দয়া করে কেউ এড়িয়ে যাবেন না একটিবার মন দিয়ে পড়ুন।
১৪ই নভেম্বর শিশু দিবস ,মুলত এই শিশু দিবস পালিত হয় জহরলাল নেহেরুর জন্মদিন উপলক্ষে।
কিন্তু কেন?
কারণ জহরলাল নেহরু প্রাপ্ত বয়সেও নাকি তাঁর মনটা ছিল শিশুদের মত নির্মল ও অবোধ।
কে এই জহরলাল নেহেরু??
উঃ:-আফগান মুসলমান গাজী খাঁনের তিন ছেলে ,বড় ছেলে ফৈজাল খাঁন যে চৌদ্দ বছর বয়সে আন্ত্রিক রোগে মারা যায়,মেজো ছেলে সেলিম খাঁন যার বংশধররা হচ্ছেন ঐ জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহরা ,আর ছোট ছেলে ময়িম খাঁন।এই ময়িম খাঁন ভাবলেন যে এই ভারতবর্ষে/জম্মুদ্বীপে/আর্যাবর্তে যদি আমি মুসলমান হয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রাখি তবে এদেশের মানুষ আমাকে মেনে নেবেন না তাই তিনি নিজের নাম পরিবর্তন (ময়িম খাঁন)করে নাম ধারন করলেন মতিলাল নেহেরু।এই মতিলাল নেহেরুর ছেলেই হলেন জহরলাল নেহরু।আর জহরলালের মেয়ে ইন্দিরা নেহেরু/গাঁন্ধী। ইন্দিরা আবার বিয়ে করলেন এক পারসিয়ান মুসলিম ফিরোজ খাঁনকে।ফিরোজকে গাঁন্ধীজী দত্বক ছেলে হিসেবে নিয়ে নিজের উপাধি উপহার দেন আর ফিরোজ খাঁন থেকে হয়ে গেলেন ফিরোজ গাঁন্ধী।ফিরোজ ও ইন্দিরার মিলিত সন্তান রাজীব গাঁন্ধী ।রাজীব আবার বিয়ে করলেন এক ইটালিয়ান খ্রীষ্টান মহিলাকে যিনি নাকি আবার রাশিয়ার চর ,নাম অ্যান্টোনিমো এডভিগ আলবানিয়া মাইনো(সোনায়া গাঁন্ধী)এই সোনিয়া ও রাজীবের মিলিত সন্তান হলেন আজকের রাহুল গাঁধী ।যিনি নিজেও জানেন না নিজের গৌত্র ও বংশ পরিচয়।যাক সেসব কথা এবার আসা যাক শিশুদিবস ও জহরলালের কথায়। স্বাধীনতার প্রাক্কাল থেকেই জহর লালের একটাই লালসা ছিল যেন তেন প্রকারে ভারতের মসনদ দখল করা মানে নিজেকে প্রধান মন্ত্রী প্রতিষ্ঠিত করা।তাতে ভারতবর্ষের অস্তিত্ব থাক আর যাক।তাই সেদিন ১৫ই আগষ্ট ১৯৪৭এর আগে মাউন্টব্যাটেন জহরলালকে বললেন যে তোমাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে পারি তবে কিছু শর্তের বিনিময়ে।কি সেই শর্ত??সেই শর্ত হলো ৪০০০০(চল্লিশ হাজার)পাতার transfer of power agreement.অর্থাৎ ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তিপত্র।যার প্রথম পাতার আর্টিকল নং ১৪৭ এ লেখা ছিলো ১/ভারতকে আজীবনের জন্য ব্রিটিশ কমন ওয়েল্থের সদস্য থাকতে হবে,২/নেতাজী সুভাষ চন্দ্রকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করতে হবে ,৩/ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তথা ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিবে ভারতবর্ষের পারলামেন্ট তথা সুপ্রিমকোর্টকে সেই নির্দেশ পালন করতে হবে,৪/ব্রিটিশদের লেখা ভারতের (বিকৃত) ইতিহাস কোনদিন পরিবর্তন করা যাবেন, ৫/আই এন এর কোন বাহিনীকে ভারতের সেনাবাহিনীতে বহাল রাখা যাবেনা,৬/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ব্রিটিশ সেনাদের সমাধী স্থল যা দিল্লিতে অবস্থিত তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভারতবর্ষকে নিতে হবে ,ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক কিছু।আর এই চুক্তি পত্রে নির্লজ্জের মতো সেদিন স্বাক্ষর করেছিলেন এই জহরলাল নেহরু শুধু প্রধানমন্ত্রী ও পরিবারতন্ত্র রাজনীতি কয়েক করার জন্য।তারপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ নেহেরুর প্রধানমন্ত্রী হবার পালা ।