স্বজনকে অভাবগ্রস্থকে এবং আল্লাহ্‌র পথে হিজরতকারিদেরকে কিছুই দেবে না। তাদের ক্ষমা করা উচিত এবং দোষত্রুটি উপেক্ষা করা উচিত । তোমরা কি কামনা করো না যে আল্লাহ্‌ তোমাদের ক্ষমা করেন ? আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু । 

এ ঘটনা গুলা প্রমান করে কুরআন রাসুল (সা) এর নিজের কোন পার্সোনাল বই ছিল না । তানা হলে নিজ স্ত্রীকে নিজে বাজে মন্তব্যকারীর সাহায্য বন্ধ হতে দেখে উনার খুশি হওয়া উচিৎ ছিল । এটাই স্বাভাবিক ও মানবীয় । এ ঘটনা বাস্তব প্রমান কুরআন মানুষের তৈরি বই না বরং আল্লাহ্‌র কুরআন এটাই সত্য ।

Posted at June 02, 2020 |  by Arya ঋষি

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ প্রথমে আমরা চাঁদ দুই ভাগ ব্যাপারে আলোচনা করব ।

* সিরাতুল মুস্তফা (সা) ১/ ২০৭,২০৯, আল্লামা ইদরিস কান্ধলবি (রহ): একবার মুশরিকগন একত্রিত হয়ে নবী (সা) এর কাছে এলো। যাদের মধ্যে ওলিদ ইবনে মুগিরা, আবু জায়েল, আস ইবনে ওয়ায়েল, আস ইবনে হিশাম, আসওয়াদ ইবনে আবদ ইয়াগুস, আসওয়াদ ইবনে মুত্তালিব, নযর ইবনে হারিস ছিল । এরা নবী মুহাম্মদ (সা) এর কাছে এসে আবদার করলো, যদি আপনি সত্যিই আল্লাহ্‌র নবী হয়ে থাকেন তবে নবুওয়াতের বিশেষ কোন নিদর্শন দেখান । চাঁদকে দুই টুকরা করে দেখান । তখন রাত ছিল । নবী (সা) বলেন, যদি এ মোজেজা দেখাই তাহলে ইমান আনবে তো ? তারা বলল হ্যাঁ । আমরা ইমান আনব । নবী (সা) আল্লাহ্‌র নিকট দোয়া করলেন এবং পবিত্র আঙুল দিয়ে চাঁদের প্রতি ইশারা করলেন, সাথে সাথে চাঁদ দুই টুকরা হয়ে গেল । এক টুকরা আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর এবং ওপর টুকরা কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল । দীর্ঘক্ষণ মানুষ আশ্চর্য হয়ে দেখতে থাকে এবং ওরা এত আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল যে, কাপড় দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে থাকে । এবং চাঁদের দিকে দেখতে থাকে, এতে চাঁদ পরিষ্কার দুই টুকরা দেখা যেতে থাকে ।

রাসুল (সা) তখন বলছিলেন আশহাদু, আশহাদু , হে লোকেরা সাক্ষ্য থাকো, সাক্ষ্য থাকো। আসর এবং মাগরিবের মধ্যে যতটা সময় থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত চাঁদ দু টুকরা থাকে, পরে আবার তা একত্রিত হয়ে যায় । মক্কার মুশরিকরা বলল, মুহাম্মদ তুমি যাদু করেছ, তাই বাইরে থেকে আগত মুসাফিরদের অপেক্ষা করো এবং তাদের জিজ্ঞেস করো । কেননা এটা কখনোই সম্ভব না যে মুহাম্মদ সমস্ত লোকের উপর যাদু করবে । যদি তারাও এ ব্যাপারে নিজেরা সাক্ষ্য দেয়, তবে ঠিক আছে। যদি তারা বলে, আমরা দেখিনি, তবে নিশ্চিত মুহাম্মদ তোমাদের উপর যাদু করেছে । পরে মুসাফিরদের জিজ্ঞেস করা হয় , সমস্ত দিক থেকে আগত মুসাফিররা সাক্ষ্য দিল যে, আমরা চাঁদকে দুই টুকরো হতে দেখেছি । তারপরেও ঐ মুশরিকরা ইমান আনল না । বরং বলল, এটা চিরাচরিত যাদু ।

চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ঘটনা আরও পাবেনঃ

* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/১১৮ ।
* ই,ফা, সিরাতে বিশ্ব কোষ , ৯/২৫৯ ।
* ই,ফা, সহিহ বুখারি, ৬/ ২৪৭ ও ৩৯৭ ।
* বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার প্রকাশিত, সহিহ মুসলিম, ৮/৩৬০ ।

উপরের ঘটনা থেকে আমাদের কিছু দাবী, প্রশ্ন এবং যৌক্তিক ব্যাখ্যাঃ

১/ উপস্থিত সব কাফেররা অস্বীকার করেনি যে "মুহাম্মদ তুমি চাঁদকে দুই ভাগ করতে পারোনি" বরং তারা বলেছিল "মুহাম্মদ তুমি যাদু করেছ" অর্থাৎ এটা থেকে প্রমান হয় নবীজি (সা) কাফেরদের চাঁদ দুই ভাগ করে দেখিয়েছিলেন , সেটা কাফেরদের কাছে যাদু মনে হয়েছে।

২/ ঘটনার বাইরে যারা সফরে ছিলেন তারাও সাক্ষী দিয়েছেন যে তারা চাঁদকে দুই ভাগ হতে দেখেছে ।

৩/ দুনিয়ার সবাই কেন দেখল না ? উত্তর হলঃ যেহেতু ঘটনা ঘটেছে রাতে আর তাও ১ ঘণ্টার জন্য (আছর থেকে মাগরিব সময়) তাই দুনিয়ার সবার দেখা সম্ভব ছিল না । কারন এক দেশে যখন রাত অন্য দেশে তখন দিন থাকে ।

৪/ চাঁদ দুই ভাগ হওয়া অসম্ভব না বরং এটি একটি ছোট বিষয় । এরচেয়ে বড় বিষয় হল এক সময় সব ধ্বংস হয়ে যাবে । এটি বিজ্ঞান মামারাও বলে । সুতরাং চাঁদ এক সময় ধ্বংস হবে এটা বড় ব্যাপার, এটা মানতে আমাদের অসুবিধা নেই তাহলে আল্লাহ্‌র হুকুমে মাত্র ১ ঘণ্টার জন্য চাঁদ দুই ভাগ হয়েছিল এটা মানতে আমাদের কেন অসুবিধা হবে ?

৫/ প্রকৃতির এক ধর্ম হল মধ্যকর্ষণ শক্তি যা সবসময় নিচের দিকে টানে । কিন্তু মানুষ প্রকৃতির এই নিয়ম ভেঙ্গে প্ল্যান তৈরি করেছে যে আকাশে উড়ে । তাহলে মানুষ যদি প্রকৃতির এই নিয়ম ভাঙতে পারে তাহলে সর্ব শক্তিমান আল্লাহ্‌ যিনি প্রকৃতির সৃষ্টিকর্তা, চাঁদের সৃষ্টিকর্তা কেন কিছু সময়ের জন্য চাঁদকে দুই ভাগ করে আবার মিলাতে পারবে না ? অবশ্যই পারবে । এটা আল্লাহ্‌র জন্য খুবই সহজ ।

৬/ "চাঁদের এক টুকরা আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর এবং ওপর টুকরা কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল" এটা কিভাবে পসিবল ? উত্তর হলঃ চাঁদের উক্ত অংশ পাহাড়ের সাথে ঘেঁষে ছিল এমনটি নয় বরং যখন চাঁদ দুই ভাগ হয় তখন এক ভাগ আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর ছিল আরেক ভাগ কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল এরমানে এই না যে পাহাড়ের মধ্যে ঘেঁষে ছিল আর মানুষ সেই অংশ নিজ হাতে ধরেছে ! এমন কিছুই নয় । যেমন আমরা দেখি সূর্য পানিতে ডুবে যায় , যখন ডুবে তখন মনে হয় পানির উপরেই সূর্য নেমেছে, আসলে তা না , একই ভাবে চাঁদের ক্ষেত্রেও ।