ইনাকে শপথবাক্য পাঠ করালেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন আর জহরলাল শপথবাক্য পাঠ করলেন ভারতমাতার নামে নয়,পাঠ করলেন ইংল্যাণ্ডের রাজা ষষ্টম জর্জের নামে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে মাউন্টব্যাটেন সিঙ্গাপুরে অবস্থিত আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মৃতি সৌধ প্রত্যক্ষ দিবালোকে ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেন আর সেখানে দেখা যায় নেহেরু মাউন্টব্যাটেনের মেয়ে পামেলা হিক্সের সঙ্গে একসাথে সিগারেট পান করছেন ও হাত তালি দিচ্ছেন।যে নেহেরু মদ, সিগারেট ও মেয়েমানুষ ছাড়া এক মূহুর্ত থাকতেন না আজ তার জন্মদিনে পালিত হয় শিশুদিবস!!!!!!এর চেয়ে বড় দুঃখ,কষ্ট ও লজ্জা আমাদের আর কি হতে পারে??সত্যিই এ যেন এক ত্যাগী প্রেমময় মানুষের জন্মদিন।শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু যেমন প্রেম বিলিয়ে হিংসা ও দ্বেষ দূর করে মন জয় করতেন বীর নির্লজ্জ,কামুক, চরিত্রহীন নেহেরু মাউন্টব্যাটেনের স্ত্রী মিসেস এডুইনা ও মেয়ে পামেলা হিক্সের সঙ্গে অগাধ প্রেম ও লাগামহীন মেলামেশার দ্বারা ভারতবর্ষকে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন।এ যেন ছিলো নেহেরুর স্বর্গীয় সুষমাণ্ডিত অপার্থিব সম্পর্ক।যে নেহেরু ভারতের শিশুদের কাছে থেকে কেড়ে নিলেন ভারতের প্রকৃত ইতিহাস,যে শিশুদেরকে শিক্ষা দিলেন দেশদ্রোহিতার শিক্ষা,যে শিশুদের কে শিক্ষা দিলেলেন নিজ বাবার নাম ও বংশ পরিচয় পাল্টে দেওয়া,যে শিশুদেরকে শিক্ষা দিলেন মদ্যপান-ধূম পান তারি জন্মদিন আজ শিশুদিবস!!!!হায় হায় রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, নেতাজী, বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরাম,ভগৎ সিং,বিনায়ক দামোদর সাভারকার,উল্লাস করে দত্ত কেন জন্মেছিলেন তোমরা এই দূর্ভাগা দেশে ?????!!!!!!!
গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরে’র কারণে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি প্রয়াত ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের কি হাল হয়েছিল, -- আজ আপনাদের সে বিষয়ে কিছু জানানো অবশ্যই দরকার। সত্যি কথা বলতে কি, ডঃ প্রসাদ’কে এর জন্যে বিরাট মূল্য চোকাতে হয়।
জওহরলাল যে সোমনাথ মন্দিরের বিপক্ষে ছিলেন, -- কথাটা কমবেশি সকলেই প্রায় জানাই ছিল। অতএব সর্দার প্যাটেল গান্ধী’জীর শরণাপন্ন হলেন। কোনমতে সেখান থেকে সম্মতি আদায় করেই তিনি হাত লাগালেন মন্দিরের পুনঃনির্মাণে। কিন্তু দুর্ভাগ্য! কাজ শেষ হবার আগেই মৃত্যু হল তাঁর।
সর্দার’জীর মৃত্যুর পর, তাঁর এই অসমাপ্ত কাজের ভার গিয়ে পড়ে, শ্রদ্ধেয় শ্রী কে এম মুন্সী’র উপর, অন্যদিকে যিনি আবার ছিলেন নেহেরুর ক্যাবিনেট মন্ত্রীও । ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে গান্ধী’জীর-ও।
গান্ধী-প্যাটেলের মৃত্যুর পর এই ইস্যু’তে নেহেরুর বল্গাহীন বিরোধী সুর ক্রমশঃই তীব্রতর হতে শুরু করে। চড়তে থাকে তিক্ততার পারদ। তেমনই একটি মিটিং-এ তো একবার মুন্সী’কে কড়া ধমক’ই দিয়ে বসেন নেহেরু! তাঁর বিরুদ্ধে ‘হিন্দু-পুনরুত্থানবাদ’ তথা ‘হিন্দুত্ববাদ’ প্রচারের তকমা লাগিয়ে তীব্র ভর্ৎসনাও করেন তিনি। কিন্তু মুন্সী’জীও তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। তাঁর চাঁছা-ছোলা বক্তব্য – সর্দার প্যাটেলের অসমাপ্ত কাজ তিনি সমাধা করবেন-ই করবেন! তাছাড়া মুন্সী ছিলেন নিজেও একজন গুজরাটি, অতএব, তাঁর পক্ষে এই বিষয়টিও মন্দির নির্মাণে গতি আনতে সহায়তা করে।