৭/ আল ইসাবাহ, ৩/২৭৯ এবং লিসানুল মীযান জাহাবি ৩/১০ আছেঃ ভারতের বর্তমান কেরালা প্রদেশের মালাবার অঞ্চলের "কোডুঙোলর" এলাকায় ২৬ বছর সম্রাট ছিলেন রাজা চেরেমান পেরুমল । তার উপাধি চক্রবতি ফারমাস । রাসুল (সা) এর চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হবার মোজেজা তিনি ভারত থেকে স্বচক্ষে অবলোকন করেন। মালাবারে আগত আরব বণিকদের থেকে তিনি নবিজির খবর পান এবং মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন । সেখানে রাসুল (সা) এর সাথে দেখা হয় ও ইসলাম গ্রহণ করে । আবু বকর (রা) সহ আরও কয়েকজন সাহাবীর উপস্থিতিতে স্বয়ং আল্লাহ্‌র হাবীব (সা) নাম রাখেন "তাজউদ্দিন" । রাজা চেরামান পেরুমল রাসুলের জন্য উপহার স্বরূপ দক্ষিন ভারতের বিখ্যাত আচার নিয়ে গিয়েছিলেন । ভারতীয় এক বাদশাহ থেকে আদার সংমিশ্রণে তৈরি সেই আচার সংক্রান্ত হাদিসও আমরা দেখতে পাই। প্রখ্যাত সাহাবী আবু সাইদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে হাদিসটি । হাদিস সংকলনকারী হাকিম (রহ) তাঁর "মুস্তাদরাক" নামক কিতাবে হাদিসটি সংকলন করেছেন । আবু সাইদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত ভারতীয় মহারাজ নবীজি (সা) এর জন্য এক বয়াম আচার নিয়ে আসলেন যার মধ্যে আদার টুকরা ছিল । নবীজি (সা) সেই টুকরোগুলো তাঁর সাহাবীদের ভাগ করে দিলেন । আমিও খাবার জন্য এক টুকরা ভাগে পেয়েছিলাম । রাজা চেরামান পেরুমল ৪,৫ বছর সেখানে অবস্থান করেন । রাসুলের আদেশে ভারতে রওনা হন কিন্তু পথিমধ্যে দক্ষিন পূর্ব আরবের এক বন্দরে (বর্তমানে ওমানের সালালা শহর) অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান । আজও তাঁর কবর রয়েছে ওমানের সালালা শহরে ।"সারবানাক" নামে আরবরা তাঁকে চিনত । (ই,ফাঃ তাফসীরে মারেফুল কুরআন, ৮ খণ্ড, সুরা কামারের তাফসীর, "তারিখে ফিরিশতা" কিতাবের বরাতে এই ঘটনা উল্লেখ আছে)

নবী মুহাম্মদ (সা) এর মেরাজের ঘটনাঃমেরাজের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

* সিরাতুন নবী (সা) , ২/ ৭২-৮২, ইবনে হিশাম (রহ): রাসুল (সা) একটি বোরাখের মাধ্যমে মিরাজ গমন করেন । বোরাখ একটি চতুস্পদ জন্তু । এটি এত দ্রুত যে, তার এক একটি পদক্ষেপ হয় তার দৃষ্টির শেষ সীমানা । রাসুল (সা) মিরাজে গমনকালে জান্নাত,জাহান্নাম সহ সব দেখেন। এমনকি নবী রাসুলদের সাথে দেখা হয় । ইত্যাদি ইত্যাদি । পরদিন ফজরের পর সকালে কুরাইশদের কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করেন । কাফেররা অস্বীকার করে ও হাসাহাসি করে । হযরত আবু বকর (রা) এর কাছে মিরাজের খবর পৌঁছলে তিনি রাসুল (সা) এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহ্‌র নবী আপনি কি এদের কাছে বলেছেন যে , ঐ রাতে আপনি বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়েছিলেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ । আবু বকর (রা) বলেন, হে আল্লাহ্‌র নবী সে মসজিদটির বর্ণনা দিন তো কারন আমি সেখানে গিয়েছিলাম ।

তখন রাসুল (সা) বললেন, তখন আমার সামনে বায়তুল মুকাদ্দাসকে তুলে ধরা হল আর আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম । এরপরে রাসুল (সা) আবু বকর (রা) কাছে বায়তুল মুকাদ্দাসের বর্ণনা দিতে লাগলেন । আর আবু বকর (রা) প্রতিবারই বলতে থাকেন, আপনি সত্যিই বলেছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আল্লাহ্‌র রাসুল । এরপরেই রাসুল (সা) আবু বকর (রা) কে সত্যবাদী তথা সিদ্দিক উপাধি দেয় ।

* ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ৬/৪০৮, হাদিসঃ ৩৬০৭ সহিহ হাদিসঃ জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি রাসুল (সা) কে বলতে শুনেছেন, যখন মিরাজের ব্যাপারে কুরাইশরা অস্বীকার করলো, তখন আমি কাবা শরীফের হিজর অংশে দাঁড়ালাম । আল্লাহ্‌ পাক তখন আমার সম্মুখে বায়তুল মুকাদ্দাসকে প্রকাশ করে দিলেন । যার ফলে আমি দেখে দেখে বায়তুল মুকাদ্দাসের নিদর্শন সমূহ তাদের কাছে বর্ণনা করছিলাম ।

উপরের তথ্য হতে আমাদের দাবী হলঃ

১/ আল্লাহ্‌র কাছে দ্রুতগামী বোরাখ সৃষ্টি একেবারেই সহজ ।

২/ রাসুল (সা) যে মিরাজে গিয়েছিলেন তার প্রমান স্বরূপ তিনি কাফেরদের বায়তুল মুকাদ্দাসের বিস্তারিত বর্ণনা দেন যা সব সত্য হয়েছিল এবং কেউই অস্বীকার করতে পারেননি ।

৩/ সময় এর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্‌ । তাই আল্লাহ্‌ সময়কে পুরপুরি নিয়ন্ত্রণ করাও পসিবল । সময়কে থামিয়ে নবী মুহাম্মদ (সা) কে মিরাজে নিয়ে যাওয়া আল্লাহ্‌র জন্য খুবই সহজ ।

আল্লাহ্‌ সর্বশক্তিমানঃ তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবানঃতিনি সব কিছু করতে সক্ষমঃ

* সুরা আল ইমরান ৩:১৮৯
* সুরা মায়দা ৫:১২০
* সুরা নাহল ১৬:৭০
* সুরা হজ ২২:৬
* সুরা নুর ২৪:৪৫
* সুরা আনকাবুত ২৯:২০
* সুরা রুম ৩০:৫০
* সুরা ফাতির ৩৫:১
* সুরা ফুসসিলাত ৪১:৩৯
* সুরা শুরা ৪২:৯
* সুরা হাদিদ ৫৭:২
* সুরা তাগাবুন ৬৪:১

প্রশ্নঃ চাঁদ দুই ভাগ হওয়া এবং নবী মুহাম্মদ (সা) এর মিরাজের ঘটনা কি মিথ্যা?


লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ প্রথমে আমরা চাঁদ দুই ভাগ ব্যাপারে আলোচনা করব ।

* সিরাতুল মুস্তফা (সা) ১/ ২০৭,২০৯, আল্লামা ইদরিস কান্ধলবি (রহ): একবার মুশরিকগন একত্রিত হয়ে নবী (সা) এর কাছে এলো। যাদের মধ্যে ওলিদ ইবনে মুগিরা, আবু জায়েল, আস ইবনে ওয়ায়েল, আস ইবনে হিশাম, আসওয়াদ ইবনে আবদ ইয়াগুস, আসওয়াদ ইবনে মুত্তালিব, নযর ইবনে হারিস ছিল । এরা নবী মুহাম্মদ (সা) এর কাছে এসে আবদার করলো, যদি আপনি সত্যিই আল্লাহ্‌র নবী হয়ে থাকেন তবে নবুওয়াতের বিশেষ কোন নিদর্শন দেখান । চাঁদকে দুই টুকরা করে দেখান । তখন রাত ছিল । নবী (সা) বলেন, যদি এ মোজেজা দেখাই তাহলে ইমান আনবে তো ? তারা বলল হ্যাঁ । আমরা ইমান আনব । নবী (সা) আল্লাহ্‌র নিকট দোয়া করলেন এবং পবিত্র আঙুল দিয়ে চাঁদের প্রতি ইশারা করলেন, সাথে সাথে চাঁদ দুই টুকরা হয়ে গেল । এক টুকরা আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর এবং ওপর টুকরা কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল । দীর্ঘক্ষণ মানুষ আশ্চর্য হয়ে দেখতে থাকে এবং ওরা এত আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল যে, কাপড় দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে থাকে । এবং চাঁদের দিকে দেখতে থাকে, এতে চাঁদ পরিষ্কার দুই টুকরা দেখা যেতে থাকে ।

রাসুল (সা) তখন বলছিলেন আশহাদু, আশহাদু , হে লোকেরা সাক্ষ্য থাকো, সাক্ষ্য থাকো। আসর এবং মাগরিবের মধ্যে যতটা সময় থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত চাঁদ দু টুকরা থাকে, পরে আবার তা একত্রিত হয়ে যায় । মক্কার মুশরিকরা বলল, মুহাম্মদ তুমি যাদু করেছ, তাই বাইরে থেকে আগত মুসাফিরদের অপেক্ষা করো এবং তাদের জিজ্ঞেস করো । কেননা এটা কখনোই সম্ভব না যে মুহাম্মদ সমস্ত লোকের উপর যাদু করবে । যদি তারাও এ ব্যাপারে নিজেরা সাক্ষ্য দেয়, তবে ঠিক আছে। যদি তারা বলে, আমরা দেখিনি, তবে নিশ্চিত মুহাম্মদ তোমাদের উপর যাদু করেছে । পরে মুসাফিরদের জিজ্ঞেস করা হয় , সমস্ত দিক থেকে আগত মুসাফিররা সাক্ষ্য দিল যে, আমরা চাঁদকে দুই টুকরো হতে দেখেছি । তারপরেও ঐ মুশরিকরা ইমান আনল না । বরং বলল, এটা চিরাচরিত যাদু ।

চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ঘটনা আরও পাবেনঃ

* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/১১৮ ।
* ই,ফা, সিরাতে বিশ্ব কোষ , ৯/২৫৯ ।
* ই,ফা, সহিহ বুখারি, ৬/ ২৪৭ ও ৩৯৭ ।
* বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার প্রকাশিত, সহিহ মুসলিম, ৮/৩৬০ ।

উপরের ঘটনা থেকে আমাদের কিছু দাবী, প্রশ্ন এবং যৌক্তিক ব্যাখ্যাঃ

১/ উপস্থিত সব কাফেররা অস্বীকার করেনি যে "মুহাম্মদ তুমি চাঁদকে দুই ভাগ করতে পারোনি" বরং তারা বলেছিল "মুহাম্মদ তুমি যাদু করেছ" অর্থাৎ এটা থেকে প্রমান হয় নবীজি (সা) কাফেরদের চাঁদ দুই ভাগ করে দেখিয়েছিলেন , সেটা কাফেরদের কাছে যাদু মনে হয়েছে।

২/ ঘটনার বাইরে যারা সফরে ছিলেন তারাও সাক্ষী দিয়েছেন যে তারা চাঁদকে দুই ভাগ হতে দেখেছে ।

৩/ দুনিয়ার সবাই কেন দেখল না ? উত্তর হলঃ যেহেতু ঘটনা ঘটেছে রাতে আর তাও ১ ঘণ্টার জন্য (আছর থেকে মাগরিব সময়) তাই দুনিয়ার সবার দেখা সম্ভব ছিল না । কারন এক দেশে যখন রাত অন্য দেশে তখন দিন থাকে ।

৪/ চাঁদ দুই ভাগ হওয়া অসম্ভব না বরং এটি একটি ছোট বিষয় । এরচেয়ে বড় বিষয় হল এক সময় সব ধ্বংস হয়ে যাবে । এটি বিজ্ঞান মামারাও বলে । সুতরাং চাঁদ এক সময় ধ্বংস হবে এটা বড় ব্যাপার, এটা মানতে আমাদের অসুবিধা নেই তাহলে আল্লাহ্‌র হুকুমে মাত্র ১ ঘণ্টার জন্য চাঁদ দুই ভাগ হয়েছিল এটা মানতে আমাদের কেন অসুবিধা হবে ?

৫/ প্রকৃতির এক ধর্ম হল মধ্যকর্ষণ শক্তি যা সবসময় নিচের দিকে টানে । কিন্তু মানুষ প্রকৃতির এই নিয়ম ভেঙ্গে প্ল্যান তৈরি করেছে যে আকাশে উড়ে । তাহলে মানুষ যদি প্রকৃতির এই নিয়ম ভাঙতে পারে তাহলে সর্ব শক্তিমান আল্লাহ্‌ যিনি প্রকৃতির সৃষ্টিকর্তা, চাঁদের সৃষ্টিকর্তা কেন কিছু সময়ের জন্য চাঁদকে দুই ভাগ করে আবার মিলাতে পারবে না ? অবশ্যই পারবে । এটা আল্লাহ্‌র জন্য খুবই সহজ ।

৬/ "চাঁদের এক টুকরা আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর এবং ওপর টুকরা কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল" এটা কিভাবে পসিবল ? উত্তর হলঃ চাঁদের উক্ত অংশ পাহাড়ের সাথে ঘেঁষে ছিল এমনটি নয় বরং যখন চাঁদ দুই ভাগ হয় তখন এক ভাগ আবু কুবায়স পাহাড়ের উপর ছিল আরেক ভাগ কায়কোয়ান পাহাড়ের উপর ছিল এরমানে এই না যে পাহাড়ের মধ্যে ঘেঁষে ছিল আর মানুষ সেই অংশ নিজ হাতে ধরেছে ! এমন কিছুই নয় । যেমন আমরা দেখি সূর্য পানিতে ডুবে যায় , যখন ডুবে তখন মনে হয় পানির উপরেই সূর্য নেমেছে, আসলে তা না , একই ভাবে চাঁদের ক্ষেত্রেও ।