অতঃপর মন্দির নির্মান সমাপ্ত হলে, তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ’কে শুভ-দ্বারোদঘাটনের জন্য সসম্মানে আমন্ত্রণ জানান। রাজেন্দ্রপ্রসাদও অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে উক্ত ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে স্বীকৃত হন। কিন্তু এই খবরে বেঁকে বসেন নেহেরু। জল এতদূর গড়ায় যে, স্বয়ং নেহেরু চিঠি লিখে ডঃ প্রসাদ’কে সোমনাথ মন্দিরের উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে নিষেধ করে দেন। কিন্তু এবারে রুখে দাঁড়ালেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ। নেহেরুর রক্তচক্ষু’কে আমল না দিয়ে তিনি উপস্থিত হলেন সোমনাথ মন্দিরে। শুধু উপস্থিত হওয়াই নয়, সেখানে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে দিলেন এক জবরদস্ত ভাষণ।
মারাত্মক ঝটকা খেলেন নেহেরু। তাঁর আঁতে লাগল ঘা! এটিকে তিনি নিজের নৈতিক পরাজয় বলে হজম করতে বাধ্য হলেন। কিন্তু বিনিময়ে রাজেন্দ্রপ্রসাদ’কেও বড়ো গুনাগার গুনতে হল, কারণ এরপর থেকে নেহেরু তাঁর সঙ্গে যে ধরণের নজিরবিহীন অভব্য আচরণ শুরু করেন, তা ভাবলে আজও বিস্ময়ে হতবাক হতে হয়!
সোমনাথ মন্দিরের তরজা’কে কেন্দ্র করে রাজেন্দ্রপ্রসাদ ও নেহেরুর ব্যক্তিগত সম্পর্কে এতটাই তিক্ততার সৃষ্টি হয় যে, রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তাঁকে দিল্লীতে থাকার মত একটি ঘর পর্যন্ত বরাদ্দ করতে অস্বীকার করেন নেহেরু। অথচ রাজেন্দ্রবাবু লেখালেখি পছন্দ করতেন, তার বড় শখ ছিল, বৃদ্ধ বয়সে জীবনের শেষ দিনগুলি তিনি দিল্লীর বুকেই বই-টই লিখে কাটান। নেহেরুর মত মানুষের কি এমন’টা করা উচিৎ ছিল? একজন ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি’র যা যা সম্মান বা অধিকার পাবার কথা ছিল, তা’র সব কিছু থেকেই ওই ভদ্রলোকটিকে বঞ্চিত করা হয়। অগত্যা নিরুপায় প্রসাদজী’ তাঁর আদি নিবাস পাটনায় ফিরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু সেখানেও তাঁর নিজস্ব কোন সংস্থান ছিল না। না ছিল টাকা-কড়ি, না কোন বাড়ি-ঘর। আর অন্যদিকে পাটনা’তে যথেষ্ট সংখ্যক সরকারী বাংলো বা আবাসন থাকা সত্ত্বেও নেহেরুর নিষ্ঠুরতায় সে সব জায়গায় তাঁর থাকা খাওয়ার নুন্যতম সুযোগ-ও তিনি হারালেন।
শেষমেশ পাটনার সদাকৎ আশ্রমের একটি আলো-বাতাসহীন বদ্ধ কুঠুরিতে ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলে। না, তাঁকে দেখভাল করার মতও কেউ ছিল না; ছিল না কোন ডাক্তার!
ধীরে ধীরে শরীর ভেঙ্গে পড়তে লাগল, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতির। আবদ্ধ ঘরে থাকতে থাকতে ক্রমশঃ দেখা দিল শ্বাসকষ্ট। সারা দিন ধরে দমকে দমকে কাশির সঙ্গে উঠতে লাগল কফ। কিন্তু হায়! তিনি ছিলেন অসহায়!! দেশের একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুবাদে দ্বারে দ্বারে সাহায্যের জন্য ভিক্ষা করাও যে তাঁর পক্ষে ছিল অসম্ভব। অন্যদিকে, রাজেন্দ্রপ্রসাদের পাটনা আসার পর থেকে তিনি কেমন আছেন, বা তাঁর কি ভাবে চলছে? – ইতিহাস সাক্ষী, চক্ষুলজ্জার খাতিরে নেহেরু একবারও সে খবর নেবার প্রয়োজন বোধ করে দেখলেন না।
শুধু নেহেরুই নন, সেদিন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি’র অসুস্থতার খবর পাবার পরও এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, যিনি... নূন্যতম চিকিৎসার সুবিধাও তাঁর কাছে পৌঁছে দেবার চেষ্টা করেছিলেন!