৭/ আল ইসাবাহ, ৩/২৭৯ এবং লিসানুল মীযান জাহাবি ৩/১০ আছেঃ ভারতের বর্তমান কেরালা প্রদেশের মালাবার অঞ্চলের "কোডুঙোলর" এলাকায় ২৬ বছর সম্রাট ছিলেন রাজা চেরেমান পেরুমল । তার উপাধি চক্রবতি ফারমাস । রাসুল (সা) এর চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হবার মোজেজা তিনি ভারত থেকে স্বচক্ষে অবলোকন করেন। মালাবারে আগত আরব বণিকদের থেকে তিনি নবিজির খবর পান এবং মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন । সেখানে রাসুল (সা) এর সাথে দেখা হয় ও ইসলাম গ্রহণ করে । আবু বকর (রা) সহ আরও কয়েকজন সাহাবীর উপস্থিতিতে স্বয়ং আল্লাহ্‌র হাবীব (সা) নাম রাখেন "তাজউদ্দিন" । রাজা চেরামান পেরুমল রাসুলের জন্য উপহার স্বরূপ দক্ষিন ভারতের বিখ্যাত আচার নিয়ে গিয়েছিলেন । ভারতীয় এক বাদশাহ থেকে আদার সংমিশ্রণে তৈরি সেই আচার সংক্রান্ত হাদিসও আমরা দেখতে পাই। প্রখ্যাত সাহাবী আবু সাইদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে হাদিসটি । হাদিস সংকলনকারী হাকিম (রহ) তাঁর "মুস্তাদরাক" নামক কিতাবে হাদিসটি সংকলন করেছেন । আবু সাইদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত ভারতীয় মহারাজ নবীজি (সা) এর জন্য এক বয়াম আচার নিয়ে আসলেন যার মধ্যে আদার টুকরা ছিল । নবীজি (সা) সেই টুকরোগুলো তাঁর সাহাবীদের ভাগ করে দিলেন । আমিও খাবার জন্য এক টুকরা ভাগে পেয়েছিলাম । রাজা চেরামান পেরুমল ৪,৫ বছর সেখানে অবস্থান করেন । রাসুলের আদেশে ভারতে রওনা হন কিন্তু পথিমধ্যে দক্ষিন পূর্ব আরবের এক বন্দরে (বর্তমানে ওমানের সালালা শহর) অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান । আজও তাঁর কবর রয়েছে ওমানের সালালা শহরে ।"সারবানাক" নামে আরবরা তাঁকে চিনত । (ই,ফাঃ তাফসীরে মারেফুল কুরআন, ৮ খণ্ড, সুরা কামারের তাফসীর, "তারিখে ফিরিশতা" কিতাবের বরাতে এই ঘটনা উল্লেখ আছে)

নবী মুহাম্মদ (সা) এর মেরাজের ঘটনাঃমেরাজের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

* সিরাতুন নবী (সা) , ২/ ৭২-৮২, ইবনে হিশাম (রহ): রাসুল (সা) একটি বোরাখের মাধ্যমে মিরাজ গমন করেন । বোরাখ একটি চতুস্পদ জন্তু । এটি এত দ্রুত যে, তার এক একটি পদক্ষেপ হয় তার দৃষ্টির শেষ সীমানা । রাসুল (সা) মিরাজে গমনকালে জান্নাত,জাহান্নাম সহ সব দেখেন। এমনকি নবী রাসুলদের সাথে দেখা হয় । ইত্যাদি ইত্যাদি । পরদিন ফজরের পর সকালে কুরাইশদের কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করেন । কাফেররা অস্বীকার করে ও হাসাহাসি করে । হযরত আবু বকর (রা) এর কাছে মিরাজের খবর পৌঁছলে তিনি রাসুল (সা) এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহ্‌র নবী আপনি কি এদের কাছে বলেছেন যে , ঐ রাতে আপনি বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়েছিলেন ? তিনি বললেন, হ্যাঁ । আবু বকর (রা) বলেন, হে আল্লাহ্‌র নবী সে মসজিদটির বর্ণনা দিন তো কারন আমি সেখানে গিয়েছিলাম ।

তখন রাসুল (সা) বললেন, তখন আমার সামনে বায়তুল মুকাদ্দাসকে তুলে ধরা হল আর আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম । এরপরে রাসুল (সা) আবু বকর (রা) কাছে বায়তুল মুকাদ্দাসের বর্ণনা দিতে লাগলেন । আর আবু বকর (রা) প্রতিবারই বলতে থাকেন, আপনি সত্যিই বলেছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আল্লাহ্‌র রাসুল । এরপরেই রাসুল (সা) আবু বকর (রা) কে সত্যবাদী তথা সিদ্দিক উপাধি দেয় ।

* ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ৬/৪০৮, হাদিসঃ ৩৬০৭ সহিহ হাদিসঃ জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি রাসুল (সা) কে বলতে শুনেছেন, যখন মিরাজের ব্যাপারে কুরাইশরা অস্বীকার করলো, তখন আমি কাবা শরীফের হিজর অংশে দাঁড়ালাম । আল্লাহ্‌ পাক তখন আমার সম্মুখে বায়তুল মুকাদ্দাসকে প্রকাশ করে দিলেন । যার ফলে আমি দেখে দেখে বায়তুল মুকাদ্দাসের নিদর্শন সমূহ তাদের কাছে বর্ণনা করছিলাম ।

উপরের তথ্য হতে আমাদের দাবী হলঃ

১/ আল্লাহ্‌র কাছে দ্রুতগামী বোরাখ সৃষ্টি একেবারেই সহজ ।

২/ রাসুল (সা) যে মিরাজে গিয়েছিলেন তার প্রমান স্বরূপ তিনি কাফেরদের বায়তুল মুকাদ্দাসের বিস্তারিত বর্ণনা দেন যা সব সত্য হয়েছিল এবং কেউই অস্বীকার করতে পারেননি ।

৩/ সময় এর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্‌ । তাই আল্লাহ্‌ সময়কে পুরপুরি নিয়ন্ত্রণ করাও পসিবল । সময়কে থামিয়ে নবী মুহাম্মদ (সা) কে মিরাজে নিয়ে যাওয়া আল্লাহ্‌র জন্য খুবই সহজ ।

আল্লাহ্‌ সর্বশক্তিমানঃ তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবানঃতিনি সব কিছু করতে সক্ষমঃ

* সুরা আল ইমরান ৩:১৮৯
* সুরা মায়দা ৫:১২০
* সুরা নাহল ১৬:৭০
* সুরা হজ ২২:৬
* সুরা নুর ২৪:৪৫
* সুরা আনকাবুত ২৯:২০
* সুরা রুম ৩০:৫০
* সুরা ফাতির ৩৫:১
* সুরা ফুসসিলাত ৪১:৩৯
* সুরা শুরা ৪২:৯
* সুরা হাদিদ ৫৭:২
* সুরা তাগাবুন ৬৪:১

Posted at June 02, 2020 |  by Arya ঋষি

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ যেই হাদিস দ্বারা ইসলাম বিদ্বেষীরা মিথ্যাকথা বলে, আসুন মনোযোগের সাথে হাদিসটি পড়ে নেইঃ

* বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারঃ সহিহ মুসলিম ৫/ ৬ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৩২৭১ : জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত , রাসুল (সা) একটি স্ত্রীলোক দেখতে পেলেন । তিনি তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে গেলেন, তখন তিনি এক টুকরো চামড়া পাক করছিলেন । তিনি তাঁর কাছ থেকে নিজের প্রয়োজন পুরন করলেন । অতপর তিনি সাহাবাদের কাছে এসে বললেন , স্ত্রীলোক শয়তানের বেশে আগমন করে এবং শয়তানের বেশে চলে যায় , অতপর তোমাদের কারো দৃষ্টি কোন স্ত্রীলোকের ওপর পড়লে সে যেন নিজের স্ত্রীর কাছে আসে । কেননা এটিই তাঁর অন্তরের কামনাকে দমন করতে পারে ।

নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ এবং উপরের হাদিস আমাদের কি শিক্ষা দেয়ঃ

১/ আমরা জানি নবী মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন । যেমন কুরানের, সুরা হামিম সিজদাহ ৬ নং আয়াতে আছেঃ বলুন আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ পার্থক্য শুদু আমার কাছে ওহী আসে । যেহেতু নবী মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন তাই তাঁর মধ্যে মানবীয় গুনাবলি থাকাই স্বাভাবিক ব্যাপার ।