বিহারে তখন কংগ্রেসেরই রাজত্ব, সুতরাং বলাইবাহুল্য কোন এক অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ডঃ রাজেন্দ্রবাবু সুচিকিৎসা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে চিরবঞ্চিত রইলেন। পাশাপাশি ইতিহাস সাক্ষী হয়ে রইল তাঁর প্রতি নানা নির্দয় অমানবিক আচরণের। কার নির্দেশে এসব ঘটেছিল সেদিন?
ডঃ প্রসাদের কফ-কাশির সমস্যা ছিল। তাই প্রায়ই পাটনার মেডিক্যেল কলেজে তিনি চিকিৎসা করাতে যেতেন। সেখানে, আর দশজন সাধারণ রোগীর মতোই তাঁর চিকিৎসা হত। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন,... সেখানে যে মেশিনটি’তে তাঁর চিকিৎসা হত, সেটিকেও পর্যন্ত দিল্লী পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়। অর্থাৎ রাজেন্দ্রবাবুকে প্রকারান্তরে তিলে তিলে মারার সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত ভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছিল।
একবার শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সদাকৎ আশ্রমে গিয়ে পৌঁছান। উদ্দেশ্য, দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি তথা সংবিধান সভার অধ্যক্ষ কেমন আছেন তা স্বচক্ষে পরিদর্শন করা। কিন্তু হায়! এ কি দেখছেন নারায়ণ? রাজেন্দ্রপ্রসাদের অবস্থা দেখে তিনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান! তাঁর চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে। তাঁর ভাবনাতেই আসে না, কি বলবেন তিনি? আর একমূহুর্তও অপেক্ষা না করে তিনি তাঁর অফিসারদের নির্দেশ দেন, প্রসাদজী’র কামরাখানিকে যাতে অবিলম্বে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়। সেই মত কাজও হয় তুরন্ত। কিন্তু রাজেন্দ্রবাবু আর বেশি দিন বাঁচেন নি। সেই ঘরেই ১৯৬৩’র ২৮শে ফেব্রুয়ারী তাঁর দেহান্ত হয়।
ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের মৃত্যুর পরেও নেহেরুর ক্ষোভ প্রশমিত হয় নি। শান্ত হতে পারেননি তিনি। তাই প্রসাদজী’র অন্ত্যেষ্টি’তে পর্যন্ত যোগ দিতে নেহেরু অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। আর সম্ভবত সেই কারণেই, রাজেন্দ্রপ্রসাদের শেষ যাত্রার দিন তিনি পাটনা থেকে বহু দূরে রাজস্থানে’র জয়পুরে চলে যান। শুধু কি তাই? রাজস্থানের তৎকালীন রাজ্যপাল, ডঃ সম্পূর্ণানন্দ’জী এই উপলক্ষে পাটনা আসতে চাইলে, স্বয়ং নেহেরু তাঁকে সেখানে যেতে বারণ করেন!
“এটা কি ভাবে সম্ভব? যে, দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন কোন রাজ্যে অবস্থান করছেন; আর সে রাজ্যের রাজ্যপালই অনুপস্থিত”! – দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির অন্তিম যাত্রায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সে দেশেরই কোন এক অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালের কাছে সেদিন নেহেরুর তরফে এমনই বার্তা প্রেরিত হয়েছিল। অতয়েব এরপর অনিচ্ছাসত্ত্বেও সম্পূর্ণানন্দ’জীকে তাঁর পাটনা সফর বাতিল করতে হয়।
ভাবছেন এখানেই শেষ?
- না বন্ধুরা, আরও আছে। নেহেরু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, তথা বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদের উত্তরসুরী ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ’কেও একই কারণে পাটনা সফর বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ডঃ রাধাকৃষ্ণাণ সে কথায় কর্ণপাত না করে সোজা রাজেন্দ্রপ্রসাদের অন্ত্যেষ্টিস্থলে পৌঁছে দেশের মানরক্ষা করেন।
আজ আর হয়তো দিল্লী’র রাজঘাটের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের সঙ্গে সেদিনের নেহেরুর বর্বর আচরণের স্মৃতিচারণ করার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে। তবে এটাও তো ঠিক যে, মহাত্মা গান্ধী’র সৌধের পাশে সঞ্জয় গান্ধী’র মত লোকও জায়গা পেতে পারে, কিন্তু ঠাঁই মেলে না – স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি’র মত মানুষের! এই দেশে তাদের ইজ্জত মেলা ভার!!
- তবে হ্যাঁ, এটা নিঃসঙ্কোচে মনে হতেই পারে যে, এদেশের যাবতীয় মহত্ত্ব আর বলিদানের কপিরাইট কেবল এক গান্ধী-নেহেরু পরিবারের জন্যেই চিরকালীন সংরক্ষিত...!!!
................ ছিঃ !!!!
১৪ই নভেম্বর শিশু দিবস ,মুলত এই শিশু দিবস পালিত হয় জহরলাল নেহেরুর জন্মদিন উপলক্ষে।
কিন্তু কেন?
কারণ জহরলাল নেহরু প্রাপ্ত বয়সেও নাকি তাঁর মনটা ছিল শিশুদের মত নির্মল ও অবোধ।
কে এই জহরলাল নেহেরু??
উঃ:-আফগান মুসলমান গাজী খাঁনের তিন ছেলে ,বড় ছেলে ফৈজাল খাঁন যে চৌদ্দ বছর বয়সে আন্ত্রিক রোগে মারা যায়,মেজো ছেলে সেলিম খাঁন যার বংশধররা হচ্ছেন ঐ জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহরা ,আর ছোট ছেলে ময়িম খাঁন।এই ময়িম খাঁন ভাবলেন যে এই ভারতবর্ষে/জম্মুদ্বীপে/আর্যাবর্তে যদি আমি মুসলমান হয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রাখি তবে এদেশের মানুষ আমাকে মেনে নেবেন না তাই তিনি নিজের নাম পরিবর্তন (ময়িম খাঁন)করে নাম ধারন করলেন মতিলাল নেহেরু।এই মতিলাল নেহেরুর ছেলেই হলেন জহরলাল নেহরু।আর জহরলালের মেয়ে ইন্দিরা নেহেরু/গাঁন্ধী। ইন্দিরা আবার বিয়ে করলেন এক পারসিয়ান মুসলিম ফিরোজ খাঁনকে।ফিরোজকে গাঁন্ধীজী দত্বক ছেলে হিসেবে নিয়ে নিজের উপাধি উপহার দেন আর ফিরোজ খাঁন থেকে হয়ে গেলেন ফিরোজ গাঁন্ধী।ফিরোজ ও ইন্দিরার মিলিত সন্তান রাজীব গাঁন্ধী ।রাজীব আবার বিয়ে করলেন এক ইটালিয়ান খ্রীষ্টান মহিলাকে যিনি নাকি আবার রাশিয়ার চর ,নাম অ্যান্টোনিমো এডভিগ আলবানিয়া মাইনো(সোনায়া গাঁন্ধী)এই সোনিয়া ও রাজীবের মিলিত সন্তান হলেন আজকের রাহুল গাঁধী ।যিনি নিজেও জানেন না নিজের গৌত্র ও বংশ পরিচয়।যাক সেসব কথা এবার আসা যাক শিশুদিবস ও জহরলালের কথায়। স্বাধীনতার প্রাক্কাল থেকেই জহর লালের একটাই লালসা ছিল যেন তেন প্রকারে ভারতের মসনদ দখল করা মানে নিজেকে প্রধান মন্ত্রী প্রতিষ্ঠিত করা।তাতে ভারতবর্ষের অস্তিত্ব থাক আর যাক।তাই সেদিন ১৫ই আগষ্ট ১৯৪৭এর আগে মাউন্টব্যাটেন জহরলালকে বললেন যে তোমাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে পারি তবে কিছু শর্তের বিনিময়ে।কি সেই শর্ত??সেই শর্ত হলো ৪০০০০(চল্লিশ হাজার)পাতার transfer of power agreement.অর্থাৎ ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তিপত্র।যার প্রথম পাতার আর্টিকল নং ১৪৭ এ লেখা ছিলো ১/ভারতকে আজীবনের জন্য ব্রিটিশ কমন ওয়েল্থের সদস্য থাকতে হবে,২/নেতাজী সুভাষ চন্দ্রকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করতে হবে ,৩/ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তথা ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিবে ভারতবর্ষের পারলামেন্ট তথা সুপ্রিমকোর্টকে সেই নির্দেশ পালন করতে হবে,৪/ব্রিটিশদের লেখা ভারতের (বিকৃত) ইতিহাস কোনদিন পরিবর্তন করা যাবেন, ৫/আই এন এর কোন বাহিনীকে ভারতের সেনাবাহিনীতে বহাল রাখা যাবেনা,৬/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ব্রিটিশ সেনাদের সমাধী স্থল যা দিল্লিতে অবস্থিত তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভারতবর্ষকে নিতে হবে ,ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক কিছু।আর এই চুক্তি পত্রে নির্লজ্জের মতো সেদিন স্বাক্ষর করেছিলেন এই জহরলাল নেহরু শুধু প্রধানমন্ত্রী ও পরিবারতন্ত্র রাজনীতি কয়েক করার জন্য।তারপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ নেহেরুর প্রধানমন্ত্রী হবার পালা ।