২/ নবী মুহাম্মদ (সা) আমাদের শিক্ষক তাই তিনি আমাদের শিক্ষা দিলেন যে কোন নারীকে হটাত দেখলে হটাত যদি কোন পুরুষের মধ্যে কামভাব আসে তাহলে উত্তম পন্থা হল নিজের স্ত্রীর কাছে চলে যাওয়া ।এতে তার মধ্যে যেই ভাব আসছে সেটা সাথে সাথে দূর হয়ে যাবে । আর এটা এক বাস্তব কথা হল নারীদের প্রতি পুরুষের আকর্ষণ থাকবেই এটা স্বাভাবিক । হটাত একজন নারীকে দেখে পুরুষের মধ্যে কামভাব আসতেই পারে যদি কোন পুরুষের এর বেতিক্রম হয় তাহলে তার পুরুষত্বে ফেলাসি আছে ! তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া মানবতার দাবি ! চিকিৎসা বিজ্ঞানও তাই বলে ।

৩/ কোন পুরুষের মাঝে নারীকে দেখে হটাত কামভাব আসলে সে যদি সাথে সাথে তার স্ত্রীর কাছে চলে যায় তাহলে আর পরকীয়ার মত ভয়াবহ অপরাধ থেকে বেচে যাবে । নিঃসন্দেহে । আর এতে নিজের সংসার সুখের হবে ।

৪/ উপরের হাদিস নিয়ে বিদ্বেষীরা আপত্তি তুলে - নবী নাকি নারীকামী ছিলেন - কিন্তু আমরা দেখলাম , বুঝলাম যে উপরের ঘটনা হটাত ঘটেছে , মানে নারীকে দেখে হটাত মনে কামভাব এসেছে - স্বাভাবিক । এই অভিযোগ থেকে প্রমানিত হল নাস্তিক ধর্মান্ধরা অক্ষম কারন তাদের নারীদের প্রতি কোন আকর্ষণ নাই এর জন্যই তো তারা সমকামী । আশা করি সোজা হিসাব বুঝতে পেরেছেন ।

৫/ স্ত্রীলোক শয়তানের বেশে আগমন করে এবং শয়তানের বেশে চলে যায় - এর মানে কি ? উত্তর হলঃ এর দ্বারা স্ত্রীলোকের মাধ্যমে শয়তান পুরুষদের কুমন্ত্রণা দেয় আবার স্ত্রীলোকের বেশেই চলে যায় এটাই বুঝানো হয়েছে অর্থাৎ মনের কুপ্রবৃত্তিকে বুঝানো হয়েছে ।

৬/ হটাত খেয়াল আসে নবী মুহাম্মদ (সা) এরঃ ই,ফা, সহিহ বুখারি ১/ ১৬৮ পৃষ্ঠা , হাদিস নং ২৯৬: আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন তোমাদের মধ্যে নবী (সা) এর মত কাম প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখে কে ? অর্থাৎ রাসুল (সা)ই সব থেকে বেশি নিজের কাম প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখেন ।

৭/ নবী মুহাম্মদ (সা) নারীকামী ছিলেন না এর প্রমান "মুহান্নাফে আবি শাইবা, সিরাতুন্নবি , এছাড়া অন্য সিরাত এর কিতাব দেখুন" মুশরিক উতবাহ ইবনে রাবিআ রাসুল (সা) নারী , নেতৃত্ব ও সম্পদের অফার দেয় তখন রাসুল (সা) এসব সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করেন ।

৭/পরকীয়া রোধের মহা ঔষধ - বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারঃ সহিহ মুসলিম ৫/ ৮ পৃষ্ঠা , হাদিস নং ৩২৭৩: জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেছেন, আমি নবী মুহাম্মদ (সা) কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কারো মনে কোন স্ত্রীলোক দেখে মনে কিছু উদয় হলে, তাহলে সে যেন তাঁর নিজের স্ত্রীর কাছে যায় এবং তাঁর সাথে মিলিত হয় কারন এতে তাঁর মনের বিশেষেভাব দূর হবে ।

প্রশ্নঃ এক নারীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে - তা কমাতে জয়নাব (রা) এর সাথে সহবাস করেন নবী মুহাম্মদ (সা) ?


লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ যেই হাদিস দ্বারা ইসলাম বিদ্বেষীরা মিথ্যাকথা বলে, আসুন মনোযোগের সাথে হাদিসটি পড়ে নেইঃ

* বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারঃ সহিহ মুসলিম ৫/ ৬ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৩২৭১ : জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত , রাসুল (সা) একটি স্ত্রীলোক দেখতে পেলেন । তিনি তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে গেলেন, তখন তিনি এক টুকরো চামড়া পাক করছিলেন । তিনি তাঁর কাছ থেকে নিজের প্রয়োজন পুরন করলেন । অতপর তিনি সাহাবাদের কাছে এসে বললেন , স্ত্রীলোক শয়তানের বেশে আগমন করে এবং শয়তানের বেশে চলে যায় , অতপর তোমাদের কারো দৃষ্টি কোন স্ত্রীলোকের ওপর পড়লে সে যেন নিজের স্ত্রীর কাছে আসে । কেননা এটিই তাঁর অন্তরের কামনাকে দমন করতে পারে ।

নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ এবং উপরের হাদিস আমাদের কি শিক্ষা দেয়ঃ

১/ আমরা জানি নবী মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন । যেমন কুরানের, সুরা হামিম সিজদাহ ৬ নং আয়াতে আছেঃ বলুন আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ পার্থক্য শুদু আমার কাছে ওহী আসে । যেহেতু নবী মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন তাই তাঁর মধ্যে মানবীয় গুনাবলি থাকাই স্বাভাবিক ব্যাপার ।

২/ নবী মুহাম্মদ (সা) আমাদের শিক্ষক তাই তিনি আমাদের শিক্ষা দিলেন যে কোন নারীকে হটাত দেখলে হটাত যদি কোন পুরুষের মধ্যে কামভাব আসে তাহলে উত্তম পন্থা হল নিজের স্ত্রীর কাছে চলে যাওয়া ।এতে তার মধ্যে যেই ভাব আসছে সেটা সাথে সাথে দূর হয়ে যাবে । আর এটা এক বাস্তব কথা হল নারীদের প্রতি পুরুষের আকর্ষণ থাকবেই এটা স্বাভাবিক । হটাত একজন নারীকে দেখে পুরুষের মধ্যে কামভাব আসতেই পারে যদি কোন পুরুষের এর বেতিক্রম হয় তাহলে তার পুরুষত্বে ফেলাসি আছে ! তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া মানবতার দাবি ! চিকিৎসা বিজ্ঞানও তাই বলে ।

৩/ কোন পুরুষের মাঝে নারীকে দেখে হটাত কামভাব আসলে সে যদি সাথে সাথে তার স্ত্রীর কাছে চলে যায় তাহলে আর পরকীয়ার মত ভয়াবহ অপরাধ থেকে বেচে যাবে । নিঃসন্দেহে । আর এতে নিজের সংসার সুখের হবে ।

৪/ উপরের হাদিস নিয়ে বিদ্বেষীরা আপত্তি তুলে - নবী নাকি নারীকামী ছিলেন - কিন্তু আমরা দেখলাম , বুঝলাম যে উপরের ঘটনা হটাত ঘটেছে , মানে নারীকে দেখে হটাত মনে কামভাব এসেছে - স্বাভাবিক । এই অভিযোগ থেকে প্রমানিত হল নাস্তিক ধর্মান্ধরা অক্ষম কারন তাদের নারীদের প্রতি কোন আকর্ষণ নাই এর জন্যই তো তারা সমকামী । আশা করি সোজা হিসাব বুঝতে পেরেছেন ।