ইনাকে শপথবাক্য পাঠ করালেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন আর জহরলাল শপথবাক্য পাঠ করলেন ভারতমাতার নামে নয়,পাঠ করলেন ইংল্যাণ্ডের রাজা ষষ্টম জর্জের নামে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে মাউন্টব্যাটেন সিঙ্গাপুরে অবস্থিত আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মৃতি সৌধ প্রত্যক্ষ দিবালোকে ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেন আর সেখানে দেখা যায় নেহেরু মাউন্টব্যাটেনের মেয়ে পামেলা হিক্সের সঙ্গে একসাথে সিগারেট পান করছেন ও হাত তালি দিচ্ছেন।যে নেহেরু মদ, সিগারেট ও মেয়েমানুষ ছাড়া এক মূহুর্ত থাকতেন না আজ তার জন্মদিনে পালিত হয় শিশুদিবস!!!!!!এর চেয়ে বড় দুঃখ,কষ্ট ও লজ্জা আমাদের আর কি হতে পারে??সত্যিই এ যেন এক ত্যাগী প্রেমময় মানুষের জন্মদিন।শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু যেমন প্রেম বিলিয়ে হিংসা ও দ্বেষ দূর করে মন জয় করতেন বীর নির্লজ্জ,কামুক, চরিত্রহীন নেহেরু মাউন্টব্যাটেনের স্ত্রী মিসেস এডুইনা ও মেয়ে পামেলা হিক্সের সঙ্গে অগাধ প্রেম ও লাগামহীন মেলামেশার দ্বারা ভারতবর্ষকে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন।এ যেন ছিলো নেহেরুর স্বর্গীয় সুষমাণ্ডিত অপার্থিব সম্পর্ক।যে নেহেরু ভারতের শিশুদের কাছে থেকে কেড়ে নিলেন ভারতের প্রকৃত ইতিহাস,যে শিশুদেরকে শিক্ষা দিলেন দেশদ্রোহিতার শিক্ষা,যে শিশুদের কে শিক্ষা দিলেলেন নিজ বাবার নাম ও বংশ পরিচয় পাল্টে দেওয়া,যে শিশুদেরকে শিক্ষা দিলেন মদ্যপান-ধূম পান তারি জন্মদিন আজ শিশুদিবস!!!!হায় হায় রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, নেতাজী, বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরাম,ভগৎ সিং,বিনায়ক দামোদর সাভারকার,উল্লাস করে দত্ত কেন জন্মেছিলেন তোমরা এই দূর্ভাগা দেশে ?????!!!!!!!
গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরে’র কারণে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি প্রয়াত ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের কি হাল হয়েছিল, -- আজ আপনাদের সে বিষয়ে কিছু জানানো অবশ্যই দরকার। সত্যি কথা বলতে কি, ডঃ প্রসাদ’কে এর জন্যে বিরাট মূল্য চোকাতে হয়।
জওহরলাল যে সোমনাথ মন্দিরের বিপক্ষে ছিলেন, -- কথাটা কমবেশি সকলেই প্রায় জানাই ছিল। অতএব সর্দার প্যাটেল গান্ধী’জীর শরণাপন্ন হলেন। কোনমতে সেখান থেকে সম্মতি আদায় করেই তিনি হাত লাগালেন মন্দিরের পুনঃনির্মাণে। কিন্তু দুর্ভাগ্য! কাজ শেষ হবার আগেই মৃত্যু হল তাঁর।
সর্দার’জীর মৃত্যুর পর, তাঁর এই অসমাপ্ত কাজের ভার গিয়ে পড়ে, শ্রদ্ধেয় শ্রী কে এম মুন্সী’র উপর, অন্যদিকে যিনি আবার ছিলেন নেহেরুর ক্যাবিনেট মন্ত্রীও । ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে গান্ধী’জীর-ও।
গান্ধী-প্যাটেলের মৃত্যুর পর এই ইস্যু’তে নেহেরুর বল্গাহীন বিরোধী সুর ক্রমশঃই তীব্রতর হতে শুরু করে। চড়তে থাকে তিক্ততার পারদ। তেমনই একটি মিটিং-এ তো একবার মুন্সী’কে কড়া ধমক’ই দিয়ে বসেন নেহেরু! তাঁর বিরুদ্ধে ‘হিন্দু-পুনরুত্থানবাদ’ তথা ‘হিন্দুত্ববাদ’ প্রচারের তকমা লাগিয়ে তীব্র ভর্ৎসনাও করেন তিনি। কিন্তু মুন্সী’জীও তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। তাঁর চাঁছা-ছোলা বক্তব্য – সর্দার প্যাটেলের অসমাপ্ত কাজ তিনি সমাধা করবেন-ই করবেন! তাছাড়া মুন্সী ছিলেন নিজেও একজন গুজরাটি, অতএব, তাঁর পক্ষে এই বিষয়টিও মন্দির নির্মাণে গতি আনতে সহায়তা করে।