৫/ স্ত্রীলোক শয়তানের বেশে আগমন করে এবং শয়তানের বেশে চলে যায় - এর মানে কি ? উত্তর হলঃ এর দ্বারা স্ত্রীলোকের মাধ্যমে শয়তান পুরুষদের কুমন্ত্রণা দেয় আবার স্ত্রীলোকের বেশেই চলে যায় এটাই বুঝানো হয়েছে অর্থাৎ মনের কুপ্রবৃত্তিকে বুঝানো হয়েছে ।

৬/ হটাত খেয়াল আসে নবী মুহাম্মদ (সা) এরঃ ই,ফা, সহিহ বুখারি ১/ ১৬৮ পৃষ্ঠা , হাদিস নং ২৯৬: আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন তোমাদের মধ্যে নবী (সা) এর মত কাম প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখে কে ? অর্থাৎ রাসুল (সা)ই সব থেকে বেশি নিজের কাম প্রবৃত্তি দমন করার শক্তি রাখেন ।

৭/ নবী মুহাম্মদ (সা) নারীকামী ছিলেন না এর প্রমান "মুহান্নাফে আবি শাইবা, সিরাতুন্নবি , এছাড়া অন্য সিরাত এর কিতাব দেখুন" মুশরিক উতবাহ ইবনে রাবিআ রাসুল (সা) নারী , নেতৃত্ব ও সম্পদের অফার দেয় তখন রাসুল (সা) এসব সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করেন ।

৭/পরকীয়া রোধের মহা ঔষধ - বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারঃ সহিহ মুসলিম ৫/ ৮ পৃষ্ঠা , হাদিস নং ৩২৭৩: জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেছেন, আমি নবী মুহাম্মদ (সা) কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কারো মনে কোন স্ত্রীলোক দেখে মনে কিছু উদয় হলে, তাহলে সে যেন তাঁর নিজের স্ত্রীর কাছে যায় এবং তাঁর সাথে মিলিত হয় কারন এতে তাঁর মনের বিশেষেভাব দূর হবে ।

Posted at June 02, 2020 |  by Arya ঋষি

লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ কখনোই প্রমান করতে পারবেন না যায়েদ (রা) রাসুল (সা) এর আপন ছেলে সন্তান ছিল - চ্যালেঞ্জ দিলাম । এটাও প্রমান করতে পারবেন না যে , "ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিল" আবার চ্যালেঞ্জ দিলাম । ইসলাম বিদ্বেষীরা এই টপিকে যত অশ্লীলতার মিথ্যা দাবি করে বানিয়ে বানিয়ে বলে তারা রেফারেন্স হিসেবে "ইবনে ইসহাক, আল ওয়াকেদি , ইবনে সাদ এবং ইবনে জারির আত তাবারি থেকে বর্ণনা দেখায় । ইবনে জারির তাবারি থেকেই বেশি দেখায় কিন্তু ইবনে জারির আত তাবারি (রহ) তাঁর বইয়ের শুরুতেই তথা ভুমিকাতে পরিষ্কার লিখেছেনঃ আমি পাঠকদের সতর্ক করতে চাই যে , কিছু মানুষ আমার নিকট যে খবর বর্ণনা করেছেন সেটাই আমি এই বইতে লিখেছি, আমি যাচাই বাচাই ছাড়াই গল্পগুলার উৎস হিসেবে বর্ণনাকারীদের ধরে নিয়েছি । যদি কেউ আমার বইতে কোন ঘটনা পড়ে ভয় (ভুল) পেয়ে যান , তাহলে তার জানা উচিৎ যে , এই ঘটনা আমাদের থেকে আসেনি । কারন আমরা যা পেয়েছি তাই লিখেছি ।

তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৮০৫ পৃষ্ঠায়ঃ ইবনে কাসির (রহ) ইবনে জারির আত তাবারি (রহ) এর ঐ নীতির সমালোচনা করে লেখেন , ইমাম ইবনে জারির (রহ) এমন অনেক কিছুই বহু আসার বর্ণনা করেছেন যা সঠিক নয় , যেগুলো বর্ণনা করাও উচিৎ নয় বলেই আমরা তা ছেড়ে দিলাম । কারন এগুলোর মধ্যে একটিও প্রমানিত ও সঠিক নয় ।

* ইসলাম বিদ্বেষীরা তাবারি, ইবনে ইসহাক এবং সোর্স থেকে যেই কথা গুলো বলে তা ভিত্তিহীন নিঃসন্দেহে আর উক্ত ঘটনার কোন সঠিক প্রমানও নাই । কারন উক্ত সনদে এক লোকের নাম আল ওয়াকেদি যাকে মুহাদ্দিসিনে কেরাম মিথ্যাবাদী বলেছেন । তার বর্ণিত কিছুই গ্রহণ যোগ্য না । "মিযানুল ই"তেদাল ফি নাকদির রিজাল"৬/২৭৩ পৃষ্ঠায়ঃ ইমাম ইবনে হাম্বল (রহ) বলেন যে, সে মিথ্যাবাদী , যে কিনা হাদিস বানাতো । ইমাম দাউদ (রহ) বলেনঃ আমার কোন সন্দেহ নাই যে, সে বনোয়াট হাদিস বর্ণনা করে । "তাহযিব আত তাহযিব" গ্রন্থে ইমাম আন নাওয়ায়ী (রহ) বলেন, মুহাদ্দিসিনের ইজমা আছে যে, সে হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে পরিত্যাজ্য ।

মুল ঘটনা ধাপে ধাপে জেনে নেইঃ

* তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৮০৫ পৃষ্ঠায়ঃ রাসুল (সা) সর্ব প্রথম যায়েদ (রা) পয়গাম নিয়ে জয়নাব বিনতে জাহশ (রা) এর কাছে যান বা হাজির হন । প্রথমে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেন ।

* তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৭৩৮ পৃষ্ঠায়ঃ প্রথমে পালক পুত্রকে নিজের রক্তের সন্তান মনে করা হত যা ছিল ভুল তাই এই প্রথাকে ইসলাম বাতিল করে দেয় । পরবর্তীতে রাসুল (সা) যায়েদ (রা) কে নিজের পুত্র বলে সম্বোধন করেননি বরং বলেছিলেন তুমি আমার ভাই ও বন্ধু ।

* সিরাতে মস্তফা, ৭২৮ পৃষ্ঠায়, মাও ইদ্রিস কান্ধলভি (রহ): হযরত যায়েদ (রা) ও জয়নাব (রা) মধ্যে মনমালিন্য দেখা যায় । পরে যায়েদ (রা) রাসুলের কাছে বার বার জয়নাব (রা) কে তালাক দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, রাসুল (সা) বিয়ে ভাঙতে নিষেধ করেন এবং বলেন , তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় করো ।

* সুরা আহযাব, ৩৭ আয়াতঃ আল্লাহ্‌ বলেনঃ আল্লাহ্‌ যাকে অনুগ্রহ করেছেন আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন । তাকে যখন আপনি বলেছিলেন তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দেও এবং আল্লাহকে ভয় করো । আপনি অন্তরে এমন বিষয়ে গোপন রাখছিলেন যা আল্লাহ্‌ প্রকাশ করে দেবেন । আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আল্লাহ্‌কেই অধিক ভয় করা উচিৎ । অতপর যায়েদ যখন জয়নাব এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সে সব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে ।

* ইফাঃ সহিহ বুখারি, ১০/৫৫৬-৫৫৭ পৃষ্ঠা , হাদিস নং: ৬৯১৫: হযরত জয়নাব (রা) নবী সহধর্মিণীর কাছে এই বলে গৌরব করতেন যে , তোমাদেরকে বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবার পরিজন আর আমাকে স্বয়ং আল্লাহ্‌ সাত আসমানের ওপরে বিয়ে দিয়েছেন ।

উপরের বিশুদ্ধ তথ্যগুলা সামনে রেখে আমরা মজবুতভাবে দাবি করতেই পারি যেঃ

১/ বিজ্ঞান না শুদু সাধারণত সবাই জানে, "পালক পুত্র" নিজের আপন পুত্র না । তাই "নবিজি (সা) তাঁর আপন ছেলের বউকে বিয়ে করেছেন" এই কথা মিথ্যা , ভুল এবং ভিত্তিহীন । আর আপনি যদি এই কথার সাথে একমত না হন তাহলে প্রমান করুন অন্যের ছেলে কিভাবে নিজের রক্তের সন্তান হয় ? বিশুদ্ধ ইতিহাস ইতিহাস থেকে এটাও প্রমান করুন "যায়েদ (রা) রাসুল (রা) এর রক্তের আপন সন্তান ছিলেন" ?