অতঃপর মন্দির নির্মান সমাপ্ত হলে, তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ’কে শুভ-দ্বারোদঘাটনের জন্য সসম্মানে আমন্ত্রণ জানান। রাজেন্দ্রপ্রসাদও অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে উক্ত ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে স্বীকৃত হন। কিন্তু এই খবরে বেঁকে বসেন নেহেরু। জল এতদূর গড়ায় যে, স্বয়ং নেহেরু চিঠি লিখে ডঃ প্রসাদ’কে সোমনাথ মন্দিরের উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে নিষেধ করে দেন। কিন্তু এবারে রুখে দাঁড়ালেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ। নেহেরুর রক্তচক্ষু’কে আমল না দিয়ে তিনি উপস্থিত হলেন সোমনাথ মন্দিরে। শুধু উপস্থিত হওয়াই নয়, সেখানে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে দিলেন এক জবরদস্ত ভাষণ।
মারাত্মক ঝটকা খেলেন নেহেরু। তাঁর আঁতে লাগল ঘা! এটিকে তিনি নিজের নৈতিক পরাজয় বলে হজম করতে বাধ্য হলেন। কিন্তু বিনিময়ে রাজেন্দ্রপ্রসাদ’কেও বড়ো গুনাগার গুনতে হল, কারণ এরপর থেকে নেহেরু তাঁর সঙ্গে যে ধরণের নজিরবিহীন অভব্য আচরণ শুরু করেন, তা ভাবলে আজও বিস্ময়ে হতবাক হতে হয়!
সোমনাথ মন্দিরের তরজা’কে কেন্দ্র করে রাজেন্দ্রপ্রসাদ ও নেহেরুর ব্যক্তিগত সম্পর্কে এতটাই তিক্ততার সৃষ্টি হয় যে, রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তাঁকে দিল্লীতে থাকার মত একটি ঘর পর্যন্ত বরাদ্দ করতে অস্বীকার করেন নেহেরু। অথচ রাজেন্দ্রবাবু লেখালেখি পছন্দ করতেন, তার বড় শখ ছিল, বৃদ্ধ বয়সে জীবনের শেষ দিনগুলি তিনি দিল্লীর বুকেই বই-টই লিখে কাটান। নেহেরুর মত মানুষের কি এমন’টা করা উচিৎ ছিল? একজন ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি’র যা যা সম্মান বা অধিকার পাবার কথা ছিল, তা’র সব কিছু থেকেই ওই ভদ্রলোকটিকে বঞ্চিত করা হয়। অগত্যা নিরুপায় প্রসাদজী’ তাঁর আদি নিবাস পাটনায় ফিরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু সেখানেও তাঁর নিজস্ব কোন সংস্থান ছিল না। না ছিল টাকা-কড়ি, না কোন বাড়ি-ঘর। আর অন্যদিকে পাটনা’তে যথেষ্ট সংখ্যক সরকারী বাংলো বা আবাসন থাকা সত্ত্বেও নেহেরুর নিষ্ঠুরতায় সে সব জায়গায় তাঁর থাকা খাওয়ার নুন্যতম সুযোগ-ও তিনি হারালেন।
শেষমেশ পাটনার সদাকৎ আশ্রমের একটি আলো-বাতাসহীন বদ্ধ কুঠুরিতে ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলে। না, তাঁকে দেখভাল করার মতও কেউ ছিল না; ছিল না কোন ডাক্তার!
ধীরে ধীরে শরীর ভেঙ্গে পড়তে লাগল, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতির। আবদ্ধ ঘরে থাকতে থাকতে ক্রমশঃ দেখা দিল শ্বাসকষ্ট। সারা দিন ধরে দমকে দমকে কাশির সঙ্গে উঠতে লাগল কফ। কিন্তু হায়! তিনি ছিলেন অসহায়!! দেশের একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুবাদে দ্বারে দ্বারে সাহায্যের জন্য ভিক্ষা করাও যে তাঁর পক্ষে ছিল অসম্ভব। অন্যদিকে, রাজেন্দ্রপ্রসাদের পাটনা আসার পর থেকে তিনি কেমন আছেন, বা তাঁর কি ভাবে চলছে? – ইতিহাস সাক্ষী, চক্ষুলজ্জার খাতিরে নেহেরু একবারও সে খবর নেবার প্রয়োজন বোধ করে দেখলেন না।
শুধু নেহেরুই নন, সেদিন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি’র অসুস্থতার খবর পাবার পরও এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, যিনি... নূন্যতম চিকিৎসার সুবিধাও তাঁর কাছে পৌঁছে দেবার চেষ্টা করেছিলেন!