২/ ইবনে ইসহাক, আল ওয়াকেদি, ইবনে সাদ এবং ইবনে জারির আত তাবারি থেকে যে হাদিস গুলা দ্বারা ইসলাম বিদ্বেষী মিথ্যাবাদীরা মিথ্যাকথা বলে সে হাদিসগুলো জাল । তাই জাল হাদিস দিয়ে কোন দাবি করলে তা নিঃসন্দেহে গ্রহণযোগ্য হবে না । বাতিল । সোজা হিসাব ।

৩/ প্রাচিন যুগে অন্যের ছেলেকে মানুষ প্রথমে নিজের রক্তের সন্তান ভাবত যা ছিল মিথ্যা তাই আল্লাহ্‌ নবীর মাধ্যমে এই মিথ্যাচার সরাসরি চিরতরে অফ করে দেন ।

৪/ হযরত যায়েদ (রা) নিজেই জয়নাব (রা) কে "তালাক" দেন । তাই জয়নাব (রা) আর যায়েদ (রা) এর স্ত্রী থাকেন না । রাসুল (রা) ও জয়নাব (রা) দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে যায়েদ (রা) আপত্তির প্রশ্নই আসেন না যেহেতু তিনি নিজেই আগে তালাক দেন জয়নাব (রা)কে । ইদ্দত শেষে, আল্লাহ্‌র হুকুমে রাসুল (সা) জয়নাব (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দেন , এরপরে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় । স্বামী স্ত্রী পবিত্র সম্পর্ক ।

৫/ "মুসনাদে আবু হাতিম" গ্রন্থে কুরানের এই আয়াতঃ অন্তরে যে বিষয় গোপন করেছিলেন" এ দ্বারা বুঝানো হয়েছে জয়নাব (রা) যে রাসুলের স্ত্রী হবেন এ কথা বহু আগেই আল্লাহ্‌ তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু রাসুল (সা) এ কথা প্রকাশ করেননি বরং তিনি যায়েদ (রা) কে স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে বলেছিলেন । তাই আল্লাহ্‌ এ আয়াত দ্বারা বুঝালেন রাসুল যতই গোপন রাখুক না কেন আল্লাহ্‌ তা প্রকাশ করে দিবেন । এছাড়া রাসুল (সা) কে স্বয়ং আল্লাহ্‌ সংশোধন করেছেন এই বলে যে "আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আলাহকেই বেশি ভয় করা উচিৎ" । হযরত মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন তাই তাঁর মাঝে এই খেয়াল আশা স্বাভাবিক তাই আল্লাহ্‌ তাঁকে সংশোধন করে দিলেন ।

৬/ নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডেও আসলে এটি কোন অভিযোগের মধ্যেই পড়ে না কারন নাস্তিক ধর্মের দেবদ্যূত ড হুমায়ূন আজাদ তার "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৪৩ পৃষ্ঠায় বলেছেনঃ নৈতিকতার সীমা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ । আমার কোন কাজ যেন অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে,এটুকু । নাস্তিক ধর্মের এই ফতোয়ার আলোকে কি প্রমান হয়েছে যে নবী (সা) জোর করে জয়নাব (রা) কে বিয়ে করেছেন ? উত্তর হচ্ছে না । নবীজি (সা) এবং হযরত জয়নাব (রা) এর সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছিল এবং এখানে হযরত যায়েদ (রা) বিন্দুমাত্র কোন আপত্তি ছিল সুতরাং এই বিয়েতে কেউই ক্ষতিগ্রস্থ হয় নি তাই নাস্তিক ধর্মের ফতোয়া অনুযায়ী এটি কোন আপত্তিকর কিছুই না বরং স্বাভাবিক একটি ঘটনা । 

প্রশ্নঃ নিজের আপন ছেলের বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিল নবী মোহাম্মদ (সা) ?


লিখেছেনঃ এম ডি আলী

উত্তরঃ কখনোই প্রমান করতে পারবেন না যায়েদ (রা) রাসুল (সা) এর আপন ছেলে সন্তান ছিল - চ্যালেঞ্জ দিলাম । এটাও প্রমান করতে পারবেন না যে , "ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিল" আবার চ্যালেঞ্জ দিলাম । ইসলাম বিদ্বেষীরা এই টপিকে যত অশ্লীলতার মিথ্যা দাবি করে বানিয়ে বানিয়ে বলে তারা রেফারেন্স হিসেবে "ইবনে ইসহাক, আল ওয়াকেদি , ইবনে সাদ এবং ইবনে জারির আত তাবারি থেকে বর্ণনা দেখায় । ইবনে জারির তাবারি থেকেই বেশি দেখায় কিন্তু ইবনে জারির আত তাবারি (রহ) তাঁর বইয়ের শুরুতেই তথা ভুমিকাতে পরিষ্কার লিখেছেনঃ আমি পাঠকদের সতর্ক করতে চাই যে , কিছু মানুষ আমার নিকট যে খবর বর্ণনা করেছেন সেটাই আমি এই বইতে লিখেছি, আমি যাচাই বাচাই ছাড়াই গল্পগুলার উৎস হিসেবে বর্ণনাকারীদের ধরে নিয়েছি । যদি কেউ আমার বইতে কোন ঘটনা পড়ে ভয় (ভুল) পেয়ে যান , তাহলে তার জানা উচিৎ যে , এই ঘটনা আমাদের থেকে আসেনি । কারন আমরা যা পেয়েছি তাই লিখেছি ।

তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৮০৫ পৃষ্ঠায়ঃ ইবনে কাসির (রহ) ইবনে জারির আত তাবারি (রহ) এর ঐ নীতির সমালোচনা করে লেখেন , ইমাম ইবনে জারির (রহ) এমন অনেক কিছুই বহু আসার বর্ণনা করেছেন যা সঠিক নয় , যেগুলো বর্ণনা করাও উচিৎ নয় বলেই আমরা তা ছেড়ে দিলাম । কারন এগুলোর মধ্যে একটিও প্রমানিত ও সঠিক নয় ।

* ইসলাম বিদ্বেষীরা তাবারি, ইবনে ইসহাক এবং সোর্স থেকে যেই কথা গুলো বলে তা ভিত্তিহীন নিঃসন্দেহে আর উক্ত ঘটনার কোন সঠিক প্রমানও নাই । কারন উক্ত সনদে এক লোকের নাম আল ওয়াকেদি যাকে মুহাদ্দিসিনে কেরাম মিথ্যাবাদী বলেছেন । তার বর্ণিত কিছুই গ্রহণ যোগ্য না । "মিযানুল ই"তেদাল ফি নাকদির রিজাল"৬/২৭৩ পৃষ্ঠায়ঃ ইমাম ইবনে হাম্বল (রহ) বলেন যে, সে মিথ্যাবাদী , যে কিনা হাদিস বানাতো । ইমাম দাউদ (রহ) বলেনঃ আমার কোন সন্দেহ নাই যে, সে বনোয়াট হাদিস বর্ণনা করে । "তাহযিব আত তাহযিব" গ্রন্থে ইমাম আন নাওয়ায়ী (রহ) বলেন, মুহাদ্দিসিনের ইজমা আছে যে, সে হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে পরিত্যাজ্য ।

মুল ঘটনা ধাপে ধাপে জেনে নেইঃ

* তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৮০৫ পৃষ্ঠায়ঃ রাসুল (সা) সর্ব প্রথম যায়েদ (রা) পয়গাম নিয়ে জয়নাব বিনতে জাহশ (রা) এর কাছে যান বা হাজির হন । প্রথমে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেন ।

* তাফসীরে ইবনে কাসির, ১৫/৭৩৮ পৃষ্ঠায়ঃ প্রথমে পালক পুত্রকে নিজের রক্তের সন্তান মনে করা হত যা ছিল ভুল তাই এই প্রথাকে ইসলাম বাতিল করে দেয় । পরবর্তীতে রাসুল (সা) যায়েদ (রা) কে নিজের পুত্র বলে সম্বোধন করেননি বরং বলেছিলেন তুমি আমার ভাই ও বন্ধু ।

* সিরাতে মস্তফা, ৭২৮ পৃষ্ঠায়, মাও ইদ্রিস কান্ধলভি (রহ): হযরত যায়েদ (রা) ও জয়নাব (রা) মধ্যে মনমালিন্য দেখা যায় । পরে যায়েদ (রা) রাসুলের কাছে বার বার জয়নাব (রা) কে তালাক দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, রাসুল (সা) বিয়ে ভাঙতে নিষেধ করেন এবং বলেন , তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় করো ।

* সুরা আহযাব, ৩৭ আয়াতঃ আল্লাহ্‌ বলেনঃ আল্লাহ্‌ যাকে অনুগ্রহ করেছেন আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন । তাকে যখন আপনি বলেছিলেন তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দেও এবং আল্লাহকে ভয় করো । আপনি অন্তরে এমন বিষয়ে গোপন রাখছিলেন যা আল্লাহ্‌ প্রকাশ করে দেবেন । আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আল্লাহ্‌কেই অধিক ভয় করা উচিৎ । অতপর যায়েদ যখন জয়নাব এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সে সব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে ।

* ইফাঃ সহিহ বুখারি, ১০/৫৫৬-৫৫৭ পৃষ্ঠা , হাদিস নং: ৬৯১৫: হযরত জয়নাব (রা) নবী সহধর্মিণীর কাছে এই বলে গৌরব করতেন যে , তোমাদেরকে বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবার পরিজন আর আমাকে স্বয়ং আল্লাহ্‌ সাত আসমানের ওপরে বিয়ে দিয়েছেন ।

উপরের বিশুদ্ধ তথ্যগুলা সামনে রেখে আমরা মজবুতভাবে দাবি করতেই পারি যেঃ

১/ বিজ্ঞান না শুদু সাধারণত সবাই জানে, "পালক পুত্র" নিজের আপন পুত্র না । তাই "নবিজি (সা) তাঁর আপন ছেলের বউকে বিয়ে করেছেন" এই কথা মিথ্যা , ভুল এবং ভিত্তিহীন । আর আপনি যদি এই কথার সাথে একমত না হন তাহলে প্রমান করুন অন্যের ছেলে কিভাবে নিজের রক্তের সন্তান হয় ? বিশুদ্ধ ইতিহাস ইতিহাস থেকে এটাও প্রমান করুন "যায়েদ (রা) রাসুল (রা) এর রক্তের আপন সন্তান ছিলেন" ?

২/ ইবনে ইসহাক, আল ওয়াকেদি, ইবনে সাদ এবং ইবনে জারির আত তাবারি থেকে যে হাদিস গুলা দ্বারা ইসলাম বিদ্বেষী মিথ্যাবাদীরা মিথ্যাকথা বলে সে হাদিসগুলো জাল । তাই জাল হাদিস দিয়ে কোন দাবি করলে তা নিঃসন্দেহে গ্রহণযোগ্য হবে না । বাতিল । সোজা হিসাব ।

৩/ প্রাচিন যুগে অন্যের ছেলেকে মানুষ প্রথমে নিজের রক্তের সন্তান ভাবত যা ছিল মিথ্যা তাই আল্লাহ্‌ নবীর মাধ্যমে এই মিথ্যাচার সরাসরি চিরতরে অফ করে দেন ।

৪/ হযরত যায়েদ (রা) নিজেই জয়নাব (রা) কে "তালাক" দেন । তাই জয়নাব (রা) আর যায়েদ (রা) এর স্ত্রী থাকেন না । রাসুল (রা) ও জয়নাব (রা) দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে যায়েদ (রা) আপত্তির প্রশ্নই আসেন না যেহেতু তিনি নিজেই আগে তালাক দেন জয়নাব (রা)কে । ইদ্দত শেষে, আল্লাহ্‌র হুকুমে রাসুল (সা) জয়নাব (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দেন , এরপরে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় । স্বামী স্ত্রী পবিত্র সম্পর্ক ।

৫/ "মুসনাদে আবু হাতিম" গ্রন্থে কুরানের এই আয়াতঃ অন্তরে যে বিষয় গোপন করেছিলেন" এ দ্বারা বুঝানো হয়েছে জয়নাব (রা) যে রাসুলের স্ত্রী হবেন এ কথা বহু আগেই আল্লাহ্‌ তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু রাসুল (সা) এ কথা প্রকাশ করেননি বরং তিনি যায়েদ (রা) কে স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে বলেছিলেন । তাই আল্লাহ্‌ এ আয়াত দ্বারা বুঝালেন রাসুল যতই গোপন রাখুক না কেন আল্লাহ্‌ তা প্রকাশ করে দিবেন । এছাড়া রাসুল (সা) কে স্বয়ং আল্লাহ্‌ সংশোধন করেছেন এই বলে যে "আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আলাহকেই বেশি ভয় করা উচিৎ" । হযরত মুহাম্মদ (সা) একজন মানুষও ছিলেন তাই তাঁর মাঝে এই খেয়াল আশা স্বাভাবিক তাই আল্লাহ্‌ তাঁকে সংশোধন করে দিলেন ।

৬/ নাস্তিক ধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডেও আসলে এটি কোন অভিযোগের মধ্যেই পড়ে না কারন নাস্তিক ধর্মের দেবদ্যূত ড হুমায়ূন আজাদ তার "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৪৩ পৃষ্ঠায় বলেছেনঃ নৈতিকতার সীমা হওয়া উচিৎ সংকীর্ণ । আমার কোন কাজ যেন অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে,এটুকু । নাস্তিক ধর্মের এই ফতোয়ার আলোকে কি প্রমান হয়েছে যে নবী (সা) জোর করে জয়নাব (রা) কে বিয়ে করেছেন ? উত্তর হচ্ছে না । নবীজি (সা) এবং হযরত জয়নাব (রা) এর সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছিল এবং এখানে হযরত যায়েদ (রা) বিন্দুমাত্র কোন আপত্তি ছিল সুতরাং এই বিয়েতে কেউই ক্ষতিগ্রস্থ হয় নি তাই নাস্তিক ধর্মের ফতোয়া অনুযায়ী এটি কোন আপত্তিকর কিছুই না বরং স্বাভাবিক একটি ঘটনা । 

Posted at June 02, 2020 |  by Arya ঋষি

Tags

Text Widget

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.

Blog Archive

© 2013 Arya Rishi. WP Theme-junkie converted by Bloggertheme9Published..Blogger Templates
Blogger templates. Proudly Powered by Blogger.
back to top