বিহারে তখন কংগ্রেসেরই রাজত্ব, সুতরাং বলাইবাহুল্য কোন এক অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ডঃ রাজেন্দ্রবাবু সুচিকিৎসা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে চিরবঞ্চিত রইলেন। পাশাপাশি ইতিহাস সাক্ষী হয়ে রইল তাঁর প্রতি নানা নির্দয় অমানবিক আচরণের। কার নির্দেশে এসব ঘটেছিল সেদিন?
ডঃ প্রসাদের কফ-কাশির সমস্যা ছিল। তাই প্রায়ই পাটনার মেডিক্যেল কলেজে তিনি চিকিৎসা করাতে যেতেন। সেখানে, আর দশজন সাধারণ রোগীর মতোই তাঁর চিকিৎসা হত। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন,... সেখানে যে মেশিনটি’তে তাঁর চিকিৎসা হত, সেটিকেও পর্যন্ত দিল্লী পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়। অর্থাৎ রাজেন্দ্রবাবুকে প্রকারান্তরে তিলে তিলে মারার সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত ভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছিল।
একবার শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সদাকৎ আশ্রমে গিয়ে পৌঁছান। উদ্দেশ্য, দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি তথা সংবিধান সভার অধ্যক্ষ কেমন আছেন তা স্বচক্ষে পরিদর্শন করা। কিন্তু হায়! এ কি দেখছেন নারায়ণ? রাজেন্দ্রপ্রসাদের অবস্থা দেখে তিনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান! তাঁর চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে। তাঁর ভাবনাতেই আসে না, কি বলবেন তিনি? আর একমূহুর্তও অপেক্ষা না করে তিনি তাঁর অফিসারদের নির্দেশ দেন, প্রসাদজী’র কামরাখানিকে যাতে অবিলম্বে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়। সেই মত কাজও হয় তুরন্ত। কিন্তু রাজেন্দ্রবাবু আর বেশি দিন বাঁচেন নি। সেই ঘরেই ১৯৬৩’র ২৮শে ফেব্রুয়ারী তাঁর দেহান্ত হয়।
ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের মৃত্যুর পরেও নেহেরুর ক্ষোভ প্রশমিত হয় নি। শান্ত হতে পারেননি তিনি। তাই প্রসাদজী’র অন্ত্যেষ্টি’তে পর্যন্ত যোগ দিতে নেহেরু অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। আর সম্ভবত সেই কারণেই, রাজেন্দ্রপ্রসাদের শেষ যাত্রার দিন তিনি পাটনা থেকে বহু দূরে রাজস্থানে’র জয়পুরে চলে যান। শুধু কি তাই? রাজস্থানের তৎকালীন রাজ্যপাল, ডঃ সম্পূর্ণানন্দ’জী এই উপলক্ষে পাটনা আসতে চাইলে, স্বয়ং নেহেরু তাঁকে সেখানে যেতে বারণ করেন!
“এটা কি ভাবে সম্ভব? যে, দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন কোন রাজ্যে অবস্থান করছেন; আর সে রাজ্যের রাজ্যপালই অনুপস্থিত”! – দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির অন্তিম যাত্রায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সে দেশেরই কোন এক অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালের কাছে সেদিন নেহেরুর তরফে এমনই বার্তা প্রেরিত হয়েছিল। অতয়েব এরপর অনিচ্ছাসত্ত্বেও সম্পূর্ণানন্দ’জীকে তাঁর পাটনা সফর বাতিল করতে হয়।
ভাবছেন এখানেই শেষ?
- না বন্ধুরা, আরও আছে। নেহেরু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, তথা বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদের উত্তরসুরী ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ’কেও একই কারণে পাটনা সফর বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ডঃ রাধাকৃষ্ণাণ সে কথায় কর্ণপাত না করে সোজা রাজেন্দ্রপ্রসাদের অন্ত্যেষ্টিস্থলে পৌঁছে দেশের মানরক্ষা করেন।
আজ আর হয়তো দিল্লী’র রাজঘাটের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদের সঙ্গে সেদিনের নেহেরুর বর্বর আচরণের স্মৃতিচারণ করার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে। তবে এটাও তো ঠিক যে, মহাত্মা গান্ধী’র সৌধের পাশে সঞ্জয় গান্ধী’র মত লোকও জায়গা পেতে পারে, কিন্তু ঠাঁই মেলে না – স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি’র মত মানুষের! এই দেশে তাদের ইজ্জত মেলা ভার!!
- তবে হ্যাঁ, এটা নিঃসঙ্কোচে মনে হতেই পারে যে, এদেশের যাবতীয় মহত্ত্ব আর বলিদানের কপিরাইট কেবল এক গান্ধী-নেহেরু পরিবারের জন্যেই চিরকালীন সংরক্ষিত...!!!
................ ছিঃ !!!!
0 Comments: